Preamble
যেহেতু মহেশখালী এলাকায় মাতারবাড়ী সমুদ্র বন্দর প্রতিষ্ঠাসহ বিভিন্ন সেক্টরের উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে উক্ত এলাকাকে দ্রুত একটি শিল্প ও বাণিজ্যিক অঞ্চলে রূপান্তরের কার্যক্রম পরিচালিত হইতেছে; যেহেতু সকল কার্যক্রমের মধ্যে সমন্বয় সাধন এবং সুপরিকল্পিত উন্নয়নের স্বার্থে ইহার পরিচালনার ক্ষেত্রে একটি উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা এবং ইহার কার্যক্রম নির্দিষ্ট করিবার জন্য বিধিবিধান নির্ধারণ করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়; এবং যেহেতু, সংসদ ভাঙ্গিয়া যাওয়া অবস্থায় রহিয়াছে এবং রাষ্ট্রপতির নিকট ইহা সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হইয়াছে যে, আশু ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় পরিস্থিতি বিদ্যমান রহিয়াছে; সেহেতু ের ৯৩(১) অনুচ্ছেদে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি নিম্নরূপ অধ্যাদেশ প্রণয়ন ও জারি করিলেন:-Sections/Articles
সংক্ষিপ্ত শিরোনাম ও প্রবর্তন
১। (১) এই অধ্যাদেশ মহেশখালী সমন্বিত উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ অধ্যাদেশ, ২০২৫ নামে অভিহিত হইবে। (২) সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, যে তারিখ নির্ধারণ করিবে, সেই তারিখে ইহা কার্যকর হইবে। * এস , আর , ও নং ৩২৫ - আইন / ২০ ২৫ , তারিখ : ০৩ আগস্ট , ২০ ২৫ খ্রিস্টাব্দ দ্বারা ১৭ শ্রাবণ , ১৪ ৩২ বঙ্গাব্দ মোতাবেক ০১ আগস্ট , ২০ ২৫ খ্রিস্টাব্দ উক্ত আইন কার্যকর হইয়াছে ।সংজ্ঞা
২। বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থি কোনো কিছু না থাকিলে, এই অধ্যাদেশে- (১) “কর্তৃপক্ষ” অর্থ ধারা ৫ এর অধীন প্রতিষ্ঠিত মহেশখালী সমন্বিত উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ; (২) “কর্তৃপক্ষের অধিক্ষেত্র” অর্থ তফসিলে উল্লিখিত অধিক্ষেত্র; (৩) “গভর্নিং বোর্ড” অর্থ ধারা ৭ এর অধীন গঠিত গভর্নিং বোর্ড; (৪) “চেয়ারপার্সন” অর্থ গভর্নিং বোর্ডের চেয়ারপার্সন; (৫) “ডেভেলপার” অর্থ মহাপরিকল্পনা অনুযায়ী সমন্বিত অবকাঠামো উন্নয়নে কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নিযুক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান; (৬) “তফসিল” অর্থ এই অধ্যাদেশের তফসিল; (৭) “নির্বাহী চেয়ারম্যান” অর্থ কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান; (৮) “প্রবিধান” অর্থ এই অধ্যাদেশের অধীন প্রণীত প্রবিধান; (৯) “বিধি” অর্থ এই অধ্যাদেশের অধীন প্রণীত বিধি; (১০) “ব্যক্তি” অর্থে বাংলাদেশের কোনো নাগরিক, বিদেশি কোনো নাগরিক, সংঘ, সমিতি, অংশীদারি কারবার ও কোম্পানিও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে; (১১) “মহাপরিকল্পনা” অর্থ ধারা ১১ এর অধীন প্রণীত মহাপরিকল্পনা; এবং (১২) “স্থানীয় কর্তৃপক্ষ” অর্থে কোনো আইনের দ্বারা বা অধীন গঠিত কোনো সংবিধিবদ্ধ সংস্থা এবং, ক্ষেত্রমত, স্থানীয় প্রশাসনও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে।অধ্যাদেশের প্রযোজ্যতা
৩। আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কর্তৃপক্ষের অধিক্ষেত্রাধীন এলাকায় এই অধ্যাদেশ প্রযোজ্য হইবে।অধ্যাদেশের প্রাধান্য
৪। আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই অধ্যাদেশের বিধানাবলি প্রাধান্য পাইবে: তবে শর্ত থাকে যে, কর্তৃপক্ষের অধিক্ষেত্রাধীন অন্যান্য কর্তৃপক্ষের সংশ্লিষ্ট আইনের ক্ষমতাবলে দেওয়া কার্যক্রম সম্পাদনে এই অধ্যাদেশ প্রতিবন্ধক হইবে না।কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা
৫। (১) এই অধ্যাদেশ কার্যকর হইবার সঙ্গে সঙ্গে মহেশখালী সমন্বিত উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ [Maheshkhali Integrated Development Authority (MIDA)] নামে একটি কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠিত হইবে। (২) কর্তৃপক্ষ একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হইবে এবং উহার স্থায়ী ধারাবাহিকতা ও সাধারণ সিলমোহর থাকিবে এবং উহার স্থাবর ও অস্থাবর উভয় প্রকার সম্পত্তি অর্জন করিবার, অধিকারে রাখিবার এবং হস্তান্তর করিবার ক্ষমতা থাকিবে এবং উহা স্বীয় নামে মামলা দায়ের করিতে পারিবে এবং উহার বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করা যাইবে।কর্তৃপক্ষের কার্যালয়
৬। (১) কর্তৃপক্ষের প্রধান কার্যালয় কক্সবাজার জেলার মহেশখালীতে থাকিবে। (২) কর্তৃপক্ষ, গভর্নিং বোর্ডের অনুমোদন গ্রহণক্রমে, প্রয়োজনে, যেকোনো স্থানে ইহার লিয়াজোঁ অফিস স্থাপন করিতে পারিবে।গভর্নিং বোর্ড
৭। (১) এই অধ্যাদেশের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, প্রয়োজনীয় নির্দেশনা ও পরামর্শ প্রদান এবং কর্তৃপক্ষের কার্যাবলি অনুমোদনের জন্য প্রধান উপদেষ্টা/প্রধানমন্ত্রীকে চেয়ারপার্সন করিয়া নিম্নবর্ণিত সদস্য সমন্বয়ে একটি গভর্নিং বোর্ড গঠিত হইবে, যথা:- (ক) উপদেষ্টা/মন্ত্রী, অর্থ মন্ত্রণালয়, যিনি ইহার ভাইস-চেয়ারপার্সনও হইবেন; (খ) উপদেষ্টা/মন্ত্রী, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়; (গ) উপদেষ্টা/মন্ত্রী, সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রণালয়; (ঘ) উপদেষ্টা/মন্ত্রী, শিল্প মন্ত্রণালয়; (ঙ) উপদেষ্টা/মন্ত্রী, ভূমি মন্ত্রণালয়; (চ) উপদেষ্টা/ মন্ত্রী, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়; (ছ) উপদেষ্টা/মন্ত্রী, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়; (জ) উপদেষ্টা/মন্ত্রী, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়; (ঝ) প্রধান উপদেষ্টা/প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব; (ঞ) নির্বাহী চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ; (ট) নির্বাহী চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ; এবং (ঠ) নির্বাহী চেয়ারম্যান, মহেশখালী সমন্বিত উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (MIDA), যিনি ইহার সদস্য-সচিবও হইবেন। (২) উপ-ধারা (১) এর দফা (ক) হইতে (জ) এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, মন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে প্রতিমন্ত্রী, যদি থাকেন, এবং মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী উভয়ের অনুপস্থিতিতে উপ-মন্ত্রী, যদি থাকেন, গভর্নিং বোর্ডের সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করিবেন। (৩) সরকার, এই অধ্যাদেশের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, কোনো ব্যক্তিকে প্রজ্ঞাপনে উল্লিখিত উদ্দেশ্য ও মেয়াদের জন্য গভর্নিং বোর্ডের সদস্য হিসাবে কো-অপ্ট করিতে পারিবে।কর্তৃপক্ষ গঠন
৮। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে নিম্নবর্ণিত সদস্য সমন্বয়ে কর্তৃপক্ষ গঠিত হইবে, যথা:- (ক) সরকার কর্তৃক নিয়োগকৃত একজন নির্বাহী চেয়ারম্যান যাহার চাকরির শর্তাদি, পদমর্যাদা এবং অন্যান্য বিষয়াদি সরকার কর্তৃক স্থিরকৃত হইবে; (খ) যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে প্রেষণে অথবা সরকার কর্তৃক সরাসরি নিয়োগকৃত অন্যূন যুগ্মসচিব পদমর্যাদার ৩ (তিন) জন সদস্য। (২) নির্বাহী চেয়ারম্যান কর্তৃপক্ষের সার্বক্ষণিক মুখ্য নির্বাহী হইবেন এবং তিনি কর্তৃপক্ষের সকল কর্মকাণ্ডের জন্য গভর্নিং বোর্ডের নিকট দায়ী থাকিবেন। (৩) গভর্নিং বোর্ডের সকল সিদ্ধান্ত বা চেয়ারপার্সন কর্তৃক, সময় সময়, নির্দেশিত সকল দায়িত্ব এবং কর্তৃপক্ষের সকল কার্যাবলি নির্বাহী চেয়ারম্যান কর্তৃক সম্পাদিত ও বাস্তবায়িত হইবে। (৪) নির্বাহী চেয়ারম্যানের পদ শূন্য হইলে কিংবা তাহার অনুপস্থিতি, অসুস্থতা বা অন্য কোনো কারণে তিনি তাহার দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হইলে, ক্ষেত্রমত, শূন্যপদে নিযুক্ত নূতন নির্বাহী চেয়ারম্যান কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত কিংবা নির্বাহী চেয়ারম্যান পুনরায় স্বীয় দায়িত্ব পালনে সমর্থ না হওয়া পর্যন্ত সরকার কর্তৃক মনোনীত কোনো কর্মকর্তা নির্বাহী চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করিবেন। (৫) নির্বাহী চেয়ারম্যান গভর্নিং বোর্ডের চেয়ারপার্সনের সহিত আলোচনাক্রমে বোর্ডের সভা আহ্বান এবং আলোচ্যসূচি নির্ধারণ করিবেন।কর্তৃপক্ষের অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারী
৯। (১) সরকার কর্তৃক অনুমোদিত সাংগঠনিক কাঠামো অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ উহার দায়িত্ব ও কার্যাবলি সুষ্ঠুভাবে পালনের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগ করিতে পারিবে। (২) কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়োগ ও চাকরির শর্তাবলি প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত হইবে।কর্তৃপক্ষের অধিক্ষেত্রাধীন এলাকা চিহ্নিতকরণ, বিস্তারিত বিবরণ প্রকাশ, সংরক্ষিত এলাকা ঘোষণা, দখল, নিয়ন্ত্রণ, ইত্যাদি
১০। (১) কর্তৃপক্ষ, সরকারের পূর্বানুমতি গ্রহণ সাপেক্ষে, তফসিলে বর্ণিত অধিক্ষেত্রের এলাকার মৌজা, খতিয়ান, দাগ ও মালিকানার ধরন, জমির শ্রেণি ও পরিমাণ চিহ্নিত করিয়া বিস্তারিত বিবরণ সরকারি গেজেটে প্রকাশ করিবে। (২) সরকার, প্রয়োজনে, গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা এই এলাকা সংশোধন করিতে পারিবে। (৩) কর্তৃপক্ষ অধিক্ষেত্রের অধীন নির্মাণাধীন অবকাঠামো এবং নির্মিত এলাকাকে সংরক্ষিত এলাকা হিসাবে ঘোষণা করিতে পারিবে এবং সংরক্ষিত এলাকার দখল, নিয়ন্ত্রণ এবং প্রবেশাধিকারসহ উহার ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করিতে পারিবে। (৪) কর্তৃপক্ষের অধিক্ষেত্রের অধীন ব্যক্তি মালিকানাধীন সম্পত্তিতে উক্তরূপ নিয়ন্ত্রণ ও নিষেধাজ্ঞা আরোপের ক্ষেত্রে উপযুক্ত সময় প্রদান করিয়া নোটিশ জারি করিতে হইবে। (৫) উপ-ধারা (৩) অনুযায়ী নিয়ন্ত্রণ আরোপের ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ ও হুকুমদখল আইন, ২০১৭ (২০১৭ সনের ২১ নং আইন) এবং প্রচলিত বিধিবিধান অনুযায়ী উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবে।মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন
১১। (১) এই অধ্যাদেশ বলবৎ হইবার অব্যবহিত পরে, কর্তৃপক্ষ, এই অধ্যাদেশের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে ধারা ১৩ এ বর্ণিত ভূমি ব্যবহার পরিকল্পনা অনুযায়ী অধিক্ষেত্রাধীন এলাকাকে সমুদ্র বন্দর, শিল্প-বাণিজ্যিক ও আধুনিক নগর হিসাবে গড়িয়া তুলিবার জন্য ভূমির যৌক্তিক ব্যবহার নিশ্চিত করিতে একটি মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করিবে। (২) মহাপরিকল্পনায়, উক্ত এলাকাকে বিভিন্ন হাবে বিভক্ত করা যাইবে, যথা:- (ক) প্রাইমারি হাব- (অ) বন্দর ও লজিস্টিক হাব; (আ) শিল্প ও ম্যানুফ্যাকচারিং হাব; (ই) বিদ্যুৎ ও জ্বালানি হাব; (ঈ) মৎস্য আহরণ, প্রক্রিয়াকরণ ও বাজারজাতকরণ হাব। (খ) সহায়ক হাব- (অ) আধুনিক টাউনশিপ হাব; (আ) আনুষঙ্গিক সুবিধাদি হাব। (৩) মহাপরিকল্পনায়, গভীর সমুদ্রবন্দরের সহিত দেশের অন্যান্য অঞ্চলের যোগাযোগ স্থাপনসহ উপ-ধারা (২) অনুযায়ী চিহ্নিত বিভিন্ন হাবের প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্পসমূহ চিহ্নিত করা হইবে এবং কর্তৃপক্ষ এই সকল প্রকল্পের মধ্যে পরিপূরক প্রকল্পসমূহ গুচ্ছনীতির আলোকে নির্দিষ্ট সময়ে যুগপৎ বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করিতে পারিবে। (৪) কর্তৃপক্ষের অধিক্ষেত্রাধীন এলাকার ম্যানুফ্যাকচারিং ও শিল্প-কারখানাসহ অন্যান্য হাবে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার নিশ্চিতকল্পে বিতরণ সংক্রান্ত বিশেষ (আইনগত ও প্রাতিষ্ঠানিক) ব্যবস্থার প্রবর্তন করিতে পারিবে। (৫) এই অধ্যাদেশ বলবৎ হইবার অব্যবহিত পরে, উপ-ধারা (২) এ বর্ণিত প্রাইমারি হাবের কার্যক্রম সাবলিল ও মানসম্মতভাবে পরিচালনার জন্য টাউনশিপ এবং ইনফ্রাস্ট্রাকচার পরিকল্পনার আওতায় নিম্নবর্ণিত প্রয়োজনীয় ইউটিলিটিজ, ইত্যাদির জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো গুচ্ছনীতির আলোকে যুগপৎভাবে বাস্তবায়নের ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবে, যথা:- (ক) বিদ্যুৎ ও গ্যাস বিতরণ লাইন নির্মাণ; (খ) জলাধার ও পানি বিতরণ লাইন নির্মাণ; (গ) পয়ঃপ্রণালি ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা, স্লুইসগেটসহ বাধ/ডাইক নির্মাণ, (ঘ) সলিড ওয়েস্ট ট্রিটমেন্ট প্লান্ট এবং সেন্ট্রাল ইটিপি নির্মাণ; (ঙ) টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা ও ইন্টারনেট/তথ্য প্রযুক্তি সেবা প্রদান; (চ) আবাসন, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, বিনোদন ও পর্যটন সুবিধা সৃষ্টি; (ছ) পরিবহণ ও পাবলিক ট্রান্সপোর্ট সুবিধা এবং ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা; (জ) অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা, সাইক্লোন সেন্টার নির্মাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা। (৬) কর্তৃপক্ষ মহাপরিকল্পনায় অধিক্ষেত্রাধীন এলাকায় ইতঃপূর্বে জনস্বার্থে সমাপ্ত ও চলমান উন্নয়ন প্রকল্পসমূহ মহাপরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করিবে এবং চলমান উন্নয়ন প্রকল্পের অবাস্তবায়িত অংশ মহাপরিকল্পনার সহিত প্রয়োজনীয় সামঞ্জস্য বিধানসাপেক্ষে বাস্তবায়ন করিতে পারিবে। (৭) কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রস্তুতকৃত মহাপরিকল্পনার চূড়ান্ত খসড়া সরকারের নিকট প্রেরণ করিবার ১ (এক) মাসের মধ্যে সরকার খসড়া মহাপরিকল্পনাটি সরকারি গেজেটে প্রকাশ করিবে এবং কর্তৃপক্ষ একইসাথে খসড়া মহাপরিকল্পনাটি উহার ওয়েবসাইটে প্রকাশ করিবে। (৮) উপ-ধারা (৭) এর অধীন প্রকাশিত খসড়া মহাপরিকল্পনা বা উহার অংশ বিশেষের উপর কাহারও কোনো আপত্তি বা মতামত থাকিলে উহা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে লিখিতভাবে সরকারের নিকট প্রেরণ করিতে হইবে। (৯) সরকার, উপ-ধারা (৮) এর অধীন প্রাপ্ত আপত্তি বা মতামত বিবেচনা করিয়া, উপ-ধারা (৭) এর অধীন গেজেট প্রকাশের ৪ (চার) মাসের মধ্যে, সংশোধনসহ বা সংশোধন ব্যতিরেকে মহাপরিকল্পনাটি চূড়ান্ত অনুমোদন করিবে এবং মহাপরিকল্পনা চূড়ান্ত অনুমোদনের বিষয়টি সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা প্রকাশ করিবে। (১০) কর্তৃপক্ষ, সময় সময়, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা মহাপরিকল্পনা সংশোধন করিতে পারিবে।প্রাকৃতিক পরিবেশ, মৎস্য সম্পদ ও স্থানীয় জনগণের স্বার্থ সংরক্ষণ।
১২। (১) মহাপরিকল্পনাতে নদী, জলাশয় ও বনসহ প্রাকৃতিক পরিবেশ ও স্থানীয় জনগণের স্বার্থ সংরক্ষণ করিতে হইবে এবং মহাপরিকল্পনা প্রণয়নকালে স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করিতে হইবে। (২) মহাপরিকল্পনায় স্থানীয় জনগোষ্ঠীর প্রথাগত জীবিকার সুরক্ষা প্রদান করিতে হইবে। (৩) মহাপরিকল্পনায় মৎস্য আহরণ, প্রক্রিয়াকরণ ও বাজারজাতকরণের ব্যবস্থা নিশ্চিত করিতে হইবে।ভূমি ব্যবহার পরিকল্পনা প্রণয়ন
১৩। (১) কর্তৃপক্ষ ইহার অধিক্ষেত্রাধীন এলাকাকে, সমুদ্র বন্দর, শিল্প-বাণিজ্যিক ও আধুনিক নগর হিসাবে গড়িয়া তুলিবার জন্য ভূমির যৌক্তিক ব্যবহার নিশ্চিত করিতে উক্ত এলাকাকে সমুদ্র বন্দর ও লজিস্টিক হাব; শিল্প ও ম্যানুফ্যাকচারিং হাব; বিদ্যুৎ ও জ্বালানি হাব এবং আধুনিক টাউনশিপ ও আনুষঙ্গিক সুবিধাদি নির্মাণ এলাকা হিসাবে সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করিয়া ভূমি ব্যবহার পরিকল্পনা প্রণয়ন করিবে। (২) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত শিল্প ও ম্যানুফকচারিং এর জন্য চিহ্নিত হাবকে নিম্নবর্ণিত এলাকা হিসাবে চিহ্নিত করিতে পারিবে, যথা: (ক) রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা যাহা রপ্তানিমুখী শিল্পের জন্য নির্ধারিত; (খ) স্থানীয় প্রক্রিয়াকরণ এলাকা যাহা দেশীয় বাজার চাহিদা মিটাইবার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত শিল্পের জন্য নির্ধারিত; (গ) বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য বিশেষ সুবিধা সংবলিত এলাকা। (৩) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত আধুনিক টাউনশিপ ও আনুষঙ্গিক সুবিধা সংবলিত এলাকাকে নিম্নরূপভাবে চিহ্নিত করিতে পারিবে, যথা:- (ক) বিদেশি বিনিয়োগকারি ও বিদেশি নাগরিকদের জন্য বিশেষ সুবিধা সংবলিত সংরক্ষিত এলাকা; (খ) আধুনিক টাউনশিপ, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও বিনোদন এলাকা; (গ) বাণিজ্যিক এলাকা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক, সভা, কনফারেন্স, এক্সজিবিশন (Exhibition) সেন্টার, অফিস ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি; (ঘ) উদ্যান, খেলার মাঠ, ইকো পার্ক ও পর্যটন ইত্যাদি।ভূমি ব্যবহার পরিকল্পনা অনুমোদন এবং সংশোধন
১৪। ভূমি ব্যবহার পরিকল্পনা গভর্নিং বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত হইবে এবং গভর্নিং বোর্ডের অনুমোদনক্রমে সংশোধন করা যাইবে।ভূমি ব্যবহার সংক্রান্ত বিধিবিধান প্রণয়ন।
১৫। কর্তৃপক্ষের অধিক্ষেত্রাধীন অন্যান্য সংস্থা বা ব্যক্তি মালিকানাধীন ভূমির দখল, নিয়ন্ত্রণ এবং উহার ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করিবার লক্ষ্যে কর্তৃপক্ষ, সরকারের অনুমোদনক্রমে, প্রয়োজনীয় বিধিবিধান প্রণয়ন করিতে পারিবে।কর্তৃপক্ষের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ
১৬। (১) এই অধ্যাদেশের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে কর্তৃপক্ষের অধিক্ষেত্রাধীন এলাকায় অবকাঠামো নির্মাণের জন্য কোনো ভূমি প্রয়োজন হইলে, সরকার উক্ত ভূমি স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ ও হুকুমদখল আইন, ২০১৭ (২০১৭ সনের ২১ নং আইন) এর অধীন অধিগ্রহণ বা হুকুম দখল করিতে পারিবে। (২) উপ-ধারা (১) এর অধীন অধিগ্রহণকৃত ভূমির ক্ষতিপূরণসহ অন্যান্য যে কোনো বিষয় নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত আইনের বিধানাবলি প্রযোজ্য হইবে। (৩) এই ধারার অধীন অধিগ্রহণকৃত ভূমি জনস্বার্থে প্রয়োজনীয় বলিয়া গণ্য হইবে।ভূমি অধিগ্রহণে সমন্বয়, অনাপত্তি প্রদান, ভূমি বরাদ্দ প্রদান ও প্রতিষ্ঠানের শ্রেণি নির্ধারণ
১৭। (১) কর্তৃপক্ষের অধিক্ষেত্রাধীন এলাকায় কোনো মন্ত্রণালয়, বিভাগ, ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান কর্তৃক কোনো প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রয়োজনে ভূমি অধিগ্রহণের পূর্বে কর্তৃপক্ষের অনাপত্তি গ্রহণ করিতে হইবে। (২) উপ-ধারা (১) বর্ণিত উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, কর্তৃপক্ষ ধারা ১১ এ বর্ণিত মহাপরিকল্পনা এবং ধারা ১৩ এ বর্ণিত ভূমি ব্যবহার পরিকল্পনার ব্যত্যয় না করিয়া ভূমি অধিগ্রহণের জন্য অনাপত্তি প্রদান করিবে এবং ব্যত্যয়ের ক্ষেত্রে গভর্নিং বোর্ডের অনুমোদন গ্রহণ করিতে হইবে। (৩) শিল্প ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের জন্য কর্তৃপক্ষের মালিকানাধীন (অধিগ্রহণকৃত ও ন্যস্তকৃত) ভূমি কোনো ব্যক্তিকে (দেশি বা বিদেশি) তাহার চাহিদা অনুযায়ী ও প্রতিষ্ঠানের উপযুক্ততা বিবেচনাক্রমে, মহাপরিকল্পনার কোনো ব্যত্যয় না ঘটাইয়া, অনুমোদিত শিল্প স্থাপন বা বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অধিক্ষেত্রাধীন এলাকার উপযুক্ত ব্লকে ভূমি বা স্থান বরাদ্দ প্রদান করিতে পারিবে। (৪) উপ-ধারা (৩) এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, শিল্প ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানসমূহকে সুবিধাদি প্রদানের লক্ষ্যে কর্তৃপক্ষ, সময় সময়, স্থাপিত শিল্প এবং বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের শ্রেণি নির্ধারণ করিতে পারিবে।কর্তৃপক্ষের নিকট স্থানীয় কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণাধীন ভূমি, ইমারত, ইত্যাদি ন্যস্তকরণ ও রক্ষণাবেক্ষণ
১৮। (১) স্থানীয় কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণাধীন কোনো ভূমি, ইমারত, রাস্তা, চত্বর বা উহার কোনো অংশবিশেষ কর্তৃপক্ষের কোনো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতাধীন ভূমি উন্নয়নে প্রয়োজন হইলে, কর্তৃপক্ষ উক্ত ভূমি, ইমারত, রাস্তা, চত্বর বা উহার অংশবিশেষ উহার অধীন ন্যস্ত করিবার জন্য উক্ত স্থানীয় কর্তৃপক্ষের নিকট অনুরোধ করিবে এবং নির্ধারিত পদ্ধতিতে উক্ত ভূমি, ইমারত, রাস্তা, চত্বর বা উহার অংশবিশেষ কর্তৃপক্ষের অধীনে ন্যস্ত হইবে। (২) এই ধারার অধীন গৃহীত কোনো সিদ্ধান্ত বা কোনো কার্যক্রমের বিষয়ে কোনো প্রশ্ন উত্থাপিত হইলে বা মতপার্থক্য পরিলক্ষিত হইলে উহা ধারা ৩০ এর বিধান অনুসারে নিষ্পত্তি করিতে হইবে। (৩) কর্তৃপক্ষের নিকট ন্যস্তকৃত সকল রাস্তা, চত্বর, ইমারত, ভূমি অথবা উহার অংশবিশেষ কর্তৃপক্ষকে রক্ষণাবেক্ষণ করিতে হইবে এবং কর্তৃপক্ষ, উহার তদারকিতে, অন্য কোনো স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বা সংস্থার সহিত যৌথভাবে উহার রক্ষণাবেক্ষণ করিবে।বরাদ্দ চুক্তি ও বরাদ্দ বাতিল, ইত্যাদি
১৯। (১) কর্তৃপক্ষ কোনো প্রকল্প বা উদ্যোগ সম্পন্ন করিবার লক্ষ্যে কোনো ভূমি বা স্থান এবং স্থাপনা দেশি বা বিদেশি বিনিয়োগকারীকে বরাদ্দ প্রদানের লক্ষ্যে চুক্তি সম্পাদন করিতে পারিবে। (২) কর্তৃপক্ষ ও বরাদ্দগ্রহীতার মধ্যে পারস্পরিক কার্যক্রম চুক্তির বিধান অনুযায়ী পরিচালিত হইবে। (৩) কর্তৃপক্ষ, গভর্নিং বোর্ডের অনুমোদনক্রমে, ভূমি বরাদ্দ, লীজ বা ব্যবহার-সংক্রান্ত রেট, ফি, সার্ভিস চার্জের হার এবং ব্যবহার সংক্রান্ত শর্তাবলি সংক্রান্ত পরিপত্র বা বিধানাবলি প্রস্তুত করিতে পারিবে। (৪) কোনোনকশা, স্থানীয় পরিকল্পনা ও অন্যান্য সংস্থার প্রকল্প বিষয়ে অনাপত্তি প্রদান
২০। (১) কর্তৃপক্ষের অধিক্ষেত্রাধীন এলাকায় বিদ্যুৎ, পানি সরবরাহ, নৌ, বিমান, সড়ক ও রেল যোগাযোগ, টেলিযোগাযোগ বা অন্য কোনো সংস্থার বা কোনো স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এবং সরকারি, বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি বা কোম্পানি মহাপরিকল্পনার সহিত সামঞ্জস্য রাখিয়া উহাদের ভবিষ্যৎ কার্যক্রমের জন্য উন্নয়ন ও নির্মাণ পরিকল্পনা সম্পর্কিত স্থানীয় পরিকল্পনা প্রণয়ন করিবে এবং উহা অনাপত্তির জন্য কর্তৃপক্ষের বরাবরে প্রেরণ করিবে। (২) কর্তৃপক্ষ, উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রাপ্ত স্থানীয় পরিকল্পনা, মহাপরিকল্পনার সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে, সংশোধনসহ বা সংশোধন ব্যতিরেকে অনাপত্তি প্রদান করিবে এবং উহার একটি অনুলিপি সরকারের নিকট প্রেরণ করিবে।মহাপরিকল্পনা লঙ্ঘন করিয়া ভূমি ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা, ইত্যাদি
২১। (১) মহাপরিকল্পনা লঙ্ঘন করিয়া বা উহাতে চিহ্নিত বা উল্লিখিত উদ্দেশ্য ব্যতিরেকে অন্য কোনো উদ্দেশ্যে কোনো ভূমি ব্যবহার করা যাইবে না। (২) কর্তৃপক্ষের অধিক্ষেত্রাধীন এলাকায় সকল সরকারি ও বেসরকারি উন্নয়ন এবং নির্মাণকার্য মহাপরিকল্পনার সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণ হইতে হইবে।প্রকল্প বাস্তবায়ন, ডেভেলপার নিয়োগ, চুক্তি সম্পাদন, ইত্যাদি
২২। (১) কর্তৃপক্ষ অধিক্ষেত্রাধীন এলাকায় অবকাঠামো উন্নয়ন এবং প্রয়োজনীয় সুবিধাদি নিশ্চিত করিবার লক্ষ্যে প্রকল্পসমূহ বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ বা সংস্থাকে অনুরোধ করিতে পারিবে। (২) কর্তৃপক্ষ প্রকল্পসমূহ নিজে বাস্তবায়ন করিতে পারিবে বা ডিপোজিটরি ওয়ার্ক হিসাবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ বা সংস্থা দ্বারা বাস্তবায়ন করাইতে পারিবে। (৩) কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত পদ্ধতিতে, প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে কোনো ব্যক্তি বা, ক্ষেত্রমত, ডেভেলপার নিয়োগ, দেশি-বিদেশি যেকোনো ব্যক্তি, সংস্থা, কর্তৃপক্ষ বা প্রতিষ্ঠানের সহিত চুক্তি সম্পাদন করিতে পারিবে।পরিদর্শন, অনুসন্ধান, মনিটরিং ও প্রতিবেদন দাখিল
২৩। এই অধ্যাদেশের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান- (ক) যেকোনো শিল্প ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমের বাস্তবায়ন অগ্রগতি পরিদর্শন করিতে পারিবে এবং উক্ত পরিদর্শনের প্রতিবেদন কর্তৃপক্ষের নিকট পেশ করিতে পারিবে; (খ) যেকোনো শিল্প ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করিয়া উহা পরিদর্শন বা উহাতে কোনো অনুসন্ধান পরিচালনা করিতে পারিবে এবং উক্তরূপ প্রবেশ, পরির্দশন বা অনুসন্ধানের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান প্রয়োজনীয় সকল প্রকার সহায়তা প্রদান করিবে; (গ) কর্তৃপক্ষের অধিক্ষেত্রাধীন এলাকায় উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থাসমূহ ত্রৈমাসিক/ষান্মাসিক ভিত্তিতে প্রকল্প বাস্তবায়ন বিষয়ে কর্তৃপক্ষের নিকট বাস্তবায়ন অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করিবে এবং কর্তৃপক্ষ, প্রয়োজনে, উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থাসমূহকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করিবে।অপসারণ আদেশ ইস্যু ও উচ্ছেদ করিবার ক্ষমতা
২৪। এই অধ্যাদেশ বা চুক্তির কোনো বিধি-নিষেধ বা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত কোনো শর্ত লঙ্ঘন করিয়া কোনো ব্যক্তি কোনো ভবন বা স্থাপনা নির্মাণ করিলে, আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কর্তৃপক্ষ বা তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তা উক্ত ভবন বা স্থাপনা অপসারণ করিবার জন্য উক্ত ব্যক্তির উপর অপসারণ আদেশ ইস্যু করিতে পারিবে এবং প্রয়োজনে উচ্ছেদ কার্যক্রম গ্রহণ করিতে পারিবে।নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষা
২৫। (১) কর্তৃপক্ষের অধিক্ষেত্রাধীন এলাকায় নিরাপত্তা ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য পুলিশ, কোস্টগার্ড ও অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনী সংক্রান্ত ইউনিট প্রতিষ্ঠাকল্পে পুলিশ ফাঁড়ি, নৌ পুলিশ, কোস্টগার্ড পেট্রোল স্টেশন স্থাপন, শিল্প পুলিশ, পর্যটন পুলিশ, আনসার ভিডিপি এবং আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে নিয়োগকৃত নিরাপত্তা কর্মী, ইত্যাদির সমন্বয়ে নিরাপত্তা ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবে। (২) কর্তৃপক্ষ বৃহদায়তন স্থাপনাসমূহের জন্য নিজস্ব নিরাপত্তা কর্মী মোতায়েন করা এবং প্রচলিত বিধি মোতাবেক কেপিআই ঘোষণার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করিতে পারিবে।বিনিয়োগ উন্নয়ন ও শিল্পায়ন
২৬। (১) কর্তৃপক্ষ ওয়ানস্টপ সার্ভিস প্রবর্তন এবং এই লক্ষ্যে স্বতন্ত্র সুবিধাদিসহ বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কেন্দ্রীয় ওয়ান স্টপ সার্ভিসের সহিত সংযোগ প্রতিষ্ঠা করিতে পারিবে। (২) কর্তৃপক্ষ, গভর্নিং বোর্ডের অনুমোদনক্রমে, যথাশীঘ্র দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য বিভিন্ন প্রণোদনা ও সুবিধাদি সংক্রান্ত গাইডলাইন ও প্রচারপত্র প্রস্তুত ও প্রচারের ব্যবস্থা করিতে পারিবে। (৩) কর্তৃপক্ষ বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে শর্তপূরণপূর্বক সহজে পরিবেশ ছাড়পত্র প্রাপ্তির জন্য বিশেষ ভূমিকা গ্রহণ করিতে পারিবে। (৪) কর্তৃপক্ষ ইহার অধিক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীগণের আমদানি-রপ্তানি সহজীকরণের জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ডেডিকেটেড টার্মিনাল বা জেটি এবং শুল্ক ও রাজস্ব বিভাগের মাধ্যমে ডেডিকেটেড কাস্টমস-ইমিগ্রেশন-ক্লিয়ারেন্স এবং গ্রীণ চ্যানেলের সুবিধা প্রবর্তনে বিশেষ ভূমিকা গ্রহণ করিতে পারিবে। (৫) কর্তৃপক্ষ, গেজেট প্রজ্ঞাপন দ্বারা, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অনুমোদনক্রমে, নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য কর্তৃপক্ষের এলাকায় বা বিশেষ অঞ্চলের বিনিয়োগের জন্য বিশেষ শুল্ক সুবিধা প্রদান করিতে কাস্টমস আইন, ২০২৩ (২০২৩ সনের ৫৭ নং আইন) এর আওতায় নিম্নবর্ণিত বিশেষ বন্ডেড সুবিধাদি প্রদানে ভূমিকা গ্রহণ করিতে পারিবে, যথা:- (ক) কর্তৃপক্ষের অধিক্ষেত্রাধীন শিল্প-কারখানাসমূহে আমদানিকৃত কাঁচামালসহ কোনো দ্রব্যের উপর কাস্টমস রিজার্ভ, বিক্রয় কর, Octroi বা আবগারি শুল্ক বা আমদানি লাইসেন্স বা পারমিট ফি বা অন্য কোনো চার্জ; এবং (খ) কর্তৃপক্ষের অধিক্ষেত্রাধীন শিল্প-কারখানাসমূহ হইতে রপ্তানিকৃত বা রপ্তানির উদ্দেশ্যে দেশে ব্যবহৃত কোনো দ্রব্যের শুল্ক বা অন্য কোনো চার্জ। (৬) কর্তৃপক্ষ অধিক্ষেত্রাধীন এলাকার রপ্তানিমুখী শিল্প-কারখানাসমূহের জন্য Bangladesh Export Processing Zones Authority Act, 1980 (Act No. XXXVI of 1980) এবং বাংলাদেশ বেসরকারী রপ্তানী প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল আইন, ১৯৯৬ (১৯৯৬ সনের ২০ নং আইন) এর বিধান অনুযায়ী একই ধরনের আর্থিক বিশেষ প্রণোদনা ও সুবিধাদি প্রদানে ভূমিকা গ্রহণ করিতে পারিবে। (৭) কর্তৃপক্ষ, গভর্নিং বোর্ডের অনুমতিক্রমে, বিনিয়োগ আকর্ষণে উদ্ভাবনী পদক্ষেপ এবং আন্তর্জাতিক মান ও উত্তম চর্চার বাস্তবায়ন করিতে পারিবে।কর্তৃপক্ষের যানবাহন এবং প্রকিউরমেন্ট কার্যক্রম, ইত্যাদি
২৭। (১) কর্তৃপক্ষ ইহার যানবাহন ও অন্যান্য সুবিধাদি সরকার অনুমোদিত কাঠামো অনুযায়ী সংস্থান করিতে পারিবে। (২) কর্তৃপক্ষ গভর্নিং বোর্ড অনুমোদিত আর্থিক ডেলিগেশন অনুযায়ী ইহার ক্রয়-সংক্রান্ত কার্যক্রম পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন, ২০০৬ (২০০৬ সনের ২৪ নং আইন) ও অন্যান্য প্রচলিত আর্থিক বিধিবিধান অনুসরণ করিয়া সম্পন্ন করিতে পারিবে।পরিবেশ সংক্রান্ত আইন, ইত্যাদির প্রতিপালন
২৮। এই অধ্যাদেশের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, কর্তৃপক্ষ, ডেভেলপার, কর্তৃপক্ষের অধিক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত শিল্প ইউনিটসমূহ এবং অন্যান্য আর্থিক ও ব্যাবসায়িক প্রতিষ্ঠান- (ক) বাংলাদেশে বিদ্যমান পরিবেশ ও প্রতিবেশ রক্ষা সংক্রান্ত সকল আইনের প্রতিপালনসহ বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক স্বীকৃত আন্তর্জাতিক অঙ্গীকারসমূহ প্রতিপালন করিতে বাধ্য থাকিবে; এবং (খ) প্রাকৃতিক পরিবেশ ও স্থানীয় পণ্য উৎপাদনে সুরক্ষার ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে এবং প্রয়োজনে, উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে।অন্যান্য কার্যাবলি
২৯। কর্তৃপক্ষ এই অধ্যাদেশের অন্যান্য অধ্যায়ে বর্ণিত কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করিবে।কর্তৃপক্ষ ও কোনো স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বা সংস্থার মধ্যে বিরোধ নিষ্পত্তি
৩০। (১) এই অধ্যাদেশের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, কর্তৃপক্ষের অধিক্ষেত্রাধীন এলাকায় মহাপরিকল্পনা বা উন্নয়ন প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন অথবা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক গৃহীত কোনো সিদ্ধান্ত বা কোনো কার্যক্রমের বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সহিত অন্য কোনো স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বা সংস্থার মধ্যে বিরোধ পরিলক্ষিত হইলে কর্তৃপক্ষ পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে অনতিবিলম্বে উহা নিষ্পত্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে। (২) উপ-ধারা (১) এর অধীন গৃহীত পদক্ষেপের মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তি করা সম্ভব না হইলে কর্তৃপক্ষ উক্ত বিরোধের বিষয়টি সরকারের নিকট প্রেরণ করিবে এবং সরকার উক্ত স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বা সংস্থার নিয়ন্ত্রণকারী সংবিধিবদ্ধ কর্তৃপক্ষ বা প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়, যেক্ষেত্রে যাহা প্রযোজ্য, উহার সহিত পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে উক্ত বিরোধ নিষ্পত্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে।কর্তৃপক্ষ ও বরাদ্দগ্রহীতার মধ্যে বিরোধ নিষ্পত্তি
৩১। (১) কর্তৃপক্ষ এবং বরাদ্দগ্রহীতার মধ্যে কোনো বিরোধ পরিলক্ষিত হইলে কর্তৃপক্ষ উহা পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে নিষ্পত্তির উদ্যোগ গ্রহণ করিবে। (২) উপ-ধারা (১) এর অধীন বিরোধ নিষ্পত্তি করা সম্ভব না হইলে সালিসের মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তি করিতে হইবে।শিল্প প্রতিষ্ঠান বা শিল্প কারখানার মধ্যে বিরোধ নিষ্পত্তি
৩২। (১) কর্তৃপক্ষের অধিক্ষেত্রাধীন শিল্প প্রতিষ্ঠান বা শিল্প কারখানার মধ্যে কোনো বিরোধ পরিলক্ষিত হইলে উহা পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে নিষ্পত্তির উদ্যোগ গ্রহণ করিতে হইবে। (২) উপ-ধারা (১) এর অধীন বিরোধ নিষ্পত্তি করা সম্ভব না হইলে উহা কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরণ করিতে হইবে এবং কর্তৃপক্ষ প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে উহা নিষ্পত্তি করিবে।কতিপয় আইনের প্রয়োগ হইতে অব্যাহতি প্রদানের ক্ষমতা
৩৩। এই অধ্যাদেশের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, বিনিয়োগ আকর্ষণ ও উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের অন্তরায় দূরীকরণার্থ প্রয়োজনীয় ও সমীচীন বিবেচিত হইলে সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, কোনো ব্যক্তিকে বিদ্যমান কোনো আইনের সকল বিধান বা যেকোনো বিধানের প্রয়োগ হইতে অব্যাহতি প্রদান করিতে পারিবে।আমদানি স্বত্ব নির্ধারণ
৩৪। (১) কোনো শিল্প বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের যন্ত্রপাতি, যন্ত্রাংশ, কাঁচামাল ও মোড়ক-উপকরণ আমদানির জন্য আমদানি স্বত্বের প্রয়োজন হইলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে কর্তৃপক্ষের নিকট বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতি ও ফরমে আবেদন করিতে হইবে। (২) উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রাপ্ত আবেদন বিবেচনার পর কর্তৃপক্ষ যে আমদানি স্বত্ব নির্ধারণ করিবে সেই স্বত্ব অনুযায়ী যাহাতে উক্ত যন্ত্রপাতি, যন্ত্রাংশ, কাঁচামাল ও মোড়ক-উপকরণ আমদানি করা যায় তজ্জন্য কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র প্রদান করিবে।রয়্যালটি ও ফি
৩৫। বিদেশি কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে কোনো রয়্যালটি বা কারিগরি জ্ঞান বা কারিগরি সহায়তা ফি, ফ্র্যাঞ্চাইজ ফি, প্রভৃতি নির্ধারিত পদ্ধতিতে বিদেশে প্রেরণের জন্য কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করিতে হইবে এবং কর্তৃপক্ষ উহা, বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনসাপেক্ষে, নির্ধারিত পদ্ধতিতে নিষ্পত্তি করিবে।কর্তৃপক্ষের তহবিল
৩৬। (১) কর্তৃপক্ষের একটি তহবিল থাকিবে এবং উহাতে নিম্নবর্ণিত অর্থ জমা হইবে, যথা:- (ক) সরকারের নিকট হইতে প্রাপ্ত অনুদান; (খ) কর্তৃপক্ষের অধিক্ষেত্রাধীন প্লট বা ভবন বরাদ্দ বা ইজারা হইতে প্রাপ্ত অর্থ; (গ) কর্তৃপক্ষের অধিক্ষেত্রাধীন ভবন বা ভবনের স্পেস ভাড়া হইতে প্রাপ্ত অর্থ; (ঘ) স্থানীয় আয়, রেট, টোল, ফি ও সার্ভিস চার্জ বাবদ প্রাপ্ত অর্থ; (ঙ) সরকারি ও বেসরকারি অংশীদারিত্ব হইতে প্রাপ্ত মুনাফা; এবং (চ) গভর্নিং বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত যেকোনো উৎস হইতে প্রাপ্ত অর্থ। (২) কর্তৃপক্ষের নামে তৎকর্তৃক অনুমোদিত কোনো তফসিলি ব্যাংকে উক্ত তহবিলের অর্থ জমা রাখা হইবে এবং প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে উক্ত তহবিল হইতে অর্থ উত্তোলন করা যাইবে: তবে শর্ত থাকে যে, সরকার কর্তৃক প্রাপ্ত অনুদানের অর্থ জমা রাখিবার ক্ষেত্রে সরকার কর্তৃক, সময় সময়, প্রণীত বিধিবিধান প্রযোজ্য হইবে। (৩) প্রচলিত আর্থিক বিধিবিধান এবং সরকার কর্তৃক, সময় সময়, প্রণীত বিধিবিধান অনুসরণপূর্বক, কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান, সদস্য, অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীর বেতন ও ভাতা এবং কমিটির সদস্যগণের সম্মানি এবং কর্তৃপক্ষের কার্যাবলি পরিচালনায় প্রয়োজনীয় অন্যান্য ব্যয়সহ কর্তৃপক্ষের অধিক্ষেত্রাধীন অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় তহবিল হইতে নির্বাহ করা যাইবে। ব্যাখ্যা।– ‘তফসিলি ব্যাংক’ অর্থ Bangladesh Bank Order, 1972 (President’s Order No. 127 of 1972) এর Article 2 এর clause (j)-তে সংজ্ঞায়িত Scheduled Bank |বাজেট
৩৭। কর্তৃপক্ষ প্রতিবৎসর সরকার কর্তৃক নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পরবর্তী অর্থবৎসরের বার্ষিক বাজেট বিবরণী সরকারের নিকট পেশ করিবে এবং উহাতে উক্ত বৎসরে সরকারের নিকট হইতে কর্তৃপক্ষের কী পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন হইবে উহার উল্লেখ থাকিবে, তবে কর্তৃপক্ষ উহার পৌনঃপুনিক ব্যয় নির্বাহে ক্রমান্বয়ে নিজস্ব আয় বৃদ্ধির প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখিবে।হিসাবরক্ষণ ও নিরীক্ষা
৩৮। (১) কর্তৃপক্ষ যথাযথভাবে উহার হিসাবরক্ষণ করিবে এবং হিসাবের বার্ষিক বিবরণী প্রস্তুত করিবে। (২) বাংলাদেশের মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, অতঃপর মহা হিসাব-নিরীক্ষক নামে অভিহিত, প্রত্যেক বৎসর কর্তৃপক্ষের হিসাব নিরীক্ষা করিবেন এবং বিদ্যমান আইনের বিধান মোতাবেক নিরীক্ষা প্রতিবেদন দাখিল করিবেন। (৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন হিসাব নিরীক্ষা ব্যতিরেকেও Bangladesh Chartered Accountants Order, 1973 (President’s Order No. 2 of 1973) এর Article 2(1)(b)-তে সংজ্ঞায়িত Chartered Accountant দ্বারা কর্তৃপক্ষের হিসাব নিরীক্ষা করা যাইবে এবং এতদুদ্দেশ্যে কর্তৃপক্ষ এক বা একাধিক Chartered Accountant নিয়োগ করিতে পারিবে। (৪) উপ-ধারা (৩) এর অধীন নিয়োগকৃত Chartered Accountant এতদুদ্দেশ্যে কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত হারে পারিশ্রমিক প্রাপ্য হইবেন। (৫) কর্তৃপক্ষের হিসাব নিরীক্ষার উদ্দেশ্যে মহা হিসাব-নিরীক্ষক বা তাহার নিকট হইতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি বা উপ-ধারা (৩) এর অধীন নিয়োগকৃত Chartered Accountant কর্তৃপক্ষের সকল রেকর্ড, দলিল-দস্তাবেজ, বার্ষিক ব্যালেন্স সিট, নগদ বা ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ, জামানত, ভাণ্ডার এবং অন্যবিধ সম্পত্তি পরীক্ষা করিয়া দেখিতে পারিবেন।প্রতিবেদন
৩৯। (১) কর্তৃপক্ষ প্রত্যেক অর্থবৎসর সমাপ্ত হইবার পরবর্তী ৯০ (নব্বই) দিনের মধ্যে উক্ত বৎসরে তৎকর্তৃক সম্পাদিত কার্যাবলির উপর একটি বার্ষিক প্রতিবেদন সরকারের নিকট পেশ করিবে। (২) সরকার, প্রয়োজনে, কর্তৃপক্ষের নিকট হইতে উহার যেকোনো বিষয়ের উপরে প্রতিবেদন বা বিবরণী তলব করিতে পারিবে এবং কর্তৃপক্ষ উহা সরকারের নিকট সরবরাহ করিতে বাধ্য থাকিবে।বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ এর প্রযোজ্যতা
৪০। কর্তৃপক্ষের অধিক্ষেত্রাধীন কোনো কোম্পানি বা শিল্প বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শ্রমিকদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়সমূহ নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ (২০০৬ সনের ৪২ নং আইন) প্রযোজ্য হইবে।ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা বিমা প্রতিষ্ঠানকে কার্যক্রম পরিচালনার অনুমতি প্রদান
৪১। (১) বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনসাপেক্ষে, কর্তৃপক্ষ উহার অধিক্ষেত্রাধীন এলাকায় ব্যাংকিং বা আর্থিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে অনুমতি প্রদান করিতে পারিবে। (২) বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ বা, ক্ষেত্রমত, বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনসাপেক্ষে, কর্তৃপক্ষ উহার অধিক্ষেত্রাধীন এলাকায় বিমা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কোনো বিমা প্রতিষ্ঠানকে অনুমতি প্রদান করিতে পারিবে।উপদেষ্টা, পরামর্শক ও বিশেষজ্ঞ নিয়োগ
৪২। কর্তৃপক্ষ উহার কার্যাবলি দক্ষতার সহিত সম্পাদনের লক্ষ্যে, প্রচলিত আইন ও বিধিবিধান অনুসরণ করিয়া চুক্তিভিত্তিক উপদেষ্টা, পরামর্শক ও বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করিতে পারিবে।স্বার্থের সংঘাত
৪৩। নির্বাহী চেয়ারম্যান, সদস্য বা কোনো কর্মচারী, পরামর্শক, বিশেষজ্ঞ বা নিরীক্ষক কর্তৃপক্ষের কোনো পদে বহাল থাকাকালীন কর্তৃপক্ষের সহিত ব্যবসায়-বাণিজ্য বা কোনো লেনদেন বা স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে অংশগ্রহণ করিবেন না।ক্ষমতা অর্পণ
৪৪। কর্তৃপক্ষ লিখিত আদেশ দ্বারা, উহার যেকোনো ক্ষমতা বা দায়িত্ব নির্বাহী চেয়ারম্যান, সদস্য বা কোনো কর্মচারীকে অর্পণ করিতে পারিবে।তফসিল সংশোধনের ক্ষমতা
৪৫। সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, তফসিল সংশোধন করিতে পারিবে।বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা
৪৬। (১) এই অধ্যাদেশের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে। (২) এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, বিধি প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত, সরকার প্রয়োজনীয় আদেশ জারি করিতে পারিবে।প্রবিধান প্রণয়নের ক্ষমতা
৪৭। (১) এই অধ্যাদেশের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, কর্তৃপক্ষ, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই অধ্যাদেশ এবং বিধির সহিত অসংগতিপূর্ণ নহে, এইরূপ প্রবিধান প্রণয়ন করিতে পারিবে। (২) এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, প্রবিধান প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত, কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় আদেশ জারি করিতে পারিবে।অসুবিধা দূরীকরণ
৪৮। এই অধ্যাদেশের বিধানাবলি কার্যকর করিবার ক্ষেত্রে কোনো অসুবিধা পরিলক্ষিত হইলে সরকার উক্তরূপ অসুবিধা দূরীকরণার্থ, সরকারি গেজেটে প্রকাশিত আদেশ দ্বারা, প্রয়োজনীয় যেকোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবে।ইংরেজিতে অনূদিত পাঠ প্রকাশ
৪৯। (১) এই অধ্যাদেশ কার্যকর হইবার পর সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই অধ্যাদেশের মূল বাংলা পাঠের ইংরেজিতে অনূদিত একটি নির্ভরযোগ্য পাঠ (Authentic English Text) প্রকাশ করিবে। (২) বাংলা ও ইংরেজি পাঠের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে বাংলা পাঠ প্রাধান্য পাইবে।Click here to see the original act on the Bangladesh Legal Database.
