যেহেতু বাংলাদেশ টেলিভিশন একটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান;এবং জনস্বার্থে বাংলাদেশ টেলিভিশনের সম্প্রসারণ এবং উন্নয়ন অপরিহার্য;এবং যেহেতু বাংলাদেশ টেলিভিশনের টেরেস্ট্রিয়াল সম্প্রচার সুবিধা সংরক্ষণ করার লক্ষ্যে বিধান প্রণয়ন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;সেহেতু এতদ্দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল, যথাঃ-
২৷ বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থী কোন কিছু না থাকিলে, এই আইনে-(ক) ‘টেরেস্ট্রিয়াল’ অর্থ ভূনির্ভর সম্প্রচার যন্ত্রের মাধ্যমে টেলিভিশন অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা;(খ) ‘টেরেস্ট্রিয়াল সমপ্রচার’ অর্থ ভূ-পৃষ্ঠে টাওয়ার, এ্যান্টেনা এবং ট্রান্সমিটার স্থাপনক্রমে এমন টেলিভিশন সম্প্রচার পদ্ধতি যাহা ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন (ITU) কর্তৃক নির্ধারিত VHF Band-III, UHF Band-IV এবং UHF Band-V এর Frequency ব্যবহার করিয়া প্রতিষ্ঠিত;(গ) ‘বিটিভি’ অর্থ বাংলাদেশ টেলিভিশন;(ঘ) ‘ব্যক্তি’ অর্থে আইনগত স্বত্বাবিশিষ্ট ব্যক্তি অংশীদারী কারবার, সমিতি, কোম্পানী, কর্পোরেশন, সমবায় সমিতি এবং সংবিধিবদ্ধ সংস্থা অন্তর্ভুক্ত হইবে;(ঙ) ‘সমপ্রচার পদ্ধতি’ অর্থ সমপ্রচার কেন্দ্রের আওতাভুক্ত গ্রাহক টেলিভিশন সেটের মাধ্যমে সরাসরি অনুষ্ঠান অবলোকন এবং শ্রবণ করিতে পারিবেন এইরূপ পদ্ধতি;(চ) ‘VHF Band-III’ অর্থ Very High Frequency, 174-230 MHz;(ছ) ‘UHF Band -IV’ অর্থ Ultra High Frequency,520-606 MHz;(জ) ‘UHF Band-V’ অর্থ Ultra High Frequency, 606-704 MHz.
৩৷ ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন কর্তৃক টেরেস্ট্রিয়াল টেলিভিশন সম্প্রচারের জন্য নির্ধারিত VHF Band-III, UHF Band- IV এবং UHF Band -V কেবল বিটিভি’র জন্য সংরক্ষিত থাকিবে৷
৫। (১) এই আইনের ধারা ৩ ও ৪ এর বিধান লঙ্ঘন হইবে একটি অপরাধ।(২) যদি কোন ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত কোন অপরাধ করেন, তাহা হইলে তিনি অনধিক ৫(পাঁচ) বৎসর সশ্রম কারাদণ্ড বা অনধিক ১(এক) কোটি টাকা কিন্তু অন্যুন ৫০(পঞ্চাশ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন এবং অপরাধ পুনরাবৃত্তির ক্ষেত্রে তিনি অনধিক ৭(সাত) বৎসর সশ্রম কারাদণ্ড বা অনধিক ২(দুই) কোটি টাকা কিন্তু অন্যুন ১(এক) কোটি টাকা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।(৩) কোন ব্যক্তি ধারা ৪ এ উল্লিখিত যন্ত্রপাতি ক্রয় বা সংগ্রহ করিলে বা অধিকারে রাখিলে অন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন সরকার উক্ত যন্ত্রপাতি তাৎক্ষণিকভাবে বাজেয়াপ্ত করিতে পারিবে।
৬৷ এই আইনের অন্যান্য বিধান সাপেক্ষে, বিধি দ্বারা কতিপয় অপরাধ চিহ্নিত এবং উক্ত অপরাধ সংগঠনের জন্য দন্ড নির্ধারণ করা যাইবেঃতবে শর্ত থাকে যে, এইরূপ দণ্ড ২(দুই) বৎসর সশ্রম কারাদণ্ড বা ৫০ (পঞ্চাশ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডের অতিরিক্ত হইবে না৷
৭৷ (১) কোন কোম্পানী কর্তৃক এই আইনের অধীন কোন অপরাধ সংঘটিত হইলে উক্ত অপরাধের সহিত প্রত্যক্ষ সংশ্লিষ্টতা রহিয়াছে কোম্পানীর এমন প্রত্যেক মালিক, প্রধান নির্বাহী, পরিচালক, ম্যানেজার, সচিব বা অন্য কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারী বা প্রতিনিধি উক্ত অপরাধ সংঘটন করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবে, যদি না তিনি প্রমাণ করিতে পারেন যে, উক্ত অপরাধ তাহার অজ্ঞাতসারে হইয়াছে অথবা উক্ত অপরাধ রোধ করিবার জন্য তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা করিয়াছেন৷ব্যাখ্যা৷- এই ধারায়-(ক) ”কোম্পানী ” বলিতে কোন কোম্পানী, সংবিধিবদ্ধ সংস্থা, অংশীদারী কারবার, সমিতি বা একাধিক ব্যক্তি সমন্বয়ে গঠিত সংগঠনকে বুঝাইবে;(খ) ‘পরিচালক’ বলিতে কোন অংশীদার বা পরিচালনা বোর্ড, যে নামেই অভিহিত হউক, এর সদস্যকেও বুঝাইবে।(২) Code of Criminal Procedure, 1898 (Act V of 1898) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোম্পানী কর্তৃক এই আইন বা বিধিতে বর্ণিত কোন অপরাধ সংগঠনের ক্ষেত্রে কোম্পানীর নিবন্ধিত কার্যালয় বা প্রধান কার্যালয় বা এইরূপ কার্যালয় না থাকিলে যে স্থান হইতে সাধারণতঃ উহার কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয় বা যে স্থানে অপরাধ সংঘটিত হয় বা যে স্থানে কোম্পানীর সংশ্লিষ্ট অপরাধীকে পাওয়া যায় সেই স্থানের উপর এখতিয়ার সম্পন্ন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতেই হইবে যথাযথ এখতিয়ারসম্পন্ন আদালত৷
৯৷ Code of Criminal Procedure, 1898 (Act V of 1898) বা অন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের অধীন সকল অপরাধ প্রথম শ্রেণীর ম্যজিস্ট্রেট বা মেট্রোপলিটন এলাকায় মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক বিচার্য হইবে।
অর্থদণ্ড আরোপের ক্ষেত্রে ম্যাজিস্ট্রেটের বিশেষ ক্ষমতা
১০। Code of Criminal Procedure, 1898 (Act V of 1898) এ ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুন না কেন, কোন ব্যক্তির উপর ধারা ৫ ও ৬ এর অধীন অর্থদণ্ড আরোপের ক্ষেত্রে একজন প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট বা মেট্রোপলিটন এলাকায় মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট উক্ত ধারায় উল্লিখিত অর্থদণ্ড আরোপ করিতে পারিবেন।
১১৷ এই আইন বা বিধির অধীন সরল বিশ্বাসে কৃত কোন কাজের ফলে কোন ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হইলে বা ক্ষতিগ্রস্ত হইবার সম্ভাবনা থাকিলে তজ্জন্য সরকারের বিরুদ্ধে কোন আইনগত কার্যক্রম গ্রহণ করা যাইবে না।
১৩। এই আইনের কোন বিধানের অস্পষ্টতার কারণে উহা কার্যকর করিবার ক্ষেত্রে কোন অসুবিধা দেখা দিলে সরকার, অন্যান্য বিধানের সহিত সামঞ্জস্য রাখিয়া উক্ত অসুবিধা দূরীকরণার্থে সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা প্রয়োজনীয় যে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবে।
১৪৷ এই আইন প্রবর্তনের পর সরকার, যথাশীঘ্র সম্ভব, সরকারী গেজেট প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের মূল বাংলা পাঠের ইংরেজীতে অনুদিত একটি নির্ভরযোগ্য পাঠ (Authentic English Text) প্রকাশ করিবেঃতবে শর্ত থাকে যে, মূল বাংলা পাঠ এবং ইংরেজী পাঠের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে বাংলা পাঠ প্রাধান্য পাইবে৷
১৫। (১) বাংলাদেশ টেলিভিশনের জন্য টেরেস্ট্রিয়াল টেলিভিশন সম্প্রচার সুবিধা সংরক্ষণ অধ্যাদেশ ২০০৬ (২০০৬ সনের ৩নং অধ্যাদেশ), অতঃপর উক্ত অধ্যাদেশ বলিয়া উল্লিখিত, এর অধীন কৃত কাজকর্ম বা গৃহীত ব্যবস্থা এই আইনের অধীন কৃত বা গৃহীত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।(২) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৯৩ এর দফা (২) এর বিধান অনুসারে উক্ত অধ্যাদেশের কার্যকরতা লোপ পাওয়া সত্ত্বেও অনুরূপ লোপ পাইবার পর উহার ধারাবাহিকতায় বা বিবেচিত ধারাবাহিকতায় কোন কাজকর্ম কৃত বা ব্যবস্থা গৃহীত হইয়া থাকিলে উহা এই আইনের অধীনেই কৃত বা গৃহীত হইয়াছে বলিয়াও গণ্য হইবে।