যুব সংগঠনসমূহের কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে উহাদেরকে অধিকতর কার্যকর করিবার লক্ষ্যে যুব সংগঠনসমূহের নিবন্ধন এবং পরিচালনার জন্য বিধান প্রণয়নকল্পে প্রণীত আইন
যেহেতু যুব সংগঠনসমূহের কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে উহাদেরকে অধিকতর কার্যকর করিবার লক্ষ্যে যুব সংগঠনসমূহের নিবন্ধন এবং পরিচালনার জন্য বিধান করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;সেহেতু এতদ্দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল :-
১। (১) এই আইন যুব সংগঠন (নিবন্ধন এবং পরিচালনা) আইন, ২০১৫ নামে অভিহিত হইবে।(২) সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, যেই তারিখ নির্ধারণ করিবে সেই তারিখে এই আইন কার্যকর হইবে।* এস, আর, ও নং ১৯-আইন/২০১৭, তারিখঃ ২৪ জানুয়ারি, ২০১৭ ইং দ্বারা ৩০ মাঘ, ১৪২৩ বঙ্গাব্দ মোতাবেক ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ খ্রিস্টাব্দ উক্ত আইন কার্যকর হইয়াছে।
২। বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থী কোনো কিছু না থাকিলে, এই আইনে―(১) “জাতীয় যুব কাউন্সিল” অর্থ ধারা ১৩ এর অধীন গঠিত জাতীয় যুব কাউন্সিল;(২) “নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ” অর্থ যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কিংবা তদকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তা;(৩) “নিবন্ধন সনদ” অর্থ নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত সনদ;(৪) “নির্বাহী পরিষদ” অর্থ যুব সংগঠনের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী গঠিত নির্বাহী পরিষদ;(৫) “বিধি” অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি;(৬) “যুব” অর্থ জাতীয় যুবনীতি অনুযায়ী যুব হিসাবে নির্ধারিত বয়সসীমার বাংলাদেশের যে কোনো নাগরিক;(৭) “যুব কার্যক্রম” অর্থ যুব সংগঠন কর্তৃক পরিচালিত নিম্ন-বর্ণিত কার্যক্রম, যথা :-(ক) যুবদের শারীরিক, মানসিক ও নৈতিক বিকাশ, আর্থ-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অবস্থার উন্নয়ন এবং তাহাদের মধ্যে দেশের কল্যাণবোধ, প্রকৃতিপ্রেম ও মানবহিতৈষণা সৃষ্টিকরণ;(খ) কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে যুবদেরকে মঙ্গলকামী ও দক্ষ মানবসম্পদে পরিণতকরণ;(গ) দেহ, মন ও নৈতিকতা বিধ্বংসী কর্মকাণ্ড এবং সকল প্রকার সামাজিক ব্যাধি হইতে যুবদের সুরক্ষা ও পুনর্বাসন;(ঘ) দেশ, সমাজ, পরিবেশ ও মানবকল্যাণে স্বেচ্ছাধর্মী কার্যক্রম গ্রহণ; এবং(ঙ) জীবনমানের আধুনিকায়নে যুবদের অংশগ্রহণে উৎসাহিতকরণ ও তাহাদের মধ্যে নেতৃত্বগুণের বিকাশসাধন;(৮) “যুব সংগঠন” অর্থ যুব কার্যক্রম পরিচালনা করিবার উদ্দেশ্যে যুবদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত এমন সংগঠন যাহা অলাভজনক ও অরাজনৈতিক; এবং(৯) “সদস্য” অর্থ যুব সংগঠনের সাধারণ সদস্য।
৩।(১) আপাততঃ কার্যকর অন্য কোনো আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইন কার্যকর হইবার পর, উপ-ধারা (২) এর বিধান সাপেক্ষে এতদসংশ্লিষ্ট অন্য কোনো আইনের অধীন যুব সংগঠনের নিবন্ধন ও পরিচালনা করা যাইবে না।(২) উপ-ধারা (১) এর প্রাসঙ্গিকতাকে ক্ষুণ্ন না করিয়া অন্য কোনো আইনের অধীন নিবন্ধিত কোন সংগঠন বা সংস্থা যুব কার্যক্রম পরিচালনা করিতে ইচ্ছুক হইলে এই আইন কার্যকর হইবার তারিখ হইতে ৬ (ছয়) মাসের মধ্যে বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতি ও ফরমে নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের নিকট হইতে স্বীকৃতিপত্র গ্রহণ করিবে।(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন স্বীকৃতিপত্র প্রাপ্তির পর সংশ্লিষ্ট সংগঠন বা সংস্থার কার্যক্রম এই আইনের বিধানাবলি অনুসরণক্রমে পরিচালিত হইবে।
৪। (১) যুব সংগঠন নিবন্ধনের উদ্দেশ্যে বিধি দ্বারা নির্ধারিত ফরম, পদ্ধতি ও ফি প্রদান সাপেক্ষে নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করিতে হইবে।(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন আবেদন প্রাপ্তির পর নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ সন্তুষ্ট হইলে, আবেদন প্রাপ্তির ৬০ (ষাট) কার্যদিবসের মধ্যে উহা মঞ্জুর করতঃ বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতি ও ফরমে নিবন্ধন সনদ প্রদান করিবে অথবা নামঞ্জুরের কারণ উল্লেখপূর্বক উক্ত সিদ্ধান্ত অবিলম্বে আবেদনকারীকে লিখিতভাবে অবহিত করিবে:তবে শর্ত থাকে যে, বর্ণিত সময়সীমার মধ্যে নিবন্ধন সনদ প্রদান অথবা আবেদনকারীকে সিদ্ধান্ত অবহিত করা না হইলে, সংশ্লিষ্ট যুব সংগঠন নিবন্ধিত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন কোন আবেদন নামঞ্জুর করা হইলে আবেদনকারী উহা অবহিত হইবার তারিখ হইতে ৩০ (ত্রিশ) কার্যদিবসের মধ্যে সরকার বরাবর আপিল দায়ের করিতে পারিবে।(৪) উপ-ধারা (৩) অনুসারে দায়েরকৃত আপিল সরকার ৩০ (ত্রিশ) কার্যদিবসের মধ্যে নিষ্পত্তি করিবে এবং উহার সিদ্ধান্ত আবেদনকারী এবং নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরণ করিবে।(৫) উপ-ধারা (৪) এর অধীন সরকার কর্তৃক প্রদত্ত সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।
৫। (১) নিবন্ধন সনদ, বা ক্ষেত্রমত, স্বীকৃতিপত্র ব্যতিরেকে কোনো যুব সংগঠনের কার্যক্রম পরিচালনা করা যাইবে না :তবে শর্ত থাকে যে, কোনো যুব সংগঠনের নিবন্ধনের আবেদন নামঞ্জুর হইলে উক্ত আবেদন নামঞ্জুর হওয়ার তারিখ হইতে ৯০ (নব্বই) কর্মদিবস বা, ক্ষেত্রমত, ধারা ৪ এর উপ-ধারা (৩) এর অধীন কোনো আপিল দায়ের করা হইলে উহা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট সংগঠন উহার কার্যক্রম পরিচালনা করিতে পারিবে।(২) Bangladesh Bank Order, 1972 (P.O. 127 of 1972) এর Article 2(j) তে সংজ্ঞায়িত যে কোন Scheduled Bank এ যুবসংগঠনের নামে, গঠনতন্ত্র অনুযায়ী পরিচালনার জন্য, একটি একাউন্ট থাকিতে হইবে যাহাতে উহার সমুদয় অর্থ জমা হইবে।
৬। (১) যুব সংগঠন হিসাবে নিবন্ধিত হইতে হইলে সংগঠনের নিম্নবর্ণিত শর্তাবলি পূরণ করিতে হইবে, যথা :(ক) সদস্যগণকে যুব হইতে হইবে;(খ) যুব কার্যক্রমের সহিত সংশ্লিষ্টতা থাকিতে হইবে;(গ) নামের সাথে ‘যুব’ শব্দ সংযুক্ত থাকিতে হইবে;(ঘ) বিধি দ্বারা নির্ধারিত একটি গঠনতন্ত্র এবং উক্ত গঠনতন্ত্র অনুযায়ী গঠিত একটি নির্বাহী পরিষদ থাকিতে হইবে এবং, প্রয়োজনে, উহার একটি উপদেষ্টা পরিষদও থাকিতে পারিবে।(২) যুব সংগঠনের সদস্য সংখ্যা অন্যূন ২০ (বিশ) জন হইতে হইবে এবং নির্বাহী পরিষদের নির্বাচিত বা মনোনীত সদস্য সংখ্যা অন্যূন ৭(সাত) এবং অনধিক ১১(এগার) জন হইবে।
৮। মিথ্যা তথ্যের উপর ভিত্তি করিয়া অথবা তথ্য গোপন করিয়া কোনো যুব সংগঠন নিবন্ধিত হইয়াছে বলিয়া নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রতীয়মান হইলে নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ প্রদান করিয়া, উহার নিবন্ধন বাতিল করিতে পারিবে।
৯। (১) নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ, লিখিত আদেশ দ্বারা, নিম্নবর্ণিত ক্ষেত্রে যুব সংগঠনের নির্বাহী পরিষদ বাতিল করিতে পারিবে, যথা:-(ক) নিবন্ধন সনদ বা, ক্ষেত্রমত, স্বীকৃতিপত্রের শর্ত ভঙ্গ করা হইয়াছে বলিয়া প্রমাণিত হইলে; অথবা(খ) যুব সংগঠনের জন্য আর্থিকভাবে ক্ষতিকর কোনো কার্য বা আর্থিক অনিয়ম প্রমাণিত হইলে;(২) উপ-ধারা (১) এর বিধান অনুসারে নির্বাহী পরিষদ বাতিল করা হইলে, নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ বাতিলকরণ আদেশ জারির ৩০ (ত্রিশ) কর্মদিবসের মধ্যে যুব সংগঠনের অন্যান্য সদস্যদের মধ্য হইতে অনধিক ৫(পাঁচ) সদস্যবিশিষ্ট একটি অন্তর্বর্তীকালীন কমিটি গঠন করিবে এবং কমিটি গঠনতন্ত্রে উল্লিখিত নির্বাহী পরিষদের দায়িত্ব পালন করিবে।(৩) উপ-ধারা (১) অনুসারে বাতিলকরণ আদেশ প্রাপ্তির ৩০(ত্রিশ) কার্য দিবসের মধ্যে উহার বিরুদ্ধে বাতিলকৃত নির্বাহী পরিষদের কোনো সদস্য সরকার বরাবর আপিল করিতে পারিবেন।(৪) উপ-ধারা (৩) অনুসারে দায়েরকৃত আপিল সরকার ৬০ (ষাট) কার্যদিবসের মধ্যে নিষ্পত্তি করিবে এবং আপিল নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে সরকারের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।(৫) উপ-ধারা (৪) অনুসারে সরকার আপিল নিষ্পত্তিকালে নির্বাহী পরিষদ বাতিল সংক্রান্ত নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত বহাল রাখিলে উক্ত সিদ্ধান্ত প্রাপ্তির অনধিক ৪ (চার) মাসের মধ্যে উপ-ধারা (২) এর অধীন গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন কমিটিকে বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে সংশ্লিষ্ট যুব সংগঠনের নির্বাহী পরিষদের নির্বাচন সম্পন্ন করিতে হইবে :তবে শর্ত থাকে যে, উক্তরূপ সময়সীমার মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করিতে ব্যর্থ হইলে অন্তবর্তীকালীন কমিটি, যুক্তিসঙ্গত কারণ সাপেক্ষে, নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে পরবর্তী ২ (দুই) মাসের মধ্যে নির্বাহী পরিষদের নির্বাচন সম্পন্ন করিতে পারিবে।
১০। (১) যদি নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের এইরূপ বিশ্বাস করিবার যুক্তিসঙ্গত কারণ থাকে যে, কোন যুব সংগঠন-(ক) এই আইন বা বিধির পরিপন্থী কার্যক্রম পরিচালনা করিতেছে; বা(খ) উহার গঠনতন্ত্র, রাষ্ট্র বা জনস্বার্থের পরিপন্থী কার্যক্রম পরিচালনা করিতেছে;তাহা হইলে নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, সংশ্লিষ্ট যুব সংগঠনকে, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ প্রদান করতঃ তদ্কর্তৃক প্রদত্ত বক্তব্য বা তথ্যে সন্তুষ্ট না হইলে, সামগ্রিক বিষয়ের উপর ভিত্তি করিয়া সরকারের নিকট একটি প্রতিবেদন পেশ করিবে।(২) সরকার, উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রতিবেদন প্রাপ্তির পর, যুক্তিযুক্ত মনে করিলে, সংশ্লিষ্ট যুব সংগঠন বিলুপ্তির আদেশ প্রদান করিতে পারিবে এবং উক্ত আদেশ প্রদানের তারিখ হইতে যুব সংগঠনটি বিলুপ্ত হইবে।
১১। (১) যুব সংগঠনের বিশেষ সাধারণ সভায় উপস্থিত সদস্যদের তিন- চতুর্থাংশ সদস্যের সিদ্ধান্ত অনুসারে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের নিকট স্বেচ্ছা অবসায়নের জন্য আবেদন করা যাইবে।(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত আবেদনের সত্যতা যাচাই করিয়া নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ সন্ত্তষ্ট হইলে যুব সংগঠনটির অবসায়নের আদেশ প্রদান করিবে।
অবসায়ক নিয়োগ, নির্বাহী পরিষদ অকার্যকর করা, ইত্যাদি
১২। (১) কোন যুব সংগঠনের ক্ষেত্রে ধারা ১০ এর অধীন বিলুপ্তি বা ধারা ১১ এর অধীন স্বেচ্ছা অবসায়নের আদেশ প্রদান করা হইলে, নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ কোন ব্যক্তিকে সংশ্লিষ্ট যুব সংগঠনের অবসায়ক নিয়োগ করিবেন এবং উক্ত ব্যক্তিকে অপসারণ করিতে, তাহার স্থলে অন্য কোন ব্যক্তিকে নিয়োগ করিতে এবং অবসায়ন কার্যক্রম চলাকালে অবসায়কের নিকট হইতে অন্তবর্তী রিপোর্ট চাহিতে পারিবেন।(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন অবসায়ক নিয়োগ করা হইলে সংশ্লিষ্ট যুব সংগঠনের নির্বাহী পরিষদ স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হইবে।(৩) অবসায়ক উপ-ধারা (১) এর অধীন তাহার নিয়োগের তারিখ হইতে সংগঠনের সমস্ত সম্পদ, যে কোন সামগ্রী, রেকর্ডপত্র, ইত্যাদি অবিলম্বে তাহার অধিকার ও দখলে আনিবে এবং সংগঠনের বিরুদ্ধে উত্থাপিত লিখিত দাবী গ্রহণ করিবে।(৪) অবসায়ক, বিধি সাপেক্ষে, নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের সহিত পরামর্শক্রমে, নিম্নবর্ণিত যে কোন কার্য করিতে এবং প্রয়োজনীয় আদেশ বা নির্দেশ দিতে পারিবেন, যথা :―(ক) সংগঠনের পক্ষে বা বিপক্ষে, মামলা দায়ের ও পরিচালনা ও অন্যান্য আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা;(খ) অন্য কোন ব্যক্তি বা সংগঠনের সহিত বিদ্যমান বিরোধ আপোষ বা মীমাংসার ব্যবস্থা করা;(গ) অবসায়নের ব্যয় নির্ধারণ করা এবং যুব সংগঠনের পরিসম্পদ পর্যাপ্ত না হইলে উক্ত ব্যয় নির্বাহের উদ্দেশ্যে সদস্যদের দায়-দায়িত্ব নির্ধারণ করা; এবং(ঘ) যুব সংগঠনের বিরুদ্ধে উত্থাপিত দাবি তদন্ত করা, উহার সম্পদ আদায়, সংগ্রহ ও বন্টন সম্পর্কে বিবেচনামত প্রয়োজনীয় নির্দেশ প্রদান করা।(৫) উপ-ধারা (৪) এর সামগ্রিকতাকে ক্ষুণ্ন না করিয়া নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ, এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, নিম্নবর্ণিত আদেশ প্রদান করিতে পারিবে, যথা:―(ক) যে তফসিলি ব্যাংক বা, ক্ষেত্রমত, ব্যক্তির নিকট সংশ্লিষ্ট যুব সংগঠনের তহবিল, আমানত বা অন্যান্য সম্পত্তি রহিয়াছে, সেই ব্যাংক বা ব্যক্তিকে, সরকারের পূর্বানুমতি ব্যতিরেকে, উক্ত তহবিল হইতে অর্থ উত্তোলন, আমানত বা সম্পত্তি অন্যত্র স্থানান্তর না করিবার; এবং(খ) যুব সংগঠনের দেনা পরিশোধ করিবার পর কোন অর্থ, আমানত ও সম্পদ অবশিষ্ট থাকিলে উহা সরকারের অনুমোদনক্রমে, এই আইনের অধীন নিবন্ধনকৃত বা স্বীকৃতিপত্র প্রাপ্ত অন্য এক বা একাধিক যুব সংগঠনের মধ্যে বন্টন বা অন্যভাবে নিষ্পত্তি করিবার।
১৩। জাতীয় পর্যায়ে যুব সংগঠনসমূহের উন্নয়নে পৃষ্ঠপোষকতা দান এবং উহাদের কার্যক্রম সমন্বয় করিবার জন্য সরকার জাতীয় যুব কাউন্সিল নামে একটি কাউন্সিল গঠন করিবে এবং উহার কাঠামো, কার্যপদ্ধতি ও ব্যবস্থাপনাসহ আনুষঙ্গিক বিষয়াদি বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
নিবন্ধন সনদ বা স্বীকৃতিপত্র ব্যতিরেকে যুবসংগঠন পরিচালনার দণ্ড
১৪।যদি কোন ব্যক্তি ধারা ৫ (১) এর বিধান লঙ্ঘন করিয়া, নিবন্ধন সনদ, বা ক্ষেত্রমত, স্বীকৃতিপত্র ব্যতিরেকে কোনো যুব কার্যক্রম পরিচালনা করেন, তাহা হইলে তিনি অনধিক ৬ (ছয়) মাস কারাদণ্ড অথবা অনধিক ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
মিথ্যা তথ্য প্রদান, ব্যক্তিগত বা রাজনৈতিক দলীয় স্বার্থে সংগঠনের ব্যবহার, ইত্যাদির দণ্ড
১৫। যুব সংগঠনের কোন সদস্য-(ক) নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের নিকট পেশকৃত কোন প্রতিবেদনে অথবা সর্বসাধারণের অবগতির জন্য প্রকাশিত তথ্যে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বা জ্ঞাতসারে মিথ্যা বা প্রতারণার আশ্রয় গ্রহণ করিয়া থাকিলে;(খ) ব্যক্তি বা রাজনৈতিক দলীয় স্বার্থে যুব সংগঠন অথবা উহার অর্থ বা অন্য কোন সম্পদ ব্যবহার করিলে; বা(গ) নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক গৃহীত কোন পদক্ষেপে হস্তক্ষেপ বা বাধার সৃষ্টি করিলে বা তদকর্তৃক যাচিত তথ্য প্রদান করিতে অস্বীকার করিলেউহা অপরাধ হিসাবে গণ্য হইবে এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ৬ (ছয়) মাস কারাদণ্ড অথবা অনধিক ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
১৬। কোনো আদালত, নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ বা তদকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তার লিখিত অভিযোগ ব্যতীত, এই আইনের অধীন সংঘটিত কোনো অপরাধ বিচারার্থে গ্রহণ করিবে না।
১৭। Code of Criminal Procedure, 1898 (Act No. V of 1898) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের অধীন অপরাধসমূহ প্রথম শ্রেণির জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা, ক্ষেত্রমত, মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক বিচার্য হইবে এবং দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিকে এই আইনে অনুমোদিত যে কোন দণ্ড আরোপ করা যাইবে।
১৮। (১) প্রত্যেক যুব সংগঠন যথাযথভাবে উহার হিসাবরক্ষণ করিবে এবং হিসাবের বার্ষিক বিবরণী প্রস্তুত করিবে।(২) বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে প্রতি বৎসর সংগঠনের হিসাব নিরীক্ষা করিতে হইবে এবং নিরীক্ষা প্রতিবেদনের একটি অনুলিপি নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের নিকট পেশ করিতে হইবে।(৩) নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ যে কোন সময়ে যুব সংগঠনের হিসাব ও নথিপত্র, নগদ অর্থ, অন্যান্য সম্পত্তি এবং তদসংক্রান্ত সকল দলিল পরীক্ষা-নিরীক্ষা করিতে পারিবে।
২০। এই আইনের কোন বিধান কার্যকর করিবার ক্ষেত্রে কোন অস্পষ্টতা দেখা দিলে সরকার, লিখিত আদেশ দ্বারা, এই আইনের বিধানাবলির সহিত সঙ্গতিপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে, উক্তরূপ অস্পষ্টতা দূর করিতে পারিবে।