যেহেতু সংবিধান (পঞ্চদশ সংশোধন) আইন, ২০১১ (২০১১ সনের ১৪ নং আইন), অত:পর পঞ্চদশ সংশোধনী বলিয়া উল্লিখিত, দ্বারা সংবিধান (সপ্তম সংশোধন) আইন, ১৯৮৬ (১৯৮৬ সনের ১নং আইন) বিলুপ্তির ফলশ্রুতিতে ১৯৮২ সনের ২৪ মার্চ হইতে ১৯৮৬ সনের ১০ নভেম্বর পর্যন্ত সময়ের মধ্যে সামরিক ফরমান দ্বারা জারিকৃত অধ্যাদেশসমূহ, অতঃপর ‘‘উক্ত অধ্যাদেশসমূহ’’ বলিয়া উল্লিখিত, অনুমোদন ও সমর্থন (ratification and confirmation) সংক্রান্ত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের চতুর্থ তফসিলের ১৯ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত হওয়ায় উক্ত অধ্যাদেশসমূহের কার্যকারিতা লোপ পায়; এবংযেহেতু সিভিল আপীল নং ৪৮/২০১১ এ সুপ্রীম কোর্টের আপীল বিভাগ কর্তৃক প্রদত্ত রায়ে সামরিক আইনকে অসাংবিধানিক ঘোষণাপূর্বক উহার বৈধতা প্রদানকারী সংবিধান (সপ্তম সংশোধন) আইন, ১৯৮৬ (১৯৮৬ সনের ১নং আইন) বাতিল ঘোষিত হওয়ার ফলশ্রুতিতেও উক্ত অধ্যাদেশসমূহের কার্যকারিতা লোপ পায়; এবংযেহেতু উক্ত অধ্যাদেশসমূহ ও উহাদের অধীনে প্রণীত বিধি, প্রবিধান, উপ-আইন ইত্যাদি প্রজাতন্ত্রের কর্মের ধারাবাহিকতা, আইনের শাসন, জনগণের অর্জিত অধিকার সংরক্ষণ এবং বহাল ও অক্ষুণ্ণ রাখিবার নিমিত্ত, জনস্বার্থে, উক্ত অধ্যাদেশসমূহের কার্যকারিতা প্রদান আবশ্যক; এবংযেহেতু দীর্ঘসময় পূর্বে জারিকৃত উক্ত অধ্যাদেশসমূহ যাচাই-বাছাইপূর্বক যথানিয়মে নূতনভাবে আইন প্রণয়ন করা সময় সাপেক্ষ; এবংযেহেতু পঞ্চদশ সংশোধনী এবং সুপ্রীম কোর্টের আপীল বিভাগের প্রদত্ত রায়ের প্রেক্ষিতে সৃষ্ট আইনী শূন্যতা সমাধানকল্পে সংসদ অধিবেশনে না থাকাবস্থায় আশু ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় পরিস্থিতি বিদ্যমান ছিল বলিয়া রাষ্ট্রপতির নিকট প্রতীয়মান হওয়ায় তিনি ২১ জানুয়ারি, ২০১৩ তারিখে ২০১৩ সনের ২নং অধ্যাদেশ প্রণয়ন ও জারী করেন; এবংযেহেতু সংবিধানের ৯৩(২) অনুচ্ছেদের নির্দেশনা পূরণকল্পে উক্ত অধ্যাদেশসমূহের মধ্যে কতিপয় অধ্যাদেশ কার্যকর রাখিবার স্বার্থে ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ হইতে ১৯৮৬ সালের ১১ নভেম্বর তারিখ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে জারিকৃত কতিপয় অধ্যাদেশ কার্যকরকরণ (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১৩ (২০১৩ সনের ৭ নং আইন) প্রণীত হইয়াছে; এবংযেহেতু উক্ত অধ্যাদেশসমূহের আবশ্যকতা ও প্রাসঙ্গিকতা পর্যালোচনা করিয়া যে সকল অধ্যাদেশ আবশ্যক বিবেচিত হইবে সেইগুলি সকল ষ্টেক-হোল্ডার ও সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয়/বিভাগের মতামত গ্রহণ করিয়া প্রযোজ্য ক্ষেত্রে সংশোধন ও পরিমার্জনক্রমে বাংলা ভাষায় নূতন আইন প্রণয়ন করিবার জন্য সরকারের সিদ্ধান্ত রহিয়াছে; এবংযেহেতু সরকারের উপরিবর্ণিত সিদ্ধান্তের আলোকে Bangladesh Hotels and Restaurants Ordinance, 1982 (Ordinance No. LII of 1982) এর বিষয়বস্তু বিবেচনাক্রমে উহা পরিমার্জনপূর্বক নূতনভাবে আইন প্রণয়ন সমীচীন ও প্রয়োজন;সেহেতু এতদ্দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল:-
২। বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থী কোনো কিছু না থাকিলে, এই আইনে-(১) ‘‘অতিথি’’ অর্থ কোনো ব্যক্তি যিনি অর্থের বিনিময়ে কোনো হোটেলের আবাসন বা আবাসন ও খাদ্য এবং অন্যান্য সেবা গ্রহণ করেন;(২) ‘‘ক্রেতা’’ অর্থ কোনো ব্যক্তি যিনি অর্থের বিনিময়ে কোনো হোটেল বা রেস্তোরাঁর খাদ্য, পানীয়, বা অন্যান্য সেবা গ্রহণ করেন;(৩) ‘‘নির্ধারিত’’ অর্থ বিধি দ্বারা নির্ধারিত;(৪) ‘‘নিবন্ধক’’ অর্থ প্রত্যেক জেলার জেলা প্রশাসক;(৫) ‘‘নিবন্ধন সনদ’’ অর্থ ধারা ৮ এর অধীন ইস্যুকৃত নিবন্ধন সনদ;(৬) ‘‘নিয়ন্ত্রক’’ অর্থ ধারা ৪ এর অধীন নিয়ন্ত্রক হিসাবে দায়িত্বপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তা;(৭) ‘‘বিধি’’ অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি;(৮) ‘‘ব্যক্তি’’ অর্থে যে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান, কোম্পানী, অংশীদারী কারবার, ফার্ম বা অন্য কোনো সংস্থাও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;(৯) ‘‘মালিক’’ অর্থ হোটেল বা রেস্তোরাঁর স্বত্বাধিকারী, অংশীদার বা এমন কোনো পরিচালক, যিনি উক্ত হোটেল বা রেস্তোরাঁর মুনাফার অংশ প্রাপ্য হন;(১০) ‘‘রেস্তোরাঁ’’ অর্থ এমন একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান যেখানে অর্থের বিনিময়ে ৩০ (ত্রিশ) জন বা তদূর্ধ্ব ক্রেতা আসন গ্রহণপূর্বক মানসম্মত খাদ্য সেবা গ্রহণ করিতে পারে;(১১) ‘‘লাইসেন্স’’ অর্থ ধারা ১০ এর অধীন ইস্যুকৃত লাইসেন্স;(১২) ‘‘সেবা’’ অর্থ হোটেল বা রেস্তোরাঁ কর্তৃক প্রদত্ত যে কোনো সেবা;(১৩) ‘‘হোটেল’’ অর্থে অন্যূন ১০ (দশ) শয়নকক্ষ বিশিষ্ট কোনো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, যেখানে অর্থের বিনিময়ে অতিথিদের জন্য আবাসন, খাদ্য বা আবাসন ও খাদ্যসহ অন্যান্য সেবার ব্যবস্থা করা হয়, এবং গেষ্ট হাউজ, মোটেল, রিসোর্ট, রেষ্ট হাউজ, উহা যে নামেই অভিহিত হউক না কেন, ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে।
৪। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, নিম্নবর্ণিত ব্যক্তিগণ নিয়ন্ত্রক হিসাবে দায়িত্ব পালন করিবেন, যথা:-(ক) জেলা প্রশাসক; এবং(খ) সরকার কর্তৃক, সময় সময়, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, নিযুক্ত কর্মকর্তা।(২) উপ-ধারা (১) এর দফা (খ) এ উল্লিখিত নিয়ন্ত্রককে সহায়তা প্রদানের জন্য, সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মকর্তাকে উপ-নিয়ন্ত্রক ও সহকারী নিয়ন্ত্রক হিসাবে দায়িত্ব প্রদান করিতে পারিবে।
৫। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, নিয়ন্ত্রকের কার্যাবলী হইবে নিম্নরূপ, যথা:-(ক) ধারা ৪ এর-(অ) দফা (ক) এ উল্লিখিত নিয়ন্ত্রক কর্তৃক অনধিক দুই তারকামানের হোটেল ও সকল রেস্তোরাঁর,(আ) দফা (খ) এ উল্লিখিত নিয়ন্ত্রক কর্তৃক তিন ও তদূর্ধ্ব তারকামানের হোটেলের,লাইসেন্স ইস্যু, নবায়ন, স্থগিত, প্রত্যাহার বা বাতিলকরণ;(খ) সরকার কর্তৃক, সময় সময়, নির্দেশিত অন্যান্য কার্যাবলী সম্পাদন।
৬। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, নিয়ন্ত্রক, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, সেবার মান নিয়ন্ত্রণের জন্য হোটেল ও রেস্তোরাঁ নিয়মিত পরিদর্শন ও , প্রয়োজনে, তদন্ত করিতে পারিবেন।
৮। (১) কোনো ব্যক্তি হোটেল বা রেস্তোরাঁ পরিচালনা করিতে চাহিলে নির্ধারিত ফি ও পদ্ধতিতে নিবন্ধনের জন্য সংশ্লিষ্ট নিবন্ধকের নিকট আবেদন করিতে হইবে।(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন আবেদন প্রাপ্তির পর আবেদনে উল্লিখিত তথ্যাবলী পরীক্ষা-নিরীক্ষা করিয়া নিবন্ধক উহার সঠিকতা সম্পর্কে-(ক) নিশ্চিত হইলে নির্ধারিত সময়, পদ্ধতি ও ফরমে আবেদনকারীর অনুকূলে শর্তসহ নিবন্ধন সনদ ইস্যু করিবেন;(খ) নিশ্চিত না হইলে, আবেদন নামঞ্জুর করিবেন এবং কারণ লিপিবদ্ধ করিয়া, উক্তরূপ নামঞ্জুরের বিষয়টি সিদ্ধান্ত গ্রহণের অনধিক ৩০ (ত্রিশ) কার্য দিবসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট আবেদনকারীকে অবহিত করিবেন।
৯। (১) নিবন্ধন সনদ ইস্যুর তারিখ হইতে-(ক) হোটেলের ক্ষেত্রে, ২ (দুই) বৎসরের মধ্যে,(খ) রেস্তোরাঁর ক্ষেত্রে, ১ (এক) বৎসরের মধ্যে,হোটেল বা, ক্ষেত্রমত, রেস্তোরাঁর ব্যবসা আরম্ভ ও লাইসেন্স গ্রহণ করিতে হইবে।(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত সময়ের মধ্যে কোনো ব্যক্তি হোটেল বা রেস্তোরাঁর ব্যবসা আরম্ভ ও লাইসেন্স গ্রহণ করিতে ব্যর্থ হইলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিবন্ধন সনদ বাতিল হইয়া যাইবে।(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন কোনো নিবন্ধন সনদ বাতিল হইলে, ধারা ৮ এর উপ-ধারা (১) এর বিধান অনুসরণপূর্বক, নিবন্ধন সনদের জন্য পুনরায় আবেদন করা যাইবে।
১০। (১) প্রত্যেক মালিক নির্ধারিত পদ্ধতি ও ফি প্রদান সাপেক্ষে লাইসেন্সের জন্য নিয়ন্ত্রকের নিকট আবেদন করিবেন।(২) নিয়ন্ত্রক, ধারা ১১ এ উল্লিখিত লাইসেন্স প্রাপ্তির যোগ্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হইয়া এবং আবেদনে উল্লিখিত তথ্যাবলী পরীক্ষা ও প্রয়োজনীয় তদন্তপূর্বক,-(ক) সন্তুষ্ট হইলে, নির্ধারিত শর্তসাপেক্ষে, সংশ্লিষ্ট মালিক বরাবর লাইসেন্স ইস্যু করিবেন;(খ) সন্তুষ্ট না হইলে, লাইসেন্সের আবেদন নামঞ্জুর করিবেন এবং কারণ লিপিবদ্ধ করিয়া উক্তরূপ নামঞ্জুরের বিষয়টি সিদ্ধান্ত গ্রহণের অনধিক ৩০ (ত্রিশ) কার্য দিবসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট মালিককে অবহিত করিবেন।
১১। কোনো মালিক লাইসেন্স পাইবার যোগ্য বলিয়া বিবেচিত হইবেন না, যদি-(ক) হোটেল বা রেস্তোরাঁর ভবন কাঠামোগতভাবে নিরাপদ বা আগুন, বিদ্যুৎ অথবা গ্যাসজনিত দুর্ঘটনা হইতে পর্যাপ্ত পরিমাণে সুরক্ষিত না হয়;(খ) হোটেল বা রেস্তোরাঁর পরিবেশ স্বাস্থ্যসম্মত না হয় এবং অতিথি বা ক্রেতাগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা না হয়;(গ) নিবন্ধন সনদে যে সকল শর্তপূরণের বাধ্যবাধকতা রহিয়াছে উহা পূরণ করা না হয়;(ঘ) তিন বা তদুর্ধ্ব তারকামানের হোটেলের ক্ষেত্রে ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু করিবার পূর্বে সরকার কর্তৃক প্রদত্ত ছাড়পত্র (No Objection Certificate) গ্রহণ করা না হয়;(ঙ) ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে যে সকল কর্তৃপক্ষের অনুমোদন গ্রহণ ও শর্তপূরণের বাধ্যবাধকতা রহিয়াছে তাহা পূরণ করা না হয়;(চ) ব্যবসা পরিচালনার জন্য সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয় অনুমতি এবং এতদ্সংশ্লিষ্ট শর্তাদি পূরণ করা না হয়; এবং(ছ) বিধি দ্বারা নির্ধারিত অন্য কোনো শর্ত পূরণ করা না হয়।
১২। (১) লাইসেন্সের মেয়াদ হইবে তিন বৎসর এবং উহা নবায়নযোগ্য হইবে।(২) মেয়াদ উত্তীর্ণ হইবার পূর্বে নবায়নের জন্য নিয়ন্ত্রকের নিকট নির্ধারিত পদ্ধতি, ফরম ও ফি প্রদান সাপেক্ষে আবেদন করিতে হইবে।(৩) লাইসেন্সের মেয়াদ উত্তীর্ণ হইবার পূর্বে উহা নবায়নের জন্য আবেদন করিতে ব্যর্থ হইলে তজ্জন্য সংশ্লিষ্ট মালিক নির্ধারিত বিলম্ব ফি প্রদান সাপেক্ষে আবেদন করিতে পারিবেন।(৪) নিয়ন্ত্রক নির্ধারিত পদ্ধতিতে নবায়নের আবেদন মঞ্জুর বা নামঞ্জুর করিতে পারিবেন।(৫) কোন লাইসেন্স হারাইয়া বা পুড়িয়া বা বিনষ্ট হইয়া গেলে, সংশ্লিষ্ট মালিক নির্ধারিত পদ্ধতি ও ফি প্রদান সাপেক্ষে ডুপ্লিকেট লাইসেন্সের জন্য আবেদন করিলে নিয়ন্ত্রক তাহার বরাবর ডুপ্লিকেট লাইসেন্স ইস্যু করিবেন।(৬) উপ-ধারা (২) ও (৩) এর অধীন লাইসেন্স নবায়নের আবেদন মঞ্জুর বা নামঞ্জুরের আদেশ না হওয়া পর্যন্ত মালিক উহার ব্যবসা পরিচালনা করিতে পারিবেন।
১৩। (১) হোটেলের তারকামান, রেস্তোরাঁর শ্রেণিবিন্যাস এবং প্রদত্ত সুবিধা ও সেবার মানদণ্ড বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।(২) কোনো ব্যক্তি বা মালিক উপ-ধারা (১) এর অধীন নির্ধারিত মানদণ্ডের ব্যত্যয় করিতে পারিবেন না।
হোটেল বা রেস্তোরাঁর মালিকানা হস্তান্তরজনিত কারণে নূতন মালিকের লাইসেন্স গ্রহণ
১৪। (১) কোনো মালিক তাহার হোটেল বা রেস্তোরাঁর মালিকানা স্বত্ব, নিয়ন্ত্রককে অবহিতক্রমে, অন্য কোনো ব্যক্তির নিকট হস্তান্তর করিতে পারিবেন এবং উক্ত মালিককে তাহার বরাবরে ইস্যুকৃত নিবন্ধন সনদ ও লাইসেন্স নিয়ন্ত্রকের নিকট জমাদান করিতে হইবে।(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত কোনো হোটেল বা রেস্তোরাঁর হস্তান্তর গ্রহণকারী ব্যক্তিকে নির্ধারিত পদ্ধতি ও ফি প্রদান সাপেক্ষে নূতন লাইসেন্স গ্রহণ করিতে হইবে।
১৫। নিয়ন্ত্রক নিম্নবর্ণিত কারণে তিন তারকা বা তদূর্ধ্ব হোটেলের ২৫০ (দুইশত পঞ্চাশ) মিটারের মধ্যে অবস্থিত কোনো ব্যবসা, পেশা, কারবার অথবা শিল্প প্রতিষ্ঠান পরিচালনা নিষিদ্ধ করিতে পারিবেন, যদি উহা -(ক) অতিথি বা ক্রেতার স্বাস্থ্য ও সুরুচির (good taste) জন্য ক্ষতিকর এবং জীবন ও সম্পত্তির নিরাপত্তা হানিকর হয়; অথবা(খ) Penal Code, 1860 (Act No XLV of 1860) এর অধীন যে কোনো উপদ্রব হয়।
১৬। (১) এই আইনের অন্যান্য বিধানাবলী সাপেক্ষে, কোনো অতিথি সংশ্লিষ্ট হোটেলের বিধি-বিধান মানিয়া চলিয়া তাহার চাহিত সময় পর্যন্ত হোটেলের ন্যায্য ভাড়াসহ অন্যান্য কর প্রদান করিয়া অবস্থান করিতে থাকিলে বা অবস্থান করিবার ইচ্ছা ব্যক্ত করিলে তাহাকে অন্যায়ভাবে বা জোরপূর্বক কোন যুক্তিযুক্ত কারণ ব্যতিরেকে উচ্ছেদ করা বা সেবা প্রদানে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করা যাইবে না।(২) কোনো হোটেল বা রেস্তোরাঁতে যদি কোনো অতিথি বা ক্রেতার কোনো আচরণ উপদ্রবের সামিল অথবা অন্য কোনো অতিথি বা ক্রেতা বা কোনো ব্যক্তির বিরক্তির উৎস অথবা তাহাদের জন্য হুমকিস্বরূপ বা ভীতির সঞ্চার করে, অথবা তাহাদের জীবন বিপন্ন হইতে পারে এমন কোনো আচরণের জন্য দোষী সাব্যস্ত হন, তাহা হইলে উক্ত অতিথি বা ক্রেতাকে মালিক বা তাহার পক্ষে দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি উচ্ছেদ করিতে পারিবেনঃতবে শর্ত থাকে যে, কোনো অতিথি বা ক্রেতা কর্তৃক আশু শান্তিভঙ্গের বা কোনো অপরাধ সংঘটনের আশংকা করিবার যথার্থ কারণ থাকিলে উক্ত অতিথি বা ক্রেতাকে উক্ত কার্য করা হইতে বিরত করিবার জন্য মালিক বা তাহার পক্ষে দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি প্রয়োজনীয় শক্তি প্রয়োগ করিতে পারিবেন এবং ঘটনাটি অবিলম্বে সংশ্লিষ্ট থানাকে অবহিত করিবেন।(৩) উপ-ধারা (১) ও (২) এর অধীন আবাসন, খাদ্য ও অন্যান্য সেবা প্রদানে অস্বীকৃতি অথবা উচ্ছেদের কারণে, সংক্ষুব্ধ কোনো অতিথি বা ক্রেতা নিয়ন্ত্রকের নিকট অভিযোগ করিতে পারিবেন এবং নিয়ন্ত্রক নির্ধারিত পদ্ধতিতে সংক্ষিপ্ত তদন্ত অনুষ্ঠানের পর যথাযথ আদেশ প্রদান করিবেন।
১৭। (১) নিবন্ধক বা, ক্ষেত্রমত, নিয়ন্ত্রক নিম্নবর্ণিত কোনো কারণে উপযুক্ত তদন্ত ও শুনানীর সুযোগ প্রদান করিয়া কোনো হোটেল বা রেস্তোরাঁর নিবন্ধন সনদ বা লাইসেন্স স্থগিত বা বাতিল করিতে পারিবেন, যদি মালিক-(ক) অথবা তাহার পক্ষে দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি এই আইন বা বিধির কোনো বিধান লংঘন করেন;(খ) নিবন্ধন সনদ বা লাইসেন্সের কোনো শর্ত পালন করিতে অথবা তারকামানের সুবিধা-সেবা বজায় রাখিতে ব্যর্থ হন;(গ) নিয়ন্ত্রককে পূর্বে অবহিত না করিয়া সংশ্লিষ্ট হোটেল বা রেস্তোরাঁ সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে বন্ধ রাখেন বা মালিকানা হস্তান্তর করেন;(ঘ) হোটেলে অবস্থানরত বা আগত অতিথি বা ক্রেতার জীবন ও সম্পত্তির যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিত করিতে সামর্থ্য না হন অথবা ব্যর্থ হন;(ঙ) সরকার কর্তৃক, সময় সময়, প্রদত্ত নির্দেশ প্রতিপালনে ব্যর্থ হন।(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন কোনো নিবন্ধন সনদ বা লাইসেন্স স্থগিত বা বাতিল করা হইলে সংশ্লিষ্ট মালিক উহার হোটেল বা রেস্তোরাঁর কার্যক্রম বন্ধ রাখিবেন।(৩) উপ-ধারা (১) এর অধীন কোনো নিবন্ধন সনদ বা লাইসেন্স স্থগিত বা বাতিল করা হইলে, উক্ত স্থগিত বা বাতিল আদেশের তারিখ হইতে ৩০ (ত্রিশ) কার্য দিবসের মধ্যে কোনো মালিক নিবন্ধক বা, ক্ষেত্রমত, নিয়ন্ত্রকের নিকট পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন করিতে পারিবেন।(৪) নিবন্ধক বা, ক্ষেত্রমত, নিয়ন্ত্রক উপ-ধারা (৩) এর অধীন আবেদন প্রাপ্তির অনধিক ৬০ (ষাট) কার্য দিবসের মধ্যে উহা মঞ্জুর বা নামঞ্জুরের আদেশ প্রদান করিবেন।
১৮। (১) কোনো ব্যক্তি বা মালিক নিবন্ধক বা নিয়ন্ত্রক কর্তৃক প্রদত্ত কোনো আদেশ দ্বারা সংক্ষুব্ধ হইলে উক্তরূপ আদেশ প্রদানের ৩০ (ত্রিশ) কার্য দিবসের মধ্যে সরকার বরাবর আপিল করিতে পারিবেন।(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন আপিল প্রাপ্তির ৬০ (ষাট) কার্য দিবসের মধ্যে আপিল নিষ্পত্তি করিতে হইবে।(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন আপিলের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।
১৯। কোনো ব্যক্তি বা মালিক এই আইন বা তদ্ধীন প্রণীত বিধির কোনো বিধান লঙ্ঘন করিলে উহা এই আইনের অধীন অপরাধ বলিয়া গণ্য হইবে এবং তজ্জন্য তিনি অনূর্ধ্ব ৬ (ছয়) মাস বিনাশ্রম কারাদন্ড বা অনধিক ২ (দুই) লক্ষ টাকা অর্থদন্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হইবেন।
২০। কোনো কোম্পানী কর্তৃক এই আইনের অধীন কোনো অপরাধ সংঘটিত হইলে, উক্ত অপরাধের সহিত প্রত্যক্ষ সংশ্লিষ্টতা রহিয়াছে উক্ত কোম্পানীর এইরূপ পরিচালক, নির্বাহী কর্মকর্তা, ব্যবস্থাপক, সচিব, অন্য কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারী উক্ত অপরাধ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন, যদি না তিনি প্রমাণ করিতে পারেন যে, উক্ত অপরাধ তাহার অজ্ঞাতসারে সংঘটিত হইয়াছে এবং উহা রোধ করিবার জন্য তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা করিয়াছেন।ব্যাখ্যা- এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে-(ক) ‘‘কোম্পানী’’ অর্থে যে কোন সংস্থা, সংবিধিবদ্ধ হউক বা না হউক, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, অংশীদারী কারবার, সমিতি বা এক বা একাধিক ব্যক্তির সমন্বয়ে গঠিত সংগঠন বা সংস্থা অন্তর্ভুক্ত হইবে; এবং(খ) ‘‘পরিচালক’’ অর্থে উহার কোনো অংশীদার বা পরিচালনা বোর্ড, যে নামেই অভিহিত হউক না কেন, এর সদস্যও অন্তর্ভুক্ত হইবে।
২১। Code of Criminal Procedure, 1898 (Act No. V.of 1898) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের অধীন অপরাধসমূহ প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট বা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক বিচার্য হইবে।
২৫। (১) এই আইন কার্যকর হইবার পর সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের মূল বাংলা পাঠের ইংরেজিতে অনূদিত একটি নির্ভরযোগ্য পাঠ (Authentic English Text) প্রকাশ করিবে।(২) বাংলা ও ইংরেজি পাঠের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে বাংলা পাঠ প্রাধান্য পাইবে।
২৬। (১) Bangladesh Hotels and Restaurants Ordinance, 1982 (Ordinance No. LII of 1982) এতদ্দ্বারা রহিত করা হইল।(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন রহিতকরণ সত্ত্বেও রহিত Ordinance এর অধীন-(ক) কৃত কোনো কাজ, গৃহিত কোনো ব্যবস্থা, প্রদত্ত কোনো নিবন্ধন অথবা ইস্যুকৃত লাইসেন্স, জারিকৃত আদেশ বিজ্ঞপ্তি, প্রজ্ঞাপন বা নোটিশ এই আইনের অধীন কৃত, গৃহিত, প্রদত্ত, ইস্যুকৃত বা জারিকৃত বলিয়া গণ্য হইবে;(খ) চলমান কোনো কার্যক্রম এমনভাবে নিষ্পত্তি হইবে যেন উক্ত Ordinance রহিত হয় নাই; এবং(গ) প্রণীত বিধি এই আইনের বিধানাবলীর সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে, রহিত বা সংশোধিত না হওয়া পর্যন্ত বলবৎ থাকিবে।