যেহেতু প্রাণিকল্যাণ নিশ্চিত করণার্থে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে বিদ্যমান The Cruelty to Animals Act, 1920 (Act No. I of 1920) রহিতক্রমে উহার বিধানাবলি বিবেচনাক্রমে সময়ের চাহিদার প্রতিফলনে নূতন আইন প্রণয়ন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;
(১) ‘‘অনিরাময়যোগ্য অসুস্থ প্রাণি’’ অর্থ এমন অসুস্থ প্রাণি, চিকিৎসার মাধ্যমে যাহার নিরাময় সম্ভব নহে অথবা মারাত্মকভাবে আহত হইবার কারণে যাহার স্থায়ীভাবে অঙ্গহানি হইয়াছে বা করা হইয়াছে অথবা যাহা জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত;
(২) ‘‘অসুস্থ প্রাণি’’ অর্থ ভেটেরিনারি সার্জনের প্রত্যয়ন অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত এক বা একাধিক কারণে সুস্থ নহে এইরূপ কোনো প্রাণি এবং চিকিৎসা প্রদান করা হইলে যে সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়া আসিতে পারে যথা : -
(৫) ‘‘খামার’’ অর্থ বিদ্যমান কোনো আইনের অধীন নিবন্ধিত হোক বা না হোক, বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে কোনো ব্যক্তি কর্তৃক পরিচালিত কোনো প্রাণির খামার, যে স্থানে পাঁচ বা ততোধিক একই বা ভিন্ন ভিন্ন প্রজাতির প্রাণি লালনপালন করা হয়;
(৬) ‘‘গৃহপালিত প্রাণি’’ অর্থ এইরূপ প্রাণি যাহা কোনোভাবে মানুষের উপকারে আসে ও প্রকৃতিগতভাবে হিংস্র নহে এবং গৃহে বা খামারে, বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে হোক বা না হোক, প্রতিপালন করা হয়;
(৭) ‘‘তত্ত্বাবধানকারী’’ অর্থ এইরূপ কোনো ব্যক্তি যিনি, মালিকের সম্মতিতে বা সম্মতি ব্যতীত, স্বেচছায় কিংবা কর্তৃপক্ষের আদেশে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য কোনো প্রাণিকে দখলে বা তত্ত্বাবধানে রাখিয়াছেন;
(১০) ‘‘পোষা প্রাণি (Pet)’’ অর্থ গৃহপালিত প্রাণি ব্যতীত এইরূপ কোনো প্রাণি যাহা মানুষের মানসিক প্রশান্তি বা নিরাপত্তার কাজে ব্যবহারের জন্য গৃহে বা বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে খামারে প্রতিপালন করা হয়;
(১৪) ‘‘ভেটেরিনারি সার্জন’’ অর্থ বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিল কর্তৃক রেজিস্ট্রেশন প্রাপ্ত ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের অধীনে কর্মরত যে কোনো ভেটেরিনারিয়ান এবং এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত রেজিস্টার্ড ভেটেরিনারিয়ান;
(১৬) ‘‘মালিকবিহীন প্রাণি’’ অর্থ মালিকানা বা দাবিদারবিহীন কোনো প্রাণি, অথবা যুক্তিসংগতভাবে অনুসন্ধানের পরও যে প্রাণির মালিক বা তত্ত্বাবধানকারীকে পাওয়া যায় না;
৪। প্রত্যেক প্রাণির মালিক বা তত্ত্বাবধানকারীর দায়িত্ব হইবে যৌক্তিক কারণ ব্যতীত, উক্ত প্রাণির প্রতি কল্যাণকর ও মানবিক আচরণ করা এবং নিষ্ঠুর আচরণ করা হইতে নিজে বিরত থাকা।
৬। (১) কোনো ব্যক্তির নিম্নবর্ণিত আচরণ বা কার্য প্রাণির জন্য অকল্যাণকর এবং উহা এই আইনের অধীন প্রাণির প্রতি অপ্রয়োজনীয় নিষ্ঠুর আচরণ হিসাবে গণ্য হইবে, যদি -
(ঘ) প্রাণিকে এইরূপভাবে বাধিয়া রাখা হয় বা এমন অবকাঠামোর মধ্যে আবদ্ধ রাখা হয় বা বহন করা হয় যাহার কারণে সংশ্লিষ্ট প্রাণি তাহার প্রকৃতি অনুযায়ী স্বাভাবিকভাবে দাঁড়াইতে, বসিতে বা শায়িত অবস্থায় থাকিতে পারে না;
(জ) ইচছাকৃতভাবে এবং অকারণে প্রাণির জন্য ক্ষতিকর বা প্রয়োগযোগ্য নহে এমন কোনো ঔষধ বা পদার্থ সেবন করানো হয় বা ইনজেকশনের মাধ্যমে বা পায়ুপথ বা জননাংগের মাধ্যমে দেহে প্রবেশ করানো বা করানোর চেষ্টা হয়;
(ট) অঙ্গহানিজনিত অথবা ক্ষুধা, তৃষ্ণা বা অন্য কোনো নিষ্ঠুরতার কারণে ব্যথাভোগকারী প্রাণিকে চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ না করিয়া বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে অর্পণ করা হয়;
(ঠ) কোনো প্রাণিকে গৃহে আটক রাখিয়া এবং অন্য কাহারো তত্ত্বাবধানে না রাখিয়া উক্ত প্রাণির মালিক বা তত্ত্বাবধানকারীর অপ্রয়োজনীয় সময়কাল গৃহের বাহিরে অবস্থান;
(২) উপ-ধারায় (১) এ উল্লিখিত আচরণ বা কার্য ছাড়াও সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, কোনো ব্যক্তি কর্তৃক প্রাণির প্রতি অন্য কোনো আচরণ বা কার্যকেও প্রাণির প্রতি অপ্রয়োজনীয় নিষ্ঠুর আচরণ হিসাবে ঘোষণা করিতে পারিবে।
(৩) উপ-ধারা (৪) এর বিধান সাপেক্ষে কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (১) ও (২) এ বর্ণিত কোনো অপ্রয়োজনীয় নিষ্ঠুর আচরণ সংঘটন করিলে বা সংঘটনে সহযোগিতা করিলে উহা এই আইনের অধীন অপরাধ হিসাবে গণ্য হইবে।
(খ) নিষ্ঠুরতাটি সৎ উদ্দেশ্যে, যেমন- উক্ত প্রাণি বা অন্য কোনো প্রাণির উপকার অথবা অন্য কোনো ব্যক্তি বা অন্য কোনো প্রাণির প্রাণ সংশয়ের হুমকি নিরসনের জন্য করা হয়;
(ঘ) কোনো নিশ্চিত জলাতঙ্কগ্রস্থ প্রাণি বা অন্য কোনো অনিরাময়যোগ্য সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হয়, যাহা মানুষ বা অন্য প্রাণিতে সংক্রমণ ঘটাইতে পারে, অথবা যাহা মানুষের মধ্যে সংক্রমিত হইতে পারে বলিয়া সরকারের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ কর্তৃক ঘোষিত হয়, এবং নিয়ন্ত্রণে বা নির্মূলে সরকার বা সরকারের অনুমোদিত কোনো কর্তৃপক্ষ, সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ব্যথাহীন কোনো মানবিক উপায়ে এবং OIE (World Organization for Animal Health) Standards অনুসরণ করিয়া জনকল্যাণার্থে উক্ত অনিরাময়যোগ্য অসুস্থ প্রাণিকে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়;
(চ) খাদ্য হিসাবে ব্যবহারের জন্য প্রাণি জবাইকালে ও ধর্মীয় উদ্দেশ্যে উৎসর্গকালে যে কোনো ধর্মাবলম্বী ব্যক্তি কর্তৃক তাহার নিজস্ব ধর্মীয় আচার অনুযায়ী কোনো কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়;
(ছ) চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক চিড়িয়াখানা পরিচালনার জন্য প্রযোজ্য আইন, বিধি বা নীতিমালার অধীন চিড়িয়াখানায় রক্ষিত প্রাণির ক্ষেত্রে কোনো কার্যক্রম বা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়; এবং
৮। (১) শারীরিকভাবে অনুপযুক্ত কোনো প্রাণিকে পরিবহন কাজে বাহক হিসাবে ব্যবহার এবং কোনো প্রাণির দ্বারা মাত্রাতিরিক্তি যাত্রী বা মালামাল বহন করানো যাইবে না।
(৩) বাহক প্রাণিকে পরিবহন কাজের জন্য শারীরিকভাবে অনুপযুক্ত ঘোষণা করিবার পদ্ধতি এবং প্রাণি কর্তৃক পরিবহনযোগ্য যাত্রী ও মালামালের ওজনের মাত্রা নির্ধারণ ও পদ্ধতি বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
৯। (১) বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে নিবন্ধন গ্রহণ ব্যতিরেকে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে পোষা প্রাণি উৎপাদন এবং উক্ত উদ্দেশ্যে কোনো খামার স্থাপন ও পরিচালনা করা যাইবে না।
(২) নিবন্ধিত খামার মালিক খামার অবসায়নের জন্য আবেদন করিলে বা তাহার মৃত্যু হইলে বা তিনি নিবন্ধনের শর্ত ভঙ্গ করিলে, নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ নিবন্ধন বাতিল বা স্থগিত, যাহা কর্তৃপক্ষের নিকট উপযুক্ত বলিয়া প্রতীয়মান হইবে, করিতে পারিবে, এবং বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে অবসায়নকৃত খামারের প্রাণির দখল গ্রহণ ও নিষ্পত্তি করিতে পারিবে।
(৩) কোনো ব্যক্তি এই আইনের অধীন নিবন্ধন গ্রহণ ব্যতিরেকে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে পোষা প্রাণি উৎপাদন খামার পরিচালনা করিলে অথবা নিবন্ধন বাতিল করা হইয়াছে এমন কোনো খামার পরিচালনা অব্যাহত রাখিলে উহা এই আইনের অধীন অপরাধ হিসাবে গণ্য হইবে।
১০। (১) প্রাণির ক্ষতিসাধনের উদ্দেশ্যে প্রাণিদেহের কোনো সংবেদনশীল টিস্যু অপসারণ করা হইলে বা অঙ্গ কর্তন করা হইলে অথবা শারীরিক কাঠামোর পরিবর্তন ঘটানো হইলে বা ঘটাইবার চেষ্টা করা হইলে অথবা উক্ত কাজে সহায়তা করা হইলে উহা এই আইনের অধীন অপরাধ হিসাবে গণ্য হইবে।
(২) উপ-ধারা (১) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, ভেটেরিনারি সার্জনের লিখিত অনুমতি সাপেক্ষে, গৃহপালিত প্রাণি, পোষা প্রাণি বা আবদ্ধ প্রাণির পরিচর্যা, স্বাস্থ্য-সুরক্ষা ও সৌন্দর্য বৃদ্ধির প্রয়োজনে উক্ত প্রাণির শিং কর্তন, লেজ কর্তন, কান কর্তন, হুফ ট্রিমিং, লাইগেশন, ক্যাশট্রেশান এবং অর্থনৈতিক কারণে কেশ বা লোম কর্তন করা যাইবে।
১১। (১) কোনো ঔষধ বা খাবার বিষাক্ত বা অনিষ্টকর জানা সত্ত্বেও কোনো ব্যক্তি যদি প্রাণিকে উক্ত বিষাক্ত বা অনিষ্টকর ঔষধ বা খাবার অথবা বিষ মিশ্রিত খাবার খাওয়ান বা বিষ প্রাণির দেহে প্রয়োগ করেন অথবা অনুরূপ কাজ করিবার চেষ্টা করেন বা করিতে সহায়তা করেন, যাহার ফলে প্রাণির মৃত্যু বা স্থায়ী অঙ্গহানি হয় অথবা স্বাভাবিক আকার ও কর্মক্ষমতা নষ্ট হইয়া যায়, তাহা হইলে উক্ত কার্য এই আইনের অধীন অপরাধ হিসাবে গণ্য হইবে।
(২) যুক্তিযুক্ত প্রয়োজনে ভেটেরিনারি সার্জনের লিখিত পরামর্শ ও পদ্ধতি অনুসারে প্রাণিকে অজ্ঞান করিবার ক্ষেত্রে অথবা উহার ব্যথাহীন মৃত্যু (Euthansia) ঘটাইবার ক্ষেত্রে উপধারা (১) এ উল্লিখিত কার্যাদি অপরাধ হিসাবে গণ্য হইবে না।
১২। (১) কর্তৃপক্ষের অনুমতি গ্রহণ ব্যতীত, কোনো প্রাণিকে দৈহিক কলাকৌশল প্রদর্শনের জন্য প্রশিক্ষণ প্রদান বা দৈহিক কসরৎ প্রদর্শনের জন্য ব্যবহার করা যাইবে না।
(৪) এই ধারার অধীন প্রদত্ত অনুমতিপত্র নবায়নের জন্য আবেদন করা না হইলে অথবা অনুমতিপত্র নবায়ন করা না হইলে অনুমতিপত্রে উল্লিখিত মেয়াদ সমাপ্তির পর সংশ্লিষ্ট প্রাণি দৈহিক কসরৎ প্রদর্শনের জন্য ব্যবহার করা যাইবে না।
(৮) এই ধারায় যাহা কিছুই থাকুক না কেন, প্রতিরক্ষা বাহিনী, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ, বাংলাদেশ পুলিশ, বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী এবং বাংলাদেশ কোস্টগার্ডসহ অনুরূপ সরকারি কোনো বাহিনীর ক্ষেত্রে এই ধারা প্রযোজ্য হইবে না।
ব্যাখ্যা।- এই ধারায় ‘‘কলাকৌশল প্রদর্শনকারী প্রাণি’’ বলিতে মালিক বা তত্ত্বাবধানকারীর হেফাজতে রক্ষিত এইরূপ প্রাণিকে বুঝাইবে, যাহাকে দৈহিক কসরতের মাধ্যমে মানুষের বিনোদন, খেলা, প্রদর্শন বা অর্থ উপার্জনের মত অন্য কোনো কাজে ব্যবহার করা হয়।
১৩। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে কর্তৃপক্ষ, অথবা বাংলাদেশ পুলিশের উপ-পরিদর্শকের নিম্নে নহে এমন কোনো পুলিশ অফিসার তাহার এখতিয়ারাধীন এলাকায়, নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত সকল খামার যে কোনো সময় পরিদর্শন করিতে পারিবেন এবং প্রাণির প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ পরিহারে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে পরামর্শ প্রদানসহ এই আইন বা তদধীন প্রণীত বিধির আওতায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করিতে পারিবেন।
(২) কর্তৃপক্ষ বা উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত পুলিশ অফিসারকে খামার পরিদর্শনের জন্য খামারে প্রবেশ করিবার অনুমতি প্রদানসহ সংশ্লিষ্ট কাজে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান করিতে খামার মালিক বা তাহার প্রতিনিধি বাধ্য থাকিবেন।
(৩) উপধারা (১) এর অধীন খামার পরিদর্শনকালে পরিদর্শন কাজে বাধা প্রদান করা হইলে অথবা প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান করা না হইলে, উহা এই আইনের অধীনে অপরাধ হিসাবে গণ্য হইবে।
১৪। (১) কোনো প্রাণি সংকটাপন্ন অবস্থায় রহিয়াছে মর্মে কর্তৃপক্ষের নিকট প্রতীয়মান হইলে অথবা এইরূপ সংবাদ কাহারও নিকট হইতে অবহিত হইলে উক্ত সংকট প্রশমিত করিবার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করিতে অথবা করিবার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রাণির মালিক বা তত্ত্বাবধানকারীকে নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবে অথবা সংকটাপন্ন অবস্থা হইতে সংশ্লিষ্ট প্রাণিকে উদ্ধারের জন্য, ক্ষেত্রমত, থানা, ফায়ার সার্ভিস এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সহায়তা গ্রহণ করিতে পারিবে।
(২) সংকটাপন্ন অবস্থায় থাকা কোনো প্রাণি জীবিত উদ্ধারের সভমাবনা নাই মর্মে কর্তৃপক্ষের নিকট যুক্তিসঙ্গতভাবে প্রতীয়মান হইলে অথবা সংকটাপন্ন অবস্থা হইতে উদ্ধারের চেষ্টা ব্যর্থ হইলে এবং নিধন অপরিহার্য হইলে, এখতিয়ারাধীন জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতি গ্রহণক্রমে, সংশ্লিষ্ট প্রাণি যে স্থানে ও যে অবস্থায় থাকিবে, সেই স্থান ও অবস্থা হইতে উদ্ধারের পর, প্রাণিটি অনিরাময়যোগ্য অসুস্থ প্রাণি হইলে এবং তাহাকে বাঁচাইয়া রাখা নিষ্ঠুরতা হইলে, কর্তৃপক্ষ উক্ত সংকটাপন্ন প্রাণিকে প্রয়োজনে উদ্ধারক্রমে অন্যত্র লইয়া ব্যথাহীন মৃত্যু ঘটাইতে পারিবে।
ব্যাখ্যা।- এই ধারায় ‘‘জেলা ম্যাজিস্ট্রেট’’ বলিতে Code of Criminal Procedure, 1898 (Act No. V of 1898) এর ধারা ১০ এ উল্লিখিত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে বুঝাইবে।
১৫। (১) কর্তৃপক্ষ এই আইনের অধীন অপরাধের শিকার (Victim) প্রাণিকে, সংকটাপন্ন অবস্থায় থাকুক না থাকুক, আটক এবং আটককৃত প্রাণিকে আগ্রহী কোনো ব্যক্তির তত্ত্বাবধানে প্রদান করিবার জন্য অথবা, যথাযথ প্রতীয়মান হইলে, ব্যথাহীন মৃত্যু ঘটাইবার জন্য বা বিক্রয়ের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবে।
(২) উপ-ধারা (১) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কর্তৃপক্ষ উক্ত উপ-ধারার অধীন আটককৃত প্রাণিকে সরকারি ভেটেরিনারি হাসপাতাল অথবা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের নিকট চিকিৎসা ও পরিচর্যার জন্য প্রেরণ করিতে পারিবে।
(৩) উপ-ধারা (১) এর অধীন আটককৃত প্রাণি সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত উহার চিকিৎসা, খাদ্য ও পানি সরবরাহের খরচের পরিমাণ সংশ্লিষ্ট এলাকার ভেটেরিনারি সার্জন কর্তৃক নির্ধারিত হইবে এবং সংশ্লিষ্ট ব্যয় প্রাণির মালিক বা তত্ত্বাবধানকারীকে বহন করিতে হইবে।
তবে শর্ত থাকে যে, তত্ত্বাবধানকারীকে পাওয়া না গেলে, ক্ষেত্রমত, কর্তৃপক্ষ বা স্থানীয় কর্তৃপক্ষ উক্ত ব্যয় বহন করিবে।
(ক) ধারা ৬ এর উপ-ধারা (৩), ধারা ৭ এর উপ-ধারা (২), ধারা ৮ এর উপ-ধারা (২), ধারা ৯ এর উপ-ধারা (৩), ধারা ১২ এর উপ-ধারা (৬) এবং ধারা ১৩ এর উপ-ধারা (৩) এর অধীন কোনো অপরাধ সংঘটন করিলে অথবা অপরাধ সংঘটনে সহায়তা করিলে উক্ত ব্যক্তি অনধিক ৬ (ছয়) মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড বা অনধিক ১০ (দশ) হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন; এবং
(খ) ধারা ১০ এর উপ-ধারা (১) এবং ধারা ১১ এর উপ-ধারা (১) এর অধীন কোনো অপরাধ সংঘটন করিলে অথবা অপরাধ সংঘটনে সহায়তা করিলে উক্ত ব্যক্তি অনধিক ২ (দুই) বৎসরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড বা অনধিক ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
১৭। কোনো কোম্পানি কর্তৃক এই আইনের অধীন কোনো অপরাধ সংঘটিত হইলে, উক্ত অপরাধের সহিত প্রত্যক্ষ সংশ্লিষ্টতা রহিয়াছে কোম্পানির এমন প্রত্যেক পরিচালক, অংশীদার, প্রধান নির্বাহী, ম্যানেজার, সচিব বা অন্য কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারী অথবা প্রতিনিধি উক্ত অপরাধ সংঘটন করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবে, যদি না তিনি প্রমাণ করিতে পারেন যে, উক্ত অপরাধ তাহার অজ্ঞাতসারে সংঘটিত হইয়াছে অথবা উক্ত অপরাধ রোধ করিবার জন্য তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা করিয়াছেন।
২০। এই আইনে ভিন্নরূপ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের অধীন সংঘটিত অপরাধসমূহ মোবাইল কোর্ট আইন, ২০০৯ (২০০৯ সনের ৫৯ নং আইন) এর তপশিলভুক্ত হওয়া সাপেক্ষে, মোবাইল কোর্ট কর্তৃক বিচার্য হইবে।
২২। এই আইনের কোনো বিধান কার্যকর করিবার ক্ষেত্রে কোনো অস্পষ্টতা বা অসুবিধা দেখা দিলে সরকার, আদেশ দ্বারা, এই আইনের বিধানাবলির সহিত সঙ্গতিপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে, উক্ত অস্পষ্টতা বা অসুবিধা দূর করিতে পারিবে।
২৩। (১) এই আইন প্রবর্তনের পর সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের ইংরেজিতে অনূদিত একটি নির্ভরযোগ্য পাঠ (Authentic English Text) প্রকাশ করিতে পারিবে।