কোন ব্যক্তির ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ ও উহার বিশ্লেষণ প্রক্রিয়া ও পদ্ধতি নির্ধারণ, ডিএনএ নমুনা ও প্রোফাইলের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ, ফরেনসিক ডিএনএ ল্যাবরেটরী স্থাপন, জাতীয় ডিএনএ ডাটাবেইজ প্রতিষ্ঠা ও আনুষঙ্গিক বিষয়াদি সম্পর্কে বিধান প্রণয়নকল্পে প্রণীত আইন
যেহেতু কোন ব্যক্তির ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ ও উহার বিশ্লেষণ প্রক্রিয়া ও পদ্ধতি নির্ধারণ, ডিএনএ নমুনা ও প্রোফাইলের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ, ফরেনসিক ডিএনএ ল্যাবরেটরী স্থাপন, জাতীয় ডিএনএ ডাটাবেইজ প্রতিষ্ঠা ও আনুষঙ্গিক বিষয়াদি সম্পর্কে বিধান প্রণয়ন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;সেহেতু এতদ্দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল :-
১। (১) এই আইন ডিঅক্সিরাইবোনিউক্লিক এসিড (ডিএনএ) আইন, ২০১৪ নামে অভিহিত হইবে।(২) সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, যে তারিখ নির্ধারণ করিবে সেই তারিখে ইহা কার্যকর হইবে।* এস, আর, ও নং ৩৩০-আইন/২০১৫, তারিখ: ১২ নভেম্বর, ২০১৫ ইং দ্বারা ২৪ আশ্বিন ১৪২১ বঙ্গাব্দ মোতাবেক ৯ অক্টোবর ২০১৪ খ্রিস্টাব্দ উক্ত আইন কার্যকর হইয়াছে।
২। বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থী কোন কিছু না থাকিলে, এই আইনে-(১) ‘‘অপরাধস্থল’’ অর্থ-(ক) কোন অপরাধ সংঘটিত হইবার স্থান; বা(খ) অপরাধ সংঘটনের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি অথবা কোন সন্দেহভাজন বা অভিযুক্ত ব্যক্তির শরীর হইতে প্রাপ্ত কোন বস্তু বা উক্ত ব্যক্তি কর্তৃক বহনকৃত অন্য কোন বস্তু; বা(গ) অপরাধ সংঘটনের সহিত সম্পর্কিত অন্য কোন স্থান হইতে প্রাপ্ত কোন বস্তু;(২) ‘‘অধিদপ্তর’’ অর্থ ধারা ২০ এর অধীন গঠিত অধিদপ্তর;(৩) ‘‘উপদেষ্টা পরিষদ’’ অর্থ ধারা ১৬ এর অধীন গঠিত ফরেনসিক ডিএনএ ল্যাবরেটরী উপদেষ্টা পরিষদ;(৪) ‘‘কারিগরি কমিটি’’ অর্থ ধারা ১৯ এর অধীন গঠিত ফরেনসিক ডিএনএ ল্যাবরেটরী কারিগরি কমিটি;(৫) ‘‘ডিএনএ’’ অর্থ ডিঅক্সিরাইবোনিউক্লিক এসিড;(৬) ‘‘ডিএনএ নমুনা’’ অর্থ ডিএনএ বিশ্লেষণের উদ্দেশ্যে কোন ব্যক্তির দেহ হইতে দ্বিতীয় অধ্যায়ে বিধৃত পদ্ধতিতে নিম্নবর্ণিত উৎস হইতে সংগৃহীত যে কোন ধরনের জৈব নমুনা, যথাঃ-(ক) দেহগত পদার্থ;(খ) কোষকলা নমুনা;(গ) পরিধেয় বস্ত্র হইতে সংগৃহীত দেহগত পদার্থ;(ঘ) ঘটনাস্থল হইতে সংগৃহীত দেহগত পদার্থ; এবং(ঙ) বিধি দ্বারা নির্ধারিত অন্য কোন উৎস;(৭) ‘‘ডিএনএ প্রোফাইল’’ অর্থ ডিএনএ অণুতে অবস্থিত অন্যূন ১০(দশ) টি জেনেটিক মার্কার হইতে প্রাপ্ত জেনোটাইপের সমন্বয়ে গঠিত ডিএনএ নমুনা বিশ্লেষণের ফলাফল যাহা আলফা-নিউমেরিক ভ্যালু হিসাবে প্রকাশ করা হয়;(৮) ‘‘ডিএনএ ল্যাবরেটরী’’ অর্থ ধারা ১৪ এর অধীন সরকার কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত কোন ফরেনসিক ডিএনএ ল্যাবরেটরী;(৯) ‘‘নির্ধারিত ব্যক্তি’’ অর্থ ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ সম্পর্কে জ্ঞান ও প্রশিক্ষণ রহিয়াছে এইরূপ কোন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ বা মেডিকো-লিগ্যাল পরীক্ষার জন্য সরকার কর্তৃক নির্ধারিত কোন চিকিৎসক, কোন পুলিশ কর্মকর্তা বা অন্য কোন ব্যাক্তি;(১০) ‘‘পুলিশ কর্মকর্তা’’ অর্থ এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সাব-ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার নিম্নে নহেন এইরূপ কোন পুলিশ কর্মকর্তা;(১১) ‘‘ফৌজদারী কার্যবিধি’’ অর্থ Code of Criminal Procedure, 1898 (Act V of 1898) ;(১২) ‘‘বিধি’’ অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি;(১৩) ‘‘ব্যক্তি’’ অর্থে কোন ব্যক্তি, কোম্পানী, সমিতি, অংশীদারী কারবার, সংবিধিবদ্ধ সংস্থা বা উহাদের প্রতিনিধিও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;(১৪) ‘‘যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তি’’ অর্থ ডিএনএ ল্যাবরেটরীতে কর্মরত এইরূপ কোন ব্যক্তি, যাহার সরকার কর্তৃক স্বীকৃত কোন বিশ্ববিদ্যালয় হইতে বায়োকেমিস্ট্রি বা মলিক্যুলার বায়োলজি বা বায়োটেকনোলজিতে অন্যূন স্নাতক ডিগ্রী রহিয়াছে।
৩। (১) আপাততঃ বলবৎ অন্য কোন আইন বা আইনের মর্যাদাসম্পন্ন অন্য কোন আইনগত দলিলে ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের বিধানাবলী প্রাধান্য পাইবে।(২) উপ-ধারা (১) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের কোন বিধান Evidence Act,1872 এর section 112 এর ব্যত্যয়কারী বলিয়া গণ্য হইবে না।
৪। (১) কোন সংঘটিত অপরাধের তদন্তের প্রয়োজনে কোন পুলিশ কর্মকর্তা উক্ত অপরাধের ফলে কোন ক্ষতিগ্রস্ত, সন্দেহভাজন, বা অভিযুক্ত ব্যক্তি অথবা অপরাধ সংঘটনের সহিত জড়িত অন্য কোন ব্যক্তিকে তাহার ডিএনএ নমুনা প্রদানের জন্য অনুরোধ করিতে পারিবেন।(২) উপ-ধারা (১) এ বর্ণিত ক্ষতিগ্রস্ত, সন্দেহভাজন বা অভিযুক্ত কোন ব্যক্তি যদি শিশু বা মানসিক ভারসাম্যহীন বা শারীরিকভাবে অক্ষম হন, তাহা হইলে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তা উক্ত শিশু বা মানসিক ভারসাম্যহীন বা শারীরিকভাবে অক্ষম ব্যক্তির পিতামাতা বা আইনানুগ অভিভাবক বা তদ্কর্তৃক নিয়োজিত আইনজীবীকে উক্ত শিশু বা মানসিক ভারসাম্যহীন বা শারীরিকভাবে অক্ষম ব্যক্তির নিকট হইতে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহের লক্ষ্যে সম্মতি প্রদানের জন্য অনুরোধ করিতে পারিবেন।(৩) উপ-ধারা (১) ও (২) এ বর্ণিত ক্ষেত্র ব্যতীত অন্যান্য ক্ষেত্রে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহের জন্য বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে অনুরোধ জানানো যাইবে।
৬। (১) কোন অপরাধের তদন্তের প্রয়োজনে অন্যূন দুইজন সাক্ষীর উপস্থিতিতে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত ফরমে ও পদ্ধতিতে, লিখিত সম্মতি গ্রহণ ব্যতীত এই আইনের অধীন কোন ব্যক্তির নিকট হইতে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা যাইবে না।(২) উপ-ধারা (১) এ বর্ণিত কোন ব্যক্তি যদি শিশু বা মানসিক ভারসাম্যহীন বা শারীরিকভাবে অক্ষম হন, তাহা হইলে উক্ত শিশু বা মানসিক ভারসাম্যহীন বা শারীরিকভাবে অক্ষম ব্যক্তির পক্ষে তাহার পিতামাতা বা আইনানুগ অভিভাবক বা তৎকর্তৃক নিয়োজিত আইনজীবী কর্তৃক সম্মতি প্রদান করা হইলে, উক্ত শিশু বা মানসিক ভারসাম্যহীন বা শারীরিকভাবে অক্ষম ব্যক্তি কর্তৃক সম্মতি প্রদান করা হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।
৭। (১) কোন অপরাধের তদন্তের প্রয়োজনে, ধারা ৪ এর অধীন যদি কোন ব্যক্তিকে অনুরোধ জানানো হয় এবং অনুরোধ করিবার ৩ (তিন) ঘণ্টা সময়ের মধ্যে সম্মতি প্রদান না করা হয়, তাহা হইলে তিনি ডিএনএ নমুনা প্রদানে অসম্মতি জ্ঞাপন করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবে।(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন যদি কোন ব্যক্তি অসম্মতি জ্ঞাপন করেন, তাহা হইলে উক্ত অসম্মতির বিষয়টি, বিধি দ্বারা নির্ধারিত ফরমে ও পদ্ধতিতে, যথাযথভাবে লিপিবদ্ধ করিতে হইবে।
৮। (১) কোন ব্যক্তি ধারা ৭ এর অধীন ডিএনএ নমুনা প্রদানে অসম্মতি জ্ঞাপন করিলে, সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তা, কোন অপরাধের তদন্তের প্রয়োজনে, ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করিবার জন্য উপযুক্ত আদালতে আবেদন করিতে পারিবেন।(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন কৃত আবেদনের ভিত্তিতে উভয় পক্ষকে শুনানীর যুক্তিসংগত সুযোগ প্রদান করিয়া ও আদালতের সম্মুখে উপস্থাপিত দলিলাদি বিবেচনাক্রমে আদালত ডিএনএ নমুনা সংগ্রহের জন্য আদেশ প্রদান করিতে পারিবে।(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন আদালতের আদেশে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হইলে উহা ধারা ৬ এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সম্মতিতে গ্রহণ করা হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।
৯। ধারা ৮ এর অধীন যে ব্যক্তির নিকট হইতে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহের জন্য আদালতের অনুমতি প্রার্থনা করা হয়, সেই ব্যক্তি যদি শিশু বা মানসিক ভারসাম্যহীন বা শারীরিকভাবে অক্ষম হন, তাহা হইলে আদালত উক্ত ব্যক্তির পিতামাতা বা আইনানুগ অভিভাবক বা তদ্কর্তৃক নিয়োজিত আইনজীবীর উপস্থিতিতে উক্তরূপ ডিএনএ নমুনা সংগ্রহের জন্য আদেশ দিতে পারিবেন।
১০। কোন যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তি বা নির্ধারিত ব্যক্তি কর্তৃক অন্যূন দুইজন সাক্ষীর উপস্থিতিতে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতি ও প্রক্রিয়ায়, ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করিতে হইবে।
১১। (১) কোন যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তি ধারা ১০ এর অধীন সংগৃহীত ডিএনএ নমুনা বিশ্লেষণের মাধ্যমে প্রাপ্ত ডিএনএ প্রোফাইল সম্বলিত একটি রিপোর্ট প্রস্তুত করিয়া উহাতে স্বাক্ষর প্রদান করিবেন।(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত রিপোর্টে, অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে নিম্নবর্ণিত বিষয়সমূহ অন্তর্ভুক্ত থাকিবে, যথাঃ-(ক) ডিএনএ ল্যাবরেটরীর প্রধান কর্তৃক স্বাক্ষরিত ফরোয়ার্ডিং নোট;(খ) ডিএনএ নমুনা বিশ্লেষণ যেভাবে পরিচালিত হইয়াছে উহার সংক্ষিপ্ত বিবরণ;(গ) ডিএনএ নমুনা বিশ্লেষণের পদ্ধতি; এবং(ঘ) বিধি দ্বারা নির্ধারিত অন্য কোন বিষয়।
১২। নিম্নবর্ণিত উদ্দেশ্য ব্যতীত অন্য কোন উদ্দেশ্যে ডিএনএ নমুনা ও ডিএনএ প্রোফাইল ব্যবহার করা যাইবে না, যথাঃ-(ক) কোন ব্যক্তি শনাক্তকরণ;(খ) কোন অপরাধের সহিত সংশ্লিষ্ট কোন ব্যক্তি;(গ) নিখোঁজ বা অজ্ঞাত ব্যক্তি শনাক্তকরণ;(ঘ) দুই বা ততোধিক ব্যক্তির মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক নিরূপণ;(ঙ) প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা দুর্ঘটনাজনিত কারণে মৃত ব্যক্তি শনাক্তকরণ;(চ) বিরোধ নিষ্পত্তি; এবং(ছ) বিধি দ্বারা নির্ধারিত অন্য কোন বিষয়।
১৩। বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে ও মেয়াদে ডিএনএ নমুনা ডিএনএ ল্যাবরেটরী কর্তৃক, এবং ডিএনএ প্রোফাইল ধারা ২৪ এর অধীন প্রতিষ্ঠিত জাতীয় ডিএনএ ডাটাবেইজে, সংরক্ষণ করিতে হইবে।
১৪। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকার, সরকারি গেজেট প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এক বা একাধিক ডিএনএ ল্যাবরেটরী প্রতিষ্ঠা করিতে পারিবে।(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন ডিএনএ ল্যাবরেটরী প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে, সরকার, প্রয়োজনে, উপদেষ্টা পরিষদের পরামর্শ গ্রহণ করিতে পারিবে।(৩) ঢাকায় অবস্থিত ন্যাশনাল ফরেনসিক ডিএনএ প্রোফাইলিং ল্যাবরেটরী এই আইনের অধীন সরকার কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।
১৫। (১) প্রত্যেক ডিএনএ ল্যাবরেটরী, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, ডিএনএ কার্যক্রমের গুণগত মান নিশ্চিত করিবে।(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন গুণগত মান নিশ্চিত করিবার ক্ষেত্রে, অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে, প্রত্যেক ডিএনএ ল্যাবরেটরী-(ক) যথোপযুক্ত যোগ্যতাসম্পন্ন ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দ্বারা উহার কার্যক্রম পরিচালনা করিবে;(খ) ডিএনএ কার্যক্রমের গুণগত মান বজায় রাখিবে;(গ) উহার ভৌত অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা রাখিবে;(ঘ) ডিএনএ বিশ্লেষণের যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করিবে;(ঙ) উহার অধীন সংরক্ষিত তথ্যাদির নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা বজায় রাখিবার সুষ্ঠু পদ্ধতি অনুসরণ করিবে;(চ) উহার অধীন সম্পাদিত ডিএনএ বিশ্লেষণের জন্য এই আইন ও বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতি অনুসরণ করিবে; এবং(ছ) ডিএনএ পরীক্ষার কারিগরি মান বজায় রাখিবার জন্য যথাযথ যন্ত্রপাতি ব্যবহার করিবে।
১৬। (১) এই আইনের সুষ্ঠু বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সরকারকে যথাযথ পরামর্শ প্রদানের উদ্দেশ্যে, সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, একটি ফরেনসিক ডিএনএ ল্যাবরেটরী উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করিবে।(২) নিম্নবর্ণিত সদস্য সমন্বয়ে উপদেষ্টা পরিষদ গঠিত হইবে, যথা :-(ক) মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী, যিনি ইহার চেয়ারম্যানও হইবেন;(খ) মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, পদাধিকারবলে, যিনি ইহার ভাইস-চেয়ারম্যানও হইবেন;(গ) মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অন্যূন যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা;(ঘ) স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অন্যূন যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা;(ঙ) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অন্যূন যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা;(চ) লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের অন্যূন যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা;(ছ) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একজন মহা-পরিচালক;(জ) পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা;(ঝ) অ্যাটর্ণি জেনারেল কর্তৃক মনোনীত একজন ডেপুটি এটর্নী জেনারেল;(ঞ) আইন ও বিচার বিভাগ কর্তৃক মনোনীত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে নিয়োজিত একজন বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর;(ট) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রি ও মলিক্যুলার বায়োলজি বিভাগের চেয়ারম্যান;(ঠ) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ও বায়োটেকনোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান;(ড) ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান;(ঢ) ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব বায়োটেকনোলজি এর মহাপরিচালক;(ণ) ন্যাশনাল ফরেনসিক ডিএনএ প্রোফাইলিং ল্যাবরেটরী এর পরিচালক; এবং(ত) সরকার কর্তৃক মনোনীত সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পাণ্ডিত্যের অধিকারী ৩ (তিন) জন বিশিষ্ট নাগরিক।(৩) উপ-ধারা (২) এর দফা (ত) এর অধীন মনোনীত সদস্যগণ সরকার কর্তৃক নির্ধারিত মেয়াদে বহাল থাকিবেন।(৪) অধিদপ্তর, বা অধিদপ্তর গঠিত না হওয়া পর্যন্ত ধারা ২৩ এর অধীন গঠিত ডিএনএ ল্যাবরেটরী ব্যবস্থাপনা সেল, উপদেষ্টা পরিষদের কার্য সম্পাদনে সাচিবিক দায়িত্ব পালন করিবে।
২০। (১) এই আইনের উদ্দেশ্যে পূরণকল্পে, সরকার ‘‘ডিএনএ ল্যাবরেটরী ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর’’ নামে একটি অধিদপ্তর স্থাপন করিবে।(২) অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয় ঢাকায় অবস্থিত হইবে।(৩) অধিদপ্তর এই আইনের অধীন ডিএনএ ল্যাবরেটরী, জাতীয় ডিএনএ ডাটাবেইজ প্রতিষ্ঠা এবং তদ্সংক্রান্ত কার্যক্রম সমন্বয়, তত্ত্বাবধান ও পরিবীক্ষণসহ বিধি দ্বারা নির্ধারিত অন্যান্য কার্যাবলী সম্পাদন করিবে।
২১। (১) অধিদপ্তরের একজন মহাপরিচালক থাকিবেন।(২) মহাপরিচালক সরকার কর্তৃক নিযুক্ত হইবেন এবং তাঁহার চাকুরীর শর্তাদি সরকার কর্তৃক স্থিরীকৃত হইবে।(৩) মহাপরিচালকের পদ শূন্য হইলে, বা অনুপস্থিতিতে, অসুস্থতা বা অন্য কোন কারণে মহাপরিাচলক তাহার দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হইলে, শূন্য পদে নবনিযুক্ত মহাপরিচালক কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত বা মহাপরিচালক পুনরায় স্বীয় দায়িত্ব পালনে সমর্থ না হওয়া পর্যন্ত সরকার কর্তৃক নিযুক্ত কোন ব্যক্তি অস্থায়ীভাবে মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করিবেন।(৪) এই আইনের উদ্দেশ্যে পূরণকল্পে, মহাপরিচালকের ক্ষমতা ও কার্যাবলী বিধি ধারা নির্ধারিত হইবে।
২৩। (১) অধিদপ্তর স্থাপিত না হওয়া পর্যন্ত, এই আইনের সুষ্ঠু বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এর অধীন ‘‘ডিএনএ ল্যাবরেটরী ব্যবস্থাপনা সেল’’ নামে একটি সেল থাকিবে।(২) উক্ত সেলের গঠন, ক্ষমতা ও কার্যাবলী বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
২৪। (১) সরকার, ডিএনএ ল্যাবরেটরী কর্তৃক সম্পাদিত ডিএনএ প্রোফাইল সম্বলিত নিম্নবর্ণিত ইনডেক্সসমূহ সমন্বয়ে একটি জাতীয় ডিএনএ ডাটাবেইজ প্রতিষ্ঠা করিবে, যথা :-(ক) অপরাধস্থল ইনডেক্স;(খ) সাজাপ্রাপ্ত অপরাধী ইনডেক্স;(গ) অজ্ঞাত ব্যক্তিদের ইনডেক্স; এবং(ঘ) সরকার কর্তৃক সময় সময় নির্ধারিত অন্য কোন ইনডেক্স।(২) উপ-ধারা (১) এ বর্ণিত ইনডেক্সসমূহে ডিএনএ বিশ্লেষণের মাধ্যমে প্রাপ্ত ডিএনএ প্রোফাইল এবং ডিএনএ সংক্রান্ত অন্যান্য তথ্যাদি অন্তর্ভুক্ত থাকিবে।
২৭। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, ডিএনএ বিষয়ে আন্তর্জাতিক আইন প্রয়োগকারী সংস্থা বা অন্য কোন রাষ্ট্রের আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সহিত প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান, সমন্বয় সাধন এবং এতদ্সংশ্লিষ্ট তথ্য আদান-প্রদান করা যাইবে, এবং উক্ত উদ্দেশ্যে, প্রয়োজনে, আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত কোন প্রতিষ্ঠান বা নেটওয়ার্কের অন্তর্ভুক্ত হওয়া যাইবে।
২৮। যদি কোন ব্যক্তি অননুমোদিতভাবে ফরেনসিক ডিএনএ কার্যক্রম পরিচালনা করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির উক্ত কার্য হইবে একটি অপরাধ, এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ৫ (পাঁচ) বৎসর কারাদণ্ড, তবে ৩ (তিন) বৎসরের নিম্নে নহে, বা অনধিক ৩ (তিন) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
অননুমোদিতভাবে ডিএনএ সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ বা প্রকাশ বা ব্যবহার করিবার দণ্ড
২৯। এই আইন বা বিধির কোন বিধান লংঘন করিয়া যদি কোন ব্যক্তি ইচ্ছাকৃত বা উদ্দেশ্যমূলকভাবে,-(ক) অন্য কোন ব্যক্তির নিকট ডিএনএ সম্পর্কিত কোন তথ্য প্রকাশ করেন; বা(খ) ডিএনএ সম্পর্কিত কোন তথ্য সংগ্রহ করেন; বা(গ) ডিএনএ নমুনা বা ডিএনএ প্রোফাইল অন্য কোন ব্যক্তির নিকট হস্তান্তর বা প্রকাশ করেন,তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির উক্তরূপ কার্য হইবে একটি অপরাধ, এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ৩ (তিন) বৎসর কারাদণ্ড, তবে ২ (দুই) বৎসরের নিম্নে নহে, বা অনধিক ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ড, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
৩০। যদি কোন ব্যক্তি অসৎ উদ্দেশ্যে ডিএনএ নমুনা ধ্বংস, পরিবর্তন, দূষিত বা জাল করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির উক্তরূপ কার্য হইবে একটি অপরাধ, এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ১০ (দশ) বৎসর কারাদণ্ড, তবে ৩ (তিন) বৎসরের নিম্নে নহে, বা অনধিক ৫ (পাঁচ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
৩১। যদি কোন ব্যক্তি অননুমোদিতভাবে জাতীয় ডিএনএ ডাটাবেইজে প্রবেশ করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির উক্তরূপ কার্য হইবে একটি অপরাধ, এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ২ (দুই) বৎসর কারাদণ্ড, তবে ১ (এক) বৎসরের নিম্নে নহে, বা অনধিক ৩০ (ত্রিশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ড, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
৩২। (১) কোন কোম্পানী কর্তৃক এই আইনের অধীন কোন অপরাধ সংঘটনের ক্ষেত্রে, উক্ত অপরাধের সহিত প্রত্যক্ষ সংশ্লিষ্টতা রহিয়াছে কোম্পানীর এইরূপ প্রত্যেক পরিচালক, ম্যানেজার, সচিব, অংশীদার, কর্মকর্তা এবং কর্মচারী উক্ত অপরাধ সংঘটন করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবে, যদি না তিনি প্রমাণ করিতে পারেন যে, উক্ত অপরাধ তাহার অজ্ঞাতসারে হইয়াছে অথবা উক্ত অপরাধ রোধ করিবার জন্য তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা করিয়াছেন।(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত কোম্পানী আইনগত ব্যক্তিস্বত্বা বিশিষ্ট সংস্থা (Body Corporate) হইলে, উক্ত উপ-ধারায় উল্লিখিত ব্যক্তিকে অভিযুক্ত ও দোষী সাব্যস্ত করা ছাড়াও উক্ত কোম্পানীকে আলাদাভাবে একই কার্যধারায় অভিযুক্ত ও দোষী সাব্যস্ত করা যাইবে, তবে ফৌজদারী মামলায় উহার উপর সংশ্লিষ্ট বিধান অনুসারে কেবল অর্থদণ্ড আরোপ করা যাইবে।ব্যাখ্যা - এই ধারায়-(ক) ‘‘কোম্পানী’’ অর্থে কোন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, অংশীদারী কারবার, সমিতি, সংঘ বা সংঘঠনও অন্তর্ভুক্ত;(খ) বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে, ‘‘পরিচালক’’ অর্থে উহার কোন অংশীদার বা পরিচালনা বোর্ডের সদস্যও অন্তর্ভুক্ত।
৩৪। ধারা ৩০ এ বর্ণিত অপরাধসমূহ দায়রা আদালত কর্তৃক এবং ধারা ২৮, ২৯ ও ৩১ এ বর্ণিত অপরাধসমূহ একজন প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট বা মেট্রোপলিটান ম্যাজিস্ট্রেট আদালত কর্তৃক বিচার্য হইবে।
৩৫। ফৌজদারী কার্যবিধিতে ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, ধারা ২৮, ২৯ ও ৩১ এর অধীন অর্থদণ্ড আরোপের ক্ষেত্রে একজন প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট বা মেট্রোপলিটান ম্যাজিস্ট্রেট উক্ত ধারাসমূহে উল্লিখিত অর্থদণ্ড আরোপের আদেশ প্রদান করিতে পারিবেন।
৩৬। এই আইন বা বিধির বিধান অনুযায়ী ডিএনএ নমুনা সংগ্রহের জন্য কোন যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তি বা নির্ধারিত ব্যক্তির দায়িত্ব পালনে অবহেলার কারণে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা সম্ভব না হইলে বা ডিএনএ নমুনা বিনষ্ট হইয়া গেলে তাহার উক্তরূপ কার্য অদক্ষতা বা, ক্ষেত্রমত,অসদাচরণ হিসাবে চিহ্নিতক্রমে সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ তাহার বিরুদ্ধে শৃঙ্খলামূলক বা যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবে।
৩৮। কোন মামলার কার্যক্রমে এই আইনের অধীন প্রস্তুতকৃত ডিএনএ প্রোফাইল সম্বলিত কোন রিপোর্টে বর্ণিত মতামত প্রদানকারী ডিএনএ ল্যাবরেটরীর কোন কর্মকর্তা বা কোন যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিকে সাক্ষী হিসাবে আদালতে তলব না করিয়া ডিএনএ প্রোফাইল সম্বলিত রিপোর্টে বর্ণিত মতামত ঘটনার সাক্ষ্য-প্রমাণ হিসাবে আদালতের কার্যধারায় গ্রহণযোগ্য বলিয়া বিবেচনা করা যাইবে।
৪০। এই আইনের কোন বিধানের অস্পষ্টতার কারণে উহা কার্যকর করিবার ক্ষেত্রে কোন অসুবিধা দেখা দিলে, সরকার, এই আইনের অন্যান্য বিধানের সহিত সামঞ্জস্য রাখিয়া, সরকারি গেজেটে প্রকাশিত আদেশ দ্বারা, উক্ত বিধানের স্পষ্টীকরণ বা ব্যাখ্যা প্রদানপূর্বক উক্ত বিষয়ে করণীয় সম্পর্কে নির্দেশনা প্রদান করিতে পারিবে।
৪১। (১) এই আইন প্রবর্তনের পর সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের ইংরেজীতে অনূদিত একটি পাঠ প্রকাশ করিবে, যাহা এই আইনের অনুমোদিত ইংরেজী পাঠ (Authentic English Text) নামে অভিহিত হইবে।(২) বাংলা পাঠ ও ইংরেজী পাঠের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে বাংলা পাঠ প্রাধান্য পাইবে।