২৷ বিষয় বা প্রসংগের পরিপন্থী কোন কিছু না থাকিলে, এই আইনে,-(ক) “অপরাধ” অর্থ আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ;(খ) “আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ” অর্থ-(অ) কোন প্রকার ভয়-ভীতি প্রদর্শন করিয়া বা বেআইনী বল প্রয়োগ করিয়া-(১) কোন ব্যক্তি, বা সংবিধিবদ্ধ সংস্থা, বা প্রতিষ্ঠানের নিকট হইতে চাঁদা, সাহায্য বা অন্য কোন নামে অর্থ বা মালামাল দাবী, আদায় বা অর্জন করা বা অন্য কোন প্রকার সুযোগ-সুবিধা আদায় করা বা আদায়ের চেষ্টা করা; বা(২) স্থলপথ, রেলপথ, জলপথ বা আকাশপথে যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা বা বিঘ্ন সৃষ্টি করা বা কোন যান চালকের ইচ্ছার বিরুদ্ধে যানের গতি ভিন্ন পথে পরিবর্তন করা; অথবা(আ) ইচ্ছাকৃতভাবে কোন যানবাহনের ক্ষতিসাধন করা; অথবা(ই) ইচ্ছাকৃতভাবে সরকার, বা কোন সংবিধিবদ্ধ সংস্থা, বা কোন প্রতিষ্ঠান, বা কোন ব্যক্তির স্থাবর বা অস্থাবর যে কোন প্রকার সম্পত্তি বিনষ্ট বা ভাংচুর করা; অথবা(ঈ) কোন ব্যক্তির নিকট হইতে কোন অর্থ, অলংকার, মূল্যবান জিনিসপত্র বা অন্য কোন বস্তু বা যানবাহন ছিনতাই এর চেষ্টা করা বা ছিনতাই করা বা জোরপূর্বক কাড়িয়া লওয়া; অথবা(উ) কোন স্থানে, বাড়ী-ঘরে, দোকান-পাটে, হাটে-বাজারে, রাস্তা-ঘাটে, যানবাহনে বা প্রতিষ্ঠানে পরিকল্পিতভাবে বা আকস্মিকভাবে একক বা দলবদ্ধভাবে শক্তির মহড়া বা দাপট প্রদর্শন করিয়া ভয়ভীতি বা ত্রাস সৃষ্টি করা বা বিশৃংখলা বা অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করা; অথবা(ঊ) কোন সংবিধিবদ্ধ সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের দরপত্র ক্রয়, বিক্রয়, গ্রহণ বা দাখিলে জোরপূর্বক বাধা প্রদান বা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা বা কাহাকেও দরপত্র গ্রহণ করিতে বা না করিতে বাধ্য করা; অথবা(ঋ) কোন সরকারী বা সংবিধিবদ্ধ সংস্থা বা কোন প্রতিষ্ঠানের কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে বা তাহার কোন নিকট আত্মীয়কে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ভয়-ভীতি প্রদর্শন করিয়া উক্ত কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে কোন কার্য করিতে বা না করিতে বাধ্য করা কিংবা তাহার দায়িত্ব পালনে কোন প্রকারের বাধা সৃষ্টি করা;(গ) “আদালত” অর্থ এই আইনের অধীন গঠিত দ্রুত বিচার আদালত;(ঘ) “প্রতিষ্ঠান” অর্থে কোন বেসরকারী প্রতিষ্ঠান, কোন দূতাবাস বা বিদেশী সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানও অন্তর্ভুক্ত হইবে;(ঙ) “ফৌজদারী কার্যবিধি” অর্থ Code of Criminal Procedure, 1898 (Act V of 1898);(চ) “ব্যক্তি” অর্থে অংশীদারী কারবার, কোম্পানী এবং সমিতিও অন্তর্ভুক্ত হইবে;(ছ) “সরকারী দাবী” অর্থ Public Demands Recovery Act, 1913 (Bengal Act III of 1913) এর Section 3 এর sub-section (6) এ সংজ্ঞায়িত public demand;(জ) “সংবিধিবদ্ধ সংস্থা” অর্থ কোন আইন দ্বারা বা আইনের অধীন প্রতিষ্ঠিত কর্তৃপক্ষ, সংস্থা, করপোরেশন বা প্রতিষ্ঠান, যে নামেই অভিহিত হউক৷
৪৷ (১) কোন ব্যক্তি কোন আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ করিলে তিনি অন্যুন দুই বৎসর এবং অনধিক 2[ সাত বৎসর] পর্যন্ত সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন এবং তদুপরি অর্থদণ্ডেও দণ্ডনীয় হইবেন৷(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন দণ্ডপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তি অপরাধ সংঘটনকালে সরকার কিংবা সংবিধিবদ্ধ সংস্থা বা কোন প্রতিষ্ঠান বা কোন ব্যক্তির আর্থিক ক্ষতিসাধন করিলে তদ্জন্য আদালত তদ্বিবেচনায় উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ ক্ষতিগ্রস্ত সরকার বা সংবিধিবদ্ধ সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির অনুকূলে প্রদান করিবার জন্য উক্ত দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে আদেশ দিতে পারিবে এবং এই ক্ষতিপূরণের অর্থ সরকারী দাবী হিসাবে আদায়যোগ্য হইবে৷
৬৷ যদি কোন ব্যক্তি অন্য কোন ব্যক্তির ক্ষতিসাধনের অভিপ্রায়ে উক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ সংঘটনের কোন ন্যায্য বা আইনানুগ কারণ নাই জানিয়াও তাহার বিরুদ্ধে কোন মামলা বা অভিযোগ দায়ের করেন বা করান, তাহা হইলে প্রথমোক্ত ব্যক্তি অন্যুন দুই বত্সর এবং অনধিক পাঁচ বত্সর পর্যন্ত সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন এবং তদুপরি অর্থদণ্ডেও দণ্ডনীয় হইবেন৷
৭৷ আদালত উপযুক্ত বিবেচনা করিলে, কোন অপরাধ সংঘটনের জন্য ব্যবহৃত কোন যন্ত্রপাতি, অস্ত্র বা যানবাহন, এবং উক্ত অপরাধের দ্বারা সংগৃহীত অর্থ, মালামাল বা সম্পদ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্তির বা উহার বৈধ মালিক বা দখলদারের নিকট ফেরত দিবার আদেশ দিতে পারিবে৷
৮৷ (১) সরকার, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে প্রত্যেক জেলায় এবং মেট্রোপলিটন এলাকায় এক বা একাধিক দ্রুত বিচার আদালত গঠন করিতে পারিবে এবং উক্ত প্রজ্ঞাপনে প্রত্যেকটি দ্রুত বিচার আদালতের স্থানীয় অধিক্ষেত্র নির্ধারণ করিয়া দিতে পারিবে৷3[ (২) সরকার বিশেষভাবে ক্ষমতাপ্রাপ্ত একজন প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেটকে উক্ত আদালতের বিচারক নিযুক্ত করিবে।]
৯৷ (১) অন্য কোন আইনে ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের অধীন অপরাধসমূহ কেবলমাত্র দ্রুত বিচার আদালতে বিচারযোগ্য হইবে৷(২) সাব-ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার নিম্নে নহে এমন কোন পুলিশ কমকতা বা এতদুদ্দেশ্যে সরকারের নিকট হইতে সাধারণ বা বিশেষ আদেশ দ্বারা ক্ষমতাপ্রাপ্ত অন্য কোন ব্যক্তির লিখিত রিপোর্ট বা অভিযোগের ভিত্তিতে, বা অপরাধ সংঘটনের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কিংবা অপরাধ সংঘটন সম্পর্কে অবহিত আছেন এমন কোন ব্যক্তির লিখিত অভিযোগে আদালত কোন অপরাধ বিচারার্থ গ্রহণ করিতে পারিবে৷(৩) এই আইনের অধীন কোন অপরাধের সহিত অন্য আইনের অধীন কোন অপরাধ যুক্তভাবে সংঘটিত হইলে এই আইনের অধীন বিচার্য অপরাধের বিচার দ্রুত বিচার আদালতে অনুষ্ঠিত হইবে এবং অন্য আইনের অধীন সংঘটিত অপরাধের বিচার এখতিয়ারসম্পন্ন অন্য আদালত কিংবা ট্রাইব্যুনালে অনুষ্ঠিত হইবে৷
১০৷ (১) আদালত এই আইনের অধীন সংঘটিত অপরাধের বিচার সংক্ষিপ্ত পদ্ধতিতে সম্পন্ন করিবে এবং এতদুদ্দেশ্যে এই আইনে ভিন্নতর কিছু না থাকিলে, ফৌজদারী কার্যবিধির Chapter XXII-তে বর্ণিত পদ্ধতি, যতদূর প্রযোজ্য হয়, অনুসরণ করিবে৷(২) এই আইনের অধীন কোন অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তি হাতেনাতে পুলিশ কর্তৃক ধৃত হইলে বা অন্য কোন ব্যক্তি কর্তৃক ধৃত হইয়া পুলিশের নিকট সোপর্দ করা হইলে, পুলিশ অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের প্রাথমিক রিপোর্টসহ তাহাকে চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে হাজির করিবে এবং উহার পরবর্তী সাত কার্যদিবসের মধ্যে অপরাধ সম্পর্কে আদালতে রিপোর্ট বা অভিযোগ পেশ করিবে এবং আদালত অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ প্রদান করিয়া উক্তরূপ রিপোর্ট বা অভিযোগ প্রাপ্তির তারিখ হইতে ত্রিশ কার্যদিবসের মধ্যে বিচার কার্য সম্পন্ন করিবে৷(৩) অভিযুক্ত ব্যক্তি উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিতভাবে হাতেনাতে ধৃত না হইলে, অপরাধ সংঘটনের পরবর্তী সাত কার্যদিবসের মধ্যে ধারা ৯(২) এর অধীন রিপোর্ট বা অভিযোগ দাখিল করিতে হইবে এবং উক্ত রিপোর্ট বা অভিযোগ দায়েরের পরবর্তী ষাট কার্যদিবসের মধ্যে, ধারা ১১ এর বিধান সাপেক্ষে, আদালত বিচার কার্য সম্পন্ন করিব৷ 4[(৪) উপ-ধারা (২) ও (৩) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের অধীন কোন অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তি উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিতভাবে ধৃত না হইয়া অন্য কোনভাবে ধৃত হইলে বা আদালতে আত্নসমর্পণ করিলে, উক্ত অপরাধের বিষয়ে, যত দ্রুত সম্ভব, ধারা ৯(২) এর অধীন রিপোর্ট বা অভিযোগ দাখিল করিতে হইবে এবং আদালত অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আত্নপক্ষ সমর্থনের সুযোগ প্রদান করিয়া উক্তরূপ রির্পোট বা অভিযোগ প্রাপ্তির তারিখ হইতে ৩০ (ত্রিশ) কার্যদিবসের মধ্যে বিচারকার্য সম্পন্ন করিবে।]
১১৷ যদি আদালতের এ মর্মে বিশ্বাস করিবার যুক্তিসংগত কারণ থাকে যে,-(ক) অভিযুক্ত ব্যক্তি তাহার গ্রেফতার বা তাহাকে বিচারের জন্য সোপর্দকরণ এড়াইবার জন্য পলাতক রহিয়াছেন বা আত্মগোপন করিয়াছেন, এবং(খ) গ্রেফতারী পরোয়ানা জারীর সাত দিনের মধ্যে তাহার গ্রেফতারের কোন সম্ভাবনা নাই-তাহা হইলে আদালত অন্ততঃ একটি বাংলা দৈনিক খবরের কাগজে প্রজ্ঞাপিত আদেশ দ্বারা আদেশে উল্লিখিত সময় যাহা সাত দিনের বেশী হইবে না, এর মধ্যে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আদালতে হাজির হইবার জন্য নির্দেশ দিতে পারিবে এবং উক্ত সময়ের মধ্যে অভিযুক্ত ব্যক্তি আদালতে হাজির হইতে ব্যর্থ হইলে আদালত তাহার অনুপস্থিতিতে বিচার কার্য সম্পন্ন করিতে পারিবে৷
১২৷ (১) এই আইনে ভিন্নরূপ কিছু না থাকিলে কোন অপরাধের অভিযোগ দায়ের বা প্রাথমিক তথ্য সরবরাহ, তদন্ত, বিচার পূর্ববর্তী কার্যক্রম, বিচার ও আপীল নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে ফৌজদারী কার্যবিধির বিধানাবলী প্রযোজ্য হইবে৷(২) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে আদালত একটি প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট আদালত বলিয়া গণ্য হইবে এবং উক্ত আদালতের আপীল আদালত হইবে এখতিয়ারসম্পন্ন দায়রা আদালত৷(৩) এই আইনের অধীন অপরাধসমূহ আমলযোগ্য (cognizable) হইবে৷
১৪৷ কোন পুলিশ বা আইন প্রয়োগকারী বাহিনীর সদস্য বা অন্য কোন ব্যক্তি এই আইনে বর্ণিত কোন অপরাধ সংঘটন বা সংঘটনের প্রস্তুতি গ্রহণ বা উহা সংঘটনে সহায়তা সংক্রান্ত কোন ঘটনার চলচ্চিত্র বা স্থিরচিত্র ধারণ বা গ্রহণ করিলে বা কোন কথাবার্তা বা আলাপ আলোচনা টেপ রেকর্ড বা ডিস্কে ধারণ করিলে উক্ত চলচ্চিত্র বা স্থিরচিত্র বা টেপ বা ডিস্ক উক্ত অপরাধের বিচারে সাক্ষ্য হিসাবে গ্রহণযোগ্য হইবে৷