যেহেতু বাংলাদেশের সামুদ্রিক এলাকা এবং কতিপয় অন্যান্য জলসীমা এবং উপকূলীয় অঞ্চলের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং ঐ সকল এলাকায় জাতীয় স্বার্থ সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে বিধান করা সমীচীন ও প্রয়োজন;সেহেতু এতদ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল :-
২৷ বিষয় বা প্রসংগের পরিপন্থী কোন কিছু না থাকিলে, এই আইনে-(ক) “অধিদপ্তর” অর্থ ধারা ৪ এ উল্লিখিত কোষ্ট গার্ড অধিদপ্তর;(খ) “এখতিয়ারভুক্ত এলাকা” অর্থ বাংলাদেশের জলসীমা এবং সরকার কর্তৃক, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, নির্ধারিত জলসীমা-সন্নিহিত স্থলভাগ;(গ) “জলসীমা” অর্থ বাংলাদেশের সামুদ্রিক এলাকা এবং সরকার কর্তৃক, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, নির্ধারিত অন্যান্য জল এলাকা;(ঘ) ”প্রবিধান” অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত প্রবিধান;(ঙ) “বাহিনী” অর্থ ধারা ৫ এর অধীনে গঠিত কোষ্ট গার্ড বাহিনী;(চ) “বিধি” অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি;(ছ) “মহা-পরিচালক” অর্থ অধিদপ্তরের মহা-পরিচালক;(জ) “সমুদ্র সীমা” অর্থ Territorial Waters and Maritime Zones Act, 1974 (XXVI of 1974) এর অধীনে ঘোষিত territorial waters;(ঝ) “সামুদ্রিক এলাকা” অর্থ দফা (জ) উল্লিখিত Act এ বর্ণিত বা তদ্ধীনে ঘোষিত territorial waters, contiguous zone, continental shelf conservation zone এবং economic zone৷
৪৷ (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে কোষ্ট গার্ড অধিদপ্তর নামে একটি অধিদপ্তর থাকিবে৷(২) অধিদপ্তরের একজন মহা-পরিচালক থাকিবে; তিনি সরকার কর্তৃক নিযুক্ত হইবেন এবং তাহার চাকুরীর শর্তাবলী সরকার কর্তৃক স্থিরীকৃত হইবে৷(৩) এই আইনের অধীন মহা-পরিচালকের ক্ষমতা প্রয়োগ ও দায়িত্ব পালনের ব্যাপারে তাহাকে সহায়তা করার জন্য-(ক) সরকার প্রয়োজনীয় সংখ্যক পরিচালক ও উপ-পরিচালকসহ অন্যান্য কর্মকর্তা নিয়োগ করিবে;(খ) মহা-পরিচালক প্রয়োজনীয় সংখ্যক অন্যান্য কর্মচারী নিয়োগ করিবেন৷(৪) উপ-ধারা (৩) এ উল্লিখিত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের চাকুরীর শর্তাবলী সরকার কর্তৃক স্থিরীকৃত হইবে৷
৫৷ (১) এই আইনের বিধান অনুযায়ী কোষ্ট গার্ড নামে একটি বাহিনী গঠন করা হইবে৷(২) বাহিনীর বিভিন্ন পদের শ্রেণীবিন্যাস এবং উক্ত পদসমূহের সংখ্যা সরকার কর্তৃক সময় সময় নির্ধারিত হইবে৷(৩) উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিত পদসমূহে বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে নিয়োগ দান করা হইবে:তবে শর্ত থাকে যে, উক্তরূপ বিধি প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত, উক্ত পদসমূহে প্রতিরক্ষা কর্ম বিভাগ বা সংবিধানের ১৫২ অনুচ্ছেদে সংজ্ঞায়িত অন্য কোন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যগণকে প্রেষণে নিয়োগ করা যাইবে৷
৬৷ বাহিনী সরকারের সার্বিক তত্ত্বাবধানে থাকিবে, এবং এই আইন, বিধি, প্রবিধান এবং উহাদের সহিত সংগতিপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে, সরকার কর্তৃক সময় সময় প্রদত্ত আদেশ ও নির্দেশ অনুসারে মহা-পরিচালক বাহিনী পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ করিবেন৷
৭৷ (১) উপ-ধারা (২) এর বিধান সাপেক্ষে, বাহিনীর কার্যাবলী হইবে নিম্নরূপ, যথা:-(ক) বাংলাদেশের জলসীমায় জাতীয় স্বার্থ সংরক্ষণ করা;(খ) বাংলাদেশের সামুদ্রিক এলাকায় অবৈধভাবে মত্স্য আহরণ প্রতিরোধ করা;(গ) বাংলাদেশের জলসীমা দিয়া বাংলাদেশে অবৈধ অনুপ্রবেশ বা বাংলাদেশ হইতে অবৈধ গমন প্রতিরোধ করা;(ঘ) বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় (Territorial Waters) আগত কোন নৌযান বা উহাতে অবস্থানরত ব্যক্তির ব্যাপারে আদালত বা অন্যবিধ কর্তৃপক্ষের পরোয়ানা বা অন্য কোন আদেশ বলবত্ করা;(ঙ) বাংলাদেশের জলসীমায় পরিবেশ দূষণকারী কার্যকলাপ অনুসন্ধান এবং উহা প্রতিরোধের ব্যবস্থা করা;(চ) বাংলাদেশের জলসীমায় কর্মরত ব্যক্তিগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা;(ছ) মাদকদ্রব্য পাচার এবং চোরাচালান প্রতিরোধ করা;(জ) প্রাকৃতিক দূর্যোগকালে ত্রাণ ও উদ্ধারকার্যে অংশগ্রহণ করা এবং দূর্ঘটনা কবলিত নৌযান, মানুষ এবং মালামাল উদ্ধার করা;(ঝ) প্রাকৃতিক দূর্যোগকালে সতর্কবাণীসহ অন্যান্য তথ্য বেতার বা অন্য কোন মাধ্যমে প্রচারের ব্যবস্থা করা;(ঞ) যুদ্ধকালীন সময়ে নৌ-বাহিনীকে সহায়তা করা;(ট) বাংলাদেশের জলসীমায় টহল দেওয়া;(ঠ) সমুদ্র বন্দরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সহায়তা করা;(ড) বাংলাদেশের জলসীমায় সংঘটিত নাশকতামূলক ও সন্ত্রাসমূলক কার্যকলাপ দমন করা, এবং এতদুদ্দেশ্যে অন্যান্য কর্তৃপক্ষকে সহায়তা করা;(ঢ) সরকার কর্তৃক নির্দেশিত অন্যান্য দায়িত্ব সম্পাদন৷(২) বাহিনী উহার এখতিয়ারভুক্ত এলাকায় উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত কার্যকলাপ সম্পাদন করিবে৷
৮৷ ধারা ৭ এ উল্লিখিত কার্যাবলী সম্পাদন এবং বাহিনীর পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণকল্পে মহা-পরিচালক বাহিনীর সদস্যগণের দায়িত্ব সুনির্দিষ্টভাবে নির্ধারণ করিতে পারিবেন৷
৯৷ (১) বাহিনীর প্রত্যেক সদস্য মহা-পরিচালক এবং উক্ত সদস্যের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের যে কোন আইনানুগ আদেশ পালন করিতে বাধ্য থাকিবেন৷(২) বাহিনীর সদস্যগণের শৃংখলা সংক্রান্ত সকল বিষয় বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে:তবে শর্ত থাকে যে, উক্তরূপ বিধি প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত বাহিনী-সদস্যগণের শৃংখলাজনিত বিষয়ে Bangladesh Rifles Order, 1972 (P. O. No. 148 of 1972) এর বিধানাবলী, যতদূর সম্ভব প্রযোজ্য হইবে:আরও শর্ত থাকে যে, বাহিনীতে ধারা ৫ এর অধীনে কোন শৃংখলা বাহিনী হইতে কোন ব্যক্তি প্রেষণে নিযুক্ত হইলে, তাহার ক্ষেত্রে উক্ত শৃংখলা বাহিনী গঠনকারী আইনের বিধানাবলী প্রযোজ্য হইবে৷
১০৷ (১) সরকার, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, নির্দেশ দিতে পারিবে যে, উক্ত প্রজ্ঞাপনে বিনির্দিষ্ট শর্ত ও সীমা সাপেক্ষে, বাহিনীর এখতিয়ারভুক্ত এলাকায় উহার কোন নির্দিষ্ট সদস্য বা কোন নির্দিষ্ট শ্রেণীর সকল সদস্য-(ক) Passport Act, 1920 (XXXIX of 1920), Registration of Foreigners Act, 1939 (XVI of 1939), Foreigners Act, 1946 (XXXIX of 1946), Foreign Exchange Regulation Act, 1947 (VII of 1947), Bangladesh Control of Entry Act, 1952 (LV of 1952), Customs Act, 1969 (IV of 1969), Territoral Waters and Maritime Zones Act, 1974 (XXVI of 1974), Emigration Ordinance, 1982 (Ord. XXIX of 1982), মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ১৯৯০ (১৯৯০ সনের ২০ নং আইন) অথবা উক্ত প্রজ্ঞাপনে উল্লিখিত অন্য কোন আইনের অধীন কোন অপরাধ, এবং(খ) দফা (ক) তে উল্লিখিত কোন আইনের অধীন অপরাধ সংঘটনকারী ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার, উক্ত অপরাধ সম্পর্কিত মালামাল আটক, উক্ত অপরাধ সংঘটিত হইয়াছে বা উহা সংঘটিত হইয়াছে মর্মে বিশ্বাস করার যুক্তিসংগত কারণ আছে এইরূপ কোন স্থানে বা কোন যানে প্রবেশ, তল্লাশী বা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির দেহ বা মালামাল তল্লাশী;এর ব্যাপারে ঐ সকল আইনে উল্লিখিত কোন কর্তৃপক্ষের বা পুলিশ বাহিনীর কোন নির্দিষ্ট স্তরের সদস্য কর্তৃক প্রয়োগযোগ্য কোন নির্দিষ্ট বা সকল ক্ষমতা প্রয়োগ করিতে পারিবেন৷
১১৷ বাহিনীর কোন সদস্য কোন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার বা কোন মালামাল বা অন্য কোন কিছু আটক করিলে, গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিকে বা আটককৃত মালামাল বা অন্য কোন কিছু-(ক) সামুদ্রিক এলাকায় উক্ত গ্রেপ্তার বা আটকের ক্ষেত্রে, সংশ্লিষ্ট আইনে উল্লিখিত কর্তৃপক্ষ এবং উক্ত আইনে এইরূপ কোন কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত না থাকিলে নিকটবর্তী থানা কর্তৃপক্ষ এর হেফাজতে সোপর্দ করিবেন৷(খ) বাহিনীর এখতিয়ারভুক্ত অন্য কোন এলাকায় উক্ত গ্রেপ্তার বা আটকের ক্ষেত্রে, সংশ্লিষ্ট আইনে উল্লিখিত কর্তৃপক্ষ এবং উক্ত আইনে এইরূপে কোন কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত না থাকিলে, উক্ত গ্রেপ্তার-স্থান বা আটক-স্থানের উপর এখতিয়ার সম্পন্ন থানা কর্তৃপক্ষ এর হেফাজতে সোপর্দ করিবেন৷
১২৷ মহা-পরিচালক এই আইন, বিধি বা প্রবিধানের অধীন তাহার কোন ক্ষমতা বা দায়িত্ব, লিখিত আদেশ দ্বারা, অধিদপ্তরের যে কোন কর্মকর্তা বা বাহিনীর কোন সদস্যকে অর্পণ করিতে পারিবেন৷
১৪৷ এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে মহা-পরিচালক, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে এবং সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইন বা বিধির সহিত অসংগতিপূর্ণ নহে এইরূপ প্রবিধান করিতে পারিবেন৷
১৫৷ এই আইন, তদধীন প্রণীত বিধি বা প্রবিধান বা প্রদত্ত কোন আদেশ বা নির্দেশের অধীনে সরল বিশ্বাসে কৃত কোন কাজকর্মের ফলে কোন ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হইলে বা হওয়ার সম্ভাবনা থাকিলে সরকার, মহা-পরিচালক বা অধিদপ্তরের কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারী বা কোন সদস্য বা তাহাদের আদেশ বা নির্দেশ পালনকারী ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোন ধরনের মামলা বা অন্যবিধ আইনগত কার্যধারা কোন আদালতে গ্রহণ করা হইবে না৷