দেশে দুর্নীতি এবং দুর্নীতিমূলক কার্য প্রতিরোধের লক্ষ্যে দুর্নীতি এবং অন্যান্য সুনির্দিষ্ট অপরাধের অনুসন্ধান এবং তদন্ত পরিচালনার জন্য একটি স্বাধীন দুর্নীতি দমন কমিশন প্রতিষ্ঠা এবং আনুষঙ্গিক বিষয়াদি সম্পর্কে বিধানকল্পে প্রণীত আইন৷
যেহেতু দেশে দুর্নীতি এবং দুর্নীতিমূলক কার্য প্রতিরোধের লক্ষ্যে দুর্নীতি এবং অন্যান্য সুনির্দিষ্ট অপরাধের অনুসন্ধান এবং তদন্ত পরিচালনার জন্য একটি স্বাধীন দুর্নীতি দমন কমিশন প্রতিষ্ঠা এবং আনুষংগিক বিষয়াদি সম্পর্কে বিধান করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;সেহেতু এতদ্দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল:-
১৷ (১) এই আইন দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ নামে অভিহিত হইবে৷(২) এই আইনের প্রয়োগ সমগ্র দেশে হইবে৷(৩) সরকার, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, যে তারিখ নির্ধারণ করিবে সেই তারিখে এই আইন বলবত্ হইবে৷* এস, আর, ও নং ১২৬-আইন/২০০৪, তারিখঃ ০৯ মে, ২০০৪ ইং দ্বারা ২৬ বৈশাখ, ১৪১১ বঙ্গাব্দ মোতাবেক ০৯ মে, ২০০৪ খ্রিস্টাব্দ উক্ত আইন কার্যকর হইয়াছে।
২৷ বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থী কোন কিছু না থাকিলে, এই আইনে,-[1][(ক) ‘‘অনুসন্ধান’’ অর্থ তফসিলভুক্ত কোন অপরাধ সংক্রান্ত অভিযোগ প্রাপ্ত বা জ্ঞাত হইবার পর উহা কমিশন কর্তৃক তদন্ত অনুষ্ঠানের জন্য গৃহীত ও লিপিবদ্ধ হইবার পূর্বে উক্ত অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা উদ্ঘাটনের লক্ষ্যে কমিশন বা তদ্কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তি কর্তৃক পরিচালিত কার্যক্রম;][2][(কক)] “কমিশন” অর্থ ধারা ৩ এর অধীন প্রতিষ্ঠিত দুর্নীতি দমন কমিশন;(খ) “কমিশনার” অর্থ কমিশনের চেয়ারম্যান বা অন্য কোন কমিশনার;(গ) “চেয়ারম্যান” অর্থ কমিশনের চেয়ারম্যান;(ঘ) “তফসিল” অর্থ এই আইনের তফসিল;(ঙ) “দুর্নীতি” অর্থ এই আইনের তফসিলে উল্লিখিত অপরাধসমূহ;(চ) “নির্ধারিত” অর্থ বিধি দ্বারা নির্ধারিত;(ছ) “ফৌজদারী কার্যবিধি” অর্থ the Code of Criminal Procedure, 1898 (V of 1898);(জ) “বাছাই কমিটি” অর্থ ধারা ৭ এর অধীন গঠিত বাছাই কমিটি;(ঝ) “ব্যুরো অব এন্টি-করাপশন” অর্থ the Anti-Corruption Act, 1957 (Act No. XXVI of 1957) এর অধীন গঠিত বাংলাদেশ ব্যুরো অব এন্টি-করাপশন;(ঞ) “বিধি” অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি;(ট) “সচিব” অর্থ ধারা ১৬ এর অধীন নিযুক্ত কমিশনের সচিব; এবং[3](টট) ‘সম্পত্তি’ অর্থ দেশে বা দেশের বাহিরে অবস্থিত—(অ) যে কোন প্রকৃতির দৃশ্যমান, অদৃশ্যমান, স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তি; বা(আ) নগদ টাকা, ইলেকট্রনিক বা ডিজিটালসহ অন্য যে কোন প্রকৃতির দলিল বা ইনস্ট্রুমেন্ট যাহা কোন সম্পত্তির মালিকানা স্বত্ব বা মালিকানা স্বত্বে কোন স্বার্থ নির্দেশ করে; “স্পেশাল জজ” অর্থ the Criminal Law Amendment Act, 1958 (Act No. XL of 1958) এর section 3 এর অধীন নিযুক্ত Special Judge৷
৩৷ (১) এই আইন, বলবত্ হইবার পর, যতশীঘ্র সম্ভব, সরকার, সরকারী গেজেটে, প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে দুর্নীতি দমন কমিশন নামে একটি কমিশন প্রতিষ্ঠা করিবে৷(২) এই কমিশন একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ কমিশন হইবে।5[(৩) কমিশন একটি স্বশাসিত সংস্থা হইবে এবং উহার স্থায়ী ধারাবাহিকতা ও একটি সাধারণ সীলমোহর থাকিবে এবং এই আইন ও বিধি সাপেক্ষে, উহার স্থাবর ও অস্থাবর উভয় প্রকার সম্পত্তি অর্জন করিবার, অধিকারে রাখিবার এবং উহা হস্তান্তর করিবার ক্ষমতা থাকিবে এবং উহার নামে উহা মামলা দায়ের করিতে পারিবে এবং উহার বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করা যাইবে।]
৫৷ (১) কমিশন তিন জন কমিশনারের সমন্বয়ে গঠিত হইবে এবং তাঁহাদের মধ্য হইতে রাষ্ট্রপতি একজনকে চেয়ারম্যান নিয়োগ করিবেন৷(২) শুধুমাত্র কোন কমিশনার পদে শূন্যতা বা কমিশন গঠনে ত্রুটি থাকিবার কারণে কমিশনের কোন কার্য বা কার্যধারা অবৈধ হইবে না এবং তত্সম্পর্কে কোন আদালতে প্রশ্নও উত্থাপন করা যাইবে না৷
৬৷ (১) কমিশনারগণ রাষ্ট্রপতি কর্তৃক ধারা ৭ অনুসারে গঠিত বাছাই কমিটির সুপারিশক্রমে নিয়োগপ্রাপ্ত হইবেন৷(২) কমিশনারগণ পূর্ণকালীন সময়ের জন্য স্ব-স্ব পদে কর্মরত থাকিবেন৷(৩) কমিশনারগণ, ধারা ১০ এর বিধান সাপেক্ষে, তাঁহাদের 6[যোগদানের তারিখ হইতে পাঁচ বৎসর] মেয়াদের জন্য স্ব-স্ব পদে অধিষ্ঠিত থাকিবেন৷(৪) উক্ত মেয়াদ অতিবাহিত হইবার পর কমিশনারগণ পুনঃ নিয়োগের যোগ্য হইবেন না৷
৭৷ (১) কমিশনার পদে নিয়োগের জন্য সুপারিশ প্রদানের উদ্দেশ্যে নিম্নবর্ণিত পাঁচ জন সদস্য সমন্বয়ে একটি বাছাই কমিটি গঠিত হইবে, যথা:-(ক) প্রধান বিচারপতি কর্তৃক মনোনীত সুপ্রীম কোর্টের আপীল বিভাগের একজন বিচারক;(খ) প্রধান বিচারপতি কর্তৃক মনোনীত সুপ্রীম কোর্টের হাই কোর্ট বিভাগের একজন বিচারক;(গ) বাংলাদেশের মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক;(ঘ) সরকারী কর্মকমিশনের চেয়ারম্যান; এবং(ঙ) অবসরপ্রাপ্ত মন্ত্রিপরিষদ সচিবদের মধ্যে সর্বশেষে অবসরপ্রাপ্ত মন্ত্রিপরিষদ সচিব:তবে শর্ত থাকে যে, যদি উক্তরূপ অবসরপ্রাপ্ত মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে পাওয়া না যায় অথবা তিনি বাছাই কমিটির সদস্যপদ গ্রহণে অসম্মত হন, তাহা হইলে সর্বশেষ অবসরপ্রাপ্ত মন্ত্রিপরিষদ সচিবের অব্যবহিত পূর্বের অবসরপ্রাপ্ত মন্ত্রিপরিষদ সচিব:আরও শর্ত থাকে যে, যদি উক্তরূপ কোন অবসরপ্রাপ্ত মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে পাওয়া না যায় অথবা তিনি বাছাই কমিটির সদস্যপদ গ্রহণে অসম্মত হন, তাহা হইলে বর্তমানে কর্মরত মন্ত্রিপরিষদ সচিব৷(২) প্রধান বিচারপতি কর্তৃক মনোনীত সুপ্রীম কোর্টের আপীল বিভাগের বিচারক বাছাই কমিটির সভাপতি হইবেন৷(৩) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ বাছাই কমিটির কার্য-সম্পাদনে প্রয়োজনীয় সাচিবিক সহায়তা প্রদান করিবে৷(৪) বাছাই কমিটি, কমিশনার নিয়োগে সুপারিশ প্রদানের উদ্দেশ্যে, উপস্থিত সদস্যদের অন্যুন ৩ (তিন) জনের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে কমিশনারের প্রতিটি শূন্য পদের বিপরীতে দুই জন ব্যক্তির নামের তালিকা প্রণয়ন করিয়া ধারা ৬ এর অধীন নিয়োগ প্রদানের জন্য রাষ্ট্রপতির নিকট প্রেরণ করিবে৷(৫) অন্যুন ৪ (চার) জন সদস্যের উপস্থিতিতে বাছাই কমিটির কোরাম গঠিত হইবে৷
৮৷ (১) আইনে, শিক্ষায়, প্রশাসনে, বিচারে বা শৃঙ্খলা বাহিনীতে অন্যুন ২০ (বিশ) বত্সরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কোন ব্যক্তি কমিশনার হইবার যোগ্য হইবেন৷(২) কোন ব্যক্তি কমিশনার হিসাবে নিযুক্ত হইবার বা থাকিবার যোগ্য হইবেন না, যদি তিনি-(ক) বাংলাদেশের নাগরিক না হন;(খ) কোন ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ঋণ খেলাপী হিসাবে ঘোষিত বা চিহ্নিত হন;(গ) আদালত কর্তৃক দেউলিয়া ঘোষিত হইবার পর দেউলিয়াত্বের দায় হইতে অব্যাহতি লাভ না করেন;(ঘ) নৈতিক স্খলন বা দুর্নীতিজনিত কোন অপরাধের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হইয়া আদালত কর্তৃক কারাদণ্ডে দণ্ডিত হইয়াছেন;(ঙ) সরকারী চাকুরীতে নিয়োজিত থাকেন;(চ) দৈহিক বা মানসিক বৈকল্যের কারণে কমিশনের দায়িত্ব পালনে অক্ষম হন; এবং(ছ) বিভাগীয় মামলায় গুরুদণ্ড প্রাপ্ত হন৷
১০৷ (১) কোন কমিশনার রাষ্ট্রপতি বরাবর ১ (এক) মাসের লিখিত নোটিশ প্রেরণপূর্বক স্বীয় পদ ত্যাগ করিতে পারিবেন:তবে শর্ত থাকে যে, চেয়ারম্যান ব্যতীত অন্যান্য পদত্যাগকারী কমিশনারগণ উক্ত নোটিশের একটি অনুলিপি চেয়ারম্যান বরাবর অবগতির জন্য প্রেরণ করিবেন৷(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন পদত্যাগ সত্ত্বেও, পদত্যাগ পত্র আনুষ্ঠানিকভাবে গৃহীত না হওয়া পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি, প্রয়োজনবোধে, পদত্যাগকারী কমিশনারকে তাঁহার দায়িত্ব পালনের জন্য অনুরোধ করিতে পারিবেন৷(৩) সুপ্রীম কোর্টের একজন বিচারক যেরূপ কারণ ও পদ্ধতিতে অপসারিত হইতে পারেন, সেইরূপ কারণ ও পদ্ধতি ব্যতীত কোন কমিশনারকে অপসারণ করা যাইবে না৷
১১৷ কোন কমিশনার মৃত্যুবরণ বা স্বীয় পদ ত্যাগ করিলে বা অপসারিত হইলে, রাষ্ট্রপতি উক্ত পদ শূন্য হইবার ত্রিশ দিনের মধ্যে, এই আইনের বিধান সাপেক্ষে, কোন উপযুক্ত ব্যক্তিকে শূন্য পদে নিয়োগদান করিবেন৷
১২৷ (১) চেয়ারম্যান কমিশনের প্রধান নির্বাহী হইবেন; এবং তাঁহার পদত্যাগ, অপসারণ, অনুপস্থিতি, অসুস্থতা বা অন্য কোন কারণে দায়িত্ব পালনে অপারগতার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি একজন কমিশনারকে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব সাময়িকভাবে পালনের নির্দেশ দিতে পারিবেন৷(২) চেয়ারম্যানের সার্বিক তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণে অন্যান্য কমিশনারগণ তাঁহাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করিবেন এবং এইরূপ দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে চেয়ারম্যানের নিকট কমিশনারগণের জবাবদিহিতা থাকিবে৷
১৪৷ (১) এই ধারার অন্যান্য বিধানাবলী সাপেক্ষে, কমিশন উহার সভার কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ করিতে পারিবে৷(২) কমিশনের সকল সভা চেয়ারম্যান কর্তৃক নির্ধারিত স্থান ও সময়ে অনুষ্ঠিত হইবে৷(৩) চেয়ারম্যান কমিশনের সকল সভায় সভাপতিত্ব করিবেন এবং তাঁহার অনুপস্থিতিতে চেয়ারম্যান কর্তৃক মনোনীত কোন কমিশনার সভায় সভাপতিত্ব করিবেন৷(৪) চেয়ারম্যানসহ দুই জন কমিশনারের উপস্থিতিতে সভার কোরাম গঠিত হইবে৷
১৫৷ (১) কমিশনের সকল সিদ্ধান্ত উহার সভায় গৃহীত হইতে হইবে৷(২) কমিশন-(ক) উহার দায়িত্ব পালনের জন্য কমিশনের সভায় নিয়মিত সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও সুপারিশ প্রণয়ন করিবে;(খ) উহার সিদ্ধান্ত ও সুপারিশসমূহ বাস্তবায়িত হইতেছে কি না তাহা নিয়মিত পরিবীক্ষণ করিবে; এবং(গ) প্রতি ৩ (তিন) মাস পর পর কমিশনের সভায় উহার মূল্যায়ন করিবে৷
১৬৷ (১) কমিশনের একজন সচিব থাকিবে, যিনি কমিশন কর্তৃক নিযুক্ত হইবেন৷(২) সচিবের দায়িত্ব হইবে চেয়ারম্যানের নির্দেশ অনুযায়ী কমিশনের সভার আলোচ্য বিষয়সূচী এবং কমিশনের এতদ্বিষয়ক সিদ্ধান্ত সাপেক্ষে, সভার তারিখ ও সময় নির্ধারণ, কার্যবিবরণী প্রস্তুতকরণ, কমিশনারগণ কর্তৃক সম্পাদিত কার্যাবলীর বিবরণ ও সংশ্লিষ্ট নথি সংরক্ষণ, এবং কমিশন কর্তৃক নির্দেশিত অন্যান্য দায়িত্ব পালন ও কার্য সম্পাদন৷(৩) কমিশন উহার কার্যাবলী দক্ষতার সহিত সম্পাদনের নিমিত্ত প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগ করিতে পারিবে৷(৪) কমিশনের সচিবসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীগণের 7[নিয়োগ, আচরণ বিধি (Code of Conduct), শৃঙ্খলা ও আপীল বিধিসহ চাকুরীর] অন্যান্য শর্তাদি বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে এবং এইরূপ বিধি প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত কমিশন, সরকারের অনুমোদনক্রমে, প্রশাসনিক আদেশ দ্বারা, ঐ সকল বিষয়ে অনুসরণীয় নিয়মাবলী নির্ধারণ করিতে পারিবে৷
১৭৷ কমিশন নিম্নবর্ণিত সকল বা যে কোন কার্য সম্পাদন করিতে পারিবে, যথা:-(ক) তফসিলে উল্লিখিত অপরাধসমূহের অনুসন্ধান ও তদন্ত পরিচালনা;(খ) অনুচ্ছেদ (ক) এর অধীন অনুসন্ধান ও তদন্ত পরিচালনার ভিত্তিতে এই আইনের অধীন মামলা দায়ের ও পরিচালনা;(গ) দুর্নীতি সম্পর্কিত কোন অভিযোগ স্বউদ্যোগে বা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি বা তাহার পক্ষে অন্য কোন ব্যক্তি কর্তৃক দাখিলকৃত আবেদনের ভিত্তিতে অনুসন্ধান;(ঘ) দুর্নীতি দমন বিষয়ে আইন দ্বারা কমিশনকে অর্পিত যে কোন দায়িত্ব পালন করা;(ঙ) দুর্নীতি প্রতিরোধের জন্য কোন আইনের অধীন স্বীকৃত ব্যবস্থাদি পর্যালোচনা এবং কার্যকর বাস্তবায়নের জন্য রাষ্ট্রপতির নিকট সুপারিশ পেশ করা;(চ) দুর্নীতি প্রতিরোধের বিষয়ে গবেষণা পরিকল্পনা তৈরী করা এবং গবেষণালব্ধ ফলাফলের ভিত্তিতে করণীয় সম্পর্কে রাষ্ট্রপতির নিকট সুপারিশ পেশ করা;(ছ) দুর্নীতি প্রতিরোধের লক্ষ্যে সততা ও নিষ্ঠাবোধ সৃষ্টি করা এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে গণসচেতনতা গড়িয়া তোলার ব্যবস্থা করা;(জ) কমিশনের কার্যাবলী বা দায়িত্বের মধ্যে পড়ে এমন সকল বিষয়ের উপর সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, কর্মশালা ইত্যাদি অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করা;(ঝ) আর্থ-সামাজিক অবস্থার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশে বিদ্যমান বিভিন্ন প্রকার দুর্নীতির উত্স চিহ্নিত করা এবং তদ্নুসারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য রাষ্ট্রপতির নিকট সুপারিশ পেশ করা;(ঞ) দুর্নীতির অনুসন্ধান, তদন্ত, মামলা দায়ের এবং উক্তরূপ অনুসন্ধান, তদন্ত ও মামলা দায়েরের ক্ষেত্রে কমিশনের অনুমোদন পদ্ধতি নির্ধারণ করা; এবং(ট) দুর্নীতি প্রতিরোধের জন্য প্রয়োজনীয় বিবেচিত অন্য যে কোন কার্য সম্পাদন করা৷
১৮। এই আইনের বিধানাবলী সাপেক্ষে কমিশন, উহার দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে কোন কমিশনার বা কমিশনের কোন কর্মকর্তাকে যেরূপ ক্ষমতা প্রদান করিবে, উক্ত কমিশনার বা কর্মকর্তা সেইরূপ ক্ষমতা প্রয়োগ করিতে পারিবেন।
১৯৷ (১) দুর্নীতি সম্পর্কিত কোন অভিযোগের অনুসন্ধান বা তদন্তের ক্ষেত্রে, কমিশনের নিম্নরূপ ক্ষমতা থাকিবে, যথা:-(ক) 8[সাক্ষীর প্রতি নোটিশ] জারী ও উপস্থিতি নিশ্চিতকরণ এবং 9[***] সাক্ষীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা;(খ) কোন দলিল উদ্ঘাটন এবং উপস্থাপন করা;(গ) 10[***] সাক্ষ্য গ্রহণ;(ঘ) কোন আদালত বা অফিস হইতে পাবলিক রেকর্ড বা উহার অনুলিপি তলব করা;(ঙ) সাক্ষীর জিজ্ঞাসাবাদ এবং দলিল পরীক্ষা করার জন্য 11[নোটিশ] জারী করা; এবং(চ) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, নির্ধারিত অন্য যে কোন বিষয়৷(২) কমিশন, যে কোন ব্যক্তিকে অনুসন্ধান বা তদন্ত সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কোন তথ্য সরবরাহ করিবার জন্য নির্দেশ দিতে পারিবে এবং অনুরূপভাবে নির্দেশিত ব্যক্তি তাহার হেফাজতে রক্ষিত উক্ত তথ্য সরবরাহ করিতে বাধ্য থাকিবেন৷(৩) কোন কমিশনার বা কমিশন হইতে বৈধ ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তাকে উপ-ধারা (১) এর অধীন ক্ষমতা প্রয়োগে কোন ব্যক্তি বাধা প্রদান করিলে বা উক্ত উপ-ধারার অধীন প্রদত্ত কোন নির্দেশ ইচ্ছাকৃতভাবে কোন ব্যক্তি অমান্য করিলে উহা দণ্ডনীয় অপরাধ হইবে এবং উক্ত অপরাধের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি অনূর্ধ্ব ৩ (তিন) বত্সর পর্যন্ত যে কোন মেয়াদের কারাদণ্ডে বা অর্থদণ্ডে বা উভয় প্রকার দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন৷
২০৷ (১) ফৌজদারী কার্যবিধিতে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের অধীন ও উহার তফসিলে বর্ণিত অপরাধসমূহ কেবলমাত্র কমিশন কর্তৃক 13[অনুসন্ধানযোগ্য বা তদন্তযোগ্য] হইবে৷(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত অপরাধসমূহ 14[অনুসন্ধান বা তদন্তের] জন্য কমিশন, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, উহার অধঃস্তন কোন কর্মকর্তাকে ক্ষমতা প্রদান করিতে পারিবে৷(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তার, অপরাধ 15[অনুসন্ধান বা তদন্তের] বিষয়ে, থানার ভারপ্রাপ্ত একজন কর্মকর্তার ক্ষমতা থাকিবে৷(৪) উপ-ধারা (২) ও (৩) এর বিধান সত্ত্বেও, কমিশনারগণেরও এই আইনের অধীন অপরাধ 16[অনুসন্ধান বা তদন্তের] ক্ষমতা থাকিবে৷
17[২০ক। (১) অন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, ধারা ২০ এর অধীন ক্ষমতা প্রাপ্তির তারিখ হইতে অনধিক ১২০ (একশত বিশ) কর্মদিবসের মধ্যে তদন্তকারী কর্মকর্তাকে এই আইন ও তফসিলে উল্লিখিত কোন অপরাধের তদন্ত কার্য সম্পন্ন করিতে হইবে।(২) উপ-ধারা (১) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোন যুক্তিসঙ্গত কারণে, উক্ত উপ-ধারায় উল্লিখিত সময়সীমার মধ্যে তদন্ত কার্য সম্পন্ন করা সম্ভবপর না হইলে তদন্তকারী কর্মকর্তা সময়সীমা বৃদ্ধির জন্য কমিশনের নিকট আবেদন করিতে পারিবেন এবং উক্ত ক্ষেত্রে কমিশন আরও অনধিক ৬০ (ষাট) কর্মদিবস সময় বৃদ্ধি করিতে পারিবে।(৩) তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-ধারা (১) বা, ক্ষেত্রমত, (২) এ উল্লিখিত সময়সীমার মধ্যে তদন্ত কার্য সম্পন্ন করিতে ব্যর্থ হইলে,-(ক) উক্ত তদন্ত কার্য ৯০ (নব্বই) কর্মদিবসের মধ্যে সমাপ্তির জন্য নূতনভাবে অন্য কোন কর্মকর্তাকে, ধারা ২০ এর বিধান অনুসারে, ক্ষমতা অর্পণ করিতে হইবে; এবং(খ) সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অদক্ষতার অভিযোগে, ক্ষেত্রমত, কমিশন, পুলিশ বা সংশ্লিষ্ট সংস্থার জন্য প্রযোজ্য আইন বা বিধি-বিধান অনুযায়ী বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে হইবে।]
২১। এই আইনের অন্যান্য বিধানে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কমিশন হইতে এতদুদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তার বিশ্বাস করিবার যুক্তিসংগত কারণ থাকে যে, কোন ব্যক্তি তাঁহার নিজ নামে বা অন্য কোন ব্যক্তির নামে স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তির মালিক বা দখলকার যাহা তাহার ঘোষিত আয়ের সহিত অসঙ্গতিপূর্ণ, তাহা হইলে উক্ত কর্মকর্তা, আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে, উক্ত ব্যক্তিকে গ্রেফতার করিতে পারিবেন।
২২৷ দুর্নীতি বিষয়ক কোন অভিযোগের অনুসন্ধান বা তদন্ত চলাকালে কমিশন যদি মনে করে যে, অভিযোগের সহিত সংশ্লিষ্ট কোন ব্যক্তির বক্তব্য শ্রবণ করা প্রয়োজন, তাহা হইলে কমিশন উক্ত ব্যক্তিকে শুনানীর যুক্তিসঙ্গত সুযোগ প্রদান করিবে৷
২৫৷ (১) সরকার প্রতি অর্থ-বত্সরে কমিশনের ব্যয়ের জন্য উহার অনুকূলে নির্দিষ্টকৃত অর্থ বরাদ্দ করিবে; এবং অনুমোদিত ও নির্ধারিত খাতে উক্ত বরাদ্দকৃত অর্থ হইতে ব্যয় করার ক্ষেত্রে সরকারের পূর্বানুমোদন গ্রহণ করা কমিশনের জন্য আবশ্যক হইবে না৷(২) এই ধারার বিধান দ্বারা সংবিধানের ১২৮ অনুচ্ছেদে প্রদত্ত মহা হিসাব-নিরীক্ষকের অধিকার ক্ষুণ্ন করা হইয়াছে বলিয়া ব্যাখ্যা করা যাইবে না৷
২৬৷ (১) কমিশন কোন তথ্যের ভিত্তিতে এবং উহার বিবেচনায় প্রয়োজনীয় 20[অনুসন্ধান] পরিচালনার পর যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে, কোন ব্যক্তি, বা তাহার পক্ষে অন্য কোন ব্যক্তি, বৈধ উৎসের সহিত অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পত্তির দখলে রহিয়াছেন বা মালিকানা অর্জন করিয়াছেন, তাহা হইলে কমিশন, লিখিত আদেশ দ্বারা, উক্ত ব্যক্তিকে কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত পদ্ধতিতে দায়-দায়িত্বের বিবরণ দাখিলসহ উক্ত আদেশে নির্ধারিত অন্য যে কোন তথ্য দাখিলের নির্দেশ দিতে পারিবে৷(২) যদি কোন ব্যক্তি-(ক) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত আদেশ প্রাপ্তির পর তদ্নুযায়ী লিখিত বিবৃতি বা তথ্য প্রদানে ব্যর্থ হন বা এমন কোন লিখিত বিবৃতি বা তথ্য প্রদান করেন যাহা ভিত্তিহীন বা মিথ্যা বলিয়া মনে করিবার যথার্থ কারণ থাকে, অথবা(খ) কোন বই, হিসাব, রেকর্ড, ঘোষণা পত্র, রিটার্ণ বা উপ-ধারা (১) এর অধীন কোন দলিল পত্র দাখিল করেন বা এমন কোন বিবৃতি প্রদান করেন যাহা ভিত্তিহীন বা মিথ্যা বলিয়া মনে করিবার যথার্থ কারণ থাকে,তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি ০৩ (তিন) বৎসর পর্যন্ত কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড বা উভয়বিধ দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন৷
২৭৷ (১) কোন ব্যক্তি তাহার নিজ নামে, বা তাহার পক্ষে অন্য কোন ব্যক্তির নামে, এমন কোন স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তির দখলে রহিয়াছেন বা মালিকানা অর্জন করিয়াছেন, যাহা অসাধু উপায়ে অর্জিত হইয়াছে এবং তাহার জ্ঞাত আয়ের উত্সের সহিত অসংগতিপূর্ণ বলিয়া মনে করিবার যথেষ্ট কারণ রহিয়াছে এবং তিনি উক্তরূপ সম্পত্তি দখল সম্পর্কে আদালতের নিকট বিচারে সন্তোষজনক ব্যাখ্যা প্রদান করিতে ব্যর্থ হইলে উক্ত ব্যক্তি অনূর্ধ্ব ১০ (দশ) বত্সর এবং অন্যুন ০৩ (তিন) বত্সর পর্যন্ত যে কোন মেয়াদে কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন এবং তদুপরি অর্থ দণ্ডেও দণ্ডনীয় হইবেন; এবং উক্তরূপ সম্পত্তিসমূহ বাজেয়াপ্ত যোগ্য হইবে৷(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত কোন অপরাধের বিচার চলাকালীন যদি প্রমাণিত হয় যে, অভিযুক্ত ব্যক্তি নিজ নামে, বা তাহার পক্ষে অপর কোন ব্যক্তির নামে, তাহার জ্ঞাত আয়ের উত্সের সহিত অসঙ্গতিপূর্ণ স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তির মালিকানা অর্জন করিয়াছেন বা অনুরূপ সম্পত্তির দখলে রহিয়াছেন, তাহা হইলে আদালত অনুমান করিবে (shall presume) যে, অভিযুক্ত ব্যক্তি উক্ত অপরাধে দোষী, যদি অভিযুক্ত ব্যক্তি আদালতে উক্ত অনুমান খণ্ডন (rebut) করিতে না পারেন; এবং কেবল উক্তরূপ অনুমানের উপর ভিত্তি করিয়া প্রদত্ত কোন দণ্ড অবৈধ হইবে না৷
২৮৷ (১) আপাততঃ বলবত্ অন্য কোন আইনে ভিন্নরূপ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের অধীন ও উহার তফসিলে বর্ণিত অপরাধসমূহ কেবলমাত্র স্পেশাল জজ কর্তৃক বিচারযোগ্য হইবে৷(২) এই আইনের অধীন ও উহার তফসিলে বর্ণিত অপরাধসমূহের বিচার ও আপীল নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে The Criminal Law Amendment Act, 1958 (XL of 1958) এর 21[***] বিধানাবলী প্রযোজ্য হইবে৷(৩) The Criminal Law Amendment Act, 1958 (XL of 1958) এর কোন বিধান এই আইনের কোন বিধানের সহিত অসংগতিপূর্ণ হইলে এই আইনের বিধান কার্যকর হইবে৷
22[23[২৮ক। এই আইনের অধীন অপরাধসমূহের আমলযোগ্যতা (cognizable) ও জামিনযোগ্যতার (whether bailable or not) ক্ষেত্রে Code of Criminal Procedure, 1898 (Act No. V of 1898) এর Schedule II এর বিধানাবলি প্রযোজ্য হইবে।]
২৮খ। (১) এই আইনের অধীন ও উহার তফসিলে বর্ণিত কোন অপরাধের বিষয়ে কোন ব্যক্তি কর্তৃক প্রদত্ত কোন তথ্য (information) কোন দেওয়ানী বা ফৌজদারী আদালতে সাক্ষ্য হিসাবে গ্রহণ করা যাইবে না, বা কোন সাক্ষীকে অভিযোগকারীর নাম, ঠিকানা বা পরিচয় প্রকাশ করিতে দেওয়া বা প্রকাশ করিতে বাধ্য করা যাইবে না, বা এমন কোন তথ্য উপস্থাপন বা প্রকাশ করিতে দেওয়া যাইবে না যাহাতে তথ্য প্রদানকারীর পরিচয় প্রকাশিত হয় বা হইতে পারে।(২) কোন দেওয়ানী বা ফৌজদারী মামলার সাক্ষ্য প্রমাণের অন্তর্ভুক্ত কোন বহি, দলিল বা কাগজপত্রে যদি এমন কিছু থাকে, যাহাতে তথ্য প্রদানকারীর নাম, ঠিকানা বা পরিচয় অন্তর্ভুক্ত থাকে, তাহা হইলে আদালত কোন ব্যক্তিকে উক্ত বহি, দলিল বা কাগজপত্রের যে অংশে উক্তরূপ পরিচয় লিপিবদ্ধ থাকে সেই অংশ পরিদর্শনের অনুমতি প্রদান করিবে না।(৩) উপ-ধারা (১) ও (২) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইন ও উহার তফসিলে বর্ণিত কোন অপরাধের অভিযোগ পূর্ণ তদন্তের পর আদালতের নিকট যদি প্রতীয়মান হয় যে, তথ্য প্রদানকারী ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য প্রদান করিয়াছেন অথবা তথ্য প্রদানকারীর প্রকৃত পরিচয় প্রকাশ ব্যতীত মামলার ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা সম্ভব নয়, তাহা হইলে আদালত তথ্য প্রদানকারীর পূর্ণ পরিচয় প্রকাশ করিতে পারিবে।
২৮গ। (১) মিথ্যা জানিয়া বা তথ্যের সত্যতা সম্পর্কে 24[***] নিশ্চিত না হইয়া কোন ব্যক্তি ভিত্তিহীন কোন তথ্য, যে তথ্যের ভিত্তিতে এই আইনের অধীন তদন্ত বা বিচার কার্য পরিচালিত হইবার সম্ভাবনা থাকে, প্রদান করিলে তিনি মিথ্যা তথ্য প্রদান করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবে।(২) কোন ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত কোন মিথ্যা তথ্য প্রদান করিলে তিনি এই ধারার অধীন অপরাধ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবে এবং উক্ত অপরাধের জন্য তিনি অন্যূন ২ (দুই) বৎসর বা অনধিক ৫ (পাঁচ) বৎসর সশ্রম কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।(৩) তথ্য প্রদানকারী কমিশনের বা সরকারি কোন কর্মকর্তা-কর্মচারী হইলে এবং তিনি উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত কোন মিথ্যা তথ্য প্রদান করিলে তাহার বিরুদ্ধে উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিত দণ্ড প্রদান করা হইবে।]
২৯৷ (১) প্রতি পঞ্জিকা বত্সরের মার্চ মাসের মধ্যে কমিশন পূর্ববর্তী বত্সরে সম্পাদিত উহার কার্যাবলী সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন রাষ্ট্রপতির নিকট পেশ করিবে৷(২) এই ধারার অধীন প্রতিবেদন প্রাপ্তির পর রাষ্ট্রপতি উহা জাতীয় সংসদে উপস্থাপনের ব্যবস্থা করিবেন৷
৩১৷ এই আইন বা তদ্ধীন প্রণীত বিধি বা আদেশের অধীন দায়িত্ব পালনকালে সরল বিশ্বাসে কৃত কোন কাজের ফলে কোন ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হইলে বা ক্ষতিগ্রস্ত হইবার সম্ভাবনা থাকিলে, তজ্জন্য কমিশন, কোন কমিশনার অথবা কমিশনের কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারীর বিরুদ্ধে দেওয়ানী বা ফৌজদারী মামলা বা অন্য কোন আইনগত কার্যধারা গ্রহণ করা যাইবে না৷
25[৩২। (১) ফৌজদারী কার্যবিধি বা আপাততঃ বলবৎ অন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, নির্ধারিত পদ্ধতিতে কমিশনের অনুমোদন (Sanction) ব্যতিরেকে কোন আদালত এই আইনের অধীন কোন অপরাধ বিচারার্থ আমলে (Cognizance) গ্রহণ করিবে না।(২) এই আইনের অধীন মামলা দায়েরের ক্ষেত্রে কমিশন এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, সরকার ও কমিশন কর্তৃক প্রদত্ত অনুমোদনপত্রের কপি মামলা দায়েরের সময় আদালতে দাখিল করিতে হইবে।]
মামলা দায়েরের ক্ষেত্রে ফৌজদারী কার্যবিধির ধারা ১৯৭ এর প্রয়োগ
26[৩২ক। ধারা ৩২ এর বিধান সাপেক্ষে, এই আইনের অধীন জজ, ম্যাজিস্ট্রেট বা সরকারি কর্মচারীর বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের ক্ষেত্রে ফৌজদারী কার্যবিধির ধারা ১৯৭ এর বিধান আবশ্যিকভাবে প্রতিপালন করিতে হইবে।]
৩৩৷ (১) এই আইনের অধীন কমিশন কর্তৃক তদন্তকৃত এবং স্পেশাল জজ কর্তৃক বিচারযোগ্য মামলাসমূহ পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক প্রসিকিউটর এর সমন্বয়ে কমিশনের অধীন উহার নিজস্ব একটি স্থায়ী প্রসিকিউশন ইউনিট থাকিবে৷(২) উক্ত প্রসিকিউটরগণের নিয়োগ ও চাকুরীর শর্তাবলী বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে৷(৩) এই ধারার অধীন কমিশনের নিজস্ব প্রসিকিউটর নিযুক্ত না হওয়া পর্যন্ত, কমিশন কর্তৃক অস্থায়ী ভিত্তিতে নিযুক্ত বা অনুমোদিত আইনজীবীগণ এই আইনের অধীন মামলাসমূহ পরিচালনা করিবে৷(৪) এই ধারার অধীন নিযুক্ত প্রসিকিউটরগণ পাবলিক প্রসিকিউটর বলিয়া গণ্য হইবেন৷27[(৫) দুর্নীতি দমন কমিশন কর্তৃক দায়েরকৃত মামলায় অথবা দুর্নীতি দমন কমিশন কর্তৃক গৃহীত যে কোন কার্যক্রমের যে কোন পর্যায়ে কোন আদালতে কেহ কোন প্রতিকার প্রার্থনা করিলে দুর্নীতি দমন কমিশনকে পক্ষভুক্ত করিতে হইবে এবং দুর্নীতি দমন কমিশন কর্তৃক দায়েরকৃত কোন মামলায় বা কার্যক্রমে কোন ব্যক্তি জামিন কিংবা অন্য কোন প্রকার প্রতিকার প্রার্থনা করিলে কমিশনকে শুনানীর জন্য যুক্তিসংগত সময় প্রদান না করিয়া শুনানি গ্রহণ করা যাইবে না।]
বাংলাদেশ ব্যুরো অব এন্টি-করাপশন এর বিলুপ্তি, ইত্যাদি
৩৫৷ (১) আপাততঃ বলবত্ অন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, “বাংলাদেশ ব্যুরো অব এন্টি-করাপশন”, অতঃপর উক্ত ব্যুরো বলিয়া অভিহিত-(ক) ধারা ৩ এর অধীন কমিশন প্রতিষ্ঠিত হইবার তারিখে বিলুপ্ত হইবে;(খ) বিলুপ্ত হইবার সংগে সংগে উক্ত ব্যুরোর আওতাধীন সরকারের সকল সম্পদ, অধিকার, ক্ষমতা এবং সুবিধাদি কমিশনে ন্যস্ত হইবে; এবং(গ) উক্ত ব্যুরোর কর্মকর্তা-কর্মচারী উপ-ধারা (২) এর বিধান সাপেক্ষে কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী বলিয়া গণ্য হইবেন এবং সরকার কর্তৃক নির্ধারিত বেতন, ভাতা এবং কমিশনের পরামর্শক্রমে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত চাকুরীর অন্যান্য শর্তাধীনে চাকুরীতে নিয়োজিত থাকিবেন৷(২) উপ-ধারা (১) এর বিধান সত্ত্বেও, কমিশন, তত্কর্তৃক নির্ধারিত পদ্ধতিতে, যাচাই বাছাই করিয়া ব্যুরোর বিদ্যমান কর্মকর্তা বা কর্মচারীগণের মধ্যে যাহাদিগকে কমিশনের চাকুরীর জন্য উপযুক্ত মনে করিবে তাহাদিগকে কমিশনের চাকুরীতে বহাল রাখিবে এবং অবশিষ্ট কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণকে প্রত্যাহার করার জন্য সরকারকে অনুরোধ করিবে, এবং উক্তরূপে অনুরূদ্ধ হইলে, সরকার উক্ত কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণকে প্রত্যাহার করিয়া নিবে৷
৩৬৷ কমিশনের ক্ষমতা ও দায়িত্ব সম্পর্কে এই আইনের বিধানে অস্পষ্টতার কারণে উহা কার্যকর করার ক্ষেত্রে কোন অসুবিধা দেখা দিলে সরকার, অন্যান্য বিধানের সহিত সামঞ্জস্য রাখিয়া গেজেটে বিজ্ঞপ্তির দ্বারা উক্ত বিধানের স্পষ্টীকরণ বা ব্যাখ্যা প্রদান করতঃ কমিশনের করণীয় বিষয়ে দিক নির্দেশনা দিতে পারিবে৷
৩৭৷ এই আইন প্রবর্তনের পর সরকার, যথাশীঘ্র সম্ভব, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের মূল বাংলা পাঠের ইংরেজীতে অনূদিত একটি নির্ভরযোগ্য পাঠ (Authentic English Text) প্রকাশ করিবে:তবে শর্ত থাকে যে, মূল বাংলা পাঠ এবং ইংরেজী পাঠের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে বাংলা পাঠ প্রাধান্য পাইবে৷
৩৮৷ (১) এই আইন বলবত্ হইবার তারিখে the Anti-Corruption Act, 1957 (Act XXVI of 1957), অতঃপর উক্ত Act বলিয়া উল্লিখিত, এবং the Anti-Corruption (Tribunal) Ordinance, 1960 (Ord. No. XVI of 1960), অতঃপর উক্ত Ordinance বলিয়া উল্লিখিত, রহিত হইবে৷(২) উক্ত Act রহিত হওয়া সত্ত্বেও, এই আইনের অধীন কমিশন প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত উক্ত Act এর কার্যকরতা, যতদূর সম্ভব, এমনভাবে অব্যাহত থাকিবে যেন উক্ত Act রহিত হয় নাই৷(৩) উক্ত Act রহিত হইবার অব্যবহিত পূর্বে উক্ত Act এর অধীন কোন অভিযোগের অনুসন্ধান, তদন্ত, মামলা দায়েরের অনুমোদন নিষ্পত্তির অপেক্ষাধীন থাকিলে এই আইনের বিধান অনুযায়ী উক্ত অনুসন্ধান, তদন্ত এবং অনুমোদন কমিশন কর্তৃক সম্পন্ন করিতে হইবে৷(৪) উক্ত Ordinance রহিত হইবার অব্যবহিত পূর্বে উক্ত Ordinance এর অধীন গঠিত ট্রাইব্যুনালে কোন মামলা নিষ্পত্তির অপেক্ষাধীন থাকিলে উহা তাত্ক্ষণিকভাবে সংশ্লিষ্ট এলাকার এখ্তিয়ার সম্পন্ন স্পেশাল জজ এর নিকট স্থানান্তরিত হইবে৷