বাংলাদেশে হাই-টেক শিল্প স্থাপন ও বিকাশের জন্য দেশের বিভিন্ন স্থানে হাই-টেক পার্ক সৃষ্টি এবং ইহারসুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা, পরিচালনা এবং উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠাকল্পে প্রণীত আইন।
যেহেতু বাংলাদেশে হাই-টেক শিল্প স্থাপন ও বিকাশের নিমিত্ত দেশের বিভিন্ন স্থানে হাই-টেক পার্ক সৃষ্টি এবং ইহার সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা, পরিচালনা, উন্নয়ন এবং আনুষঙ্গিক বিষয়াদির জন্য বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠাকল্পে বিধান করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;সেহেতু এতদ্দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল :-
৩। (১) এই আইন কার্যকর হইবার পর সরকার, যতশীঘ্র সম্ভব, এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকারি গেজেটে এবং তদতিরিক্ত ঐচ্ছিকভাবে ইলেকট্রনিক গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ নামে একটি কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করিবে। (২) কর্তৃপক্ষ একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হইবে এবং উহার স্থায়ী ধারাবাহিকতা ও একটি সাধারণ সীলমোহর থাকিবে এবং এই আইনের বিধানাবলী সাপেক্ষে, ইহার স্থাবর ও অস্থাবর উভয় প্রকার সম্পদ 4[অর্জন] , সংরক্ষণ ও হস্তান্তর করিবার ক্ষমতা থাকিবে এবং কর্তৃপক্ষ উহার নামে মামলা দায়ের করিতে পারিবে এবং উহার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা যাইবে।
৫। কর্তৃপক্ষের উদ্দেশ্য হইবে বাংলাদেশে হাই-টেক শিল্প স্থাপন ও বিকাশের জন্য দেশের বিভিন্ন স্থানে সরকার কর্তৃক অথবা বেসরকারি উদ্যোগে পার্ক স্থাপন এবং উহার সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা, পরিচালনা, উন্নয়ন এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক বিষয়াদি সম্পর্কে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
৬। (১) কর্তৃপক্ষের বিষয়াদি ও সাধারণ কার্যাবলীর পরিচালনা ও প্রশাসন একটি নির্বাহী কমিটির উপর ন্যস্ত থাকিবে এবং কর্তৃপক্ষের যে সকল ক্ষমতা প্রয়োগ ও কার্যসম্পাদন করিতে পারিবে, নির্বাহী কমিটিও সেই সকল ক্ষমতা প্রয়োগ ও কার্যসম্পাদন করিতে পারিবে। (২) নির্বাহী কমিটি উহার দায়িত্ব পালন ও কার্যসম্পাদনের ক্ষেত্রে এই আইন, বিধি, প্রবিধি ও সরকার কর্তৃক সময় সময় প্রদত্ত ও জারীকৃত আদেশ ও নির্দেশনা অনুসরণ করিবে।
5[৭। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে কর্তৃপক্ষের নিম্নবর্ণিত সদস্য সমন্বয়ে একটি বোর্ড অব গভর্নরস থাকিবে, যথাঃ-(ক) প্রধানমন্ত্রী, যিনি উহার চেয়ারম্যানও হইবেন;(খ) ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি, শিল্প, বাণিজ্য, অর্থ, স্বরাষ্ট্র, ভূমি, শিক্ষা, পরিবেশ ও বন এবং আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীগণ;(গ) তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী বা উপ-মন্ত্রী;(ঘ) শিল্প মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, অর্থ বিভাগ, আইন ও বিচার বিভাগ, পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিবগণ;(ঙ) তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব, যিনি উহার সদস্য-সচিবও হইবেন;(চ) নির্বাহী চেয়ারম্যান, বিনিয়োগ বোর্ড; এবং(ছ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক।(২) প্রধানমন্ত্রী, প্রয়োজনবোধে, তদ্কর্তৃক মনোনীত মন্ত্রী, যিনি বোর্ড অব গভর্নরস এরও সদস্য, তাঁহাকে বোর্ড অব গভর্নরস এর চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালনের অনুমতি প্রদান করিতে পারিবেন।(৩) কর্তৃপক্ষ, প্রয়োজনবোধে, প্রধানমন্ত্রীর পূর্বানুমোদনক্রমে, সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অভিজ্ঞ যে কোন ব্যক্তিকে বোর্ডের সদস্য হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করিতে অথবা কোন সদস্যকে বোর্ড হইতে অব্যাহতি প্রদান করিতে পারিবে।]
6[৮। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে নিম্নবর্ণিত সদস্য সমন্বয়ে কর্তৃপক্ষের একটি নির্বাহী কমিটি গঠিত হইবে, যথা :(ক) ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী, যিনি ইহার সভাপতিও হইবেন;(খ) তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী বা উপ-মন্ত্রী, যিনি ইহার সহ-সভাপতিও হইবেন;(গ) তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব;(ঘ) শিল্প মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, অর্থ বিভাগ, আইন ও বিচার বিভাগ, পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব;(ঙ) বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের কার্য নির্বাহী পরিচালক;(চ) ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এফবিসিসিআই) এর সভাপতি;(ছ) বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার এন্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস এর সভাপতি;(জ) বিনিয়োগ বোর্ড কর্তৃক মনোনীত সদস্য পদমর্যাদার নিম্নে নহেন এইরূপ একজন কর্মকর্তা;(ঝ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক; যিনি উহার সদস্য-সচিবও হইবেন; এবং(ঞ) বোর্ড অব গভর্নরস কর্তৃক মনোনীত বিজ্ঞান এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রহিয়াছে এইরূপ ২ (দুই) জন ব্যক্তি।(২) বোর্ড অব গভর্নরস কর্তৃক মনোনীত ব্যক্তির সদস্য পদের মেয়াদ হইবে তাহার মনোনয়নের তারিখ হইতে পরবর্তী তিন বৎসর :তবে শর্ত থাকে যে, বোর্ড অব গভর্নরস, প্রয়োজনবোধে, যে কোন সময় বোর্ড অব গভর্নরস কর্তৃক মনোনীত সদস্যের মেয়াদ শেষ হইবার পূর্বে কোন কারণ দর্শানো ব্যতিরেকে তাহাকে অব্যাহতি প্রদান করিতে পারিবে।(৩) উপ-ধারা (১) এর দফা (ঞ) এ উল্লিখিত বোর্ড অব গভর্নরস কর্তৃক মনোনীত কোন সদস্য সভাপতির উদ্দেশ্যে স্বীয় স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযোগে পদত্যাগ করিতে পারিবেন।]
৯।(১) এই ধারার বিধানাবলী সাপেক্ষে, বোর্ড অব গভর্নরস এবং নির্বাহী কমিটি উহার সভার কার্য পদ্ধতি নির্ধারণ করিবে।(২) চেয়ারম্যানের সহিত পরামর্শক্রমে, বোর্ডের সদস্য-সচিব, চেয়ারম্যান কর্তৃক নির্ধারিত সময় ও স্থানে বোর্ড অব গভর্নরস এর সভা আহবান করিবেন।(৩) নির্বাহী কমিটির সভা সভাপতি কর্তৃক নির্ধারিত সময় ও স্থানে অনুষ্ঠিত হইবে এবং সভাপতির সহিত পরামর্শক্রমে নির্বাহী কমিটির সদস্য-সচিব উক্ত সভা আহবান করিবেন।(৪) বোর্ড অব গভর্নরস এর চেয়ারম্যান বোর্ডের সকল সভায় সভাপতিত্ব করিবেন।(৫) নির্বাহী কমিটির সকল সভায় নির্বাহী কমিটির সভাপতি সভাপতিত্ব করিবেন এবং তাহার অনুপস্থিতিতে সহ-সভাপতি নির্বাহী কমিটির সভায় সভাপতিত্ব করিবেন।(৬) নির্বাহী কমিটির সভায় কোরামের জন্য উহার মোট সদস্য সংখ্যার অন্যূন এক-তৃতীয়াংশ সদস্যের উপস্থিতির প্রয়োজন হইবে।(৭) নির্বাহী কমিটির সভায় উপস্থিত সকল সদস্যের একটি করিয়া ভোট থাকিবে এবং ভোটের সমতার ক্ষেত্রে সভায় সভাপতিত্বকারী সদস্যের একটি দ্বিতীয় বা নির্ণায়ক ভোট থাকিবে।
১০। নির্বাহী কমিটি, এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, নিম্নরূপ দায়িত্ব ও কার্যাবলী সম্পাদন করিবে, যথা 7:- পার্কের উন্নয়ন, পরিচালনা, ব্যবস্থাপনা এবং নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক আবশ্যকীয় নীতিমালা প্রণয়ন;(খ) কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম সুষ্ঠু ও সুচারুভাবে পরিচালনার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় আদেশ প্রদান ও নির্দেশনা জারী;(গ) পার্কে বিনিয়োগকারীদের প্রদেয় সুবিধাদি নির্ধারণ;(ঘ) পার্কের ভূমি, ভবনের স্পেস বরাদ্দ, ভাড়া ও ইজারা প্রদানের শর্তাবলী ও হার নির্ধারণ;(ঙ) সরকারি ও বেসরকারি অংশীদারিত্বে পার্ক নির্মাণে ডেভেলপার নিয়োগের জন্য শর্তাবলী নির্ধারণ; এবং(চ) পার্কের উন্নয়ন, বিকাশ ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা সংশ্লিষ্ট অন্য যে কোন বিষয়।
১২। (১) কর্তৃপক্ষের একজন ব্যবস্থাপনা পরিচালক থাকিবে।(২) ব্যবস্থাপনা পরিচালক সরকার কর্তৃক নিযুক্ত হইবে এবং তাহার চাকুরীর শর্তাদি সরকার কর্তৃক স্থিরীকৃত হইবে।(৩) ব্যবস্থাপনা পরিচালক কর্তৃপক্ষের সার্বক্ষণিক মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হইবে এবং তিনি-(ক) নির্বাহী কমিটির সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য দায়ী থাকিবেন; এবং(খ) নির্বাহী কমিটির নির্দেশ মোতাবেক কর্তৃপক্ষের অন্যান্য কার্য সম্পাদন করিবেন।
১৩। (১) নির্বাহী কমিটি উহার দায়িত্ব পালনে সহায়তা প্রদানের জন্য এক বা একাধিক কমিটি গঠন করিতে পারিবে।(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন গঠিত কমিটি নির্বাহী কমিটি কর্তৃক নির্ধারিত সংখ্যক সদস্য সমন্বয়ে গঠিত হইবে এবং উহা নির্বাহী কমিটি কর্তৃক নির্ধারিত পদ্ধতিতে কার্য সম্পাদন করিবে।
১৪। আপাততঃ বলবৎ অন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কর্তৃপক্ষ, প্রয়োজনবোধে, সরকারের পূর্বানুমোদন সাপেক্ষে, পার্কের প্রয়োজন বিবেচনায় Customs Act, 1969 (Act No. IV of 1969) যথাযথভাবে অনুসরণপূর্বক বাংলাদেশের যে কোন পার্কে স্থাপিত হাই-টেক শিল্প-কারখানার কাঁচামাল, প্যাকেজিং সামগ্রী, আধা-প্রক্রিয়াজাত দ্রব্যাদি, আনুষঙ্গিক দ্রব্যাদি, ইত্যাদি আমদানির জন্য পাবলিক ওয়্যার হাউজ স্থাপন, রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনার ব্যবস্থা করিতে পারিবে।
১৫। আপাততঃ বলবৎ অন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, সরকার,-(ক) সরকারি গেজেটে এবং তদতিরিক্ত ঐচ্ছিকভাবে ইলেকট্রনিক গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, 8[জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে অবহিত রাখিয়া], পার্কে স্থাপিত হাই-টেক শিল্প-কারখানার ক্ষেত্রে বিশেষ শুল্ক সুবিধা প্রদান করিতে পারিবে; এবং(খ) দফা (ক) এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে Customs Act, 1969 (Act No. IV of 1969) এর বিধান অনুসারে পার্কে স্থাপিত হাই-টেক শিল্প কারখানাসমূহে আমদানি ও রপ্তানি কার্যক্রম পরিচালনার সুবিধার্থে বিশেষ ব্যবস্থা প্রবর্তন করিতে পারিবে।
১৬। কর্তৃপক্ষ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সম্মতিক্রমে, নিম্নবর্ণিত বিষয়ে বন্ডেড সুবিধাদি প্রদান করিতে পারিবে, যথা 9:- পার্কে আমদানিকৃত কাঁচামালসমূহ কোন দ্রব্যের উপর কাস্টমস্ রিজার্ভ, বিক্রয় কর, Octroi বা আবগারী শুল্ক বা আমদানি লাইসেন্স বা পারমিট ফি বা অন্য কোন চার্জ; এবং(খ) পার্ক হইতে রপ্তানিকৃত বা দেশে ব্যবহৃত কোন দ্রব্যের শুল্ক বা অন্য কোন চার্জ।
১৭। (১) হাই-টেক শিল্প স্থাপনের উদ্দেশ্যে পার্ক প্রতিষ্ঠা করিতে আগ্রহী ব্যক্তিকে কর্তৃপক্ষের নিকট বিধি দ্বারা নির্ধারিত ফরমে অনুমতির জন্য আবেদন করিতে হইবে।(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন আবেদনপত্র প্রাপ্তির পর কর্তৃপক্ষ আবেদনপত্রের সহিত দাখিলকৃত সকল তথ্যাদি সম্পর্কে নিশ্চিত হইবে এবং নির্ধারিত সময়, পদ্ধতি ও ফরমে আবেদনকারী অনুমতি প্রদান করিবে।(৩) কর্তৃপক্ষ কর্তৃক কোন আবেদনকারীর আবেদন যথাযথ বিবেচিত না হইলে আবেদনকারীকে যুক্তিসঙ্গত শুনানীর সুযোগ প্রদান করিয়া আবেদনটি নির্ধারিত সময় ও পদ্ধতিতে নামঞ্জুর করিতে পারিবে এবং উক্ত সিদ্ধান্তের যথাযথ কারণ উল্লেখপূর্বক উহা আবেদনকারীকে লিখিতভাবে অবহিত করিতে হইবে।
১৮। (১) ধারা ১৭ এর অধীন প্রদত্ত অনুমতি পত্রের শর্তাবলী বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।(২) ধারা ১৭ এর অধীন প্রাপ্ত কোন অনুমতি বা উহার অধীন অর্জিত স্বত্ব, হস্তান্তরযোগ্য হইবে না এবং এইরূপ হস্তান্তর ফলবিহীন (void) হইবে।(৩) ধারা ১৭ এর উপ-ধারা (২) এর অধীন অনুমতি প্রদান করার সময় কর্তৃপক্ষ এই আইন বা তদধীন প্রণীত বিধির সহিত সঙ্গতিপূর্ণ যে কোন শর্ত সংশ্লিষ্ট অনুমতিপত্রে উল্লেখ করিতে পারিবে এবং কর্তৃপক্ষ উক্ত শর্ত যে কোন সময় পরিবর্তন করিতে পারিবে।(৪) উপ-ধারা (৩) এর অধীন কোন শর্ত পরিবর্তন করা হইলে অনুমতিপ্রাপ্ত প্রত্যেক ব্যক্তি উহা মানিয়া চলিতে বাধ্য থাকিবে।
১৯। পার্কে হাই-টেক শিল্প স্থাপনে আগ্রহী ব্যক্তি বিধি দ্বারা নির্ধারিত ফরমে কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করিবে 10[:] তবে শর্ত থাকে যে, কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ডেভেলপার নিয়োগ করা হইলে আবেদনকারীকে নিয়োগপ্রাপ্ত ডেভেলপার এর মাধ্যমে এবং ব্যক্তি উদ্যোক্তা কর্তৃক স্থাপিত পার্কে আবেদনকারীকে ব্যক্তি উদ্যোক্তার মাধ্যমে কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করিতে হইবে।
২১। কর্তৃপক্ষ, পার্কে হাই-টেক শিল্প স্থাপনে আগ্রহী ব্যক্তি বা ডেভেলপারকে, উপযুক্ত ফি ও সার্ভিস চার্জ গ্রহণ সাপেক্ষে, ওয়ান স্টপ সার্ভিসের মাধ্যমে নিম্নবর্ণিত সেবা প্রদান করিতে পারিবে, যথা 11:- পার্কে ভূমি নির্বাচনের অনুমতি;(খ) রেসিডেন্ট ও নন-রেসিডেন্ট ভিসা;(গ) ওয়ার্ক পারমিট;(ঘ) নির্মাণ পারমিট;(ঙ) হাই-টেক শিল্প স্থাপনের লক্ষ্যে পার্কে প্লটসমূহ বরাদ্দ বা ভাড়া বা ইজারা প্রদানের ব্যবস্থা;(চ) পানি, গ্যাস, বিদ্যুৎ, টেলিফোন ইত্যাদির সংযোগ ও সরবরাহ; এবং(ছ) পার্ক সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কার্যাদি।
২২। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকার, সরকারী গেজেটে এবং তদতিরিক্ত ঐচ্ছিকভাবে ইলেকট্রনিক গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, উহাতে বর্ণিত কোন স্থান বা স্থানসমূহকে এবং ব্যক্তি কর্তৃক অনুমতিপ্রাপ্ত স্থান বা স্থানসমূহকে পার্ক হিসাবে ঘোষণা করিতে পারিবে।
২৩। (১) কর্তৃপক্ষ, তদকর্তৃক নির্ধারিত শর্তাবলী সাপেক্ষে,ধারা ১৯ এর অধীন পার্কে হাই-টেক শিল্প স্থাপনে অনুমতি প্রাপ্ত ব্যক্তির নিকট ভূমি বা ভবনের স্পেস বরাদ্দ, ভাড়া বা ইজারা প্রদান করিতে পারিবে।(২) হাই-টেক শিল্প স্থাপনের জন্য বরাদ্দ প্রাপ্ত ভূমি বা ইজারা বা ভাড়ায় গৃহীত স্পেস হাই-টেক শিল্প স্থাপন বা সংশ্লিষ্ট ফরোয়ার্ড এন্ড ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ শিল্প ব্যতিত অন্য কোন উদ্দেশ্যে ব্যবহার করিলে উক্ত বরাদ্দ বা ইজারা বা ভাড়া বাতিল করা যাইবে।
২৪। কর্তৃপক্ষ, নির্বাহী কমিটির সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সময় সময়, কোন একটি নির্দিষ্ট পার্কে কোন কোন ধরনের শিল্প স্থাপিত হইবে উহা নির্ধারণ করিতে পারিবে।
পার্কে ব্যাংক বা ব্যাংকসমূহকে কার্য পরিচালনার অনুমতি প্রদান
২৬। কর্তৃপক্ষ, বিনিয়োগকারীগণের আর্থিক লেনদেনের সুবিধার্থে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতিক্রমে, স্থানীয় ব্যাংক বা বিদেশী ব্যাংক বা ব্যাংকসমূহকে পার্কে ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনার অনুমতি প্রদান করিতে পারিবে এবং উক্ত ব্যাংক বা ব্যাংকসমূহ পার্কে স্বাভাবিক ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করিবে এবং পার্কে কর্মরত বা সম্পৃক্ত বিদেশী ব্যক্তিদের নিকট হইতে আমানতও গ্রহণ করিতে পারিবে।
২৭। (১) আপাততঃ কার্যকর অন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, সরকার সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা পার্ক স্থাপন, উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনার স্বার্থে বিনিয়োগ আকৃষ্ট করিবার লক্ষ্যে, পার্কে কোন আইন বা আইনসমূহ বা উহার বা উহাদের সকল বা নির্দিষ্ট কোন বিধান এর প্রয়োগ রহিত করিতে পারিবে অথবা এই মর্মে নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবে যে, প্রয়োজনীয় সংশোধন বা পরিবর্তন সাপেক্ষে অনুরূপ কোন আইন বা উহার নির্দিষ্ট কোন বিধান পার্কে প্রয়োগ করা যাইবে।
২৮। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, কর্তৃপক্ষ, পার্কে নিয়োগকৃত ডেভেলপার, প্রতিষ্ঠিত শিল্প ইউনিটসমূহ, অন্যান্য আর্থিক ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান পরিবেশ সংক্রান্ত সকল আইনের প্রতিপালনসহ বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুস্বাক্ষরকৃত বা অনুমোদিত কনভেনশনসমূহের অধীন পালনীয় অঙ্গীকারসমূহ পালন করিতে বাধ্য থাকিবে।
২৯। কর্তৃপক্ষের একটি তহবিল থাকিবে যাহাতে পার্ক সংশ্লিষ্ট নিম্নবর্ণিত উৎসসমূহ হইতে প্রাপ্ত অর্থ জমা হইবে এবং প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে উক্ত অর্থ উত্তোলন ও ব্যয় করা যাইবে, যথা12:- সরকার কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান;(খ) সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে অন্য কোন উৎস হইতে গৃহীত ঋণ;(গ) পার্কের প্লট বরাদ্দ বা ইজারা হইতে প্রাপ্ত অর্থ;(ঘ) পার্কের ভবন বা ভবনের স্পেস ভাড়া হইতে প্রাপ্ত অর্থ;(ঙ) সেবা প্রদানের জন্য প্রদেয় ফি ও সার্ভিস চার্জ হইতে প্রাপ্ত অর্থ; এবং(চ) অন্য কোন উৎস হইতে প্রাপ্ত অর্থ।
৩০। কর্তৃপক্ষ প্রতি বৎসর সরকার কর্তৃক নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সম্ভাব্য আয় ব্যয়সহ পরবর্তী অর্থ বৎসরের বাৎসরিক বাজেট বিবরণী সরকারের নিকট পেশ করিবে এবং উহাতে উক্ত বৎসরে সরকারের নিকট হইতে কর্তৃপক্ষের কি পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন হইবে উহারও উল্লেখ থাকিবে।
৩১।(১) কর্তৃপক্ষ যথাযথভাবে উহার হিসাব রক্ষণ করিবে এবং হিসাবের বার্ষিক বিবরণী প্রস্তুত করিবে।(২) বাংলাদেশের মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, অতঃপর মহাহিসাব নিরীক্ষক নামে অভিহিত, প্রতি বৎসর কর্তৃপক্ষের হিসাব নিরীক্ষা করিবেন এবং নিরীক্ষা রিপোর্টের একটি করিয়া অনুলিপি সরকার ও কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরণ করিবেন।(৩) উপ-ধারা (২) মোতাবেক হিসাব নিরীক্ষার উদ্দেশ্যে মহাহিসাব নিরীক্ষক কিংবা তাহার নিকট হইতে এতদুদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তি কর্তৃপক্ষের এতদসংক্রান্ত সকল রেকর্ড, দলিল-দস্তাবেজ, নগদ বা ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ, জামানত ভান্ডার এবং অন্যবিধ সম্পত্তি পরীক্ষা করিয়া দেখিতে পরিবেন এবং কর্তৃপক্ষের যে কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করিতে পরিবেন।
৩২। (১) প্রতি অর্থ বৎসর শেষ হইবার পরবর্তী ৩ (তিন) মাসের মধ্যে কর্তৃপক্ষ তদকর্তৃক উক্ত অর্থ বৎসরে সম্পাদিত কার্যাবলীর বিবরণ সম্বলিত একটি বার্ষিক প্রতিবেদন সরকারের নিকট পেশ করিবে।(২) সরকার, প্রয়োজনবোধে, কর্তৃপক্ষের নিকট হইতে যে কোন সময় কর্তৃপক্ষের যে কোন বিষয়ের উপর প্রতিবেদন এবং বিবরণী আহবান করিতে পারিবে এবং কর্তৃপক্ষ উহা সরকারের নিকট সরবরাহ করিতে বাধ্য থাকিবে।(৩) সরকার যে কোন সময় কর্তৃপক্ষের কর্মকান্ড অথবা যে কোন প্রকার অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত অনুষ্ঠানের নির্দেশ দিতে পারিবে।
৩৪। কর্তৃপক্ষের নিম্নবর্ণিত বিশেষ অধিকারসমূহ থাকিবে, যথা 14:- পার্কে হাই-টেক শিল্প স্থাপনকারী বা শিল্প বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানের নিকট কর্তৃপক্ষের কোন পাওনা অপরিশোধিত থাকিলে, এবং উক্তরূপ দেনা পরিশোধে ব্যর্থতার ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ উহার পাওনা আদায়ের জন্য উক্ত কোম্পানী বা শিল্প বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের মালিক, পরিচালক বা পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে যে-কোন প্রাতিষ্ঠানিক বা আইনগত কার্যধারা গ্রহণের অধিকার সংরক্ষণ করিবে;(খ) পার্কে অবস্থিত কোন হাই-টেক শিল্প বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের মালিক বা কোন ব্যক্তি যদি কোন প্রকারের কোন শ্রমিক অসন্তোষের সহিত জড়িত হয়, তাহা হইলে কর্তৃপক্ষ উক্তরূপ শিল্প প্রতিষ্ঠানকে উহার সংশ্লিষ্ট শ্রমিক, কর্মচারী, নির্বাহী বা ব্যবস্থাপনা সংশ্লিষ্ট কর্মচারীকে বরখাস্ত করাসহ নির্ধারিত সময়ের জন্য উক্ত শিল্প বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ রাখিবার জন্য নির্দেশ দিতে পারিবে এবং ইহার জন্য কর্তৃপক্ষ কোন ক্ষতিপূরণ প্রদানে দায়ী হইবে না;(গ) যদি পার্কে স্থাপিত কোন হাই-টেক শিল্প বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের বকেয়া পাওনা, অন্যান্য পাওনা এবং দায়-দেনা পরিশোধ করিতে ব্যর্থ হয়, তাহা হইলে কর্তৃপক্ষ এককভাবে উক্ত প্রতিষ্ঠানের মেশিনপত্র, যন্ত্রপাতি, কাঁচামাল অথবা অন্য কোন পণ্য অপসারণক্রমে উহা গণপূর্ত অধিদপ্তরের নির্ধারিত হারে মূল্যায়নপূর্বক,অন্য কোন শিল্প বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে বরাদ্দ প্রদান করিতে পারিবে।
৩৬। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, কর্তৃপক্ষ, সরকারি গেজেটে এবং তদতিরিক্ত ঐচ্ছিকভাবে ইলেকট্রনিক গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইন বা বিধির সাথে অসামঞ্জস্যপূর্ণ নয় এইরূপ প্রবিধান প্রণয়ন করিতে পারিবে।
৩৭। (১) এই আইন প্রবর্তনের পর সরকার, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের মূল বাংলা পাঠের ইংরেজীতে অনূদিত একটি নির্ভরযোগ্য পাঠ প্রকাশ করিবে;(২) বাংলা ও ইংরেজী পাঠের মধ্যে বিরোধের ৰেত্রে বাংলা পাঠ প্রাধান্য পাইবে।
“:-” চিহ্নটি “ঃ-” চিহ্নটির পরিবর্তে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ (সংশোধন) আইন, ২০১৪ (২০১৪ সনের ০৯ নং আইন) এর ১০ ধারাবলে প্রতিস্থাপিত।
12
“:-” চিহ্নটি “ঃ-” চিহ্নটির পরিবর্তে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ (সংশোধন) আইন, ২০১৪ (২০১৪ সনের ০৯ নং আইন) এর ১১ ধারাবলে প্রতিস্থাপিত।
13
‘‘ইপিজেড শ্রমিক কল্যাণ সমিতি ও শিল্প সম্পর্ক আইন, ২০১০ (২০১০ সনের ৪৩ নং আইন)’’ শব্দগুলি, সংখ্যাগুলি, কমা ও বন্ধনী ‘‘ইপিজেড শ্রমিক কল্যাণ সমিতি ও শিল্প সম্পর্ক আইন’’ শব্দগুলির পরিবর্তে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ (সংশোধন) আইন, ২০১৪ (২০১৪ সনের ০৯ নং আইন) এর ১২ ধারাবলে প্রতিস্থাপিত।