আদালতের বিদ্যমান মামলা ব্যবস্থাপনা ও আদালতের প্রশাসনে সংস্কার বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে সরকার ও প্রধান বিচারপতিকে প্রয়োজনীয় ক্ষমতা প্রদান করিয়া সহায়ক বিধান করার উদ্দেশ্যে প্রণীত আইন৷
যেহেতু আদালতের বিদ্যমান মামলা ব্যবস্থাপনা ও আদালত প্রশাসনে সংস্কার বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে সরকার ও প্রধান বিচারপতিকে প্রয়োজনীয় ক্ষমতা প্রদান করিয়া সহায়ক বিধান করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;সেহেতু এতদ্দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল:-
১৷ (১) এই আইন আদালত সংস্কার বাস্তবায়ন (সহায়ক বিধান) আইন, ২০০৪ নামে অভিহিত হইবে৷(২) সুপ্রীম কোর্ট এবং প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ভুক্ত পাঁচটি প্রকল্প জেলা আদালতে এই আইনের প্রয়োগ হইবে।(৩) ইহা অবিলম্বে কার্যকর হইবে।(৪) পূর্বেই রহিত বা মেয়াদ বর্ধিত করা না হইলে, কার্যকর হইবার তারিখ হইতে পরবর্তী [1][চার বৎসর] মেয়াদে এই আইন কার্যকর থাকিবে৷
২৷ বিষয় বা প্রসংগের পরিপন্থী না হইলে, এই আইনে,-(১) “আদালত” অর্থ সুপ্রীম কোর্ট এবং প্রকল্প জেলা আদালত;(২) “আদালত প্রশাসন” অর্থ মামলা ব্যবস্থাপনা এবং আদালতের বিচারক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণের সহিত সম্পর্কিত নির্বাহী প্রকৃতির কার্যাদি;(৪) “প্রকল্প জেলা আদালত” অর্থ প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের পাঁচটি জেলা আদালত, যথা- খুলনা, গাজীপুর, ঢাকা, কুমিল্লা ও রংপুর জেলা আদালত;(৫) “প্রধান বিচারপতি” অর্থ বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি;(৬) “জেলা জজ” অর্থ প্রকল্প জেলা আদালতের কোন জেলা জজ;(৭) “মামলা” অর্থ আদালতে দায়েরকৃত দেওয়ানী বিষয়ক যে কোন দরখাস্ত, মামলা বা আপীল, এবং অনুরূপ দরখাস্ত, মামলা বা আপীল হইতে উদ্ভূত যে কোন অন্তর্বর্তীকালীন দরখাস্ত বা বিবিধ মামলাও উহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;(৮) “মামলা ব্যবস্থাপনা” অর্থ কোন মামলা দায়ের ও নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে অনুসৃত ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি।
প্রচলিত আইনের প্রয়োগ সাময়িকভাবে শিথিল বা স্থগিতকরণে সরকারের ক্ষমতা
৪৷ (১) সরকার, প্রধান বিচারপতির সহিত পরামর্শক্রমে, সুপ্রীমকোর্টে ও প্রকল্প জেলা আদালতে আদালত প্রশাসন, মামলা ব্যবস্থাপনা, তথ্য প্রযুক্তির প্রবর্তন ইত্যাদি বিষয়ে সংস্কার কর্মসূচী পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও বাস্তবায়নের প্রয়োজনে আবশ্যক হইলে, প্রচলিত আইনের প্রয়োগ সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপিত আদেশ দ্বারা, নির্দিষ্ট সময়সীমা উল্লেখপূর্বক, শিথিল বা স্থগিত করিতে পারিবে এবং অনুরূপভাবে নতুন যে কোন পদ্ধতি বা ব্যবস্থা তদ্স্থলে পরীক্ষা-নিরীক্ষার উদ্দেশ্যে সাময়িকভাবে প্রবর্তনের অনুমোদন জ্ঞাপন করিতে পারিবে৷(২) সরকার প্রয়োজন মনে করিলে, প্রধান বিচারপতির সহিত পরামর্শক্রমে, উপ-ধারা (১) এর অধীন ক্ষমতা, লিখিত আদেশ দ্বারা, স্থানীয় পর্যায়ে জেলা জজকে অর্পণ করিতে পারিবে এবং অনুরূপ আদেশ সংশোধন বা প্রত্যাহার করিতে পারিবে৷(৩) এই ধারার অধীন অনুমোদিত কোন পদ্ধতি, ব্যবস্থা, ইত্যাদি প্রচলিত আইন, আদেশ, বিধি, প্রবিধি ইত্যাদির সহিত অসমঞ্জস হইবার কারণে বেআইনী ও অকার্যকর গণ্য হইবে না৷
প্রচলিত আদেশ, বিধি, প্রবিধি, ইত্যাদির প্রয়োগ সাময়িকভাবে শিথিল বা স্থগিতকরণে প্রধান বিচারপতির ক্ষমতা
৫৷ (১) প্রধান বিচারপতি, রাষ্ট্রপতির অনুমোদন সাপেক্ষে, সুপ্রীমকোর্টে ও প্রকল্প জেলা আদালতে আদালত প্রশাসন, মামলা ব্যবস্থাপনা, তথ্য প্রযুক্তির প্রবর্তন, ইত্যাদি বিষয়ে সংস্কার কর্মসূচী পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও বাস্তবায়নের প্রয়োজনে আবশ্যক হইলে, প্রচলিত আদেশ, বিধি, প্রবিধি ইত্যাদির প্রয়োগ, লিখিত আদেশ দ্বারা, নির্দিষ্ট সময়সীমা উল্লেখপূর্বক, শিথিল বা স্থগিত করিতে পারিবেন এবং অনুরূপভাবে তিনি নতুন যে কোন পদ্ধতি বা ব্যবস্থা তদ্স্থলে পরীক্ষা-নিরীক্ষার উদ্দেশ্যে সাময়িকভাবে প্রবর্তনের অনুমোদন জ্ঞাপন করিতে পারিবেন৷(২) প্রধান বিচারপতি প্রয়োজন মনে করিলে উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রাপ্ত ক্ষমতা, লিখিত আদেশ দ্বারা, স্থানীয় পর্যায়ে জেলা জজকে অর্পণ করিতে পারিবেন এবং অনুরূপ আদেশ সংশোধন বা প্রত্যাহার করিতে পারিবেন৷(৩) এই ধারার অধীন অনুমোদিত কোন পদ্ধতি, ব্যবস্থা ইত্যাদি প্রচলিত আদেশ, বিধি, প্রবিধি, ইত্যাদির সহিত অসমঞ্জস হইবার কারণে বেআইনী ও অকার্যকর গণ্য হইবে না৷
কার্য সম্পাদনে প্রকল্প কর্মকর্তা ও পরামর্শকগণকে ক্ষমতা প্রদান
৬৷ প্রধান বিচারপতি, সাধারণ বা সুনির্দিষ্ট আদেশ দ্বারা, প্রকল্পের কর্মকর্তা ও পরামর্শকগণকে সুপ্রীম কোর্ট এবং প্রকল্প জেলা আদালতের চত্বর, ভবন, কক্ষ, নথি, রেজিস্টার, রায় ইত্যাদিতে প্রবেশাধিকারের অনুমতি এবং তাহাদিগকে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করার জন্য সুপ্রীম কোর্ট ও প্রকল্প জেলা আদালতের বিচারক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণকে নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবেন৷
৭৷ এই আইনের অধীন সরল বিশ্বাসে কৃত কোন কাজের ফলে কোন ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হইলে, কিংবা ক্ষতিগ্রস্ত হইবার সম্ভাবনা থাকিলে, তজ্জন্য, সরকার, প্রধান বিচারপতি, আদালতের কোন বিচারক, কর্মকর্তা বা কর্মচারী এবং প্রকল্পের কোন কর্মকর্তা বা পরামর্শকের বিরুদ্ধে কোন দেওয়ানী বা ফৌজদারী মামলা বা অন্য কোন প্রকার আইনগত কার্যধারা রুজু করা যাইবে না৷