যেহেতু পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ভূমি অধিগ্রহণের উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় বিধান প্রণয়ন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়; সেহেতু এতদ্দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইলঃ-
২৷ বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থী কোন কিছু না থাকিলে, এই আইনে-(ক)“কমিশনার ” অর্থ সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় কমিশনার;(খ)“কর্তৃপক্ষ” অর্থ Jamuna Multipurpose Bridge Authority Ordinance, 1985 (Ordinance No. XXXIV of 1985) এর section 4 এর অধীন প্রতিষ্ঠিত Jamuna Multipurpose Bridge Authority;(গ) “জনস্বার্থ বিরোধী উদ্দেশ্য” অর্থ পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প বাস্তবায়নে বাধা প্রদান, বিঘ্ন সৃষ্টি বা বিলম্বিত করার লক্ষ্যে, কোন কাজ বা ব্যবস্থা গ্রহণ করিয়া ক্ষতিপূরণ হিসাবে বা অন্য কোনভাবে আর্থিক সুবিধা লাভের উদ্দেশ্যে;(ঘ)“ডেপুটি কমিশনার” অর্থ Acquisition and Requisition of Immovable Property Ordinance, 1982 (Ordinance No. II of 1982) এর section 2(b) এ সংজ্ঞায়িত Deputy Commissioner;(ঙ)“পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প” অর্থ Jamuna Multipurpose Bridge Authority Ordinance, 1985 (Ordinance No. XXXIV of 1985) এর অধীন পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণের উদ্দেশ্যে গৃহীত পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প;(চ) “ব্যক্তি” অর্থে যে কোন প্রতিষ্ঠান, কোম্পানী বা দেশী বা বিদেশী সংস্থাও অন্তর্ভুক্ত হইবে।
৩। এই আইনের অন্যান্য বিধান সাপেক্ষে, পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কোন ভূমি অধিগ্রহণের প্রয়োজন হইলে, উহা জনস্বার্থে প্রয়োজন বলিয়া গণ্য হইবে এবং কতৃপক্ষের চাহিদা অনুযায়ী উক্ত ভূমি Acquisition and Requisition of Immovable Property Ordinance, 1982 (Ordinance No. II of 1982), অতঃপর ভূমি অধিগ্রহণ আইন বলিয়া উল্লিখিত, এর বিধান অনুযায়ী অধিগ্রহণ করা যাইবে।
৪। ভূমি অধিগ্রহণ আইন, তদ্ধীন প্রণীত বিধি বা আপাততঃ বলবৎ অন্য কোন আইন বা বিধিতে বিপরীত যাহা কিছুই থাকুক না কেন, পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে এই আইনের ধারা ৫ এর বিধান কার্যকর থাকিবে।
৫। (১) পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অধিগ্রহণাধীন ভূমির উপর জনস্বার্থ বিরোধী উদ্দেশ্যে নির্মিত বা নির্মাণাধীন ঘর-বাড়ী বা অন্য কোন প্রকার স্থাপনার জন্য বা একই উদ্দেশ্যে কোন ঘর-বাড়ী বা স্থাপনার বা ভূমির শ্রেণী পরিবর্তন করা হইলে উক্তরূপ পরিবর্তনের জন্য কোন ব্যক্তি ক্ষতিপূরণ পাওয়ার অধিকারী হইবেন না।(২) ভূমি অধিগ্রহণ আইনের ধারা ১১ এর অধীন ক্ষতিপূরণ নির্ধারণকালে ডেপুটি কমিশনার যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হন যে, পদ্মা সেতু প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অধিগ্রহণাধীন কোন ভূমির উপর নির্মিত বা নির্মাণাধীন কোন ঘর-বাড়ী বা অন্য কোন প্রকার স্থাপনা জনস্বার্থ বিরোধী উদ্দেশ্যে নির্মাণ করা হইয়াছে বা নির্মাণাধীন আছে বা একই উদ্দেশ্যে কোন ঘর-বাড়ী বা স্থাপনা বা ভূমির শ্রেণী পরিবর্তন করা হইয়াছে, তাহা হইলে তিনি উক্তরূপ ঘর-বাড়ী বা স্থাপনা বা পরিবর্তনকে উক্ত ধারা ১১ এর অধীন ক্ষতিপূরণ প্রদানের জন্য বিবেচনা করিবেন না এবং এইরূপ ক্ষতিপূরণের দাবী, যদি থাকে, প্রত্যাখ্যান করিবেন।(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন দাবি প্রত্যাখ্যানের কারণে সংক্ষুব্ধ কোন ব্যক্তি, প্রত্যাখ্যান আদেশ জারী হইবার সাত দিনের মধ্যে, ক্ষতিপূরণের দাবীতে কমিশনারের নিকট উক্ত প্রত্যাখ্যানের বিরুদ্ধে আপীল দায়ের করিতে পারিবেন।(৪) কমিশনার, উপ-ধারা (৩) এর অধীন আপীল আবেদন প্রাপ্তির পাঁচ দিনের মধ্যে, আপীলের বিষয়টি সরজমিনে তদন্ত করিবেন এবং অতঃপর আপীলকারীকে শুনানীর সুযোগ প্রদানপূর্বক অনধিক পাঁচ দিনের মধ্যে আপীলের উপর তাঁহার সিদ্ধান্ত প্রদান করিবেন।(৫) উপ-ধারা (৪) এর অধীন প্রদত্ত কমিশনারের সিদ্ধান্ত সংশ্লিষ্ট বিষয়ে চূড়ান্ত হইবে।(৬) উপ-ধারা (৪) এর অধীন প্রদত্ত সিদ্ধান্ত দ্বারা যদি আপীল নামঞ্জুর করা হয়, তাহা হইলে উক্তরূপ সিদ্ধান্তের আদেশ জারীর ২৪ ঘন্টার মধ্যে আপীলকারী সংশ্লিষ্ট ঘর-বাড়ী বা স্থাপনা নিজ খরচ ও দায়িত্বে সরাইয়া লইয়া যাইবেন, অন্যথায় ডেপুটি কমিশনার উক্ত ঘর-বাড়ী বা স্থাপনা প্রকাশ্যে নীলামে বিক্রয় করিয়া বিক্রয়লব্ধ অর্থ সরকারী কোষাগারে জমা করিবেন।(৭) উপ-ধারা (২) এর অধীন ডেপুটি কমিশনার কর্তৃক ক্ষতিপূরণের দাবি প্রত্যাখ্যানের বিরুদ্ধে যদি দাবীদার উপ-ধারা (৩) এর অধীন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আপীল দায়ের না করেন, তাহা হইলে উক্ত সময়ের পরবর্তী ২৪ ঘন্টার মধ্যে তিনি সংশ্লিষ্ট ঘর-বাড়ী বা স্থাপনা সরাইয়া লইয়া যাইবেন, অন্যথায় ডেপুটি কমিশনার উপ-ধারা (৬) এ উল্লিখিত ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন।(৮) এই আইনের অধীন অধিগ্রহণকারী ভূমির ক্ষতিপূরণ প্রত্যাশি সংস্থার নিকট হইতে অর্থ প্রাপ্তির ৬০ (ষাট) দিনের মধ্যে অধিগ্রহণাধীন ভূমি সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে, ডেপুটি কমিশনার কর্তৃক পূর্ব ঘোষিত সময় সূচী অনুয়ায়ী, প্রকাশ্যে পরিশোধ করিতে হইবে।(৯) পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অধিগ্রহণাধীন কোন ভূমির মাটি অসৎ উদ্দেশ্যে কাটিয়া উক্ত ভূমির শ্রেণী পরিবর্তন করা হইলে, উক্তরূপ পরিবর্তনের জন্য উক্ত ভূমির কোন ক্ষতি হইলে, সরকার সংশ্লিষ্ট ভূমির মালিকের নিকট হইতে উক্ত ক্ষতি বাবদ যথাযথ পরিমাণ ক্ষতিপূরণ, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, আদায় করিতে পারিবে।(১০) ভূমি অধিগ্রহণ আইনের ধারা ৩ এর অধীন নোটিশ জারীর পর্যায়ে সংশ্লিষ্ট ডেপুটি কমিশনার কর্তৃক অধিগ্রহণাধীন ভূমির যে ভিডিও চিত্র গ্রহণ ও সংরক্ষণ করা হইয়াছে, উক্ত ভিডিও চিত্র এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, এই আইনের অধীন গৃহীত ও সংরক্ষিত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে; এবং উক্ত ভিডিও চিত্রের ভিত্তিতে উক্ত ভূমির ক্ষতিপূরণ নির্ধারণপূর্বক উক্ত ক্ষতিপূরণ পরিশোধের ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে হইবে।(১১) এই ধারার অধীন প্রদত্ত কোন আদেশ বা গৃহীত কোন কার্যক্রমের বিরুদ্ধে কোন আদালত কোন মামলা বা দরখাস্ত গ্রহণ করিবে না, এবং এই ধারার অধীন বা এই ধারা হইতে প্রাপ্ত ক্ষমতাবলে গৃহীত বা গৃহীতব্য কোন কার্যক্রম সম্পর্কে কোন আদালত কোন প্রকার নিষেধাজ্ঞা জারী করিতে পারিবে না।
৭। (১) পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প (ভূমি অধিগ্রহণ) অধ্যাদেশ, ২০০৭ (২০০৭ সনের ১৪ নং অধ্যাদেশ), অতঃপর উক্ত অধ্যাদেশ বলিয়া উল্লিখিত, এর অধীন কৃত কাজকর্ম বা গৃহীত ব্যবস্থা এই আইনের অধীন কৃত বা গৃহীত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।(২) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৯৩ এর দফা (২) এর বিধান অনুসারে উক্ত অধ্যাদেশের কার্যকারিতা লোপ পাওয়া সত্ত্বেও অনুরূপ লোপ পাইবার পর উহার ধারাবাহিকতায় বা বিবেচিত ধারাবাহিকতায় কোন কাজকর্ম কৃত বা ব্যবস্থা গৃহীত হইয়া থাকিলে উহা এই আইনের অধীনে কৃত বা গৃহীত হইয়াছে বলিয়াও গণ্য হইবে।