১। (১) এই আইন রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০ নামে অভিহিত হইবে।(২) এই আইনের -(ক) ধারা ১৯, ২০, ২১, ২২, ২৩, ২৪, ২৫, ২৬, ২৭, ২৮, ২৯, ৩০, ৩১, ও ৩২ অবিলম্বে কার্যকর হইবে;(খ) দফা (ক) তে উল্লিখিত ধারাগুলি ব্যতীত অন্যান্য ধারাগুলি ৭ ডিসেম্বর, ২০০৮ খ্রিস্টাব্দ তারিখ হইতে কার্যকর হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।
২। বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থী কোন কিছু না থাকিলে, এই আইনে-(১) “অনুমোদিত নক্শা” অর্থ প্রযোজ্য ইমারত নির্মাণ, ভূমি উন্নয়ন এবং বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোডসহ(Bangladesh National Building Code) এতদসংক্রান্ত প্রচলিত অন্যান্য বিধিবিধান অনুযায়ী যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত নক্শা;(২) **“কমন স্পেস”**অর্থ রিয়েল এস্টেট এর জন্য সহযোগী স্পেস যেমন, লিফ্ট-লবী,সিঁড়ি ঘর, লিফ্ট মেশিন রুম, জেনারেটর সাব-স্টেশন, কেয়ারটেকার কক্ষ, গার্ড রুম, কমন ফ্যাসিলিটিস এর জন্য ব্যবহৃত স্থান;(৩) “কর্তৃপক্ষ” অর্থ ধারা ৪ এর অধীন ঘোষিত বা, ক্ষেত্রমত, উল্লিখিত কর্তৃপক্ষ;(৪) “ক্রেতা” অর্থ রিয়েল এস্টেট ক্রয়ের উদ্দেশ্যে রিয়েল এস্টেট ডেভেলপার এর সহিত চুক্তিবদ্ধ কোন ব্যক্তি;(৫) “নগর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ” অর্থ Town Improvement Act, 1953 (Act No. XIII of 1953) এর অধীন প্রতিষ্ঠিত রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ,Chittagong Development Authority Ordinance, 1959 (Ordinance No. LI of 1959)এর অধীন প্রতিষ্ঠিত চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ,Khulna Development Authority Ordinance, 1961 (Ordinance No. II of 1961)এর অধীন প্রতিষ্ঠিত খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এবংRajshahi Town Development Authority Ordinance, 1976 (Ordinance No. LXXVIII of 1976)এর অধীন প্রতিষ্ঠিত রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ;(৬) “নিবন্ধন সনদ” অর্থ ধারা ৫ এর অধীন ইস্যুকৃত নিবন্ধন সনদ;(৭) “নির্ধারিত” অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি দ্বারা নির্ধারিত;(৮) “প্লট” অর্থ বাসযোগ্য এক খন্ড জমি যাহার উপর এক বা একাধিক আবাসিক বা প্রাতিষ্ঠানিক বা বাণিজ্যিক ফ্ল্যাট নির্মাণ করা যায়;(৯) “ফ্লোর স্পেস” অর্থ দেওয়াল ও অন্যান্য ভারবাহী কাঠামোর আনুভূমিক ক্ষেত্রফলসহ ব্যবহারযোগ্য ইমারতের একটি তলার ক্ষেত্রফল;(১০) “ব্যক্তি” অর্থে কোম্পানী, সমিতি বা ব্যক্তি সমষ্টি, সংবিধিবদ্ধ হউক বা না হউক, অন্তর্ভুক্ত হইবে;(১১) “বিল্ডিং সার্ভিসেস” অর্থ আলো-বাতাসের চলাচল, বৈদ্যুতিক সংযোগ, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ, উত্তাপন(heating),অভ্যন্তরীণ শব্দ(acoustics) নিয়ন্ত্রণ, লিফট, গ্যারেজ, এস্কেলেটর ও মুভিং ওয়াক স্থাপন, পানি সরবরাহ, অগ্নিনির্বাপণ, পয়ঃ ও পানি নিষ্কাশন, গ্যাস সরবরাহ এবং টেলিফোন সংযোগ ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সুবিধার সন্নিবেশ;(১২) **“রিয়েল এস্টেট(real estate)“**অর্থ উন্নয়ন, ব্যবস্থাপনা ও ক্রয়-বিক্রয়য়ের নিমিত্ত আবাসিক বা প্রাতিষ্ঠানিক বা বাণিজ্যিক প্লট অথবা এপার্টমেন্ট বা ফ্ল্যাট, প্রাতিষ্ঠানিক বা মিশ্র ফ্লোর স্পেস জাতীয় স্থাবর ভূ-সম্পত্তি;(১৩) “রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা” অর্থ বেসরকারী উদ্যোগে অথবা সরকারী-বেসরকারী যৌথ উদ্যোগে কিংবা বিদেশী অর্থায়নে রিয়েল এস্টেট প্লট অথবা এপার্টমেন্ট বা ফ্ল্যাট, বা শিল্প বা বাণিজ্যিক প্লট বা ফ্ল্যাট, বা প্রাতিষ্ঠানিক বা মিশ্র ফ্লোর স্পেস জাতীয় স্থাবর ভূ-সম্পত্তির উন্নয়ন, ক্রয়-বিক্রয় নিয়ন্ত্রণ, বরাদ্দ, নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ;(১৪) “রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন প্রকল্প বা প্রকল্প” অর্থ ডেভেলপার কতৃর্ক(অ) বেসরকারী আবাসিক বা প্রাতিষ্ঠানিক বা বাণিজ্যিক বা শিল্প প্লট উন্নয়ন ও বরাদ্দ; এবং(আ) রিয়েল এস্টেট নির্মাণ, ক্রয়-বিক্রয়, বরাদ্দ, ইত্যাদির জন্য গৃহীত প্রকল্প বা প্রকল্পসমূহ; এবং(১৫) “রিয়েল এস্টেট ডেভেলপার বা ডেভেলপার” অর্থ রিয়েল এস্টেট ব্যবসা পরিচালনার উদ্দেশ্যে এ আইনের ধারা ৫ এর অধীন নিবন্ধিত কোন ব্যক্তি।
৩। (১) সম্পূর্ণভাবে সরকারী ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমের ক্ষেত্রে এই আইনের বিধানাবলী প্রযোজ্য হইবে না।(২) সরকারের কোন মন্ত্রণালয় বা বিভাগ অথবা উহার অধীনস্থ বা সংযুক্ত কোন দপ্তর বা সংস্থা বা কর্তৃপক্ষ অথবা কোন সংবিধিবদ্ধ কর্তৃপক্ষ বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান কোন ডেভেলপার এর সহিত যৌথভাবে রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম পরিচালনা করিলে উহা সরকারী-বেসরকারী যৌথ উদ্যোগে রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা হিসাবে গণ্য হইবে এবং সেইক্ষেত্রে এই আইন এবং তদধীন প্রণীত বিধিমালা প্রযোজ্য হইবে।
৪। (১) সরকার, এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে এক বা একাধিক কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করিতে পারিবে এবং তদুদ্দেশ্যে সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা যে কোন সরকারী বা সংবিধিবদ্ধ বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানকে প্রজ্ঞাপনে উল্লিখিত এলাকার জন্য কর্তৃপক্ষ হিসাবে ঘোষণা করিতে পারিবে।(২) বিশেষ করিয়া এবং উপ-ধারা (১) এর সামগ্রিকতাকে ক্ষুন্ন না করিয়া,-(ক) সংশ্লিষ্ট নগর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এবং নগর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের অবর্তমানে সংশ্লিষ্ট সিটি কর্পোরেশন, উহার স্থানীয় অধিক্ষেত্রের জন্য;(খ) সংশ্লিষ্ট পৌরসভা, উহার স্থানীয় অধিক্ষেত্রের জন্য;(গ) সংশ্লিষ্ট ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড, উহার স্থানীয় অধিক্ষেত্রের জন্য; এবং(ঘ) নগর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, পৌরসভা এবং ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড বহির্ভূত এলাকার জন্য জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ-এই আইনের অধীন কর্তৃপক্ষ হিসাবে গণ্য হইবে।
৫। (১) এই আইনের বিধান অনুযায়ী কোন একটি নির্দিষ্ট এলাকায় রিয়েল এস্টেট ব্যবসা পরিচালনার উদ্দেশ্যে প্রত্যেক রিয়েল এস্টেট ডেভেলপারকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট হইতে নিবন্ধন গ্রহণ করিতে হইবে।(২) উপ-ধারা (১) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, সমগ্র বাংলাদেশে রিয়েল এস্টেট ব্যবসা পরিচালনা করিতে হইলে উক্ত রিয়েল এস্টেট ডেভেলপারকে সরকারের নিকট হইতে নিবন্ধন গ্রহণ করিতে হইবে।(৩) প্রত্যেক রিয়েল এস্টেট ডেভেলপারকে নিম্নবর্ণিত কাগজপত্রের কপিসহ নিবন্ধনের জন্য বিধি দ্বারা নির্ধারিত ফরমে সরকার বা, ক্ষেত্রমত, কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করিতে হইবে, যথা :-(ক) ট্রেড লাইসেন্স;(খ) ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নম্বর(টিআইএন) সার্টিফিকেট;(গ) মূল্য সংযোজন কর(VAT)রেজিস্ট্রেশন নম্বর;(ঘ)(i)প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের অভিজ্ঞতা (যদি থাকে);(ii)কারিগরী ব্যক্তিদের যোগ্যতার প্রমাণপত্র (স্থপতি, প্রকৌশলী ও পরিকল্পনাবিদের শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ এবং সংশ্লিষ্ট পেশাজীবী প্রতিষ্ঠানের সদস্য পত্রের সনদ);(ঙ) কোম্পানী হইলে, মেমোরেন্ডাম অব এসোসিয়েশন(Memorandum of Association) এবং আর্টিকেলস্ অব এসোসিয়েশন (Articles of Association)সহ সার্টিফিকেট অব ইনকর্পোরেশন(Certificate of Incorporation);(চ) রিয়েল এস্টেট এন্ড হাউজিং এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব) অথবা ল্যান্ড ডেভেলপার্স এসোসিয়েশন এর সদস্য পদের নিবন্ধনের কপি, যদি থাকে।(৪) উপ-ধারা (৩) এর অধীন আবেদন প্রাপ্তির পর সরকার বা, ক্ষেত্রমত, কর্তৃপক্ষ প্রাপ্ত তথ্যাদি ৬০ (ষাট) দিনের মধ্যে যাচাই-বাছাই পূর্বক যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে-(ক) আবেদনকারী রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য নির্ধারিত শর্তাবলী পূরণ করিতে সক্ষম, তাহা হইলে উক্ত সময়ের মধ্যে আবেদনটি মঞ্জুর করিবে এবং তদ্সম্পর্কে আবেদনকারীকে লিখিতভাবে অবহিত করিবে; অথবা(খ) আবেদনকারী উক্ত শর্তাবলী পূরণ করিতে অক্ষম, তাহা হইলে কারণ উল্লেখ করিয়া আবেদন নামঞ্জুর করিবে এবং তদ্সম্পর্কে আবেদনকারীকে লিখিতভাবে অবহিত করিবে।(৫) উপ-ধারা ৪ (ক) এর অধীন আবেদন মঞ্জুর করা হইলে সরকার বা, ক্ষেত্রমত, কর্তৃপক্ষ আবেদনকারীকে লিখিতভাবে অবহিত করিবার তারিখ হইতে পরবর্তী ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে, প্রযোজ্য ফিস আদায় সাপেক্ষে, ৫ (পাঁচ) বৎসরের জন্য আবেদনকারীর বরাবরে একটি নিবন্ধন সনদ ইস্যু করিবে এবং উক্ত নিবন্ধন সনদ ৫(পাঁচ) বৎসর অন্তর অন্তর নবায়ন করা যাইবে।(৬) নিবন্ধিত ডেভেলপারদের একটি তালিকা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত পদ্ধতিতে সংরক্ষণ ও প্রকাশ করিবে।(৭) নির্ধারিত পদ্ধতিতে ডেভেলপারের নিবন্ধন নবায়ন, বাতিল ও সংশোধন করা যাইবে।
৭। (১) কোন ডেভেলপার জমি খরিদ করিয়া উক্ত জমিতে মালিক নিয়ত হইয়া উক্ত জমির উপর বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে রিয়েল এস্টেট নির্মাণ করিলে এই আইনের সকল বিধি-বিধান তাহার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হইবে।(২) কোন ব্যক্তি এককভাবে বা কয়েকজন ব্যক্তি যৌথভাবে কোন রিয়েল এস্টেট ডেভেলপার বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান না হইয়াও তাহার বা তাহাদের নিজস্ব ভূমির উপর ক্রয়-বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে রিয়েল এস্টেট নির্মাণ করিলে, তাহার বা তাহাদের ক্ষেত্রেও, যতদূর প্রযোজ্য হয়, এই আইনের বিধানাবলী প্রযোজ্য হইবে।
৮। (১) প্রসপেক্টাসে বা বরাদ্দপত্রে রিয়েল এস্টেট এর বিক্রয়যোগ্য এলাকার বিভাজনসহ যথাযথ ব্যাখ্যা বা বিশ্লেষণ উল্লেখ করিতে হইবে।(২) রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন ও ক্রয়-বিক্রয় সংক্রান্ত বিস্তারিত শর্ত, পক্ষদের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তিতে উল্লেখ করিতে হইবে।(৩) কোন ডেভেলপার ক্রেতার সম্মতিক্রমে বরাদ্দকৃত নির্দিষ্ট প্লট বা ফ্ল্যাট পরিবর্তন করিতে পারিবে।(৪) কোন ডেভেলপার ক্রেতার নিকট হইতে চুক্তিতে উল্লিখিত শর্তের বাহিরে অতিরিক্ত অর্থ গ্রহণ করিতে পারিবে নাঃতবে শর্ত থাকে যে, যদি কোন পক্ষ পরবর্তীতে কোন উন্নতমানের সরঞ্জামাদি সংযোজনের প্রস্তাব করিয়া পরস্পর সম্মত হইয়া এই মর্মে সম্পূরক চুক্তি সম্পাদন করিলে এই বিধান কার্যকর হইবে না।
৯। (১) রিয়েল এস্টেটের সমুদয় মূল্য পরিশোধের পর ডেভেলপার অনূর্ধ্ব ৩ (তিন) মাসের মধ্যে ক্রেতাকে রিয়েল এস্টেটের দখল হস্তান্তর, দলিল সম্পাদন ও রেজিস্ট্রেশন কার্যাদি সম্পন্ন করিয়া দিবে।(২) রিয়েল এস্টেট এর দখল হস্তান্তরকালে উহার আয়তন কম বা বেশী হইলে তাহার মূল্যক্রয়কৃত দর(rate)অনুযায়ী ৩ (তিন) মাসের মধ্যে সমন্বয় করিতে হইবে।(৩) কোন ডেভেলপার কোন ভূমির মালিকের নিকট হইতে বা পক্ষে আম-মোক্তারনামা দলিলবলে ভূমি প্রাপ্ত হইয়া উক্ত ভূমিতে রিয়েল এস্টেট নির্মাণ এবং তদীয় অংশে প্রাপ্ত রিয়েল এস্টেট ক্রেতাগণের নিকট বিক্রয়ের প্রস্তাব করিলে ভূমির মালিক বা তাহার পক্ষে আম-মোক্তারনামা দলিলে, উপ-ধারা (৪) এর বিধান সাপেক্ষে, এই মর্মে ডেভেলপারকে ক্ষমতা অর্পণ করিতে হইবে যাহাতে ডেভেলপার তাহার অংশে প্রাপ্ত রিয়েল এস্টেট বাবদ দলিল স্বয়ং সম্পাদন করিয়া বিক্রয় বা অন্য কোনভাবে হস্তান্তর করিতে পারে।(৪) উপ-ধারা (৩) এ বর্ণিত মতে ভূমির মালিক বা তাহার পক্ষে ডেভেলপারকে আম-মোক্তারনামা দলিলের মাধ্যমে দলিল সম্পাদন করিয়া রিয়েল এস্টেট বিক্রয় বা হস্তান্তরের ক্ষমতা অর্পণ করা না হইলে,নির্মিত রিয়েল এস্টেট বিক্রয় বা হস্তান্তরযোগ্য হইবার পর ডেভেলপার কর্তৃক লিখিতভাবে অনুরুদ্ধ হইবার ১৫ (পনের) দিনের মধ্যে ভূমির মালিক বা তাহার পক্ষে ক্রেতার অনুকূলে দলিল সম্পাদন করিয়া দিতে হইবে।(৫) প্রচলিত অন্য কোন আইনে ভিন্নতর যাহাই থাকুক না কেন, ডেভেলপার কর্তৃক উপ-ধারা (৪) এর অধীন অনুরুদ্ধ হইয়া নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ভূমির মালিক বা তাহার পক্ষে দলিল সম্পাদন করা না হইলে, ডেভেলপার স্বয়ং এই ধারার ক্ষমতাবলে তদীয় অংশ এইরূপে ক্রেতার বরাবরে দলিল সম্পাদন করিয়া দিতে পারিবে যেন ডেভেলপার নিজেই উক্ত ভূমি ও রিয়েল এস্টেটের মালিক।
১০। (১) ভূমির মালিক রিয়েল এস্টেট উন্নয়নের লক্ষ্যে ডেভেলপারের সহিত লিখিত দ্বি-পাক্ষিক চুক্তি(Joint Venture Agreement)সম্পাদন করিবেন।(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত চুক্তিতে রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন বাবদ ডেভেলপারের প্রাপ্ত অংশের পরিমাণ উল্লেখপূর্বক প্রাপ্ত অংশ ডেভেলপারের মনোনীত ক্রেতা বরাবর দলিল সম্পাদন ও রেজিস্ট্রেশন করিয়া দেওয়ার ক্ষমতা প্রদানের লক্ষ্যে ডেভেলপার বরাবর আম-মোক্তারনামা দলিল সম্পাদনের শর্ত উল্লেখসহ ভূমি উন্নয়ন বা নির্মাণ কাজ শুরু ও শেষ করিবার সময় উল্লেখ থাকিবে।(৩) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত চুক্তির শর্ত অনুযায়ী রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন বা নির্মাণ কাজ শুরু ও শেষ করিতে হইবে।
১১। (১) রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন প্রকল্পের ক্ষেত্রে বেসরকারী আবাসিক প্রকল্পের ভূমি উন্নয়ন বিধিমালা, ২০০৪ অনুযায়ী নাগরিক সুবিধাদি, যতদূর সম্ভব, নিশ্চিত করিতে হইবে।(২) ডেভেলপার কতৃর্ক নির্মিত সকল প্রকার রিয়েল এস্টেট(ক) আলো-বাতাস চলাচলের উপযোগী হইতে হইবে;(খ) হস্তান্তরের পূর্বে উহাতে সকল প্রকার ইউটিলিটি সার্ভিস যেমন পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পয়ঃনিস্কাশন, বর্জ্যব্যবস্থাপনা, অগ্নি নিরোধক ব্যবস্থা, ইত্যাদি (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) সংযোগ থাকিতে হইবে; এবং(গ) হস্তান্তরের পর নির্মাণ সংক্রান্ত ত্রুটির কারণে মেরামতের প্রয়োজন হইলে হস্তান্তরের তারিখ হইতে অন্যূন ২ (দুই) বৎসর পর্যন্ত ডেভেলপারের নিজ খরচে উক্ত মেরামত কাজ সম্পন্ন করিতে হইবে।(৩) পক্ষগণের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তির শর্ত অনুযায়ী প্রত্যেক ডেভেলপারকে রিয়েল এস্টেট হস্তান্তরের পর অন্যূন ১ (এক) বৎসর পর্যন্ত উহার রক্ষণাবেক্ষণের করিতে হইবে।(৪) রিয়েল এস্টেট এর অনুমোদিত নক্শার ব্যত্যয়(deviation)ঘটাইয়া উহাতে কোন সুযোগ-সুবিধা হ্রাস বা কমন স্পেস এর পরিবর্তন করা যাইবে না।(৫) প্রত্যেক ডেভেলপারকে ক্রেতার অনুকূলে রিয়েল এস্টেট বরাদ্দের সময় প্রকল্পের স্থাপত্য নক্শায় এবং লে-আউটে চিহ্নিত নাগরিক সুযোগ-সুবিধাদি সম্পর্কিত তথ্য সম্বলিত বিবরণী প্রদান করিতে হইবে।
১২। (১) প্রসপেক্টাস বা বরাদ্দপত্রে উল্লিখিত নিয়ম অনুযায়ী ক্রেতা রিয়েল এস্টেট এর মূল্য ব্যাংকের মাধ্যমে পরিশোধ করিবে।(২) অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস ইত্যাদি সরবরাহপূর্বক বিক্রয় বা বরাদ্দকৃত রিয়েল এস্টেটসমূহ দখল হস্তান্তরের উপযোগী না হওয়া পর্যন্ত কিস্তির অর্থ ব্যতীত কোন সুদ নেওয়া যাইবে না।
রিয়েল এস্টেট এর সেবাসমূহ(utility services)নিশ্চিতকরণ
১৩। (১) প্রসপেক্টাস বা বরাদ্দপত্রে বর্ণিত সেবাসমূহ যেমন: পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাস ইত্যাদি (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) সংযোগ প্রদানের ক্ষেত্রে ডেভেলপার রিয়েল এস্টেট হস্তান্তরের পূর্বেই কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করিবে।(২) উপ-ধারা (১) অনুযায়ী উদ্যোগ গ্রহণ সত্ত্বেও, সেবা প্রদানকারী সংস্থাসমূহের সীমাবদ্ধতার কারণে যথাসময়ে সংযোগ প্রদান করা সম্ভব না হইলে এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থাসমূহে সেবা প্রাপ্তির দরখাস্ত দাখিলপূর্বক উদ্যোগ অব্যাহত রাখিলে ডেভেলপারকে ব্যর্থতার জন্য দায়ী করা যাইবে না।
ক্রেতা কর্তৃক এককালীন মূল্য বা কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থতা
১৪। (১) ক্রেতা কতৃর্ক স্থিরীকৃত সময়ের মধ্যে রিয়েল এস্টেট এর এককালীন মূল্য বা কিস্তির মূল্য পরিশোধে ব্যর্থতার ফলাফল সম্পর্কে প্রসপেক্টাস বা বরাদ্দপত্রে বিশদ উল্লেখ থাকিতে হইবে।(২) চুক্তিতে বা বরাদ্দপত্রে ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোন কারণে রিয়েল এস্টেট ক্রেতা এককালীন মূল্য বা কিস্তির অর্থ পরিশোধে ব্যর্থ হইলে ক্রেতাকে, রেজিস্টার্ড ডাকযোগে, অন্যূন ৬০(ষাট) দিনের পূর্ব নোটিশ প্রদান ব্যতীত তাহার রিয়েল এস্টেট এর বরাদ্দ বাতিল করা যাইবে না।(৩) উপ-ধারা (২) এ বর্ণিত বরাদ্দ বাতিলের ক্ষেত্রে ক্রেতার জমাকৃত অর্থ বরাদ্দ বাতিল আদেশের পরবর্তী ৩ (তিন) মাসের মধ্যে প্রাপকের হিসাবে প্রদেয়(account payee)চেকের মাধ্যমে একত্রে ফেরত প্রদান করিতে হইবে।(৪) উপ-ধারা (২) এ বর্ণিত বিধান অনুযায়ী কোন ক্রেতা বিলম্বে কিস্তির অর্থ পরিশোধ করিতে চাহিলে, দেয় কিস্তির উপর বিলম্বিত সময়ের জন্য কিস্তির অর্থের উপর ১০% হারে সুদ প্রদান সহকারে কিস্তি পরিশোধ করিতে পারিবে।(৫) উপ-ধারা (৪) এ বর্ণিত বিধান অনুযায়ী ক্রেতা সর্বসাকুল্যে ৩ (তিন) বার কিস্তির অর্থ পরিশোধে বিলম্ব করিলে ডেভেলপার সংশ্লিষ্ট ক্রেতার বরাদ্দ বাতিল করিতে পারিবে।
১৫। (১) চুক্তি অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ডেভেলপার রিয়েল এস্টেট হস্তান্তরে ব্যর্থ হইলে রিয়েল এস্টেট এর মূল্য বাবদ পরিশোধিত সমুদয় অর্থ চুক্তিতে নির্ধারিত পরিমাণ ক্ষতিপূরণসহ ৬ (ছয়) মাসের মধ্যে প্রাপকের হিসাবে প্রদেয়(account payee)চেকের মাধ্যমে ফেরৎ প্রদান করিবে ঃতবে শর্ত থাকে যে, ক্রেতা ও ডেভেলপার যৌথ সম্মতিতে রিয়েল এস্টেট হস্তান্তরের সময়সীমা সম্পূরক চুক্তির মাধ্যমে বর্ধিত করিলে উপ-ধারা(২) এর বিধান অনুযায়ী ক্রেতাকে ক্ষতিপূরণ প্রদান করিতে হইবে।(২) উপ-ধারা (১) এ বর্ণিত ক্ষতিপূরণের পরিমাণ বা হার পক্ষগণের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তিপত্রে উল্লেখ না থাকিলে পরিশোধিত সমুদয় অর্থের উপর ১৫% হারে ক্ষতিপূরণ নির্ধারিত হইবে এবং ডেভেলপার অনধিক ৬ (ছয়) মাসের মধ্যে অনূর্ধ্ব ৩ (তিন) কিস্তিতে ক্ষতিপূরনের অর্থসহ সমুদয় অর্থ পরিশোধ করিবে।(৩) উপ-ধারা (১) ও (২) এ বর্ণিত ক্ষতিপূরণের সময় গণনার ক্ষেত্রে সমুদয় অর্থ পরিশোধের তারিখ পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ সময় গণনা করিতে হইবে।
১৬। (১) ডেভেলপার কর্তৃক বন্ধককৃত কোন রিয়েল এস্টেট ক্রেতা বরাবর বিক্রয় করা যাইবে না ঃতবে শর্ত থাকে যে, ক্রেতার সম্মতিতে বরাদ্দকৃত কোন রিয়েল এস্টেট ডেভেলপার কর্তৃক কোন ব্যক্তি, ব্যাংক বা অন্য কোন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিকট বন্ধক(mortgage) রাখা যাইবে।(২) ডেভেলপার কর্তৃক নির্মাণাধীন বা নির্মিত রিয়েল এস্টেট সম্পূর্ণভাবে বা উহার অংশবিশেষ কোন ব্যক্তি, ব্যাংক বা অন্য কোন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিকট ভূমি মালিকের সম্মতিক্রমে ডেভেলপার কর্তৃক বন্ধক(mortgage)রাখা যাইবে ঃতবে শর্ত থাকে যে, হস্তান্তর দলিল সম্পাদনের পূর্বেই ডেভেলপারকে সংশ্লিষ্ট রিয়েল এস্টেট বন্ধক হইতে দায়মুক্ত করিতে হইবে।
১৭। কোন কারণে ক্রেতা লিখিত আবেদনের মাধ্যমে তাঁহার অনুকূলে প্রদত্ত বরাদ্দ বাতিলপূর্বক পরিশোধিত অর্থ ফেরত গ্রহণ করিতে চাহিলে, ডেভেলপার আনুষঙ্গিক ব্যয় বাবদ পরিশোধিত অর্থের ১০% অর্থ কর্তনপূর্বক অবশিষ্ট অর্থ ক্রেতাকে ৩ (তিন) মাসের মধ্যে এককালীন চেক বা পে-অর্ডারের মাধ্যমে ফেরত প্রদান করিবে।
১৮।(১) এপার্টমেন্ট বা ফ্ল্যাট বা ফ্লোর স্পেস ক্রয় বা বিক্রয়ের চুক্তিপত্র বা বরাদ্দপত্রে প্রস্তবিত ভবনে যে সকল ফিটিংস, ফিক্সার, ইত্যাদি ব্যবহার করা হইবে উহার বিবরণী সুনির্দিষ্টভাবে লিপিবদ্ধ করিতে হইব।(২) স্থাপত্য ও কাঠামো নক্শা প্রণয়ন করিবার সময়Building Construction Act, 1952(Act No. II of 1953)এ বর্ণিত যোগ্যতাসম্পন্ন স্থপতি, প্রকৌশলী ও সংশ্লিষ্ট কারিগরী ব্যক্তিবর্গের দ্বারা নক্শা প্রণয়ন ও তদারকির ব্যবস্থা করিতে হইবে।(৩) স্থাপত্য ও কাঠামো নক্শা(Structural design)প্রণয়নে প্রযোজ্য ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ও বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড অনুসরণ করিত হইবে।(৪) উপ-ধারা (৩) এ বর্ণিত ক্ষেত্র ব্যতীত ভিন্ন কোন কারিগরী বিষয়ের জন্য ডেভেলপার প্রকৌশলী বা স্থপতি এর যৌথ ব্যবস্থাধীনে আন্তর্জাতিক মানের কোড অনুসরণ করা যাইবে।(৫) যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ব্যতীত অনুমোদিত নক্শার কোনরূপ পরিবর্তন করা যাইবে না।(৬) যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত এপার্টমেন্ট বা ফ্ল্যাট বা ফ্লোর স্পেস এর স্থাপত্য নক্শা এবং অনুমোদিত কারিগরী ব্যক্তি কর্তৃক প্রণীত কাঠামো নক্শা(Structural design)ও বিল্ডিং সার্ভিসেস (ইলেকট্রিক্যাল, মেকানিক্যাল, প্লাম্বিং, ইত্যাদি) এর নক্শার কপি এবং দখল হস্তান্তর পত্র বা ডেভেলপার কর্তৃক প্রতিস্বাক্ষর করিয়া ক্রেতাকে প্রদান করিতে হইবে।
নিবন্ধন ব্যতীত রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন কাজ করিবার দন্ড
১৯। কোন ব্যক্তি ধারা ৫ এর অধীন নিবন্ধন গ্রহণ না করিয়া কোন রিয়েল এস্টেট ব্যবসা পরিচালনা করিলে তিনি অপরাধ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন এবং উক্ত অপরাধের জন্য অনূর্ধ্ব ২ (দুই) বৎসর কারাদন্ড অথবা অনূর্ধ্ব ১০(দশ) লক্ষ টাকা অর্থদন্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হইবেন।
অনুমোদন ব্যতীত রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ শুরু করিবার দন্ড
২০। কোন ডেভেলপার যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন গ্রহণ ব্যতীত কোন রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন প্রকল্পের্ কাজ শুরু করিলে কিংবা অননুমোদিত রিয়েল এস্টেট প্রকল্পের বিজ্ঞাপন প্রচার বা বিক্রয় করিলে অনূর্ধ্ব ২ (দুই) বৎসর কারাদন্ড অথবা অনূর্ধ্ব ১০ (দশ) লক্ষ টাকা অর্থদন্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হইবেন।
নোটিশ ব্যতীরেকে বরাদ্দ বাতিল বা স্থগিত করিবার দন্ড
২২। ধারা ১৪ এর বিধান লংঘন করিয়া কোন ডেভেলপার রিয়েল এস্টেটের বরাদ্দ বাতিল করিলে অনূর্ধ্ব ১ (এক) বৎসর কারাদন্ড অথবা অনূর্ধ্ব ৫ (পাঁচ) লক্ষ টাকা অর্থদন্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হইবে।
২৩। ধারা ১৬ এ বর্ণিত বিধান লংঘন করিয়া কোন ডেভেলপার রিয়েল এস্টেট বন্ধক রাখিলে ১ (এক) বৎসর কারাদন্ড অথবা অনূর্ধ্ব ৫ (পাঁচ) লক্ষ টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হইবে।
২৪। কোন ডেভেলপার চুক্তিতে প্রতিশ্রুত রিয়েল এস্টেট ক্রেতার নিকট বিক্রয় না করিয়া, ক্রেতার অজ্ঞাতে, অবৈধভাবে লাভবান হইবার উদ্দেশ্যে, অন্যত্র বিক্রয় করিলে অনূর্ধ্ব ৩ (তিন) বৎসর কারাদন্ড অথবা অনূর্ধ্ব ২০ (বিশ) লক্ষ টাকা অর্থ দন্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হইবে।
২৫। কোন ডেভেলপার ক্রেতার সহিত সম্পাদিত চুক্তির অধীন প্রতিশ্রুত নির্মাণ উপকরণের পরিবর্তে, অবৈধভাবে লাভবান হইবার উদ্দেশ্যে, নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার করিলে বা যথাযথ পরিমাণ নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার না করিলে অনূর্ধ্ব ৩ (তিন) বৎসর কারাদন্ড অথবা অনূর্ধ্ব ২০ (বিশ) লক্ষ টাকা অর্থ দন্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হইবে।
২৬। কোন ডেভেলপার অনুমোদিত নক্শা বহির্ভূতভাবে রিয়েল এস্টেট নির্মাণ করিলে অনূর্ধ্ব ৩ (তিন) বৎসর কারাদন্ড অথবা অনূর্ধ্ব ২০ (বিশ) লক্ষ টাকা অর্থ দন্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হইবে।
২৭। যদি কোন ডেভেলপার কোন ভূমির মালিকের সহিত রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন বিষয়ে চুক্তি সম্পাদন করিয়া বা ক্রেতা বরাবর রিয়েল এস্টেটের বরাদ্দপত্র সম্পাদন করিয়া তদনুযায়ী কোন কার্যক্রম গ্রহণ না করে বা আংশিক কার্যক্রম গ্রহণ করিয়া বিনা কারণে অবশিষ্ট কাজ অসম্পাদিত অবস্থায় ফেলিয়া রাখে এবং তজ্জন্য ভূমির মালিককে বা, ক্ষেত্রমত, ক্রেতাকে কোনরূপ আর্থিক সুবিধা প্রদান না করে তাহা হইলে উহা এই আইনের অধীন একটি প্রতারণামূলক অপরাধ বলিয়া গণ্য হইবে এবং উক্ত অপরাধের জন্য ডেভেলপার অনূর্ধ্ব ২ (দুই) বৎসর কারাদন্ড অথবা অনূর্ধ্ব ২০ (বিশ) লক্ষ টাকা অর্থদন্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হইবে।
ভূমির মালিক কর্তৃক নির্দিষ্ট সময়ে ডেভেলপার বরাবরে ভূমির দখল হস্তান্তর না করিবার দন্ড
২৮। কোন ডেভেলপারের সহিত কোন ভূমির মালিক রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনার জন্য চুক্তিবদ্ধ হইবার পর চুক্তিতে উল্লিখিত সময়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট ভূমির দখল ডেভেলপারের অনুকূলে হস্তান্তর না করিলে অনূর্ধ্ব ২ (দুই) বৎসর কারাদন্ড অথবা অনূর্ধ্ব ১০ (দশ) লক্ষ টাকা অর্থদন্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হইবে।
ভূমির মালিক কর্তৃক সম্পাদিত আম-মোক্তারনামা বাতিলের দন্ড
২৯। কোন ডেভেলপারের সহিত কোন ভূমির মালিক রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনার জন্য চুক্তিবদ্ধ হইবার পর চুক্তির শর্ত মোতাবেক ডেভেলপারের অনুকূলে সম্পাদিত রেজিষ্ট্রার্ড আম-মোক্তারনামা অন্যূন ৩০ (ত্রিশ) দিন পূর্বে নোটিশ না দিয়া বাতিল করিলে অনূর্ধ্ব ২ (দুই) বৎসর কারাদন্ড অথবা অনূর্ধ্ব ১০ (দশ) লক্ষ টাকা অর্থদন্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হইবে।
ডেভেলপার কর্তৃক ভূমির মালিকের অংশ বুঝাইয়া না দেওয়ার দন্ড
৩০। কোন ভুমির মালিকের সহিত কোন ডেভেলপার কোন রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনার জন্য চুক্তিবদ্ধ হইবার পর চুক্তির শর্ত মোতাবেক রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন যথাযথভাবে সম্পন্ন করিয়া নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ভূমির মালিকের অংশ ভূমির মালিকের অনুকূলে হস্তান্তর না করিলে কিংবা ক্ষেত্রমত, দখল বুঝাইয়া না দিলে অনূর্ধ্ব ২ (দুই) বৎসর কারাদন্ড অথবা ২০ (বিশ) লক্ষ টাকা অর্থদন্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হইবে।
৩১। এই আইনের অধীন কোন ডেভেলপার নিগমিত(incorporated)কোম্পানী হইলে উক্ত কোম্পানীর মালিক, পরিচালক বা কোন কর্মকর্তা যাহার জ্ঞাতসারে এবং অংশগ্রহণে এই আইনের অধীন কোন অপরাধ সংঘটিত হইবে তিনি উক্ত অপরাধের জন্য ব্যক্তিগতভাবে দায়ী হইবেন।
৩২। অন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের অধীন দন্ডনীয় অপরাধসমূহ আপোষযোগ্য (compoundable),জামিনযোগ্য(bailable)এবং অ-আমলযোগ্য (non-cognizable)হইবে।
৩৩।(১) ফৌজদারী কার্যবিধিতে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের অধীন অপরাধসমূহ প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট বা মেট্রোপলিটান ম্যাজিস্ট্রেট কতৃর্ক বিচার্য হইবে।(২) এই আইনে ভিন্নতর কিছু না থাকিলে, এই আইনের অধীন সংঘটিত অপরাধের বিচার সংক্ষিপ্ত পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হইবে এবং এতদুদ্দেশ্যে ফৌজদারী কার্যবিধির Chapter XXII তে বর্ণিত পদ্ধতি, যতদুর সম্ভব, প্রযোজ্য হইবে।
অর্থদন্ড আরোপের ক্ষেত্রে ম্যাজিস্ট্রেটের বিশেষ ক্ষমতা
৩৪। ফৌজদারী কার্যবিধিতে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের অধীন কোন প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট বা মেট্রোপলিটান ম্যাজিস্ট্রেট দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিকে সংশ্লিষ্ট অপরাধের জন্য এই আইনে অনুমোদিত যে কোন দন্ড আরোপ করিতে পারিবে।
৩৫।(১) এই অধ্যায়ের অধীন দোষী সাব্যস্ত ও দন্ডিত ডেভেলপারের নিকট হইতে অর্থ দন্ড বাবদ কোন অর্থ আদায় হইলে আদালত আদায়কৃত অর্থের অনূর্ধ্ব ৫০% ক্ষতিগ্রস্থ ভূমি মালিক বা ক্ষেত্রমত, ক্রেতার অনুকূলে এবং অবশিষ্ট অংশ রাষ্ট্রের অনুকূলে প্রদান করার আদেশ দিতে পারিবে।(২) আদালত উপ-ধারা(১) এর অধীন বণ্টন সম্পর্কিত কোন আদেশ প্রদান না করিলে সমুদয় অর্থ রাষ্ট্রের অনুকূলে জমাকৃত হইবে।
৩৬।(১) রিয়েল এস্টেট প্রকল্প বাস্তবায়নের যে কোন পর্যায়ে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট ক্রেতা, ডেভেলপার, অথবা ভূমির মালিকের মধ্যে এই আইনের ধারা ২১, ২২, ২৩, ২৪, ২৫, ২৭, ২৮, ২৯ এবং ৩০ এ বর্ণিত অপরাধের জন্য বা তাহাদের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তির কোন বিধান লংঘনের জন্য মতবিরোধের সৃষ্টি হইলে পক্ষগণ, প্রথমে নিজেদের মধ্যে আপোষ উহা নিষ্পত্তির চেষ্টা করিবেন।(২) উপ-ধারা (১) অনুযায়ী আপোষের পদক্ষেপ গ্রহণের পর যদি কোন পক্ষের অসহযোগিতার জন্য উহা ব্যর্থ হয় তবে অপর পক্ষ বিবাদমান বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য সালিস আইন, ২০০১ মোতাবেক সালিসী ট্রাইব্যুনালে যাওয়ার অভিপ্রায় ব্যক্ত করিয়া অপর পক্ষকে নোটিশ প্রদান করিবেন।(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন নোটিশ প্রাপক উক্ত নোটিশ প্রাপ্তির ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে নোটিশ প্রেরকের সহিত যৌথভাবে সালিসী ট্রাইব্যুনাল গঠন করিবেন।(৪) সালিস আইন, ২০০১ এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, পক্ষগণ কর্তৃক গঠিত সালিসী ট্রাইব্যুনালের রোয়েদাদ পক্ষগণ এবং তাহাদের মাধ্যমে বা অধীনে দাবীদার যে কোন ব্যক্তির উপর বাধ্যকর হইবে এবং উহার বিরুদ্ধে কোন আদালতে কোন পক্ষের আপত্তি উত্থাপনের অধিকার থাকিবে না।(৫) উপ-ধারা (৩) মোতাবেক পক্ষগণ সালিসী ট্রাইব্যুনাল গঠনে ব্যর্থ হইলে যে কোন পক্ষ বিবাদমান বিষয়টি বিচারের জন্য এই আইনের অধীন উপযুক্ত আদালতে মামলা দায়ের করিতে পারিবেন।
৩৭। এই আইন বলবৎ হইবার অব্যবহিতপূর্বে চলমান প্রকল্পসমূহের ক্ষেত্রে ভূমি মালিক, ডেভেলপার ও ক্রেতার মধ্যে সম্পাদিত স্ব-স্ব চুক্তির বিধানাবলীকে ক্ষুন্ন না করিয়া এই আইনের বিধানাবলী, যতদূর সম্ভব, প্রযোজ্য হইবে।
৩৮।(১) সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে।(২) বিশেষ করিয়া এবং উপ-ধারা (১) এর সামগ্রিকতাকে ক্ষুন্ন না করিয়া, সরকার নিম্নবর্ণিত যে কোন বিষয়ে বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে, যথা ঃ-(ক) নিবন্ধন প্রদান, নবায়ন, বাতিল ও সংশোধনের পদ্ধতি ও শর্তাবলী ;(খ) রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন, সংশোধন ও নবায়নের পদ্ধতি ও শর্তাবলী ;(গ) নিবন্ধিত ডেভেলপারদের তালিকা সংরক্ষণ ও প্রকাশ পদ্ধতি ; এবং(ঘ) রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন প্রকল্পের লে-আউট প্ল্যান প্রণয়নের পদ্ধতি ও শর্তাবলী।
৩৯।(১) রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ, ২০০৮ (২০০৮ সনের ৫৬ নং অধ্যাদেশ), অতঃপর উক্ত অধ্যাদেশ বলিয়া উল্লিখিত, এর অধীন কৃত কাজকর্ম বা গৃহীত ব্যবস্থা এই আইনের অধীন কৃত বা গৃহীত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।(২) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৯৩ এর দফা (২) এর বিধান অনুসারে উক্ত অধ্যাদেশের কার্যকারিতা লোপ পাওয়া সত্ত্বেও অনুরূপ লোপ পাইবার পর উহার ধারাবাহিকতায় বা বিবেচিত ধারাবাহিকতায় কোন কাজকর্ম কৃত বা ব্যবস্থা গৃহীত হইয়া থাকিলে উহা এই আইনের অধীনে কৃত বা গৃহীত হইয়াছে বলিয়াও গণ্য হইবে।