যেহেতু প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে নিয়োজিত শ্রমিকদের কল্যাণ সাধনের নিমিত্ত একটি ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা এবং এতদ্সংক্রান্ত বিধান প্রণয়ন করা প্রয়োজনীয় ও সমীচীন;সেহেতু এতদ্দ্বারা নিম্্নরূপ আইন করা হইলঃ-
১৷ (১) এই আইন বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন আইন, ২০০৬ নামে অভিহিত হইবে৷(২) সরকার, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, যেই তারিখ নির্ধারণ করিবে সেই তারিখে এই আইন কার্যকর হইবে৷(৩) এই আইন সমগ্র বাংলাদেশের প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে নিয়োজিত শ্রমিকদের জন্য প্রযোজ্য হইবে৷
২৷ বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থী কিছু না থাকিলে, এই আইনে-(ক) “অপ্রাতিষ্ঠানিক খাত” অর্থ এইরূপ বেসরকারী খাত যেখানে কর্মরত শ্রমিকের কাজের বা চাকুরীর শর্ত, ইত্যাদি বিদ্যমান শ্রম আইন ও তদাধীন প্রণীত বিধি-বিধানের আওতায় নির্ধারিত কিংবা নিয়ন্ত্রিত নহে এবং যেখানে কর্মরত শ্রমিকদের সংগঠিত হওয়ার সুযোগ অত্যন্ত সীমিত;(খ) “চেয়ারম্যান” অর্থ বোর্ডের চেয়ারম্যান;(গ) “পরিবার” অর্থ-(অ) পুরুষ শ্রমিক হইলে, তাহার স্ত্রী বা স্ত্রীগণ, এবং মহিলা শ্রমিক হইলে, তাহার স্বামী; এবং(আ) শ্রমিকের সহিত একত্রে বসবাসরত এবং তাহার উপর সম্পূর্ণ নির্ভরশীল, অপ্রাপ্তবয়স্ক সন্তান-সন্ততি, পিতা, মাতা, নাবালক ভাই এবং অবিবাহিতা, তালাক-প্রাপ্তা বা বিধবা কন্যা বা বোন, এবং প্রতিবন্ধী সন্তান ও প্রতিবন্ধী ভাই-বোন;(ঘ) “প্রবিধান” অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত প্রবিধান;(ঙ) “প্রাতিষ্ঠানিক খাত” অর্থ এইরূপ সরকারী ও বেসরকারী খাত যেখানে কর্মরত শ্রমিকের কাজের বা চাকুরীর শর্ত, ইত্যাদি বিদ্যমান শ্রম আইন ও তদাধীন প্রণীত বিধি-বিধানের আওতায় নির্ধারিত কিংবা নিয়ন্ত্রিত;(চ) “ফাউন্ডেশন” অর্থ ধারা ৩ এর অধীন প্রতিষ্ঠিত ফাউন্ডেশন;(ছ) “বিধি” অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি;(জ) “বোর্ড” অর্থ ধারা ৭ এর অধীন গঠিত পরিচালনা বোর্ড;(ঝ) “মহাপরিচালক” অর্থ ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক;(ঞ) “তহবিল” অর্থ ধারা ১৪ এর অধীন গঠিত ফাউন্ডেশনের তহবিল;[1][(ঞঞ) “শ্রম আইন” অর্থ বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ (২০০৬ সনের ৪২ নং আইন);](ট) “শ্রমিক” অর্থ প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে নিয়োজিত যে কোন শ্রমিক যিনি কোন প্রতিষ্ঠানে বা শিল্পে সরাসরি বা কোন ঠিকাদারের মাধ্যমে মজুরী বা অর্থের বিনিময়ে কোন দক্ষ, অদক্ষ, কায়িক বা কারিগরী, ব্যবসা উন্নয়নমূলক অথবা কেরানীগিরি কাজ করিবার জন্য নিযুক্ত হন বা ছিলেন [2][এবং শ্রম আইনের ধারা ১৭৫ এ সংজ্ঞায়িত শ্রমিকও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে]ঃতবে প্রশাসনিক বা ব্যবস্থাপনামূলক দায়িত্বে নিয়োজিত কোন ব্যক্তি ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে না;(ঠ) “সদস্য” অর্থ বোর্ডের সদস্য৷
৩৷ (১) এই আইন কার্যকর হইবার সংগে সংগে, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন নামে একটি ফাইন্ডেশন প্রতিষ্ঠিত হইবে৷(২) ফাউন্ডেশন একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হইবে এবং ইহার স্থায়ী ধারাবাহিকতা ও একটি সাধারণ সীলমোহর থাকিবে এবং এই আইনের বিধানাবলী সাপেক্ষে, ইহার স্থাবর ও অস্থাবর উভয় প্রকার সম্পত্তি অর্জন করিবার, অধিকারে রাখিবার ও হস্তান্তর করিবার ক্ষমতা থাকিবে, এবং ফাউন্ডেশন ইহার নামে মামলা দায়ের করিতে পারিবে এবং উক্ত নামে ইহার বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করা যাইবে৷
৪৷ (১) ফাউন্ডেশনের প্রধান কার্যালয় ঢাকায় থাকিবে৷(২) ফাউন্ডেশন, প্রয়োজনবোধে, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, বাংলাদেশের যে কোন স্থানে উহার শাখা কার্যালয় স্থাপন করিতে পারিবে৷
৫৷ ফাউন্ডেশনের কার্যাবলী হইবে নিম্নরূপ, যথাঃ-(ক) শ্রমিক ও তাহার পরিবারের কল্যাণ সাধন;(খ) শ্রমিক ও তাহার পরিবারের কল্যাণার্থে, বিভিন্ন প্রকার প্রকল্প গ্রহণ ও উহা বাস্তবায়ন;(গ) শ্রমিকদের বিশেষতঃ অক্ষম বা অসমর্থ শ্রমিকদের আর্থিক সাহায্য প্রদান;(ঘ) অসুস্থ শ্রমিকের চিকিত্সার ব্যবস্থা করা বা আর্থিক সাহায্য প্রদান;(ঙ) দূর্ঘটনায় কোন শ্রমিকের মৃত্যু ঘটিলে তাহার পরিবারবর্গকে সাহায্য প্রদান;(চ) শ্রমিকের পরিবারের মেধাবী সদস্যকে শিক্ষার জন্য বৃত্তি কিংবা স্টাইপেন্ড প্রদান;(ছ) শ্রমিকদের জীবন বীমাকরণের জন্য যৌথ বীমা ব্যবস্থার প্রবর্তন করা এবং এই লক্ষ্যে তহবিল হইতে সংশ্লিষ্ট বীমা প্রতিষ্ঠানকে প্রিমিয়াম পরিশোধ করা;(জ) তহবিল পরিচালনা ও প্রশাসনিক উদ্দেশ্যে অন্যান্য প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করা; এবং(ঝ) উপরি-উক্ত কার্যাবলী সম্পাদনের জন্য যে কোন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে অন্য যে কোন কার্য সম্পাদন৷
৬৷ ফাউন্ডেশনের পরিচালনা ও প্রশাসন পরিচালনা বোর্ডের উপর ন্যস্ত থাকিবে এবং ফাউন্ডেশন যে সকল ক্ষমতা প্রয়োগ ও কার্য সম্পাদন করিতে পারিবে পরিচালনা বোর্ডও সেই সকল ক্ষমতা প্রয়োগ ও কার্য সম্পাদন করিতে পারিবে৷
৭৷ (১) নিম্নবর্ণিত সদস্য সমন্বয়ে বোর্ড গঠিত হইবে, যথাঃ-(ক) শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মাননীয় মন্ত্রী, যিনি ইহার চেয়ারম্যানও হইবেন;(খ) শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত সচিব, যিনি ইহার ভাইস চেয়ারম্যানও হইবেন;(গ) মহা-পরিচালক, যিনি ইহার সদস্য-সচিবও হইবেন;(ঘ) শ্রম পরিচালক, শ্রম পরিদপ্তর, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়;(ঙ) অর্থ বিভাগ কর্তৃক মনোনীত উক্ত বিভাগের যুগ্ম-সচিব বা তদূর্ধ্ব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা;(চ) বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনোনীত উক্ত মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব বা তদূর্ধ্ব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা;(ছ) শিল্প মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনোনীত উক্ত মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব বা তদূর্ধ্ব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা;(জ) প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনোনীত উক্ত মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব বা তদূর্ধ্ব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা;(ঝ) আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনোনীত উক্ত মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব বা তদূর্ধ্ব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা;(ঞ) বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনোনীত উক্ত মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব বা তদূর্ধ্ব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা;(ট) মালিক পক্ষ হইতে কমপক্ষে একজন মহিলা প্রতিনিধিসহ পাঁচজন প্রতিনিধি যাহারা উপ-ধারা (২) এ বর্ণিত পদ্ধতিতে মনোনীত হইবেন; এবং(ঠ) শ্রমিক পক্ষ হইতে কমপক্ষে একজন মহিলা প্রতিনিধিসহ পাঁচজন প্রতিনিধি যাহারা উপ-ধারা (৩) এ বর্ণিত পদ্ধতিতে মনোনীত হইবেন৷(২) উপ-ধারা (১) (ট) তে উল্লিখিত সদস্যগণ সরকার কর্তৃক, জাতীয় পর্যায়ে মালিকদের প্রতিনিধিত্বকারী সংশ্লিষ্ট মালিক ফেডারেশনের সহিত আলোচনাক্রমে, মনোনীত হইবেন৷(৩) উপ-ধারা (১) (ঠ) তে উল্লিখিত সদস্যগণ সরকার কর্তৃক, জাতীয় পর্যায়ে শ্রমিকদের প্রতিনিধিত্বকারী সংশ্লিষ্ট শ্রমিক ফেডারেশনের সহিত আলোচনাক্রমে, মনোনীত হইবেন৷(৪) শুধুমাত্র সদস্যপদে শূন্যতা বা বোর্ড গঠনে ত্রুটি থাকার কারণে বোর্ডের কোন কার্য বা কার্যধারা অবৈধ হইবে না এবং তত্সম্পর্কে কোন প্রশ্নও উত্থাপন করা যাইবে না৷
৮৷ (১) ধারা ৭ (১) এর দফা (ট) ও (ঠ) এর অধীন মনোনীত সদস্যের মেয়াদ হইবে তাহার মনোনয়নের তারিখ হইতে পরবর্তী তিন বত্সর৷(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত যে কোন মনোনীত সদস্য চেয়ারম্যানের উদ্দেশ্যে স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযোগে স্বীয় পদ ত্যাগ করিতে পারিবেন এবং চেয়ারম্যান কর্তৃক উহা গৃহীত হইবার তারিখ হইতে উক্ত পদটি শূন্য বলিয়া গণ্য হইবে৷
৯৷ কোন ব্যক্তি ধারা ৭ (১) এর দফা (ট) ও (ঠ) এর অধীন সদস্য হইবার বা থাকিবার যোগ্য হইবেন না, যদি-(ক) উপযুক্ত আদালত তাহাকে অপ্রকৃতিস্থ বা দেউলিয়া বলিয়া ঘোষণা করে;(খ) তিনি ইতিপূর্বে পরপর দুইবার বোর্ডের সদস্য হিসাবে মনোনীত হইয়া থাকেন;(গ) তিনি নৈতিক শৃঙ্খলাজনিত কোন অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হইয়া আদালত কর্তৃক অন্যুন এক বত্সরের কারাদন্ডে দন্ডিত হন এবং তাহার মুক্তি লাভের পর পাঁচ বত্সর অতিবাহিত না হইয়া থাকে;(ঘ) তিনি চেয়ারম্যানের অনুমতি ব্যতীত বোর্ডের পর পর তিনটি সভায় অনুপস্থিত থাকেন; এবং(ঙ) তিনি চেয়ারম্যানের অনুমতি ব্যতীত ছয় মাসের অধিক সময় বাংলাদেশের বাহিরে অবস্থান করেন৷
১০৷ সরকার ধারা ৭(১) এর দফা (ট) ও (ঠ) তে উল্লিখিত যে কোন মনোনীত সদস্যকে লিখিত আদেশ দ্বারা অপসারণ করিতে পারিবে, যদি তিনি-(ক) এই আইনের অধীন তাহার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হন বা অস্বীকার করেন, বা সরকারের বিবেচনায় উক্ত দায়িত্ব সম্পাদনে অক্ষম বিবেচিত হন; অথবা(খ) সরকারের বিবেচনায় সদস্য হিসাবে তাহার পদের অপব্যবহার করিয়া থাকেন; অথবা(গ) প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কল্যাণ তহবিল সংক্রান্ত বিষয়ে লাভজনক কিছু অর্জন করেন বা অধিকারে রাখেন৷
১১৷ (১) ফাউন্ডেশনের একজন মহাপরিচালক থাকিবেন৷(২) মহাপরিচালক সরকার কর্তৃক নিযুক্ত হইবেন এবং তাহার চাকুরীর শর্তাদি সরকার কর্তৃক স্থিরীকৃত হইবে৷(৩) মহাপরিচালক ফাউন্ডেশনের সার্বক্ষণিক নির্বাহী কর্মকর্তা হইবেন, এবং তিনি-(ক) বোর্ডের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য দায়ী থাকিবেন; এবং(খ) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে বোর্ড কর্তৃক প্রদত্ত দায়িত্ব ও কার্য সম্পাদন করিবেন৷(৪) মহাপরিচালকের পদ শূন্য হইলে, কিংবা অনুপস্থিতি, অসুস্থতা বা অন্য কোন কারণে মহাপরিচালক তাহার দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হইলে শূন্যপদে নবনিযুক্ত মহাপরিচালক কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত কিংবা মহাপরিচালক পুনরায় স্বীয় দায়িত্ব পালনে সমর্থ না হওয়া পর্যন্ত সরকার কর্তৃক মনোনীত কোন ব্যক্তি মহাপরিচালকরূপে দায়িত্ব পালন করিবে৷
১২৷ ফাউন্ডেশন উহার কার্যাবলী সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের উদ্দেশ্যে, সরকার কর্তৃক অনুমোদিত সাংগঠনিক কাঠামো অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগ করিবে এবং তাহাদের চাকুরীর শর্তাবলী প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত হইবে৷
১৩৷ (১) এই ধারার অন্যান্য বিধানাবলী সাপেক্ষে, বোর্ড উহার সভার কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ করিতে পারিবে৷(২) বোর্ডের সভা, চেয়ারম্যানের সম্মতিক্রমে, উহার সদস্য-সচিব কর্তৃক আহুত হইবে এবং চেয়ারম্যান কর্তৃক নির্ধারিত স্থান ও সময়ে অনুষ্ঠিত হইেবঃতবে শর্ত থাকে যে, প্রতি তিনমাসে বোর্ডের কমপক্ষে একটি সভা অনুষ্ঠিত হইবে৷(৩) চেয়ারম্যান বোর্ডের সভায় সভাপতিত্ব করিবেন, এবং তাহার অনুপস্থিতিতে ভাইস- চেয়ারম্যান এবং তাহাদের উভয়ের অনুপস্থিতিতে সভায় উপস্থিত সদস্যগণ কর্তৃক তাহাদের মধ্য হইতে মনোনীত কোন সদস্য সভাপতিত্ব করিবেন৷(৪) বোর্ডের সভার কোরামের জন্য বোর্ডের মোট সদস্য-সংখ্যার এক তৃতীয়াংশ সদস্যের উপস্থিতি প্রয়োজন হইবে, তবে মূলতবী সভার ক্ষেত্রে কোন কোরামের প্রয়োজন হইবে না৷(৫) বোর্ডের সভায় প্রত্যেক সদস্যের একটি করিয়া ভোট থাকিবে এবং ভোটের সমতার ক্ষেত্রে সভায় সভাপতিত্বকারী ব্যক্তির দ্বিতীয় বা নির্ণায়ক ভোট প্রদানের ক্ষমতা থাকিবে৷
5[১৪ক। (১) শ্রম আইনের ধারা ২৩৫ এর অধীন গঠিত ট্রাস্টি বোর্ড এই আইনের ধারা ১৪ এর উপ-ধারা (৩) এর বিধান লংঘন করিলে অথবা উহাতে উল্লিখিত সময়সীমার মধ্যে উক্তরূপ অর্থ জমা প্রদান করিতে ব্যর্থ হইলে সরকার, আদেশ দ্বারা উক্ত আদেশের উল্লিখিত সময়ের মধ্যে, উক্ত ট্রাস্টি বোর্ডকে উক্ত অপরিশোধিত অর্থ প্রদানের আদেশসহ সংশ্লিষ্ট কাজের সহিত প্রত্যক্ষ সংশ্লিষ্টতা রহিয়াছে উক্ত ট্রাস্টি বোর্ডের এমন চেয়ারম্যান, সদস্য বা উহার ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গকে অনধিক ১ (এক) লক্ষ টাকা এবং অব্যাহত ব্যর্থতার ক্ষেত্রে, ব্যর্থতার প্রথম তারিখের পর হইতে প্রত্যেক দিনের জন্য আরও ৫ (পাঁচ) হাজার টাকা করিয়া জরিমানা আরোপ করিবে:তবে শর্ত থাকে যে, কোন ব্যক্তি উল্লিখিত বিধান পুনরায় লংঘন করিলে বা প্রতিপালনে ব্যর্থ হইলে তাহার বিরুদ্ধে দ্বিগুণ জরিমানা আরোপিত হইবে।(২) ধারা ১৪ এর উপ-ধারা (৩) এর অধীন প্রদেয় কোন অর্থ অপরিশোধিত থাকিলে এবং এই ধারার অধীন আরোপিত জরিমানা, সংশ্লিষ্ট আদেশে উল্লিখিত তারিখের মধ্যে পরিশোধ করা না হইলে, উক্ত অপরিশোধিত অর্থ ও জরিমানা সরকারি দাবী হিসাবে গণ্য হইবে এবং Public Demands Recovery Act, 1913 (Act No. IX of 1913) এর বিধান অনুযায়ী আদায়যোগ্য হইবে।(৩) উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রদত্ত কোন আদেশ দ্বারা কোন ব্যক্তি সংক্ষুদ্ধ হইলে উক্ত আদেশ প্রদানের তারিখ হইতে ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে আদেশটি পুনর্বিবেচনার জন্য সরকারের নিকট দরখাস্ত পেশ করিতে পারিবেন এবং উক্তরূপ দরখাস্ত প্রাপ্তির পর সরকার অনধিক ৪৫ (পঁয়তাল্লিশ) কার্যদিবসের মধ্যে বিষয়টি পুনর্বিবেচনাকরতঃ যথাযথ আদেশ প্রদান করিবে এবং বিষয়টি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, কোম্পানী ও বোর্ডকে অবহিত করিবে।(৪) উপ-ধারা (৩) এর অধীন সরকার কর্তৃক প্রদত্ত আদেশ চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।]
১৫৷ বোর্ড প্রতি বত্সর সরকার কর্তৃক নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পরবর্তী বত্সরের বার্ষিক বাজেট বিবরণী সরকারের নিকট পেশ করিবে এবং উহাতে উক্ত অর্থ বত্সরে সরকারের নিকট হইতে বোর্ডের কি পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন হইবে উহার উল্লেখ থাকিবে৷
১৬৷ (১) বোর্ড যথাযথভাবে তহবিলের হিসাব সংরক্ষণ করিবে এবং হিসাবের বার্ষিক বিবরণী প্রস্তুত করিবে৷(২) বাংলাদেশের মহা-হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, অতঃপর “মহাহিসাব নিরীক্ষক” নামে অভিহিত, প্রতি বত্সর তহবিলের হিসাব নিরীক্ষা করিবেন এবং নিরীক্ষা প্রতিবেদনের একটি করিয়া অনুলিপি সরকার ও বোর্ডের নিকট প্রেরণ করিবেন৷(৩) উপ-ধারা (২) এর বিধান মোতাবেক হিসাব নিরীক্ষার উদ্দেশ্যে মহা-হিসাব নিরীক্ষক কিংবা তাহার নিকট হইতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তি বোর্ডের সকল রেকর্ড, দলিল-দস্তাবেজ, নগদ বা ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ, জামানত, ভান্ডার এবং অন্যবিধ সম্পত্তি পরীক্ষা করিয়া দেখিতে পারিবেন এবং বোর্ডের যে কোন সদস্য, কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করিতে পারিবেন৷
১৭৷ (১) বোর্ড প্রত্যেক অর্থ বত্সর শেষে নিরীক্ষিত হিসাব বিবরণী সরকারের নিকট দাখিল করিবে এবং এতদ্বিষয়ে ফাউন্ডেশনের কর্মকান্ডের উপর একটি বার্ষিক বিবরণীও দাখিল করিবে৷(২) বোর্ড, সরকার কর্তৃক সময় সময় চাহিদামাফিক বিবরণী, রিটার্ণ ও প্রতিবেদন, সরকারের নিকট দাখিল করিবে৷
১৮৷ (১) সরকার, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে বিধিমালা প্রণয়ন করিতে পারিবে৷(২) উপ-ধারা (১) এ প্রদত্ত সাধারণ ক্ষমতা ক্ষুণ্ন না করিয়া, বিশেষতঃ নিম্নবর্ণিত এক বা একাধিক বিষয়ে বিধি প্রণয়ন করা যাইবে, যথাঃ-(ক) তহবিলের পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা;(খ) তহবিল হইতে অনুদান প্রদানের ক্ষেত্রে শর্তাবলী নির্ধারণ;(গ) শ্রমিক কর্তৃক তাহার নিজের বা তাহার পরিবার সম্পর্কে বিবরণ দাখিলের ফরম; এবং(ঘ) বিভিন্ন খাতে তহবিলের অর্থ বিনিয়োগের পদ্ধতি৷(৩) এই ধারার অধীন প্রণীত বিধিমালা, স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের পরামর্শ গ্রহণের জন্য অন্যুন ত্রিশ দিন সময় প্রদানপূর্বক প্রাক্-প্রকাশনা ব্যতীত চূড়ান্ত করা যাইবে না৷
২০৷ মহাপরিচালক, অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারী এবং এই আইনের অধীন কার্য সম্পাদনের জন্য বোর্ড হইতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রত্যেক কর্মকর্তা Penal Code, 1860 (Act XLV of 1860) এর section 21 এর public servant (জনসেবক) অভিব্যক্তিটি যে অর্থে ব্যবহৃত হইয়াছে সেই অর্থে public servant (জনসেবক) বলিয়া গণ্য হইবেন৷
২২৷ এই আইন বা তদাধীন প্রণীত বিধি বা প্রবিধানের অধীন সরল বিশ্বাসে কৃত কোন কাজের ফলে কোন ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্থ হইলে বা ক্ষতিগ্রস্থ হইবার সম্ভাবনা থাকিলে, তজ্জন্য সরকার, বোর্ড বা কোন সদস্য, মহাপরিচালক বা অন্যান্য কর্মকর্তা বা কর্মচারী, অথবা সরকারের কোন কর্মকর্তা বা সরকার বা ফাউন্ডেশনের কর্তৃত্বাধীন কোন প্রকাশনা, রিপোর্ট অথবা সরকারের বা ফাইন্ডেশনের কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারীর কর্তৃত্বাধীন কোন প্রকাশনা, রিপোর্ট বা কার্যধারার বিরুদ্ধে দেওয়ানী বা ফৌজদারী মামলা বা অন্য কোন আইনগত কার্যধারা দায়ের বা রুজু করা যাইবে না৷
২৩৷ এই আইন প্রবর্তনের পর সরকার, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের ইংরেজীতে অনূদিত একটি পাঠ প্রকাশ করিবে, যাহা এই আইনের অনুমোদিত ইংরেজী পাঠ (Authentic English Text) নামে অভিহিত হইবে:তবে শর্ত থাকে যে, এই বাংলা পাঠ ও উক্ত ইংরেজী পাঠের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে এই বাংলা পাঠ প্রাধান্য পাইবে৷
দফা (ঞঞ) বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন (সংশোধন) আইন, ২০১৩ (২০১৩ সনের ০২ নং আইন) এর ২(ক) ধারাবলে সন্নিবেশিত।
2
“এবং শ্রম আইনের ধারা ১৭৫ এ সংজ্ঞায়িত শ্রমিকও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে” শব্দগুলি ও সংখ্যা প্রান্তস্থিত “:” কোলন এর পূর্বে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন (সংশোধন) আইন, ২০১৩ (২০১৩ সনের ০২ নং আইন) এর ২(খ) ধারাবলে সন্নিবেশিত।
3
দফা (খখ) বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন (সংশোধন) আইন, ২০১৩ (২০১৩ সনের ০২ নং আইন) এর ৩(ক) ধারাবলে সন্নিবেশিত।
4
উপ-ধারা (৩) বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন (সংশোধন) আইন, ২০১৩ (২০১৩ সনের ০২ নং আইন) এর ৩(খ) ধারাবলে প্রতিস্থাপিত।
5
ধারা ১৪ক বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন (সংশোধন) আইন, ২০১৩ (২০১৩ সনের ০২ নং আইন) এর ৪ ধারাবলে সন্নিবেশিত।
Click here to see the original act on the Bangladesh Legal Database.