যেহেতু সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৫ সালে র ৯ আগস্ট বিদেশি তেল কোম্পানি শেলওয়েল হইতে তিতাস, হবিগঞ্জ, রশিদপুর, কৈলাশটিলা ও বাখরাবাদ নামক ৫টি গ্যাস ক্ষেত্র ক্রয় করিয়া রাষ্ট্রীয় মালিকানা প্রতিষ্ঠা করিয়াছিলেন; এবংযেহেতু জাতির পিতার অবিস্মরণীয় ও দূরদর্শী সিদ্ধান্তের ফলশ্রুতিতে দেশে জ্বালানি নিরাপত্তার গোড়াপত্তন ঘটিয়াছে; এবংযেহেতু সংবিধান (পঞ্চদশ সংশোধন) আইন, ২০১১ (২০১১ সনের ১৪ নং আইন) দ্বারা ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ হইতে ১৯৮৬ সালের ১১ নভেম্বর পর্যন্ত সময়ের মধ্যে সামরিক ফরমান দ্বারা জারিকৃত অধ্যাদেশসমূহের অনুমোদন ও সমর্থন সংক্রান্ত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের চতুর্থ তপশিলের ১৯ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত হইয়াছে এবং সিভিল আপিল নং ৪৮/২০১১ এ সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগ কর্তৃক প্রদত্ত রায়ে সামরিক আইনকে অসাংবিধানিক ঘোষণাপূর্বক উহার বৈধতা প্রদানকারী সংবিধান (সপ্তম সংশোধন) আইন, ১৯৮৬ (১৯৮৬ সনের ১নং আইন) বাতিল ঘোষিত হওয়ায় উক্ত অধ্যাদেশসমূহের কার্যকারিতা লোপ পাইয়াছে; এবংযেহেতু ২০১৩ সনের ৭নং আইন দ্বারা উক্ত অধ্যাদেশসমূহের মধ্যে কতিপয় অধ্যাদেশ কার্যকর রাখা হইয়াছে; এবংযেহেতু উক্ত অধ্যাদেশসমূহের আবশ্যকতা ও প্রাসঙ্গিকতা পর্যালোচনা করিয়া আবশ্যক বিবেচিত অধ্যাদেশসমূহ প্রয়োজনীয় সংশোধন ও পরিমার্জনক্রমে সময়ের চাহিদার প্রতিফলনে বাংলায় নূতন আইন প্রণয়ন করিবার জন্য সরকার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিয়াছে; এবংযেহেতু সরকারের উপরি-বর্ণিত সিদ্ধান্তের আলোকে Bangladesh Oil, Gas and Mineral Corporation Ordinance, 1985 (Ordinance No. XXI of 1985) রহিতপূর্বক যুগোপযোগী করিয়া উহা পুনঃপ্রণয়ন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;সেহেতু এতদ্দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল :-
২। বিষয় প্রসঙ্গের পরিপন্থি কোনো কিছু না থাকিলে, এই আইনে-(১) “কর্পোরেশন” অর্থ ধারা ৪ এর অধীন প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজসম্পদ কর্পোরেশন (পেট্রোবাংলা);(২) “কমিশন” অর্থ বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন;(৩) “খনিজসম্পদ” অর্থ এইরূপ বস্তু যাহা সাধারণত প্রাকৃতিকভাবে ভূ-ত্বকের অংশ হিসাবে পাওয়া যায় বা ভূ-ত্বকের মধ্যস্থিত বা উপরিস্থ পানিতে দ্রবণীয় বা নিলম্বিত থাকে, বা উক্তরূপ বস্তু হইতে নিষ্কাশন করা যায়, এবং নিম্নবর্ণিত বস্তুসমূহও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে, যথা:-(ক) সিরামিক, রিফ্রেক্টরি ও শোষণক্ষম সম্পর্কিত জিনিস তৈরিতে ব্যবহৃত ক্লে;(খ) কাঁচ তৈরির মূল উপাদান তথা রং, ইট, পানির ফিল্টারসহ নির্মাণ শিল্পে ব্যবহৃত সিলিকাবালু;(গ) অক্ষত, খণ্ডিত ও স্লাব আকারে ব্যবহৃত বালু, নুড়িপাথর বা শিলা;(ঘ) সকল প্রকার চুনাপাথর এবং আকরিক;(ঙ) পিটসহ সকল প্রকার কয়লা;(চ) কয়লা বা শেইল (Shale) খনন, নিষ্কাশন বা উৎপাদন কাজের সহিত সম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন এবং কয়লা খনন কার্যক্রম সম্প্রসারণে প্রয়োজনীয় মিথেন (methane) গ্যাস;(ছ) কয়লা বা শেইল প্রাপ্তিস্থানে উক্ত পদার্থের প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে নিষ্কাশিত বা উৎপাদিত খনিজ তেল বা গ্যাসীয় পদার্থ;তবে নিম্নবর্ণিত বস্তুসমূহ ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে না, যথা :-(অ) জীবিত কোনো বস্তু;(আ) সামুদ্রিক পানি হইতে নিষ্কাশিত লবণ;(ই) পানি;(ঈ) পেট্রোলিয়াম আইন, ২০১৬ (২০১৬ সনের ৩২ নং আইন) এর ধারা ২ এর দফা (৯) এ সংজ্ঞায়িত পেট্রোলিয়াম; ও(উ) প্রাকৃতিক গ্যাস।(৪) “গ্যাস” অর্থ প্রাকৃতিক গ্যাস, প্রাকৃতিক তরল গ্যাস, তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস, সংকুচিত প্রাকৃতিক গ্যাস, কৃত্রিম প্রাকৃতিক গ্যাস, তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস, কোল বেড মিথেন, ভূ-গর্ভস্থ কয়লা গ্যাসে রূপান্তর অথবা স্বাভাবিক তাপমাত্রা ও চাপে গ্যাসে রূপান্তরিত হয় এইরূপ প্রাকৃতিক হাইড্রোকার্বনের মিশ্রণ;(৫) “চেয়ারম্যান” অর্থ কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান;(৬) “তপশিলি ব্যাংক” অর্থ Bangladesh Bank Order, 1972 (President’s Order No. 127 of 1972) এর Article 2 এর clause (j) তে সংজ্ঞায়িত Scheduled Bank;(৭) “তহবিল” অর্থ ধারা ১৯ এ বর্ণিত বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজসম্পদ কর্পোরেশন (পেট্রোবাংলা) তহবিল;(৮) “পরিচালনা পর্ষদ” অর্থ ধারা ৯ এর অধীন গঠিত পরিচালনা পর্ষদ;(৯) “পরিচালক” অর্থ কর্পোরেশনের কোনো পরিচালক;(১০) “পেট্রোলিয়াম” অর্থ প্রাকৃতিকভাবে বিদ্যমান গ্যাসীয় বা তরল বা কঠিন অবস্থায় সকল হাইড্রোকার্বন অথবা উহাদের সংমিশ্রণ বা উপজাত এবং প্রক্রিয়াকৃত বা প্রক্রিয়াকৃত নহে এইরূপ হাইড্রোকার্বনও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;(১১) “প্রবিধান” অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত প্রবিধান;(১২) “বিধি” অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি; এবং(১৩) “সদস্য” অর্থ পরিচালনা পর্ষদের সদস্য।
৪। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে Bangladesh Oil, Gas and Mineral Corporation Ordinance, 1985 (Ordinance No. XXI of 1985) এর অধীন প্রতিষ্ঠিত Bangladesh Oil, Gas and Mineral Corporation, বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজসম্পদ কর্পোরেশন (পেট্রোবাংলা) নামে অভিহিত হইবে এবং উহা এমনভাবে বহাল থাকিবে যেন উহা এই আইনের অধীন প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে।(২) কর্পোরেশন একটি বডি কর্পোরেট (Body Corporate) হইবে এবং ইহার স্থায়ী ধারাবাহিকতা ও একটি সাধারণ সীলমোহর থাকিবে এবং এই আইনের বিধানাবলি সাপেক্ষে, ইহার স্থাবর ও অস্থাবর উভয় প্রকার সম্পত্তি অর্জন করিবার, অধিকারে রাখিবার ও হস্তান্তর করিবার এবং চুক্তি সম্পাদন করিবার ক্ষমতা থাকিবে, এবং ইহা স্বীয় নামে মামলা দায়ের করিতে পারিবে এবং ইহার বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করা যাইবে।
৫। (১) কর্পোরেশনের প্রধান কার্যালয় ঢাকায় থাকিবে।(২) কর্পোরেশন, প্রয়োজনে, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বা বাহিরে ইহার শাখা কার্যালয় স্থাপন করিতে পারিবে।
৬। (১) কর্পোরেশনের অনুমোদিত মূলধন হইবে ১০,০০০ (দশ হাজার) কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন হইবে ২০০ (দুইশত) কোটি টাকা, যাহা কর্পোরেশনের প্রয়োজন অনুযায়ী সরকার কর্তৃক প্রদত্ত হইবে।(২) উপ-ধারা (১) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, উপ-ধারা (১) এ বর্ণিত অনুমোদিত বা পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ হ্রাস-বৃদ্ধি করিতে পারিবে।(৩) উপ-ধারা (১) ও (২) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কর্পোরেশন ইহার সকল বা যেকোনো কার্য সম্পাদনের উদ্দেশ্যে সরকার কর্তৃক প্রদত্ত ভর্তুকি, সরকারের অনুমোদনক্রমে দেশি বা বিদেশি ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা অন্য কোনো উৎস বা ব্যক্তি হইতে ঋণ বা অনুদান গ্রহণক্রমে পৃথকভাবে মূলধন বৃদ্ধি করিতে পারিবে।
৭। কর্পোরেশনের কার্যাবলি হইবে নিম্নরূপ, যথা :-(ক) তেল, গ্যাস এবং খনিজ বিষয়ে সকল প্রকার তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াকরণ ও গবেষণা পরিচালনা;(খ) খনিজ তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস এবং খনিজসম্পদ অনুসন্ধান ও উন্নয়নে প্রকল্প গ্রহণ, কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন, বাস্তবায়ন এবং পরিচালনা;(গ) গ্যাস এবং খনিজসম্পদ উৎপাদন, ক্রয় ও বিক্রয়;(ঘ) তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (LNG) আমদানি, বিপণন, রপ্তানি ও ব্যবস্থাপনা;(ঙ) অভ্যন্তরীণ উৎস হইতে গ্যাস উপজাত হিসাবে প্রাপ্ত তরল পেট্রোলিয়াম দ্রব্যাদি উৎপাদন, বিভাজন ও প্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য প্রসেস প্লান্ট স্থাপন ও বিক্রয়;চ) তেল, গ্যাস এবং খনিজসম্পদের অনুসন্ধান ও উন্নয়নের উদ্দেশ্যে ভূ-তাত্তিক, ভূপদার্থিক এবং অন্যান্য জরিপ কার্য পরিচালনা;(ছ) জরিপ, খনন ও অন্যান্য অনুসন্ধান কার্যক্রমের মাধ্যমে তেল, গ্যাস এবং খনিজসম্পদ এর উপস্থিতি যাচাই করা, উহার মজুদ প্রাক্কলন করা এবং খনিজসম্পদ আহরণের উদ্দেশ্যে সর্বাপেক্ষা উপযুক্ত আহরণ ও খনন পদ্ধতি অবলম্বনের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ;(জ) তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস ও খনিজ শিল্প স্থাপন এবং আহরিত পেট্রোলিয়াম ও খনিজ পণ্যের উৎপাদন ও বিক্রয় অব্যাহত রাখা;(ঝ) কর্পোরেশনের কার্যের সহিত সম্পর্কিত এবং কর্পোরেশনের স্বার্থে অন্য কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা এজেন্সি কর্তৃক গৃহীত বা কৃত সমীক্ষা, নিরীক্ষা ও কারিগরি গবেষণার ব্যয় নির্বাহে অবদান রাখা;(ঞ) কর্পোরেশনের কার্যের সহিত সম্পর্কিত পরিসংখ্যান, বুলেটিন এবং মনোগ্রাফের সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও প্রকাশনার কার্যক্রম গ্রহণ, সহায়তা ও উৎসাহ প্রদান;(ট) কর্পোরেশনের অধীন কোম্পানিসমূহের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার নিয়োগ, বদলি ও পদায়ন;ঠ) কর্পোরেশনের এবং উহার অধীন কোম্পানিসমূহের উপমহাব্যবস্থাপক এবং তদূর্ধ্ব কর্মকর্তাগণকে কর্পোরেশনে এবং ইহার অধীন অন্য কোম্পানিতে বদলি বা পদায়ন;(ড) বিশেষ ক্ষেত্র বা প্রকল্পে বা কারিগরি প্রয়োজনে কর্পোরেশনের এবং উহার অধীন কোম্পানিসমূহের উপযুক্ত কর্মকর্তাকে কর্পোরেশনে এবং ইহার অধীন অন্য কোম্পানিতে বদলি বা পদায়ন;ঢ) কর্পোরেশনের অধীন কোম্পানিসমূহের সকল কার্যক্রম তত্ত্বাবধান, সমন্বয় ও নিয়ন্ত্রণ;(ণ) সরকারের অনুমোদনক্রমে এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, দেশি, বিদেশি কোম্পানির সহিত চুক্তি বা সমঝোতা স্মারক সম্পাদন;(ত) সরকার কর্তৃক, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, সময় সময়, ঘোষিত তেল, গ্যাস ও খনিজসম্পদ সম্পর্কিত কার্যাবলি; এবং(থ) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে অন্যান্য দায়িত্ব পালন।
৮। (১) কর্পোরেশনের পরিচালনা ও প্রশাসন পরিচালনা পর্ষদের উপর ন্যস্ত থাকিবে।(২) পরিচালনা পর্ষদ, জনস্বার্থে, বাণিজ্যিক বিবেচনায় ইহার দায়িত্ব পালন করিবে এবং সরকার কর্তৃক, সময় সময়, প্রদত্ত নির্দেশনা অনুসরণ করিবে।
৯। (১) কর্পোরেশনের একটি পরিচালনা পর্ষদ থাকিবে যাহা নিম্নবর্ণিত সদস্যগণের সমন্বয়ে গঠিত হইবে, যথা:-(ক) চেয়ারম্যান, যিনি ইহার সভাপতিও হইবেন;(খ) জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ কর্তৃক মনোনীত উক্ত বিভাগের অন্যূন যুগ্মসচিব পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি;(গ) অর্থ বিভাগ কর্তৃক মনোনীত উক্ত বিভাগের অন্যূন যুগ্মসচিব পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি;(ঘ) পরিকল্পনা বিভাগ কর্তৃক মনোনীত উক্ত বিভাগের অন্যূন যুগ্মসচিব পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি; এবং(ঙ) কর্পোরেশনে কর্মরত ০৫ (পাঁচ) জন পরিচালক।(২) কেবল কোনো সদস্য পদে শূন্যতা বা পরিচালনা পর্ষদ গঠনে ত্রুটি থাকিবার কারণে পরিচালনা পর্ষদের কোনো কার্য বা কার্যধারা অবৈধ হইবে না এবং তৎসম্পর্কে কোনো প্রশ্নও উত্থাপন করা যাইবে না।
১০। (১) কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান সরকারের অন্যূন অতিরিক্ত সচিবগণের মধ্য হইতে সরকার কর্তৃক নিযুক্ত হইবেন অথবা সরকার কর্তৃক নির্ধারিত মেয়াদ ও শর্তে নিযুক্ত কোনো ব্যক্তি হইবেন।(২) চেয়ারম্যান কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী হইবেন, এবং তিনি-(ক) এই আইন, বিধি ও প্রবিধানের বিধানসাপেক্ষে কর্পোরেশন পরিচালনার দায়িত্বে থাকিবেন;(খ) পরিচালনা পর্ষদ কর্তৃক প্রদত্ত দায়িত্ব ও কার্য সম্পাদন করিবেন এবং পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য দায়ী থাকিবেন; এবং(গ) সরকার কর্তৃক, সময় সময়, প্রদত্ত সকল ক্ষমতা প্রয়োগ, অর্পিত দায়িত্ব পালন ও কার্যাবলি সম্পাদন করিবেন।
১১। কর্পোরেশনের পরিচালকগণ এই আইন, বিধি ও প্রবিধানের বিধান সাপেক্ষে এবং সরকার বা পরিচালনা পর্ষদ কর্তৃক, সময় সময়, প্রদত্ত ক্ষমতা প্রয়োগ, অর্পিত দায়িত্ব পালন ও কার্যাবলি সম্পাদন করিবেন।
১২। (১) চেয়ারম্যান কর্তৃক নির্ধারিত তারিখ, সময় এবং স্থানে পরিচালনা পর্ষদের সভা অনুষ্ঠিত হইবে।(২) চেয়ারম্যান পরিচালনা পর্ষদের সকল সভায় সভাপতিত্ব করিবেন, তবে তাহার অনুপস্থিতিতে তদ্কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্পোরেশনের কোনো পরিচালক সভায় সভাপতিত্ব করিবেন।(৩) ধারা ৯ এর উপ-ধারা (১) এর দফা (খ), (গ) ও (ঘ) তে বর্ণিত সদস্যগণের মধ্য হইতে অন্যূন ১ (এক) জন সদস্যসহ অন্যূন ৫(পাঁচ) জন সদস্যের উপস্থিতিতে পরিচালনা পর্ষদের সভার কোরাম গঠিত হইবে, তবে মূলতুবি সভার ক্ষেত্রে কোনো কোরামের প্রয়োজন হইবে না।(৪) সভায় উপস্থিত সদস্যগণের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে পরিচালনা পর্ষদের সকল সিদ্ধান্ত গৃহীত হইবে, তবে ভোটের সমতার ক্ষেত্রে সভায় সভাপতিত্বকারী ব্যক্তির দ্বিতীয় বা নির্ণায়ক ভোট প্রদানের ক্ষমতা থাকিবে।(৫) কোনো সদস্যের প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষভাবে ব্যক্তিগত স্বার্থ রহিয়াছে এইরূপ বিষয়ে তিনি ভোট প্রদান করিতে পারিবেন না।(৬) চেয়ারম্যানের অনুমোদন ব্যতিরেকে কোনো সদস্য পরিচালনা পর্ষদের পর পর ৩ (তিন) টি সভায় অনুপস্থিত থাকিলে সদস্য থাকিবার যোগ্যতা হারাইবেন।
১৩। পরিচালনা পর্ষদ ইহার কার্যাবলি দক্ষতার সহিত সম্পাদনের উদ্দেশ্যে যেরূপ উপযুক্ত মনে করিবে সেইরূপ এক বা একাধিক কমিটি গঠন এবং কমিটির কার্যাবলি ও মেয়াদ নির্ধারণ করিতে পারিবে।
১৫। (১) কর্পোরেশন, সরকারের লিখিত অনুমোদন সাপেক্ষে, তেল, গ্যাস এবং খনিজসম্পদ অনুসন্ধান, আহরণ, উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ, পরিবহণ, শোধন, মিশ্রণ, রূপান্তর, সঞ্চালন, বিপণন ও বিতরণ কর্মকাণ্ড এবং তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানি, সঞ্চালন, বিপণন ও বিতরণের জন্য কোম্পানি আইন, ১৯৯৪ (১৯৯৪ সনের ১৮ নং আইন) অনুযায়ী কোম্পানি গঠন করিতে ও উহাতে স্বীয় স্বার্থ প্রতিষ্ঠা করিতে পারিবে এবং বিদেশি বিনিয়োগের বিষয়ে সরকারের সাধারণ নীতিসাপেক্ষে উক্ত কোম্পানিতে যেকোনো বৈদেশিক বিনিয়োগকারীকে অংশীদার হইবার অনুমতি প্রদান করিতে পারিবে।(২) উপ-ধারা (১) এ বর্ণিত কোম্পানিসমূহের পৃথক সংঘস্মারক ও সংঘবিধি থাকিবে।
১৬। কর্পোরেশন, সরকারের অনুমোদনক্রমে, প্রয়োজনে, কোম্পানি আইন, ১৯৯৪ (১৯৯৪ সনের ১৮ নং আইন) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, উহার কোনো কোম্পানির সংঘস্মারক এবং সংঘবিধি সংশোধন করিতে পারিবে।
১৭। কর্পোরেশন তেল, গ্যাস এবং খনিজসম্পদ অনুসন্ধান, আহরণ, উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ, পরিবহন, শোধন, মিশ্রণ, রূপান্তর, সঞ্চালন, বিপণন অথবা বিতরণ কর্মকাণ্ড এবং তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানি, সঞ্চালন বিপণন ও বিতরণের লক্ষ্যে গঠিত ইহার অধীন কোম্পানির শেয়ার অথবা স্বত্ব ধারণ করিতে পারিবে।
১৯। (১) এই আইনের উদ্দেশ্যপূরণকল্পে, বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজসম্পদ কর্পোরেশন (পেট্রোবাংলা) তহবিল নামে একটি তহবিল থাকিবে।(২) তহবিলে নিম্নবর্ণিত উৎস হইতে প্রাপ্ত অর্থ জমা হইবে, যথা:-ক) সরকার কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান;খ) সরকার কর্তৃক প্রদত্ত ঋণ ও ভর্তুকি;গ) সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে দেশি, বিদেশি যে কোনো কর্তৃপক্ষ, সংস্থা বা ব্যক্তি কর্তৃক প্রদত্ত আর্থিক সহায়তা বা অনুদান;ঘ) কর্পোরেশন কর্তৃক আদায়যোগ্য সকল ফি ও চার্জ; এবংঙ) কর্পোরেশন কর্তৃক গৃহীত বা অর্জিত অন্যান্য অর্থ।(৩) তহবিলের অর্থ কর্পোরেশন কর্তৃক নির্দিষ্টকৃত কোনো তপশিলি ব্যাংকে জমা রাখিতে হইবে।(৪) কর্পোরেশনের কার্যাবলি সম্পাদন এবং চেয়ারম্যান, পরিচালক ও কর্মচারীদের বেতন, ভাতা ও আনুষঙ্গিক সকল ব্যয় তহবিল হইতে নির্বাহ করা হইবে।(৫) উপ-ধারা (১) ও (২) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কমিশন কর্তৃক গ্যাসের ট্যারিফ আদেশ অনুযায়ী অথবা কর্পোরেশনের প্রয়োজনে, সরকারের অনুমোদনক্রমে, পৃথক নামে অন্যান্য তহবিল সংরক্ষণ করা যাইবে।(৬) কর্পোরেশন তাৎক্ষণিক ব্যয়ের প্রয়োজন হইবে না এইরূপ সকল তহবিলের অর্থ সরকার অনুমোদিত তপশিলি ব্যাংকে জমা বা স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ করিতে পারিবে।
২০। (১) এই আইনের উদ্দেশ্যপূরণকল্পে, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, গ্যাস ও তেল অনুসন্ধান, উত্তোলন, পরিশোধন এবং তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানি বিষয়ক কার্যাবলি সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রকল্প গ্রহণ এবং ভবিষ্যত জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে কমিশন কর্তৃক, সময় সময়, গ্যাসের ট্যারিফ আদেশে স্থিরীকৃত অর্থ বা অন্য কোনো উৎস হইতে প্রাপ্ত অর্থ দ্বারা কর্পোরেশন এক বা একাধিক উন্নয়ন তহবিল গঠন করিতে পারিবে।(২) উপ-ধারা (১) এ বর্ণিত উন্নয়ন তহবিল বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে পরিচালিত হইবে।
২২। কর্পোরেশন এই আইনের অধীন কার্যাবলি সম্পাদনের নিমিত্ত দেশি বা বিদেশি ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা অন্য কোনো উৎস হইতে প্রয়োজনীয় ঋণ বা অনুদান গ্রহণ এবং উহা পরিবীক্ষণ করিতে পারিবে, তবে বৈদেশিক ঋণ গ্রহণের ক্ষেত্রে সরকারের পূর্বানুমোদন গ্রহণ করিতে হইবে।
২৩। কর্পোরেশন, সরকারের অনুমোদনক্রমে এবং সরকার কর্তৃক নির্ধারিত শর্তসাপেক্ষে, বিভিন্ন কোম্পানিতে থাকা সরকারি শেয়ার ক্রয়, বিক্রয় বা অন্য কোনোভাবে হস্তান্তর করিতে পারিবে।
২৫। কর্পোরেশন, ইহার কার্যাবলি সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের উদ্দেশ্যে সরকার কর্তৃক অনুমোদিত সাংগঠনিক কাঠামো অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মচারী নিয়োগ করিতে পারিবে এবং তাহাদের চাকরির শর্তাবলি প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
২৬। কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান, সদস্য, পরিচালক ও কর্মচারীগণ এই আইন এবং বিধি বা প্রবিধানের অধীন কার্য সম্পাদনকালে Penal Code, 1860 (Act No. XLV of 1860) এর section 21 অনুসারে Public Servant বা জনসেবক হিসাবে গণ্য হইবেন।
২৭। কর্পোরেশন, প্রতি বৎসর সরকার কর্তৃক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে, পরবর্তী আর্থিক বৎসরের জন্য সরকারের অনুমোদনের লক্ষ্যে বাৎসরিক বাজেট-বিবরণী পেশ করিবে যাহাতে উক্ত আর্থিক বৎসরের প্রাক্কলিত আয় ও ব্যয়ের হিসাব প্রদর্শিত হইবে।
২৮। (১) চেয়ারম্যান বা তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি কোনো ভূমিতে নিম্নবর্ণিত যে কোনো উদ্দেশ্যে প্রবেশ করিতে পারিবেন, যথা:-ক) পেট্রোলিয়াম ও খনিজ অনুসন্ধানের উদ্দেশ্যে জরিপ ও তথ্যানুসন্ধান;খ) কার্যের ক্ষেত্র ও সীমানা নির্ধারণের জন্য খুঁটি স্থাপন;গ) খনিজসম্পদ আবিষ্কারের জন্য বোরিং সম্পাদন;ঘ) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে যেকোনো কার্য সম্পাদন।(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন কার্যসম্পাদনের ক্ষেত্রে, যতদূর সম্ভব হয়, ভূমির যাহাতে কম ক্ষতি, অনিষ্ট এবং অসুবিধা হয় সে বিষয়ে বিশেষ লক্ষ্য রাখিতে হইবে।(৩) কোনো ভূমিতে উপ-ধারা (১) এর অধীন কর্তৃত্বপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তির প্রবেশের জন্য দরজা, গেট বা অন্য কোনো প্রতিবন্ধক যুক্তিসঙ্গত কারণে খোলা বা খোলানো আইনসংগত হইবে।(৪) উপ-ধারা (১) এর অধীন কোনো কার্যের ফলে কোনো ক্ষতি হইলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে কর্পোরেশন কর্তৃক নির্ধারিত ও প্রদেয় ক্ষতিপূরণ প্রদান করিতে হইবে।(৫) কর্পোরেশন কর্তৃক নির্ধারিত ক্ষতিপূরণ লইয়া কোনো বিরোধের উদ্ভব হইলে, সরকার কর্তৃক, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক উহা নিষ্পত্তি করা হইবে।ব্যাখ্যা।- এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, “ব্যক্তি” অর্থে যে কোনো প্রতিষ্ঠান, কোম্পানি বা সংস্থাও অন্তর্ভুক্ত হইবে।
২৯। (১) কর্পোরেশন যথাযথভাবে ইহার হিসাব সংরক্ষণ করিবে এবং হিসাবের বাৎসরিক বিবরণী প্রস্তুত করিবে।(২) বাংলাদেশের মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, অতঃপর মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক বলিয়া অভিহিত, প্রত্যেক বৎসর কর্পোরেশনের হিসাব নিরীক্ষা করিবেন এবং বিদ্যমান আইনের বিধান মোতাবেক নিরীক্ষা রিপোর্ট দাখিল করিবেন।(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন হিসাব নিরীক্ষা ছাড়াও Bangladesh Chartered Accountants Order, 1973 (P.O.N. 2 of 1973) এর Article 2 (1)(b) তে সংজ্ঞায়িত Chartered Accountant দ্বারা কর্পোরেশনের হিসাব নিরীক্ষা করা যাইবে এবং এতদুদ্দেশ্যে কর্পোরেশন এক বা একাধিক Chartered Accountant নিয়োগ করিতে পারিবে।(৪) উপ-ধারা (৩) এর অধীন নিয়োগকৃত Chartered Accountant -কে এতদুদ্দেশ্য পরিচালনা পর্ষদ কর্তৃক নির্ধারিত হারে পারিশ্রমিক প্রদান করা যাইবে।(৫) এই ধারার অন্যান্য বিধানে যাহা কিছুই থাকুক না কেন সরকার, বিশেষ পরিস্থিতিতে, দেশীয় বা আন্তর্জাতিক নিরীক্ষা ফার্ম দ্বারা কর্পোরেশন বা উহার অধীন কোম্পানি বা প্রকল্পসমূহের নিরীক্ষা কার্যক্রম সম্পন্ন করাইতে পারিবে।(৬) কর্পোরেশনের হিসাব নিরীক্ষার উদ্দেশ্যে মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক কিংবা তাহার নিকট হইতে এতদুদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি বা উপ-ধারা (৩) এর অধীন নিয়োগকৃত Chartered Accountant বা উপ-ধারা (৫) এর অধীন নিয়োগকৃত আন্তর্জাতিক নিরীক্ষা ফার্ম কর্পোরেশনের সকল রেকর্ড, দলিল-দস্তাবেজ, নগদ বা ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ, জামানত, ভাণ্ডার এবং অন্যবিধ সম্পত্তি পরীক্ষা করিয়া দেখিতে পরিবেন এবং চেয়ারম্যান, পরিচালক বা কর্পোরেশনের যে কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করিতে পরিবেন।
৩০। (১) কর্পোরেশন প্রত্যেক আর্থিক বৎসর সমাপ্ত হইবার পর উহার বাৎসরিক প্রতিবেদন সরকারের নিকট দাখিল করিবে।(২) সরকার প্রয়োজনবোধে, যেকোনো সময়, কর্পোরেশনের নিয়ন্ত্রণাধীন থাকা কোনো বিষয়ের প্রতিবেদন, রিটার্ন, বিবরণী, প্রাক্কলন, পরিসংখ্যান বা অন্যান্য তথ্য সরবরাহের জন্য আহ্বান করিতে পারিবে এবং কর্পোরেশন উহা সরকারের নিকট সরবরাহ করিতে বাধ্য থাকিবে।
৩১। পরিচালনা পর্ষদ লিখিতভাবে সাধারণ অথবা বিশেষ আদেশ দ্বারা ইহার নির্দিষ্ট ক্ষমতাসমূহ, নির্দিষ্ট অবস্থা ও শর্তে, কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান অথবা কোনো সদস্য অথবা পরিচালক অথবা নবম গ্রেডের নিম্নে নহে এমন কোনো কর্মচারীকে প্রয়োগ করিবার ক্ষমতা অর্পণ করিতে পারিবে।
৩২। কোম্পানি আইন, ১৯৯৪ (১৯৯৪ সনের ১৮ নং আইন) এ উল্লিখিত অবসায়ন সংক্রান্ত সংশ্লিষ্ট বিধানাবলি কর্পোরেশনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে না এবং আইন প্রণয়ন ব্যতিরেকে উহার অবসায়ন করা যাইবে না।
৩৪। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, কর্পোরেশন, সরকারের অনুমোদনক্রমে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইন বা বিধির সহিত অসংগতিপূর্ণ নহে এইরূপ প্রবিধান প্রণয়ন করিতে পারিবে।
৩৫। (১) Bangladesh Oil, Gas and Mineral Corporation Ordinance, 1985 (Ordinance No. XXI of 1985) অতঃপর উক্ত Ordinance বলিয়া উল্লিখিত, এতদ্দ্বারা রহিত করা হইল।(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন রহিতকরণ সত্ত্বেও, উক্ত Ordinance এর অধীন কৃত কোনো কাজ বা গৃহীত কোনো ব্যবস্থা, প্রণীত কোনো বিধি বা প্রবিধান, জারিকৃত কোনো প্রজ্ঞাপন, ইস্যুকৃত কোনো আদেশ, বিজ্ঞপ্তি, নির্দেশ, প্রদত্ত কোনো নোটিশ, প্রস্তুতকৃত বাজেট প্রাক্কলন, স্কিম বা প্রকল্প, এই আইনে অধীন কৃত, গৃহীত, প্রণীত, জারিকৃত, প্রদত্ত এবং অনুমোদিত বলিয়া গণ্য হইবে।(৩) উক্ত Ordinance রহিত হইবার সঙ্গে সঙ্গে উক্ত Ordinance এর অধীন প্রতিষ্ঠিত Bangladesh Oil, Gas and Mineral Corporation এর-(ক) সকল সম্পদ, অধিকার ও স্বার্থ, ক্ষমতা, কর্তৃত্ব, সুবিধা, ফি, চার্জ, স্থাবর ও অস্থাবর সকল সম্পত্তি, অনুমোদিত মূলধন, পরিশোধিত মূলধন, নগদ ও ব্যাংকে গচ্ছিত সকল অর্থ এবং সিকিউরিটিসহ সকল দাবি ও অধিকার, সকল হিসাব বহি, রেজিস্টার, রেকর্ডপত্র এবং অন্যান্য দলিলপত্র কর্পোরেশনের নিকট হস্তান্তরিত ও উহার উপর ন্যস্ত হইবে;(খ) সকল ঋণ, দায়-দায়িত্ব, গৃহীত বাধ্যবাধকতা এবং ইহার দ্বারা, ইহার পক্ষে বা ইহার সহিত সম্পাদিত সকল চুক্তি, যথাক্রমে কর্পোরেশনের ঋণ, দায়-দায়িত্ব, বাধ্যবাধকতা এবং ইহার দ্বারা, ইহার পক্ষে বা ইহার সহিত সম্পাদিত চুক্তি বলিয়া গণ্য হইবে;(গ) অধীন গঠিত কোম্পানি এই আইনের অধীন বাংলাদেশ গ্যাস, তেল ও খনিজসম্পদ কর্পোরেশনের অধীন গঠিত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে;(ঘ) বিরুদ্ধে বা তৎকর্তৃক দায়েরকৃত কোনো মামলা, গৃহীত কোনো ব্যবস্থা বা সূচিত কোনো কার্যধারা অনিষ্পন্ন বা চলমান থাকিলে এইরূপভাবে নিষ্পত্তি করিতে হইবে যেন উহা এই আইনের অধীন দায়েরকৃত বা গৃহীত বা সূচিত হইয়াছে;(ঙ) সকল কর্মচারী কর্পোরেশনের কর্মচারী হিসাবে গণ্য হইবেন এবং এই আইন প্রবর্তনের অব্যবহিতপূর্বে তাহারা যে শর্তে চাকরিতে নিয়োজিত ছিলেন সেই শর্তে নিযুক্ত থাকিবেন, যতক্ষণ পর্যন্ত না কর্পোরেশন কর্তৃক তাহাদের চাকরির শর্তাবলি পরিবর্তিত হয়।
৩৬। (১) এই আইন কার্যকর হইবার পর সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের মূল বাংলা পাঠের ইংরেজিতে অনূদিত একটি নির্ভরযোগ্য পাঠ (Authentic English Text) প্রকাশ করিবে।(২) ইংরেজি পাঠ এবং মূল বাংলা পাঠের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে বাংলা পাঠ প্রাধান্য পাইবে।