যেহেতু মহানগরী, বিভাগীয় শহর ও জেলা শহরের পৌর এলাকাসহ দেশের সকল পৌর এলাকার খেলার মাঠ, উন্মুক্ত স্থান, উদ্যান এবং প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণের জন্য বিধান করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;সেহেতু এতদ্দ্বারা নিম্্নরূপ আইন করা হইল:-
২৷ বিষয় বা প্রসংগের পরিপন্থী কোন কিছু না থাকিলে, এই আইনে,-(ক) “উদ্যান” অর্থ মাষ্টার প্লানে বা ভূমি জরিপ নক্সায় উদ্যান বা পার্ক হিসাবে চিহ্নিত বা সরকার কর্তৃক, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, উদ্যান বা পার্ক হিসাবে ঘোষিত কোন স্থান;(খ) “উন্মুক্ত স্থান” অর্থ মাষ্টার প্লানে উন্মুক্ত স্থান হিসাবে চিহ্নিত বা সরকার কর্তৃক, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, উন্মুক্ত স্থান হিসাবে ঘোষিত এমন স্থান যাহা দীর্ঘদিন হইতে ঈদগাহ বা অন্য কোনভাবে জনসাধারণ কর্তৃক ব্যবহার হইয়া আসিতেছে;(গ) “কর্তৃপক্ষ” অর্থ রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এবং আপাততঃ বলবত্ অন্য কোন আইনের অধীন প্রতিষ্ঠিত কোন শহর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, সিটি কর্পোরেশন এবং বিভাগীয় ও জেলা শহরের পৌরসভাসহ দেশের সকল পৌরসভা;(ঘ) “খেলার মাঠ” অর্থ খেলাধুলা বা ক্রীড়া নৈপূণ্য প্রদর্শনের জন্য মাষ্টার প্লানে খেলার মাঠ হিসাবে চিহ্নিত জায়গা;(ঙ) “নির্ধারিত” অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি দ্বারা নির্ধারিত;(চ) “প্রাকৃতিক জলাধার” অর্থ নদী, খাল, বিল, দীঘি, ঝর্ণা বা জলাশয় হিসাবে মাষ্টার প্লানে চিহ্নিত বা সরকার, স্থানীয় সরকার বা কোন সংস্থা কর্তৃক, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বন্যা প্রবাহ এলাকা হিসাবে ঘোষিত কোন জায়গা এবং সলল পানি এবং বৃষ্টির পানি ধারণ করে এমন কোন ভূমিও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;(ছ) “মাষ্টার প্লান” অর্থ রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এবং অন কোন শহর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বা বিভাগীয় ও জেলা শহরসহ সকল পৌরসভা প্রতিষ্ঠাকারী আইনের অধীন প্রণীত মাষ্টার প্লান;(জ) “শ্রেণী পরিবর্তন” অর্থ মাষ্টার প্লানে বা সরকারী গেজেটে সংশ্লিষ্ট জায়গার অবস্থা যে ভাবে উল্লেখ করা হইয়াছে বা বর্ণনা করা হইয়াছে বা সংশ্লিষ্ট জায়গা সাধারণতঃ যেভাবে থাকার কথা মাটি ভরাট, পাকা, আধা-পাকা বা কাঁচা ঘর-বাড়ী এবং অন্য যে কোন ধরনের ভবন নির্মাণসহ কোনভাবে সেই অবস্থার পরিবর্তন হইতে পারে এমন কিছু করাকে বুঝাইবে;(ঝ) “সরকার” অর্থ এই আইনের প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়৷
৪৷ (১) কোন মাষ্টার প্লান চূড়ান্তভাবে প্রণয়নের পর উহার কপি উক্তরূপ প্রণয়নের তারিখ হইতে অন্যুন এক মাসের মধ্যে কর্তৃপক্ষের হেড অফিস এবং শাখা অফিস, যদি থাকে, এর নোটিশ বোর্ডে এমনভাবে লটকাইয়া রাখা হইবে যাহাতে উহা যথাসম্ভব সংশ্লিষ্ট এলাকার জনসাধারণের দৃষ্টি আকর্ষণ করে৷(২) কর্তৃপক্ষ তত্কর্তৃক নির্ধারিত মূল্যে মাষ্টার প্লানের মুদ্রিত কপি বা মাষ্টার প্লানের এলাকাভিত্তিক নক্সা জনসাধারণের নিকট বিক্রির ব্যবস্থা করিবে৷(৩) সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যথাযথ বিবেচিত অন্য যে কোন পদ্ধতিতে মাষ্টার প্লান এবং তত্সূত্রে জনগণের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে বহুল প্রচারের ব্যবস্থা করিবে৷
খেলার মাঠ, উন্মুক্ত স্থান, উদ্যান ও প্রাকৃতিক জলাধারের শ্রেণী পরিবর্তনে বাধা-নিষেধ
৫৷ এই আইনের বিধান অনুযায়ী ব্যতীত, খেলার মাঠ, উন্মুক্ত স্থান, উদ্যান এবং প্রাকৃতিক জলাধার হিসাবে চিহ্নিত জায়গার শ্রেণী পরিবর্তন করা যাইবে না বা উক্তরূপ জায়গা অন্য কোনভাবে ব্যবহার করা যাইবে না বা অনুরূপ ব্যবহারের জন্য ভাড়া, ইজারা বা অন্য কোনভাবে হস্তান্তর করা যাইবে না৷ব্যাখ্যা- এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, কোন উদ্যানের মৌলিক বৈশিষ্ট্য নষ্ট হয় এইরূপে উহার বৃক্ষরাজি নিধনকে উদ্যানটির শ্রেণী পরিবর্তনরূপে গণ্য করা হইবে৷
৬৷ (১) ধারা ৫-এ বর্ণিত কোন জায়গা বা জায়গার অংশবিশেষের শ্রেণী পরিবর্তন করার প্রয়োজন হইলে উক্ত জায়গার মালিক, প্রস্তাবিত পরিবর্তনের কারণ লিপিবদ্ধ করিয়া, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সরকারের নিকট আবেদন করিবেন৷(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন আবেদনপত্র প্রাপ্তির ৬০ দিনের মধ্যে কর্তৃপক্ষ আবেদনপত্রটি বিবেচনা করিয়া আবেদনাধীন জায়গার শ্রেণী পরিবর্তন জনস্বার্থে সমীচীন হইবে কিনা সেই সম্পর্কে, অন্যান্যের মধ্যে, নিম্্নবর্ণিত বিষয়ের উপর সুষ্পষ্ট মতামত এবং সুপারিশ সহকারে আবেদনটি সরকার বরাবরে প্রেরণ করিবে, যথা:-(ক) আবেদনাধীন জায়গার শ্রেণী পরিবর্তন করা হইলে মাষ্টার প্লানের উদ্দেশ্য ক্ষতিগ্রস্ত হইবে কিনা, হইলে উহার পরিমাণ; এবং(খ) শ্রেণী পরিবর্তনজনিত কারণে সংশ্লিষ্ট এলাকার পরিবেশের উপর কোন ক্ষতিকর প্রভাব পড়িবে কিনা বা বসবাসকারীগণের অন্য কোনপ্রকার ক্ষতি হইবার সম্ভাবনা আছে কিনা৷(৩) শ্রেণী পরিবর্তনের জায়গা যদি সরকারী, স্থানীয় কর্তৃপক্ষ, বিধিবদ্ধ সংস্থা বা কোম্পানীর হয় সেক্ষেত্রেও এই ধারার বিধানাবলী একইভাবে প্রযোজ্য হইবে৷(৪) উপ-ধারা (২) এর অধীন মতামত এবং সুপারিশ প্রদানের সুবিধার্থে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আবেদনকারীর নিকট হইতে এতদ্সংশ্লিষ্ট প্রয়োজনীয় তথ্য ও দলিল চাহিতে পারিবে এবং আবেদনকারী উক্তরূপ তথ্য ও দলিল এতদুদ্দেশ্যে কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত সময়সীমা, যাহা নোটিশ প্রাপ্তির তারিখ হইতে অন্যুন ১৫ দিন হইবে, এর মধ্যে সরবরাহ করিতে বাধ্য থাকিবে৷(৫) এই ধারার অধীন কোন আবেদন গ্রহণ করা হইবে না যদি উহার সহিত নির্ধারিত ফিস কর্তৃপক্ষের বরাবরে নির্ধারিত পদ্ধতিতে জমা করার রসিদ সংযুক্ত করা না হয়৷
৭৷ (১) ধারা ৬-এর অধীন আবেদনপত্র প্রাপ্তির ৬০ দিনের মধ্যে সরকার, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মতামত এবং সুপারিশ বিবেচনা করিয়া, আবেদনের উপর সিদ্ধান্ত প্রদান করিবে এবং আবেদনকারীকে, সিদ্ধান্ত প্রদানের তারিখ হইতে ১৫ দিনের মধ্যে, উক্ত সিদ্ধান্ত লিখিতভাবে অবহিত করিবে:তবে শর্ত থাকে যে, আবেদনপত্রটি অননুমোদন করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হইলে, আবেদন প্রাপ্তির ৯০ দিনের মধ্যে সরকার আবেদনকারীকে শুনানীর সুযোগ প্রদান করিবে৷(২) উপ-ধারা (১) এ প্রদত্ত সিদ্ধান্তে সংক্ষুব্ধ আবেদনকারী সিদ্ধান্ত সম্বলিত স্মারক বা নোটিশ প্রাপ্তির তারিখ হইতে ৩০ দিনের মধ্যে সরকার বরাবরে উহার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করিবার জন্য আবেদন করিতে পারিবে৷(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার কোন আবেদন গ্রহণযোগ্য হইবে না যদি উহার সহিত নির্ধারিত ফিস সরকার বরাবরে নির্ধারিত পদ্ধতিতে জমা করার রসিদ সংযুক্ত করা না হয়৷(৪) উপ-ধারা (৩) এর অধীন প্রদত্ত আবেদনের উপর সরকারের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হইবে৷
৮৷ (১) কোন ব্যক্তি এই আইনের কোন বিধান লঙ্ঘন করিলে তিনি অনধিক ৫ বত্সরের কারাদণ্ডে বা অনধিক ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ডে অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন৷(২) ধারা ৫ এর বিধান লঙ্ঘন করিয়া যদি কোন জায়গা বা জায়গার অংশ বিশেষের শ্রেণী পরিবর্তন করা হয়, তাহা হইলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নোটিশ দ্বারা জমির মালিককে অথবা বিধান লঙ্ঘনকারী ব্যক্তিকে নোটিশে উল্লেখিত জায়গার শ্রেণী পরিবর্তনের কাজে বাধা প্রদান করিতে পারিবে এবং নির্ধারিত পদ্ধতিতে অননুমোদিত নির্মাণকার্য ভাংগিয়া ফেলিবার নির্দেশ দিতে পারিবে এবং অন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, উক্তরূপ ভাংগিয়া ফেলিবার জন্য কোন ক্ষতিপূরণ প্রদেয় হইবে না৷(৩) এই আইনের বিধান লঙ্ঘন করিয়া যদি কোন নির্মাণকার্য সম্পাদিত বা অবকাঠামো তৈরী হইয়া থাকে সেই সকল অবকাঠামো আদালতের আদেশে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বরাবরে বাজেয়াপ্ত হইবে৷
অর্থদণ্ড আরোপের ক্ষেত্রে কতিপয় ম্যাজিষ্ট্রেটের বিশেষ ক্ষমতা
৯৷ Code of Criminal Procedure, 1898 (Act V of 1898) এ ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোন ব্যক্তির উপর ধারা ৮ এর অধীনে অর্থদণ্ড আরোপের ক্ষেত্রে একজন প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিষ্ট্রেট বা মেট্রোপলিটান এলাকায় মেট্রোপলিটান ম্যাজিষ্ট্রেট উক্ত ধারায় উল্লিখিত অর্থদণ্ড আরোপ করিতে পারিবেন৷
১০৷ এই আইন বা বিধির অধীন সরল বিশ্বাসে কৃত কোন কাজের ফলে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হইলে বা ক্ষতিগ্রস্ত হইবার সম্ভাবনা থাকিলে তজ্জন্য কর্তৃপক্ষের বা, ক্ষেত্রমত, চেয়ারম্যান বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বা কর্তৃপক্ষের অন্য কোন কর্মকর্তা বা অপর কর্মচারী বা কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোন আইনগত কার্যক্রম গ্রহণ করা যাইবে না৷
১১৷ এই আইনের অধীন কোন বিধান লঙ্ঘনকারী ব্যক্তি যদি কোম্পানী হয়, তাহা হইলে উক্ত কোম্পানীর মালিক, পরিচালক, ম্যানেজার, সচিব বা অন্য কোন কর্মকর্তা বা এজেন্ট বিধানটি লঙ্ঘন করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবে, যদি না তিনি প্রমাণ করিতে পারেন যে, উক্ত লঙ্ঘন তাঁহার অজ্ঞাতসারে হইয়াছে অথবা উক্ত লঙ্ঘন রোধ করিবার জন্য তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা করিয়াছেন৷ব্যাখ্যা৷- এই ধারায়-(ক) “কোম্পানী” বলিতে কোন সংবিধিবদ্ধ সংস্থা, বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান ও সমিতি বা সংগঠনকেও বুঝাইবে;(খ) বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে, “পরিচালক” বলিতে উহার কোন অংশীদার বা পরিচালনা বোর্ডের সদস্যকেও বুঝাইবে৷
১২৷ (১) কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান বা প্রধান, যে নামেই অভিহিত হউক না কেন, বা তাহার নিকট হইতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তির লিখিত অভিযোগ ছাড়া কোন আদালত এই আইনের অধীন কোন অপরাধ বিচারের জন্য গ্রহণ করিবে না৷(২) অন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের অধীন দণ্ডনীয় অপরাধ আমলযোগ্য বা ধর্তব্য (Cognizable) অপরাধ হইবে৷