যেহেতু নিম্নবর্ণিত উদ্দেশ্যসমূহ পূরণকল্পে বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশন আইন, ১৯৯২(১৯৯২ সনের ৪৩ নং আইন) এর সংশোধন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;সেহেতু এতদ্দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইলঃ-
২। বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশন আইন, ১৯৯২(১৯৯২ সনের ৪৩ নং আইন), অতঃপর উক্ত আইন বলিয়া উল্লিখিত, এর প্রস্তাবনার পরিবর্তে নিম্নরূপ প্রস্তাবনা প্রতিস্থাপিত হইবে, যথাঃ-“যেহেতু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে তাঁহার সরকারের আমলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ফরেন ট্রেড ডিভিশনের ২৮ জুলাই ১৯৭৩ খ্রিস্টাব্দ তারিখের ADMN-১E-২০/৭৩/৬৩৬ নং রেজুল্যুশনবলে একটি সম্পূর্ণ সরকারি দপ্তর হিসাবে ট্যারিফ কমিশন প্রতিষ্ঠা লাভ করিয়াছে; এবংযেহেতু বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড ট্যারিফ কমিশন প্রতিষ্ঠাকল্পে একটি আইন প্রণয়ন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;”।
৪। উক্ত আইনের ধারা ৭ এর পরিবর্তে নিম্নরূপ ধারা ৭ প্রতিস্থাপিত হইবে, যথাঃ- “৭। কমিশনের কার্যাবলি।-(১) দেশিয় পণ্য ও সেবা রপ্তানি বৃদ্ধিকল্পে দেশিয় শিল্পের স্বার্থসংরক্ষণ ও বিকাশে শিল্পপণ্য উৎপাদন ও বিপণনে দক্ষতাবৃদ্ধি, প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ সৃষ্টি এবং আমদানি ও রপ্তানির ক্ষেত্রে তুলনামূলক সুবিধা (comparative advantage) নিরূপণকল্পে নিম্নবর্ণিত বিষয়ে কমিশন সরকারকে পরামর্শ প্রদান করিবে, যথা :- (ক) শুল্কনীতি পর্যালোচনাক্রমে শুল্কহার যৌক্তিকীকরণ; (খ) আন্তর্জাতিক, আঞ্চলিক ও বহু-পাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি; (গ) এন্টি ডাম্পিং, কাউন্টারভেইলিং ও সেইফগার্ড সংক্রান্ত আইন ও বিধি অনুযায়ী দেশিয় শিল্পের স্বার্থ সংরক্ষণ; (ঘ) ট্রানজিট ও ট্রান্সশিপমেন্ট ট্রেড, জিএসপি (Generalized System of Preference), রুলস অব অরিজিন (Rules of Origin) ও অন্যান্য অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য; (ঙ) শিল্প, বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও শুল্কনীতি প্রণয়ন; (চ) বৈদেশিক বাণিজ্য বিষয়ে উদ্ভূত যে কোনো সমস্যা সমাধানে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ; (ছ) Protective Duties Act, 1950 (Act No. LXI of 1950) এর আলোকে সুনির্দিষ্ট মেয়াদে সংরক্ষণমূলক আমদানি শুল্ক (Protective Duties of Customs) আরোপ; (জ) শিল্প সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিতকরণপূর্বক দেশিয় পণ্য ও সেবার রপ্তানি বৃদ্ধি; (ঝ) আমদানি ও রপ্তানিযোগ্য পণ্য বা সেবাসমূহের হারমোনাইজড সিস্টেম কোড; (ঞ) বৈদেশিক বাণিজ্য পরিবীক্ষণ; এবং (ট) আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক বাণিজ্য ব্যবস্থায় প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে প্রভাব বিস্তারকারী নীতিমালা ও রীতিনীতি।(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত বিষয়ে সরকারকে পরামর্শ প্রদান ছাড়াও কমিশন নিম্নোক্ত কার্যাবলি সম্পাদন করিবে, যথা:-(ক) এন্টি-সারকামভেনশন সংক্রান্ত তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা;(খ) বাংলাদেশ হইতে রপ্তানিকৃত পণ্য ও বাণিজ্যের উপর অন্য দেশ কর্তৃক গৃহীত বাণিজ্য প্রতিবিধান সংক্রান্ত পদক্ষেপ (এন্টি ডাম্পিং, কাউন্টারভেইলিং, সেইফগার্ড মেজার্স ও এন্টি সারকামভেনশন) এর পরিপ্রেক্ষিতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্ত দেশিয় রপ্তানিকারকগণকে সহায়তা প্রদান;(গ) নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ বাজারদর নিরীক্ষণ ও পর্যালোচনা;(ঘ) বিশ্ব-বাণিজ্য সংস্থার আওতায় বিভিন্ন বাণিজ্য চুক্তি সম্পর্কিত বিরোধ নিষ্পত্তিতে সরকারকে সহায়তা প্রদান;(ঙ) বৈদেশিক বাণিজ্য সম্পর্কে তথ্যাদি সংগ্রহ, ডাটাবেজ সংরক্ষণ, পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ এবং জনস্বার্থে উক্ত তথ্যসমূহ সরকার ও স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে সরবরাহ;(চ) অন্যান্য দেশের সহিত বাংলাদেশের অগ্রাধিকারমূলক বা মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি সম্পাদনের সম্ভাব্যতা যাচাই এবং এতদসংক্রান্ত চুক্তির ফলে বৈদেশিক বাণিজ্যের উপর সম্ভাব্য প্রভাব মূল্যায়ন;(ছ) সম্ভাব্য ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প, ভোক্তা ও জনসাধারণের স্বার্থ বিবেচনার উদ্দশ্যে গণ শুনানির মাধ্যমে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপসমূহ চিহ্নিতকরণ;(জ) দেশিয় শিল্প ও বাণিজ্য সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অংশীজনদের দক্ষতা ও সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ; এবং(ঝ) দেশিয় শিল্প ও বাণিজ্যের স্বার্থ সংক্রান্ত বিষয়ে গবেষণা বা সমীক্ষা পরিচালনা। (৩) এই ধারার অধীন পেশকৃত সুপারিশ বাস্তবায়নের ফলে সম্ভাব্য ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প, ভোক্তা ও জনসাধারণের স্বার্থ বিবেচনা করিয়া কমিশন ক্ষতি লাঘবের জন্য, উহার মতে প্রয়োজনীয় সুপারিশ সরকারের নিকট পেশ করিবে;(৪) এই ধারার অধীন কমিশন কর্তৃক পেশকৃত সুপারিশকে সরকার স্বীকৃতি দিবে এবং যথাযথভাবে বিবেচনা করিবে।“।
৫। উক্ত আইনের ধারা ৮ এর বিদ্যমান বিধান উপ-ধারা (১) হিসাবে সংখ্যায়িত হইবে এবং উক্তরূপে সংখ্যায়িত উপ-ধারা (১) এর পর নিম্নরূপ উপ-ধারা (২) সংযোজিত হইবে, যথাঃ-“(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন তদন্তের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যের গোপনীয়তা নিশ্চিত করিতে হইবে : তবে শর্ত থাকে যে, প্রাপ্ত তথ্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বা কর্তৃপক্ষের লিখিত অনুমতি সাপেক্ষে প্রকাশ করা যাইবে।“।
৬। উক্ত আইনের ধারা ১২ এর উপ-ধারা (১) এর পর নিম্নরূপ উপ-ধারা (২) সংযোজিত হইবে, যথাঃ- “(২) গবেষণা বা সমীক্ষা কাজে সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে কমিশন, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক পরামর্শক ও গবেষণা সহায়তাকারী নিয়োগ করিতে পারিবে।“।