Date of Publication: [ ১৩ নভেম্বর, ২০২৩ ]

Preamble

যেহেতু সিলেট ও উহার সন্নিহিত এলাকা সমন্বয়ে একটি আধুনিক ও আকর্ষণীয় পর্যটন নগরী প্রতিষ্ঠার স্বার্থে উক্ত অঞ্চলের সুপরিকল্পিত উন্নয়ন, ভূ-প্রাকৃতিক পরিবেশ ও প্রতিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখা এবং পর্যটন অঞ্চলের অবকাঠামো ও স্থাপনাসমূহ টেকসই, দৃষ্টিনন্দন ও পর্যটনবান্ধব নিশ্চিত করিবার লক্ষ্যে একটি কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়; সেহেতু এতদ্দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল:-

Sections/Articles

সংক্ষিপ্ত শিরোনাম, প্রয়োগ ও প্রবর্তন

১।  (১) এই আইন সিলেট উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইন, ২০২৩ নামে অভিহিত হইবে। (২) ইহা সিলেট সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন এলাকা এবং সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, উক্ত সিটি কর্পোরেশন এলাকা সংলগ্ন যেসকল এলাকা নির্ধারণ করিবে সেই সকল এলাকায় প্রযোজ্য হইবে। (৩) সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, যেই তারিখ নির্ধারণ করিবে সেই তারিখ হইতে এই আইন কার্যকর হইবে।

সংজ্ঞা

২। বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থি কোনো কিছু না থাকিলে, এই আইনে- (১) “ইমারত” অর্থ Building Construction Act, 1952 (East Bengal Act No. II of 1953) এর section 2(b) এ সংজ্ঞায়িত Building; (২) “কর্তৃপক্ষ” অর্থ ধারা ৪ এর অধীন প্রতিষ্ঠিত সিলেট উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ; (৩) “কমিটি” অর্থ এই আইনের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে সহযোগিতা প্রদানকল্পে নির্বাহী আদেশে গঠিত কমিটি; (৪) “কোম্পানি” অর্থ কোম্পানী আইন, ১৯৯৪ (১৯৯৪ সনের ১৮ নং আইন) এর ধারা
২(ঘ) তে সংজ্ঞায়িত কোনো কোম্পানি;
(৫) “চেয়ারম্যান” অর্থ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান; (৬) “জলাধার” অর্থ বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ এর ধারা ২ (কক) তে সংজ্ঞায়িত জলাধার; (৭) “তহবিল” অর্থ ধারা ৩২ এ উল্লিখিত তহবিল; (৮) “নির্ধারিত” অর্থ বিধি বা, ক্ষেত্রমত, প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত; (৯) “নির্বাহী পরিচালক” অর্থ কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক; (১০) “প্রবিধান” অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত প্রবিধান; (১১) “বিধি” অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি; (১২)‌ “ব্যক্তি” অর্থ ব্যক্তি, ব্যক্তিবর্গ, নিবন্ধিত হউক না হউক কোনো প্রতিষ্ঠান, কোম্পানী, সমিতি বা সংস্থাকে বুঝাইবে; (১৩) “মহাপরিকল্পনা” অর্থ ধারা ১২ এর অধীন প্রণীত মহাপরিকল্পনা; (১৪) “সদস্য” অর্থ কর্তৃপক্ষের কোনো সদস্য; (১৫) ‘‘স্থানীয় কর্তৃপক্ষ’’ অর্থ ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, জেলা পরিষদ, পৌরসভা এবং সিটি কর্পোরেশনসহ কোনো আইনের অধীন কোনো নির্দিষ্ট কার্যাদি সম্পাদনের জন্য প্রতিষ্ঠিত কোনো কর্তৃপক্ষ বা প্রতিষ্ঠান; (১৬) “স্থানীয় পরিকল্পনা” অর্থ ধারা ২০ এর অধীন প্রণীত পরিকল্পনা; এবং (১৭) “ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মচারী” অর্থ এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষের কোনো কর্মচারী;

আইনের প্রাধান্য

৩। আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের বিধানাবলী প্রাধান্য পাইবে।

কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা

৪। (১) এই আইন কার্যকর হইবার পর সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, ‘সিলেট উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ’ নামে একটি কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করিবে। (২) কর্তৃপক্ষ একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হইবে এবং ইহার স্থায়ী ধারাবাহিকতা ও সাধারণ সিলমোহর থাকিবে এবং এই আইনের বিধানাবলী সাপেক্ষে, ইহার স্থাবর বা অস্থাবর উভয় প্রকার সম্পত্তি অর্জন করিবার, অধিকারে রাখিবার বা হস্তান্তর করিবার ক্ষমতা থাকিবে এবং ইহা নিজ নাম ব্যবহারে মামলা দায়ের করিতে পারিবে এবং ইহার বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করা যাইবে।

কর্তৃপক্ষের কার্যালয়

৫। (১) কর্তৃপক্ষের প্রধান কার্যালয় সিলেট সিটি কর্পোরেশন এলাকায় থাকিবে। (২) কর্তৃপক্ষ, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, ইহার আওতাধীন এলাকায় এক বা একাধিক শাখা কার্যালয় স্থাপন করিতে পারিবে।

কর্তৃপক্ষ গঠন, ইত্যাদি

৬। (১) নিম্নবর্ণিত সদস্য সমন্বয়ে কর্তৃপক্ষ গঠিত হইবে, যথা:- (ক) চেয়ারম্যান; (খ) সরকার কর্তৃক প্রেষণে নিযুক্ত চারজন সদস্য; (গ) জেলা প্রশাসক, সিলেট বা তাঁর মনোনীত একজন উপযুক্ত প্রতিনিধি; (ঘ) বিভাগীয় প্রধান, পুর কৌশল/স্থাপত্য বিভাগ, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট; (ঙ) গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনোনীত উহার অন্যূন উপসচিব পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি; (চ) ভূমি মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনোনীত উহার অন্যূন উপসচিব পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি; (ছ) বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনোনীত উহার অন্যূন উপসচিব পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি; (জ) পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনোনীত উহার অন্যূন উপসচিব পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি; (ঝ) গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনোনীত গণপূর্ত অধিদপ্তরের অন্যূন তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি; (ঞ) পুলিশ কমিশনার, সিলেট কর্তৃক মনোনীত অন্যূন উপপুলিশ কমিশনার পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি; (ট) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, সিলেট সিটি কর্পোরেশন; (ঠ) নির্বাহী প্রকৌশলী, গণপূর্ত বিভাগ, সিলেট; (ড) স্থাপত্য অধিদপ্তর কর্তৃক মনোনীত নির্বাহী স্থপতি পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি; (ঢ) কর্তৃপক্ষের আওতাধীন এলাকায় বসবাসরত সরকার কর্তৃক মনোনীত তিনজন বিশিষ্ট নাগরিক, তন্মধ্যে কমপক্ষে একজন হইবেন মহিলা এবং একজন হইবেন নগর পরিকল্পনাবিদ; (ণ) সিলেট শিল্প ও বণিক সমিতির সভাপতি বা তদকর্তৃক মনোনীত তিনজনের প্যানেল হইতে সরকার কর্তৃক মনোনীত একজন প্রতিনিধি; এবং (ত) নির্বাহী পরিচালক, যিনি ইহার সদস্য সচিবও হইবেন। (২) উপধারা (১) এর দফা (ঢ) এবং (ণ) এর অধীন মনোনীত সদস্যগণ তাহাদের নিয়োগের তারিখ হইতে পরবর্তী ০৩ (তিন) বৎসর মেয়াদে সদস্যপদে অধিষ্ঠিত থাকিবেন: তবে শর্ত থাকে যে, উক্ত মেয়াদ শেষ হইবার পূর্বে সরকার যেকোনো সময় কারণ দর্শানো ব্যতিরেকে, উক্তরূপ মনোনীত কোনো সদস্যকে সদস্যপদ হইতে অব্যাহতি প্রদান করিতে পারিবে এবং কোনো মনোনীত সদস্য সরকারের উদ্দেশ্যে স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযোগে পদত্যাগ করিতে পারিবেন।

কর্তৃপক্ষের ক্ষমতা ও কার্যাবলী

৭। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, কর্তৃপক্ষের ক্ষমতা ও কার্যাবলি হইবে নিম্নরূপ, যথা:- (১) ভূমির যৌক্তিক ব্যবহার নিশ্চিত করিয়া মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন; (২) মহাপরিকল্পনা প্রণয়নের নিমিত্ত ভূমি জরিপ ও সমীক্ষা, গবেষণা পরিচালনা এবং তৎসংশ্লিষ্ট সকল প্রকার তথ্য, উপাত্ত সংগ্রহ ও সংরক্ষণ; (৩) ভূমির উপর যেকোনো প্রকৃতির অপরিকল্পিত উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ এবং আধুনিক ও আকর্ষণীয় পর্যটন অঞ্চল ও নগর পরিকল্পনা সংক্রান্ত বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্যাবলি গ্রহণ; (৪) সড়ক, মহাসড়ক, নৌপথ, রেলপথ নির্মাণের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহিত আলোচনাক্রমে যথাযথ পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সমন্বয় সাধন; (৫) কর্তৃপক্ষের নির্দিষ্ট সীমানার মধ্যে বিধিবহির্ভূত স্থাপনা অপসারণ; (৬) অপরিকল্পিত, অপ্রশস্ত ও ঘনবসতি অপসারণক্রমে নূতন আবাসন প্রকল্প প্রণয়ন, বাস্তবায়ন এবং উক্ত এলাকার বাসিন্দাগণের পুনর্বাসনের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ; (৭) নিম্নবিত্ত, বস্তিবাসী এবং গৃহহীনদের আবাসন সমস্যার অগ্রাধিকার বিবেচনায় রাখিয়া উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ ও উহার বাস্তবায়ন; (৮) উন্নয়ন প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন রহিয়াছে এইরূপ কোনো এলাকার জন্য উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ জারি এবং উক্ত এলাকার ভূমি ব্যবহারের পরিবর্তন বা কোনো ইমারত বা স্থাপনার পরিবর্তনের উপর অনধিক এক বৎসর পর্যন্ত বিধি-নিষেধ আরোপ; (৯) আধুনিক ও আকর্ষণীয় পর্যটন অঞ্চল ও নগর পরিকল্পনার আওতায় বিভিন্ন নাগরিক সুবিধা তৈরি এবং উহার ধারাবাহিকতা সংরক্ষণ; (১০) প্রাকৃতিক জীববৈচিত্র সংরক্ষণ ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার্থে পর্যাপ্ত সংখ্যক বনায়ন ও সবুজ বেষ্টনী তৈরী ও সংরক্ষণ; (১১) কোনো উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ বা বাস্তবায়নের জন্য কর্তৃপক্ষের নিজস্ব অর্থ ব্যয়ে দেশি-বিদেশি বা অন্য কোনো স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বা সরকারি সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের নিকট হইতে পরামর্শ বা সহযোগিতা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন; (১২) দেশি অথবা বিদেশি ব্যক্তি, সরকারি বা সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে বা একাধিক কর্তৃপক্ষের যৌথ বিনিয়োগ কার্যক্রম গ্রহণ ও বাস্তবায়ন; (১৩) কর্তৃপক্ষের আওতাভুক্ত এলাকার মধ্যে কোনো উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থায়ন, বাস্তবায়ন ও তত্ত্বাবধান; (১৪) সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, ব্যাংক বা সরকার কর্তৃক অনুমোদিত যেকোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা বিদেশি সংস্থা হইতে ঋণ গ্রহণ; (১৫) আধুনিক ও নগর সংক্রান্ত সেমিনার, সিম্পোজিয়াম ও ওয়ার্কশপের আয়োজন; (১৬) টেকসই উন্নয়ন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অভিযোজন এবং দুর্যোগ সহনশীল প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন; (১৭) শিক্ষা ও স্বাস্থ্য, জনস্বাস্থ্য, যোগাযোগ, নগরায়ন, পরিবেশ উন্নয়ন, তথ্য প্রযুক্তি উন্নয়ন, বৈশ্বিক উষ্ণতা রোধ, কার্বন নিঃসরণ হ্রাস, খাল ও নালা নর্দমার উন্নয়ন, উড়াল সেতু, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, ট্রাম, মেট্রোরেল খাতে উন্নয়ন, বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের ব্যবস্থাকরণ, যেকোনো পরিবেশ দূষণ প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণ সংক্রান্ত প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন; (১৮) সরকারের পরিকল্পনার সহিত সমন্বয় করিয়া কর্তৃপক্ষের স্থানীয় পরিকল্পনা প্রণয়ন; (১৯) মহাপরিকল্পনা অনুযায়ী উন্নয়ন কর্মকাণ্ড নিশ্চিত করিবার লক্ষ্যে ভূমি ব্যবহারের ডিজিটাল ডাটাবেজ তৈরি; (২০) কৃষি ভূমি, বনভূমি, নিম্নভূমি, জলাভূমি এবং পরিবেশগত সংবেদনশীল এলাকাসমূহ সংরক্ষণের উদ্যোগ গ্রহণ; (২১) প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা সংরক্ষণে বিভাগীয় কমিটির সাথে সমন্বয় করে কার্যক্রম গ্রহণ ও বাস্তবায়ন; (২২) কর্তৃপক্ষের আওতাধীন এলাকায় ভবন নির্মাণ, অনুমোদন, সংরক্ষণ ও অপসারণ সংক্রান্ত যাবতীয় কার্য সম্পাদন; (২৩) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ কিংবা চুক্তি সম্পাদন; এবং (২৪) সরকার কর্তৃক সময় সময় অর্পিত অন্য যেকোনো দায়িত্ব ও কার্যাবলি সম্পাদন।

চেয়ারম্যান নিয়োগ, মেয়াদ, অপসারণ, ইত্যাদি

৮। (১) সরকার কর্তৃপক্ষের একজন চেয়ারম্যান নিয়োগ করিবে এবং তাহার চাকুরির শর্তাদি সরকার কর্তৃক স্থিরীকৃত হইবে। (২) চেয়ারম্যান তাঁর কার্যভার গ্রহণের তারিখ হইতে তিন বৎসর মেয়াদে স্বীয় পদে অধিষ্ঠিত থাকিবেন: তবে শর্ত থাকে যে, কোনো ব্যক্তি দুই মেয়াদের বেশী সময়ের জন্য চেয়ারম্যান হিসাবে নিয়োগ লাভের যোগ্য হইবেন না। (৩) কোনো ব্যক্তি চেয়ারম্যান হইবার যোগ্য হইবেন না বা উক্ত পদে থাকিতে পারিবেন না, যদি তিনি- (ক) বাংলাদেশের নাগরিক না হন; (খ) শারীরিক বা মানসিক অসমর্থের কারণে দায়িত্ব পালনে অক্ষম হন; (গ) কোনো উপযুক্ত আদালত কর্তৃক দেউলিয়া অথবা অপ্রকৃতিস্থ বলিয়া ঘোষিত হন; (ঘ) কোনো ব্যাংক অথবা আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ঋণ খেলাপি হিসাবে ঘোষিত হন এবং দায় হইতে অব্যাহতি লাভ না করিয়া থাকেন; (ঙ) কোনো ফৌজদারী অপরাধের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হইয়া আদালত কর্তৃক কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন; বা (চ) কর্তৃপক্ষের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট কোনো পেশা বা ব্যবসার সহিত প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত থাকেন বা হন। (৪) সরকার, কারণ দর্শাইবার যুক্তিসঙ্গত সুযোগ প্রদান করিয়া, চেয়ারম্যানকে যে কোনো সময় অপসারণ করিতে পারিবে। (৫) চেয়ারম্যানের পদ শূন্য হইলে কিংবা তাহার অনুপস্থিতি, অসুস্থতা বা অন্য কোনো কারণে চেয়ারম্যান তাহার দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হইলে, শূন্যপদে নূতন চেয়ারম্যান কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত কিংবা চেয়ারম্যান পুনরায় স্বীয় দায়িত্ব পালনে সমর্থ না হওয়া পর্যন্ত, সরকার কর্তৃক মনোনীত যেকোনো সদস্য চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন করিবেন। (৬) চেয়ারম্যান কর্তৃপক্ষের সার্বক্ষণিক ও প্রধান নির্বাহী হইবেন এবং তিনি- (ক) এই আইন, বিধি ও প্রবিধানের বিধান অনুসারে কর্তৃপক্ষের প্রশাসন পরিচালনার জন্য দায়ী থাকিবেন; এবং (খ) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, কর্তৃপক্ষের ক্ষমতা প্রয়োগ ও কার্যাবলি সম্পাদন করিবেন।

কর্তৃপক্ষের সভা

৯। (১) এই ধারার অন্যান্য বিধান সাপেক্ষে, কর্তৃপক্ষ উহার সভার কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ করিবে। (২) প্রতি তিন মাসে কর্তৃপক্ষের অন্যূন একটি সভা অনুষ্ঠিত হইবে এবং সভার তারিখ, সময় ও স্থান চেয়ারম্যান কর্তৃক নির্ধারিত হইবে: তবে শর্ত থাকে, যেকোনো সময় জরুরি সভা আহবান করা যাইবে। (৩) চেয়ারম্যান, কর্তৃপক্ষের সকল সভায় সভাপতিত্ব করিবেন এবং তাহার অনুপস্থিতিতে তৎকর্তৃক মনোনীত কোনো সদস্য সভায় সভাপতিত্ব করিবেন। (৪) কর্তৃপক্ষের সভায় কোরামের জন্য এক তৃতীয়াংশ (১/৩) সদস্যের উপস্থিতির প্রয়োজন হইবে। (৫) কর্তৃপক্ষের সভায় সিদ্ধান্ত গ্রহণে প্রত্যেক সদস্যের ০১ (একটি) করিয়া ভোট থাকিবে এবং ভোটের সমতার ক্ষেত্রে সভায় সভাপতিত্বকারীর দ্বিতীয় বা নির্ণায়ক ভোট প্রদানের অধিকার থাকিবে। (৬) কেবল কোনো সদস্য পদে শূন্যতা বা কর্তৃপক্ষ গঠনে ক্রটি থাকিবার কারণে কর্তৃপক্ষের কোনো কার্য বা কার্যধারা অবৈধ হইবে না বা তৎসম্পর্কে কোনো প্রশ্ন বা আপত্তি উত্থাপন করা যাইবে না। (৭) প্রত্যেক সভার কার্যবিবরণী স্বাক্ষরিত হইবার অনধিক ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে সরকারের নিকট উহার অনুলিপি প্রেরণ করিতে হইবে।

পরামর্শ বা সহযোগিতা

১০। কর্তৃপক্ষ উহার সভার নির্ধারিত আলোচ্য বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিশেষ অবদান রাখিতে সক্ষম বা কর্তৃপক্ষের কার্য সম্পাদনে সহায়তার জন্য, প্রয়োজনে, সদস্য নহে কিন্তু উক্তরূপ কার্যে অভিজ্ঞ এইরূপ কোনো ব্যক্তি, কর্তৃপক্ষ বা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিগণের পরামর্শ বা সহযোগিতা গ্রহণ করিতে পারিবে, তবে তিনি কোনো ভোটাধিকার প্রয়োগ করিতে পারিবেন না।

কমিটি গঠন

১১। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে কর্তৃপক্ষ সাধারণ বা বিশেষ আদেশ দ্বারা উহার কার্যাবলি সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনে সহায়তা প্রদানের জন্য প্রয়োজনবোধে এক বা একাধিক কমিটি গঠন করিতে পারিবে এবং এইরূপ কমিটির সদস্য সংখ্যা, মেয়াদ ও কার্যপরিধি নির্ধারণ করিয়া দিতে পারিবে।

মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন

১২। (১) কর্তৃপক্ষ এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে নিম্নবর্ণিত বিষয়সমূহ অন্তর্ভুক্ত করিয়া উহার আওতাভুক্ত এলাকার জন্য একটি মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করিবে, যথা:- (ক) নৌ, বিমান, রেল, সড়ক ও মহাসড়কে যান চলাচলের গতি-প্রকৃতি, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা এবং এতদ্সংক্রান্ত বিষয়াদি; (খ) পানি সরবরাহ, সংরক্ষণ, পয়ঃপ্রণালি, পয়ঃনিষ্কাশন ও কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ; (গ) বিভিন্ন সরকারি অফিস, বেসরকারি সংস্থা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সেবা কেন্দ্র, শিশু পরিচর্যা কেন্দ্র, উদ্যান, উন্মুক্ত স্থান, জলাশয় এবং বিনোদনমূলক ব্যবস্থা, পর্যটন তথ্য কেন্দ্র, স্বাস্থ্য পরিচর্যা কেন্দ্র, বয়স্ক পুনর্বাসন কেন্দ্র, খেলার মাঠ, হাসপাতাল, ইত্যাদির জন্য ভূমি সংরক্ষণসহ উহার অবস্থান নির্ধারণ ও সংরক্ষণ; (ঘ) আবাসিক, বাণিজ্যিক ও শিল্প এলাকার অবস্থান নির্ধারণ, সংরক্ষণ এবং এতদ্সংক্রান্ত বিষয়াদি; (ঙ) মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য ভবিষ্যতে প্রয়োজন হইতে পারে এইরূপ ভূমি চিহ্নিতকরণ ও উহার অবস্থান নির্ধারণ; (চ) ভূমি ব্যবহার, জোনিং এবং প্রাকৃতিক ল্যান্ডস্কেপ অনুসরণ করিয়া ভূমি সংরক্ষণ; (ছ) সৌর-বিদ্যুৎসহ নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদন, সঞ্চালন, বিতরণ এবং এতদ্সংক্রান্ত বিষয়াদি; (জ) দীর্ঘমেয়াদি ও আধুনিক নাগরিক সুবিধা সংবলিত নগরায়ন পরিকল্পনা, প্রকল্প, ধারাবাহিক উন্নয়ন, নিয়মিত সংস্কার এবং এতদ্সংক্রান্ত বিষয়াদি; এবং (ঝ) আধুনিক পর্যটন ও বাণিজ্যিক নগরী গড়িয়া তুলিবার জন্য প্রয়োজনীয় অন্যান্য আধুনিক সুবিধা। (২) মহাপরিকল্পনা, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, সরকারি গেজেট, মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট, কর্তৃপক্ষের নিজস্ব ওয়েবসাইট এবং বহুল প্রচারিত দুইটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে উহার প্রাক্-প্রকাশ করিবে। (৩) উপধারা (২) এর অধীন প্রাক্-প্রকাশিত মহাপরিকল্পনার বিষয়ে কাহারও কোনো আপত্তি বা পরামর্শ থাকিলে উহা প্রাক্-প্রকাশের ৬০ (ষাট) দিনের মধ্যে লিখিতভাবে কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরণ করিতে হইবে। (৪) কর্তৃপক্ষ, প্রাপ্ত আপত্তি বা পরামর্শ বিবেচনাপূর্বক উপধারা (২) এর অধীন প্রাক্-প্রকাশের তারিখ হইতে অনধিক ১০৫ (একশত পাঁচ) দিনের মধ্যে সংশোধনসহ বা সংশোধন ব্যতিরেকে উক্ত মহাপরিকল্পনা চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য সরকারের নিকট পেশ করিবে। (৫) সরকার, উপধারা (৫) এর অধীন মহাপরিকল্পনা প্রাপ্ত হইবার ৬০ (ষাট) দিনের মধ্যে সংশোধনসহ বা সংশোধন ব্যতিরেকে উহা অনুমোদন করিবে এবং সরকারি গেজেট প্রজ্ঞাপন দ্বারা উহার চূড়ান্ত প্রকাশ করিবে।

মহাপরিকল্পনা সংশোধন

১৩। কর্তৃপক্ষ, সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে, সময় সময়, মহাপরিকল্পনা সংশোধন করিতে পারিবে এবং এইক্ষেত্রে ধারা ১২ এর উপধারা (২), (৩), (৪), ও (৫) এর বিধানাবলি প্রযোজ্য হইবে।

মহাপরিকল্পনা সম্পর্কে মামলা করিবার উপর বিধি-নিষেধ

১৪। মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন অথবা উহার সংশোধন বা পরিবর্তন গেজেটে প্রকাশিত হইবার পূর্বে বা পরে, উহা সম্পর্কে কোনো আদালতে মামলা করা যাইবে না।

মহাপরিকল্পনার পরিপন্থি ভূমি ব্যবহারের অনুমতি

১৫। (১) কোনো ব্যক্তি মহাপরিকল্পনায় উল্লিখিত উদ্দেশ্য ব্যতীত অন্য কোনো উদ্দেশ্যে কোনো ভূমি ব্যবহার করিতে ইচ্ছুক হইলে তাহাকে লিখিতভাবে চেয়ারম্যানের নিকট আবেদন করিতে হইবে। (২) উপধারা (১) এর অধীন আবেদন প্রাপ্তির পর ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে চেয়ারম্যান উহা মঞ্জুর করিতে পারিবেন অথবা নামঞ্জুর করিতে পারিবেন। (৩) উপধারা (২) এর অধীন আবেদন নামঞ্জুর করা হইলে আবেদনকারী ব্যক্তিকে লিখিতভাবে উহার কারণ অবহিত করিতে হইবে। (৪) উপধারা (২) এর অধীন কোনো আবেদন নামঞ্জুর করা হইলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি অবহিত হইবার তারিখ হইতে ৬০ (ষাট) দিনের মধ্যে কর্তৃপক্ষের নিকট আপিল করিতে পারিবেন এবং এইক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হইবে।

উন্নয়ন প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন

১৬।  (১) কর্তৃপক্ষ মহাপরিকল্পনার ভিত্তিতে উহার আওতাভুক্ত কোনো এলাকার জন্য নির্ধারিত পদ্ধতিতে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তুত করিয়া উহা অনুমোদনের জন্য সরকারের নিকট পেশ করিবে। (২) উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবে নিম্নবর্ণিত বিষয়সমূহের উল্লেখ থাকিবে, যথা:- (ক) গৃহায়নসহ প্রস্তাবিত উন্নয়ন, পূর্ত কাজের বিবরণ, প্রাক্কলিত ব্যয় ও প্রস্তাবিত অর্থের সংস্থান; (খ) প্রকল্প বাস্তবায়ন করিবার জন্য যে পরিমাণ ভূমি অধিগ্রহণ করিতে হইবে বা উহা দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হইতে পারে; (গ) এলাকার ভূমি বিন্যাস বা পুনর্বিন্যাস; (ঘ) প্রকল্প এলাকার ভূমি অধিগ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট ভূমির উপর অবস্থিত যে সকল ইমারত ধ্বংস, পরিবর্তন বা পুনঃনির্মাণ করিতে হইবে; (ঙ) বিক্রয় ব্যতীত অন্য কোনো উদ্দেশ্যে কর্তৃপক্ষ কর্তৃক যে সকল ইমারত নির্মাণ করিতে হইবে; (চ) রাস্তা, লেন, ফুটপাত, ওভারপাস, আন্ডারপাস, নর্দমা, পয়ঃনিষ্কাশন, পানি সরবরাহের পাইপ লাইন, সেতু, গলি, টেলিফোন লাইন, ইন্টারনেটের অপটিকাল ফাইবার লাইন, বৈদ্যুতিক লাইন, গ্যাস লাইন ও কালভার্টের বিন্যাস বা পরিবর্তন; (ছ) রাস্তা সমতলকরণ, ফুটপাত বানানো, পাকাকরণ, পাথর কুচি বিছানো, পাথর বসানো, সংযোগকরণ, পয়ঃসংযোগ ও নর্দমার ব্যবস্থাকরণ এবং পানি সরবরাহ, আলোকিতকরণ এবং সাধারণভাবে সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা বা ইউনিয়ন পরিষদ সংস্থান করে এমন স্যানিটারি সুবিধাদি; (জ) প্রকল্পভুক্ত এলাকার ভূমি ভরাট করা, নিচু করা ও সমতল করা; (ঝ) উন্মুক্ত গণস্থান তৈরি, সংরক্ষণ, বর্ধিতকরণ ও উন্নয়ন; (ঞ) বিদ্যমান পানি সরবরাহ ব্যবস্থার সমৃদ্ধিকরণ অথবা পানি সরবরাহ ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য গৃহীত প্রকল্প; (ট) নির্গমনদ্বারসহ নর্দমা ও পয়ঃনিষ্কাশন প্রকল্প; (ঠ) শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, হাসপাতাল, বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং বিদ্যুৎ উপ-কেন্দ্র (ইলেক্ট্রিকসাব-স্টেশন), বাস, ট্যাক্সি ও রিক্সাস্ট্যান্ড এবং বাজার নির্মাণের স্থান অধিগ্রহণ করিয়া উক্ত উদ্দেশ্যে সংরক্ষিত রাখা; এবং (ড) এই আইনের সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণ অন্য যেকোনো বিষয়। (৩) উপধারা (১) এর অধীন দাখিলকৃত উন্নয়ন প্রকল্প সরকার পরিবর্তনসহ বা পরিবর্তন ব্যতীত অনুমোদন করিতে পারিবে। (৪) কর্তৃপক্ষ উপধারা (৩) এর অধীন সরকার কর্তৃক অনুমোদিত উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করিবে। (৫) কর্তৃপক্ষ পত্রিকায় বা ইহার নিজস্ব ওয়েবসাইটে উন্নয়ন প্রকল্পের বিস্তারিত তথ্য উল্লেখ করিয়া বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করিবে এবং প্রকল্প এলাকায় দৃশ্যমান সাইনবোর্ডে প্রয়োজনীয় তথ্যসহ প্রদর্শন করিবে। (৬) উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে প্রাকৃতিক পরিবেশ ও ভূমির বৈশিষ্ট্য অক্ষুণ্ন রাখিতে হইবে। (৭) কোনো উন্নয়ন বা জনকল্যাণমূলক কাজ বাস্তবায়নকালীন কর্তৃপক্ষের আওতাভুক্ত কোনো রাস্তায় বা উহার অংশবিশেষে যানবাহন বা জনসাধারণের চলাচলের উপর কর্তৃপক্ষ সাময়িক বিধি-নিষেধ আরোপ করিতে পারিবে। (৮) কর্তৃপক্ষ উপধারা (৭) এর অধীন সাময়িক বিধি-নিষেধ আরোপের বিষয়টি স্থানীয় জনসাধারণকে অবহিত করিবে যাহাতে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে উক্ত অঞ্চলের জনসাধারণ এবং বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনাকারী সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান প্রয়োজনীয় পূর্বপ্রস্তুতি গ্রহণ করিবার সুযোগ পায়।

উন্নয়ন প্রকল্প সংশোধন

১৭।  কোনো উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদিত হইবার পর কর্তৃপক্ষ সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, উহা সংশোধন করিতে পারিবে।

কতিপয় উন্নয়ন প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের উপর বিধি-নিষেধ

১৮। (১) কর্তৃপক্ষের ছাড়পত্র ব্যতীত কর্তৃপক্ষের আওতাভুক্ত এলাকার কোনো অংশে কোনো ব্যক্তি, স্থানীয় কর্তৃপক্ষ, সরকারি বা বেসরকারি কোনো সংস্থা, প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি সাধারণভাবে কোনো ধরনের অবকাঠামো, রাস্তাঘাট ও ইমারত নির্মাণ, উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ বা বাস্তবায়ন করিতে পারিবে না। (২) নদী-নালা, খাল-বিল, জলাশয় ভরাট করিয়া অথবা উহাদের স্বাভাবিক প্রবাহ ব্যাহত করিয়া কোনো উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা যাইবে না। (৩) পরিবেশের উপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে এমন কোনো উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা যাইবে না। (৪) পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখিয়া প্রকল্প প্রণয়ন করিতে হইবে।

অন্তর্বর্তীকালীন উন্নয়নপ্রকল্প

১৯। (১) ধারা ১২ তে যাহা কিছুই থাকুক না কেন,কর্তৃপক্ষ মহাপরিকল্পনা প্রণয়নের পূর্বে সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, জনস্বার্থে, কোনো অন্তর্বর্তীকালীন উন্নয়ন প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করিতে পারিবে। (২) উপধারা (১) এর অধীন প্রণীত অন্তর্বর্তীকালীন উন্নয়ন প্রকল্প অবাস্তবায়িত থাকাবস্থায় মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হইলে উক্ত অন্তর্বর্তীকালীন উন্নয়ন প্রকল্প মহাপরিকল্পনার অন্তর্ভুক্ত করিতে হইবে এবং মহাপরিকল্পনা চূড়ান্ত হইবার পর উক্ত অন্তর্বর্তীকালীন উন্নয়ন প্রকল্প কার্যকর থাকিবে না।

স্থানীয় পরিকল্পনা

২০। (১) কর্তৃপক্ষের অধীন এলাকায় বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ, ­নৌ, বিমান, সড়ক ও রেল যোগাযোগ, টেলিযোগাযোগ বা অন্য কোনো সংস্থার বা কোনো স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এবং সরকারি, বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি বা কোম্পানি মহাপরিকল্পনার সহিত সামঞ্জস্য রাখিয়া উহাদের ভবিষ্যৎ কার্যক্রমের জন্য উন্নয়ন ও নির্মাণ পরিকল্পনা সম্পর্কিত স্থানীয় পরিকল্পনা প্রণয়ন করিবে এবং উহা অবগতির জন্য কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরণ করিবে। (২) উপধারা (১) এর অধীন অবহিত হইবার পর কর্তৃপক্ষ উহার মতামত, যদি থাকে, বিবেচনার জন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থার নিকট প্রেরণ করিবে।

ভূমি ব্যবহারের উপর নিষেধাজ্ঞা এবং ইমারত পরিবর্তন বা অপসারণ

২১।  যদি কর্তৃপক্ষের নিকট জনস্বার্থে প্রতীয়মান হয় যে, কোনো ভূমির ব্যবহারের উপর নিষেধাজ্ঞা বা শর্ত আরোপ করা সমীচীন অথবা কোনো ইমারত, পূর্ত কার্য, কারখানা বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান পরিবর্তন বা অপসারণ করা সমীচীন তাহা হইলে কর্তৃপক্ষ উক্তরূপ কার্য করিবার জন্য প্রয়োজনীয় আদেশ প্রদান করিতে পারিবে।

ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন

২২।   এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, মহাপরিকল্পনা বা কোনো উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের কারণে কোনো ব্যক্তি স্থানচ্যুত বা বাস্তুচ্যুত কিংবা ক্ষতিগ্রস্ত হইলে কর্তৃপক্ষ উক্ত ব্যক্তিকে দেশে প্রচলিত আইন বা বিধি-বিধান অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে।

রাস্তার প্রশস্ততা

২৩।  কর্তৃপক্ষের আওতাভুক্ত এলাকার রাস্তার প্রশস্ততা বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।

স্থানীয় কর্তৃপক্ষের মালিকানাধীন ভূমি ও ইমারত ন্যস্তকরণ

২৪। (১) স্থানীয় কর্তৃপক্ষের মালিকানাধীন কোনো ভূমি, ইমারত, রাস্তা, চত্বর বা উহার কোনো অংশবিশেষ কর্তৃপক্ষের কোনো উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন হইলে, কর্তৃপক্ষ উক্ত ভূমি, ইমারত, রাস্তা বা উহার অংশবিশেষ উহার অধীন ন্যস্ত করিবার জন্য উক্ত স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে নোটিশ প্রদান করিবে এবং তদনুসারে বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে উক্ত ভূমি, ইমারত, রাস্তা, চত্বর বা উহার অংশ বিশেষ কর্তৃপক্ষের অধী­ন ন্যস্ত হইবে। (২) উপধারা (১) এর অধীন কোনো রাস্তা, চত্বর বা উহার কোনো অংশবিশেষের কর্তৃপক্ষের অধীন ন্যস্ত হইলে উক্ত রাস্তা, চত্বর বা উহার অংশ বিশেষের জন্য স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে কোনো প্রকার ক্ষতিপূরণ প্রদান করিতে হইবে না। (৩) রাস্তা, চত্বর বা উহার অংশবিশেষ ব্যতীত অন্য কোনো ভূমি বা ইমারত উপধারা (১) এর অধীন কর্তৃপক্ষের নিকট ন্যস্ত হইলে, যে উদ্দেশ্যে উক্ত ভূমি বা ইমারত অধিগ্রহণ করা হইয়াছিল সেই একই উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হইলে সংশ্লিষ্ট স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে কোনোরূপ ক্ষতিপূরণ প্রদান করিতে হইবে না: তবে শর্ত থাকে যে, উক্ত উদ্দেশ্য ব্যতীত অন্য কোনো উদ্দেশ্যে উক্ত ভূমি বা ইমারত ব্যবহার করা হইলে সংশ্লিষ্ট স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান করিতে হইবে, এবং ইমারতের ক্ষেত্রে সাধারণ হারে উহার উপর কর আরোপযোগ্য হইবে। (৪) এই ধারার অধীন গৃহীত কোনো সিদ্ধান্ত বা কার্যক্রমের বিষয়ে কো­নো প্রশ্ন উত্থাপিত হইলে বা বিরোধ দেখা দিলে উহা ধারা ৫৯ এর বিধান অনুসারে নিষ্পত্তি করিতে হইবে।

সমাপ্ত প্রকল্পের অবকাঠামো রক্ষণা¬বেক্ষণের জন্য স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বা সংস্থার নিকট ন্যস্তকরণ

২৫। মহাপরিকল্পনা বা অন্তর্বর্তীকালীন কোনো প্রকল্পের কাজ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সমাপ্ত হইবার পর কর্তৃপক্ষ, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, উক্ত প্রকল্পের অধীন সমাপ্ত অবকাঠা­মো, যথা- উদ্যান, রাস্তা, নর্দমা এবং অনুরূপ অন্যান্য সেবা ও সুবিধাসমূহ স্থানীয় কোনো কর্তৃপক্ষ বা সংস্থার নিকট রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ন্যস্ত করিতে পারিবে।

সরকার বা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের মালিকানাধীন প্রকল্প বা সম্পত্তি হস্তান্তর

২৬। (১) সরকার, কর্তৃপক্ষের আওতাভুক্ত এলাকার মধ্যে সরকারি কোনো সংস্থা বা স্থানীয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক গৃহীত বা অনুমোদিত কোনো উন্নয়ন প্রকল্প এবং সরকারের মালিকানাধীন কোনো স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তি, নির্ধারিত শর্তসাপেক্ষে, কর্তৃপক্ষের বরাবরে হস্তান্তর করিতে পারিবে। (২) উপধারা (১) এর অধীন হস্তান্তরিত কোনো উন্নয়ন প্রকল্পের অবাস্তবায়িত কার্য পূর্ববর্তী অনুমোদিত আকারে অথবা, প্রয়োজনে, কর্তৃপক্ষের মহাপরিকল্পনা বা উন্নয়ন প্রকল্পের সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণ করিবার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সংশোধন করিয়া কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বাস্তবায়ন করা যাইবে।

কর্তৃপক্ষের নিকট ন্যস্তকৃত সরকারি রাস্তা, নর্দমা, ইত্যাদির রক্ষণাবেক্ষণ

২৭। কর্তৃপক্ষের নিকট ন্যস্তকৃত সকল রাস্তা, চত্বর, ইমারত, ভূমি বা উহার অংশবিশেষ কর্তৃপক্ষ নিজে বা অন্য কোনো স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বা সংস্থার সহিত যৌথভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করিবে।

ভূমি ক্রয় বা লিজ গ্রহণের ক্ষমতা

২৮। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে কর্তৃপক্ষ, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, যেকোনো ব্যক্তি মালিকানাধীন ভূমি অথবা ভূমির সংশ্লিষ্ট স্বার্থ ক্রয়, লিজ বা বিনিময়ের মাধ্যমে উহা অর্জন করিতে বা অধিকারে রাখিতে পারিবে।

ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষমতা

২৯। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, কোনো ভূমি বা ভূমিসংশ্লিষ্ট স্বার্থ অধিগ্রহণ করিবার প্রয়োজন হইলে উহা জনস্বার্থে প্রয়োজনীয় বলিয়া বিবেচিত হইবে এবং ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে প্রচলিত বিধি-বিধান অনুসরণ করিতে হইবে।

ভূমি বিলি-বন্দেজ

৩০। ধারা ২৮ এর অধীন অর্জিত ভূমি বা ধারা ২৯ এর অধীন অধিগ্রহণকৃত ভূমি বা ভূমিসংশ্লিষ্ট স্বার্থ কর্তৃপক্ষ নিজ কর্তৃত্বে রাখিতে পারিবে অথবা বিক্রয়, লিজ বা বিনিময়ের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করিতে পারিবে।

উন্নয়ন ফি ধা¬র্যের ক্ষমতা

৩১।  (১) কর্তৃপক্ষ কর্তৃক কোনো উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের কারণে উক্ত এলাকার ভূমির মূল্য বৃদ্ধি পাইলে বা পাইবে বলিয়া মনে করিলে উক্ত ভূমির মালিক বা ভূমি­র স্বার্থ সংশ্লিষ্টতা রহিয়াছে এমন ব্যক্তির উপর ভূমির মূল্য বৃদ্ধির অনুপাতে উন্নয়ন ফি ধার্য করিতে পারিবে। (২) উপধারা (২) এ উল্লি­খিত উন্নয়ন ফি বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে ধার্য, নির্ধারণ ও আদায় করা যাইবে।

তহবিল

৩২। (১) সিলেট উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ তহবিল নামে কর্তৃপক্ষের একটি তহবিল থাকিবে এবং উহাতে নিম্নবর্ণিত উৎস হইতে প্রাপ্ত অর্থ জমা হইবে, যথা:- (ক) সরকার কর্তৃক প্রদত্ত মঞ্জুরি বা অনুদান; (খ) সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, কোনো দেশি বা বিদেশি সংস্থা বা কোনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান; (গ) স্থানীয় কোনো কর্তৃপক্ষ হইতে প্রাপ্ত অনুদান; (ঘ) সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে গৃহীত ঋণ; (ঙ) কর্তৃপক্ষের সম্পত্তি বিক্রয় বা ভাড়া হইতে প্রাপ্ত আয়; (চ) কর্তৃপক্ষ কর্তৃক গৃহীত ফি, চার্জ, ইত্যাদি; এবং (ছ) অন্য কোনো বৈধ উৎস হইতে প্রাপ্ত অর্থ। (২) কর্তৃপক্ষের তহবিল কোনো তপশিলি ব্যাংকে জমা রাখিতে হইবে এবং বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে উহা পরিচালনা করিতে হইবে। (৩) চেয়ারম্যান, সদস্য, কমিটির সদস্য, নির্বাহী পরিচালক ও কর্মচারীদের বেতন ও ভাতাদি, সম্মানি এবং কর্তৃপক্ষের কার্যাবলি পরিচালনার প্রয়োজনীয় ব্যয় তহবিল হইতে নির্বাহ করা যাইবে: তবে শর্ত থাকে, তহবিলের অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে এতদসংশ্লিষ্ট প্রচলিত বিধি-বিধান ও নিয়ম-নীতি অনুসরণ করিতে হইবে। (৪) প্রত্যেক অর্থবৎসরে উহার সকল ব্যয় নির্বাহের পর কর্তৃপক্ষ চলমান উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের সংস্থান রাখিয়া তহবিলের উদ্বৃত্ত অর্থ প্রজাতন্ত্রের সরকারি হিসাবে জমা প্রদান করিবে। ব্যাখ্যা- এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, ‘‘তপশিলি ব্যাংক’’ বলিতে Bangladesh Bank Order, 1972 (President’s Order No. 127 of 1972) এর Article 2(j) তে সংজ্ঞায়িত Scheduled Bank কে বুঝাইবে।

বার্ষিক বা¬জেট

৩৩।  সরকার কর্তৃক নির্দিষ্টকৃত সময়ের মধ্যে সম্ভাব্য আয়-ব্যয়সহ পরবর্তী অর্থবৎসরের বার্ষিক বাজেট বিবরণী সরকারের নিকট পেশ করিবে এবং উহাতে উক্ত বৎসরে সরকারের নিকট হইতে রাজস্ব অনুদান বা উন্নয়ন মঞ্জুরী বাবদ কর্তৃপক্ষের কোন বাজেট সহায়তার প্রয়োজন রয়েছে কিনা তাহা ও উল্লেখ থাকিবে।

হিসাব রক্ষণ ও নিরীক্ষা

৩৪।  (১) কর্তৃপক্ষ, যথাযথভাবে উহার হিসাবরক্ষণ এবং হিসাব বিবরণী প্রস্তুত করিবে। (২) বাংলাদেশের মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, অতঃপর মহা হিসাব-নিরীক্ষক বলিয়া অভিহিত, প্রতি বৎসর কর্তৃপক্ষের হিসাব নিরীক্ষা করিবেন এবং বিদ্যমান আইনের বিধান অনুযায়ী নিরীক্ষা প্রতিবেদন দাখিল করিবেন। (৩) উপধারা (২) এ উল্লিখিত নিরীক্ষা প্রতিবেদনের উপর কোনো আপত্তি উত্থাপিত হইলে উহা নিষ্পত্তির জন্য কর্তৃপক্ষ অবিলম্বে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে। (৪) উপধারা (২) এ উল্লিখিত নিরীক্ষা ছাড়াও Bangladesh Chartered Accountants Order, 1973 (President’s Order No. 2 of 1973) এর Article 2(1) (b) এ সংজ্ঞায়িত চার্টার্ড একাউনটেন্ট দ্বারা কর্তৃপক্ষের হিসাব নিরীক্ষা করিতে হইবে এবং এতদুদ্দেশ্যে কর্তৃপক্ষ এক বা একাধিক চার্টার্ড একাউনটেন্ট নিয়োগ করিতে পারিবে। (৫) কর্তৃপক্ষের হিসাব নিরীক্ষার উদ্দেশ্যে মহা হিসাব-নিরীক্ষক কিংবা তাহার নিকট হইতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি বা উপ-ধারা (৪) এর অধীন নিয়োগকৃত চার্টার্ড একাউনটেন্ট কর্তৃপক্ষের সকল রেকর্ড, দলিলাদি, বার্ষিক ব্যালেন্স সিট, নগদ বা ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ, জামানত, ভান্ডার বা অন্যবিধ সম্পত্তি, ইত্যাদি পরীক্ষা করিয়া দেখিতে পারিবেন এবং চেয়ারম্যান, সদস্য বা কর্তৃপক্ষের যেকোনো কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করিতে পারিবেন। (৬) এই ধারার বিধানাবলি প্রয়োগের ক্ষেত্রে ফাইনান্সিয়াল রিপোর্টিং আইন, ২০১৫ (২০১৫ সনের ১৬ নং আইন) এর বিধানাবলি, প্রযোজ্যক্ষেত্রে, অনুসরণ করিতে হইবে।

বকেয়া আদায়

৩৫। এই আইনের অধীন কোনো ব্যক্তি অথবা প্রতিষ্ঠানের নিকট কর্তৃপক্ষের কোনো অর্থ পাওনা থাকিলে উহা সরকারি দাবি হিসাবে Public Demands Recovery Act, 1913 (Act No.III of 1913) এর বিধান-অনুসারে আদায়যোগ্য হইবে।

প্রতিবেদন

৩৬। (১) কর্তৃপক্ষ প্রত্যেক অর্থবৎসর সমাপ্ত হইবার পরবর্তী ৯০ (নব্বই) দিনের মধ্যে উহার আয়, ব্যয় ও স্থিতির আর্থিক বিবরণসহ উক্ত বৎসরে সম্পাদিত কার্যাবলির উপর একটি বার্ষিক প্রতিবেদন সরকারের নিকট দাখিল করিবে। (২) সরকার, প্রয়োজনে, কর্তৃপক্ষের নিকট হইতে যেকোনো সময় কর্তৃপক্ষের যেকোনো বিষয়ের উপর প্রতিবেদন ও বিবরণী আহ্বান করিতে পারিবে এবং কর্তৃপক্ষ উহা সরকারের নিকট সরবরাহ করিতে বাধ্য থাকিবে।

ঋণ গ্রহণের ক্ষমতা

৩৭।  এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে কর্তৃপক্ষ, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, ঋণ গ্রহণ করিতে পারিবে এবং উহা পরিশোধ করিতে বাধ্য থাকিবে।

কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক

৩৮। কর্তৃপক্ষের একজন নির্বাহী পরিচালক থাকিবেন, যিনি সরকারের উপসচিব পদমর্যাদাধারীদের মধ্য হইতে প্রেষণে নিযুক্ত হইবেন।

কর্মচারী নিয়োগ

৩৯।  (১) কর্তৃপক্ষ উহার দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য, সরকার কর্তৃক অনুমোদিত সাংগঠনিক কাঠামো অনুযায়ী, প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মচারী নিয়োগ করিতে পারিবে। (২) কর্মচারীদের নিয়োগ এবং চাকরির শর্তাবলি প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত হইবে।

আন্তঃকর্তৃপক্ষ বদলি

৪০।  সরকার, জনস্বার্থে, কর্তৃপক্ষ এবং অন্যান্য কর্তৃপক্ষের কর্মচারীগণকে এক কর্তৃপক্ষ হইতে অন্য কর্তৃপক্ষে বদলি করিতে পারিবে। ব্যাখ্যা।- এই ধারায় ‘অন্যান্য কর্তৃপক্ষ’ অর্থ রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এবং, সময় সময়, আইনের ধারা প্রতিষ্ঠিত অনুরূপ কোনো কর্তৃপক্ষ।

জনসেবক

৪১।  চেয়ারম্যান, সদস্য, নির্বাহী পরিচালক এবং কর্মচারীগণ Penal Code, 1860 (Act No. XLV of 1860) এর section 21এ সংজ্ঞায়িত অর্থে জনসেবক (Public servant) বলিয়া গণ্য হইবেন।

মহাপরিকল্পনার পরিপন্থি ভূমি ব্যবহারের দণ্ড

­৪২। যদি কোনো ব্যক্তি মহাপরিকল্পনায় চিহ্নিত বা উল্লিখিত উদ্দেশ্য ব্যতীত অন্য কোনো উদ্দেশ্যে কোনো ভূমি ব্যবহার করেন, তাহা হইলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ১০ (দশ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।

ইমারত নির্মাণ, জলাধার খনন, চালা অথবা উঁচু ভূমি, ইত্যাদি বিষয়ে বিধি-নিষেধ

৪৩।   (১) অন্য কোনো আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইন কার্যকর হইবার পর, কর্তৃপক্ষের আওতাধীন এলাকার মধ্যে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতীত কোনো ইমারত নির্মাণ বা পুনঃনির্মাণ, পুকুর বা কৃত্রিম জলাধার খনন বা পুনঃখনন কিংবা চালা বা উঁচু ভূমি কাটা যাইবে না। (২) কর্তৃপক্ষের আওতাধীন এলাকায় কোনো ইমারত বা স্থাপনা নির্মাণ বা পুনঃনির্মাণ, পুকুর বা কৃত্রিম জলাধার খনন বা পুনঃখননের জন্য প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে এবং ফি’সহ ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মচারীর নিকট আবেদন করিতে হইবে এবং এইরূপ আবেদন প্রাপ্তির পর ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মচারী, মহাপরিকল্পনার সহিত সঙ্গতি রাখিয়া, নির্ধারিত শর্ত সাপেক্ষে, উক্তরূপ কাজের অনুমতি প্রদান করিতে পারিবেন: তবে শর্ত থাকে যে, কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ পর্যটন সংরক্ষিত এলাকা ও বিশেষ পর্যটন অঞ্চল আইন, ২০১০ (২০১০ সনের ৩১ নং আইন) এর ধারা ৪ এর অধীন ঘোষিত পর্যটন সংরক্ষিত এলাকায় পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন ও বিকাশের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহিত সমন্বয় সাধন করিয়া কোনো ইমারত বা স্থাপনা নির্মাণ বা কৃত্রিম জলাধার খননের অনুমতি প্রদান করিতে পারিবে। (৩) কর্তৃপক্ষের নিকট যদি সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হয় যে, যে সকল শর্তে উপধারা (২) এর অধীন অনুমতি প্রদান করা হইয়াছিল উহা প্রতিপালন করা হয় নাই বা ভঙ্গ করা হইয়াছে বা ভঙ্গ করিবার উদ্যোগ গ্রহণ করা হইয়াছে তাহা হইলে কর্তৃপক্ষ উক্ত অনুমতি বাতিল করিতে পারিবে। (৪) এই ধারার কোনো কিছুই বিদ্যমান ইমারত বা স্থাপনার মেরামত বা উহাদের সাধারণ মেরামত কার্য পরিচালনা কিংবা জলাধার সংস্কারের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে না। (৫) অন্য কোনো আইনে যাহাই থাকুক না কেন, পর্যটন এলাকায় মহা-পরিকল্পনা বা উন্নয়ন প্রকল্প প্রণয়ন এবং বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের সহিত অন্য কোনো কর্তৃপক্ষ বা সংস্থার মধ্যে কোনো বিষয়ে বিরোধ দেখা দি­লে উহা ধারা ৬৩ এর বিধান অনুসারে নিষ্পত্তি করিতে হইবে। (৬) যদি কোনো ব্যক্তি এই ধারার কোনো বিধান লঙ্ঘন করেন তাহা হইলে উক্ত লঙ্ঘন হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ০২ (দুই) বৎসর কারাদণ্ড বা অনধিক ১০ (দশ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।

কৃত্রিম জলাধার খনন, টিলা কাটা, ইত্যাদি স্থগিতকরণ

৪৪।  (১) কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনবোধে, প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে খননাধীন কোনো কৃত্রিম জলাধারের খনন কার্য স্থগিত বা বন্ধ করিবার অথবা টিলা কাটার কার্য স্থগিত বা বন্ধ করিবার জন্য উহার মালিককে নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবে। (২) কোনো ব্যক্তি উপধারা (১) এর বিধান লঙ্ঘন করিলে উক্ত লঙ্ঘন হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি প্রথমবার অপরাধের ক্ষেত্রে অনধিক ০২ (দুই) বৎসর কারাদণ্ড বা অনধিক ০২ (দুই) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড এবং পরবর্তী প্রতিবার একই অপরাধের ক্ষেত্রে অন্যূন ০২ (দুই) বৎসর, অনধিক ১০ (দশ) বৎসর কারাদন্ড বা অন্যূন ০২ (দুই) লক্ষ টাকা, অনধিক ১০ (দশ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।

নিচু ভূমি ভরাট বা প্রাকৃতিক জলাধারের পানি প্রবাহে বাধাগ্রস্তের উপর বিধি-নিষেধ

৪৫।  (১) কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতীত উহার আওতাধীন কোনো এলাকার নিচু ভূমি ভরাট বা উঁচু অথবা কোনো প্রাকৃতিক জলাধারের পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্থ বা কোনো নদ-নদী, খাল-বিল, জলাশয়, পুকুর, ডোবা, প্রাকৃতিক জলাধার, ইত্যাদির পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত করা যাইবে না। (২) কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এর বিধান লঙ্ঘন করিলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি প্রথমবার অপরাধ সংঘটনের ক্ষেত্রে অনধিক দুই বৎসর কারাদণ্ড বা অনধিক দুই লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে এবং পরবর্তী প্রতিবার অপরাধ সংঘটনের ক্ষেত্রে অন্যূন দুই বৎসর, অনধিক দশ বৎসর কারাদণ্ড বা অন্যূন দুই লক্ষ টাকা, অনধিক দশ লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।

খেলার মাঠ, উন্মুক্ত মাঠ, উদ্যান এবং প্রাকৃতিক জলাধারের শ্রেণি পরিবর্তন

৪৬।  কর্তৃপক্ষের আওতাধীন এলাকার খেলার মাঠ, উন্মুক্ত স্থান, উদ্যান এবং প্রাকৃতিক জলাধারের শ্রেণি পরিবর্তনের ক্ষেত্রে মহানগরী, বিভাগীয় শহর ও জেলা শহরের পৌর এলাকাসহ দেশের সকল পৌর এলাকার খেলার মাঠ, উন্মুক্ত স্থান, উদ্যান এবং প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ আইন, ২০০০ (২০০০ সনের ৩৬ নং আইন) প্রযোজ্য হইবে।

সীমানা প্রাচীর, ইত্যাদি অপসারণ করিবার দণ্ড

৪৭।  কোনো ব্যক্তি আইনগত কর্তৃত্ব ব্যতীত কর্তৃপক্ষের আওতাধীন এলাকায় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক স্থাপিত কোনো সীমানা প্রাচীর, দেয়াল, সীমানা খুঁটি, নিরাপত্তা বেষ্টনী, গ্রোথিত কোনো বার, চেইন বা পোস্ট অথবা কোনো বাতি অপসারণ করিলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক পাঁচ লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।

ইমারত অথবা দেয়াল অপসারণ না করিবার দণ্ড

৪৮।  কর্তৃপক্ষের আওতাভুক্ত এলাকার মধ্যে যদি কোনো ইমারত বা দেয়ালের মালিক কর্তৃপক্ষের সহিত স্বাক্ষরিত চুক্তি বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে উক্ত ইমারত বা দেয়াল অপসারণ না করেন, তাহা হইলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি পাকা ইমারত বা দেওয়ালের জন্য অনধিক ০৫ (পাঁচ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে এবং কাঁচা ইমারত বা দেওয়ালের জন্য অনধিক ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।

অবৈধ নির্মাণ অপসারণ

৪৯।  যদি আদালত কোনো ব্যক্তিকে কোনো দেয়াল, ইমারত বা স্থাপনা অপসারণের আদেশ প্রদান করে এবং উক্ত ব্যক্তি যদি আদালত কর্তৃক নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে উক্ত দেয়াল, ইমারত বা স্থাপনা অপসারণ না করেন, তাহা হইলে কর্তৃপক্ষ উহা অপসারণ করিতে পারিবে এবং উক্ত অপসারণের জন্য ব্যয়িত অর্থ সংশ্লিষ্ট মালিক বা ব্যক্তি তাৎক্ষণিকভাবে পরিশোধ না করিলে উহা Public Demands Recovery Act, 1913 (Act No.III of 1913) এর বিধান অনুযায়ী সরকারি দাবি হিসাবে আদায় করা যাইবে।

অননুমোদিত নির্মাণাধীন স্থাপনা অপসারণ ও উহাতে বসবাসকারীদের উচ্ছেদ

৫০।  (১) কর্তৃপক্ষ, প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, অননুমোদিত নির্মাণাধীন কোনো ইমারতের নির্মাণ কার্য স্থগিত বা কোনো নির্মাণাধীন স্থাপনা অপসারণ করিবার জন্য উহার মালিককে নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবে। (২) উপধারা (১) এর অধীন নির্মাণাধীন কোনো ইমারতের মালিককে নির্দেশ প্রদান করা হইলে উক্ত ইমারতের মালিক নহে এমন কোনো ব্যক্তি সেখানে বসবাস করিলে তাহাকেও প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে উক্ত ইমারত ত্যাগ করিবার জন্য কর্তৃপক্ষ নোটিশ প্রদান করিতে পারিবে। (৩) উপধারা (১) ও (২) এর অধীন নোটিশে উল্লিখিত সময়ের মধ্যে, নির্মাণ কাজ স্থগিত করা না হইলে বা সংশ্লিষ্ট স্থাপনা অপসারণ করা না হইলে অথবা সংশ্লিষ্ট বসবাসকারী উক্ত ইমারত পরিত্যাগ না করিলে কর্তৃপক্ষ, স্ব-উদ্যোগে, উক্ত ইমারত বা স্থাপনা অপসারণ করিতে অথবা সংশ্লিষ্ট বসবাসকারীকে উচ্ছেদ করিতে পারিবে এবং উক্ত অপসারণ বা উচ্ছেদ কার্যক্রমের আনুষঙ্গিক ব্যয়ের সমুদয় অর্থ সংশ্লিষ্ট মালিক বা ব্যক্তির নিকট হইতে নগদ আদায় করিবে। (৪) উপধারা (৩) এ উল্লিখিত অর্থ সংশ্লিষ্ট মালিক বা ব্যক্তি তাৎক্ষণিকভাবে পরিশোধ না করিলে উহা Public Demands Recovery Act, 1913 (Act No. III of 1913) এর বিধান অনুযায়ী সরকারি দাবি হিসাবে আদায় করা যাইবে। (৫) উপধারা (১) এর বিধান বিদ্যমান ইমারত সংস্কারের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে না। (৬) যদি কোনো ব্যক্তি উপধারা (১) ও (২) এ উল্লিখিত কর্তৃপক্ষের নির্দেশ পালনে ব্যর্থ হয় তাহা হইলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ২ (দুই) বৎসর কারাদণ্ড বা অনধিক ১০ (দশ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবনে।

অনুমোদিত নকশার ব্যত্যয় করিয়া ভবন নির্মাণের দণ্ড

৫১। (১) কর্তৃপক্ষের আওতাধীন এলাকায় অনুমোদিত নকশার ব্যত্যয় করিয়া স্থাপনা নির্মাণ করিলে, কর্তৃপক্ষ, উক্ত নির্মাণ কার্য স্থগিত বা কোনো নির্মাণাধীন স্থাপনা অপসারণ করিবার জন্য উহার মালিককে নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবে। (২) উপধারা (১) এ উল্লিখিত নির্দেশ অমান্য করিয়া কোনো ব্যক্তি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে উক্ত নির্মাণ কাজ স্থগিত না করিলে বা ব্যত্যয়কৃত অংশ অপসারণ না করিলে, কর্তৃপক্ষ, স্ব-উদ্যোগে উহা অপসারণ করিতে পারিবে এবং অপসারণ কার্যক্রমের আনুষঙ্গিক ব্যয়ের সমুদয় অর্থের দ্বিগুণ অর্থ সংশ্লিষ্ট মালিক বা ব্যক্তির নিকট হইতে আদায় করা হইবে। (৩) উপধারা (২) এ উল্লিখিত অর্থ সংশ্লিষ্ট মালিক বা ব্যক্তি তাৎক্ষণিকভাবে পরিশোধ না করিলে Public Demands Recovery Act, 1913 (Act. No. iii of 1913) এর বিধান অনুযায়ী সরকারি দাবি হিসাবে আদায় করা যাইবে।

অনুমোদিত নকশা বহির্ভূত স্থাপনা নির্মাণের দণ্ড

৫২।  কর্তৃপক্ষের আওতাধীন এলাকায় অনুমোদিত নকশা বহির্ভূত স্থাপনা নির্মাণ করিলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য সংশ্লিষ্ট স্থাপনা নির্মাণকারী অনধিক ০২ (দুই) বৎসর কারাদণ্ড অথবা অনধিক ২০ (বিশ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

কর্তৃপক্ষের কার্যসম্পাদনকালে নিরাপত্তা বেষ্টনী, ইত্যাদি অপসারণ নিষিদ্ধ

৫৩। (১) আইনগত কর্তৃত্ব ব্যতীত, কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বা উহার নির্দেশনা অনুসারে কর্তৃপক্ষের আওতাধীন এলাকায় কোনো কার্য সম্পাদনের সময় স্থাপিত কোনো নিরাপত্তা বেষ্টনী বা তীরবর্তী খুঁটি বা গ্রোথিত কোনো বার বা চেইন বা পোস্ট বা অনুরূপ কোনো কিছু অপসারণ বা কোনো বাতি সরাইয়া লওয়া যাইবে না। (২) কোনো ব্যক্তি উপধারা (১) এর বিধান লঙ্ঘন করিলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ০১(এক) বৎসর কারাদণ্ড অথবা অনধিক ৫(পাঁচ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।

স্থানীয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ইমারত নির্মাণের অনুমতি প্রদান নিষিদ্ধ

৫৪। (১) অন্য কোনো আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন এই আইন কার্যকর হইবার পর, কর্তৃপক্ষের আওতাধীন এলাকার মধ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মচারীর অনুমতি ব্যতীত স্থানীয় কোনো কর্তৃপক্ষ এই আইনের অধীন বিষয়সমূহ যেমন, কোনো ইমারত নির্মাণের নক্সা অনুমোদন, জলাধার খনন বা পুনঃখননের অনুমতি প্রদান করিবে না। (২) ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মচারী কোনো ইমারত নির্মাণ, জলাধার ভরাট বা জলাধার খননের অনুমতি প্রদান করিলে তাহাকে উক্ত ইমারত বা জলাধারের নক্সাসহ তাহার স্বাক্ষরিত উক্ত অনুমতি পত্রের একটি অনুলিপি ইমারত বা জলাধার যে এলাকায় অবস্থিত সেই এলাকার মেয়র বা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহীর নিকট প্রেরণ করিতে হইবে। (৩) এই আইন কার্যকর হইবার পর, কর্তৃপক্ষ ব্যতীত কোনো পৌরসভা বা সিটি কর্পোরেশন উপ-ধারা (১)-এর ব্যত্যয় ঘটাইয়া কোনো অনুমতি প্রদান করিলে উহা বে-আইনি ও ক্ষমতা বহির্ভূত হিসাবে গণ্য হইবে বা অনুরূপ অনুমতির মাধ্যমে কৃত কার্যক্রম অকার্যকর ও অননু­মোদিত বলিয়া গণ্য হই­বে।

কর্তৃপক্ষের চাকুরিতে নিয়োজিত কোনো ব্যক্তি কর্তৃক ইচ্ছাকৃতভাবে বা অনিচ্ছাকৃতভাবে কোনো অসাধু কর্মকাণ্ডে সহায়তার দণ্ড

৫৫।  কর্তৃপক্ষের চাকুরিতে নিয়োজিত কোনো ব্যক্তি কর্তৃপক্ষের চাকুরিতে নিয়োজিত থাকাকালীন যদি ইচ্ছাকৃতভাবে বা অনিচ্ছাকৃতভাবে কোনো অসাধু কাজ করিয়া বা বেআইনীভাবে কোনো কাজ করা হইতে বিরত থাকিয়া, এই আইনের অধীন এমন কোনো অপরাধ করিবার ব্যাপারে সাহায্য করেন বা করিবার সুযোগ করিয়া দেন যাহা প্রতিরোধ করা বা উদঘাটন করা অথবা যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কর্তৃপক্ষের গোচরে আনয়ন করা তাহার দায়িত্ব ছিল, তাহা হইলে তিনি উক্ত অপরাধ করিবার ব্যাপারে সহায়তা করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবে এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ২ (দুই) বৎসর কারাদণ্ড বা অনধিক ১০ (দশ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।

চেয়ারম্যান, সদস্য, নির্বাহী পরিচালক বা কোনো কর্মচারী কর্তৃক কর্তৃপক্ষের শেয়ার, স্বার্থ বা চুক্তিতে অংশগ্রহণে বিধি-নিষেধ

৫৬।  (১) চেয়ারম্যান, সদস্য, নির্বাহী পরিচালক বা কোনো কর্মচারী কর্তৃপক্ষের কোনো পদে বহাল থাকাকালীন কর্তৃপক্ষের ব্যবসা-বাণিজ্য বা কোনো লেনদেন বা স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কোনো শেয়ার অথবা স্বত্ত্ব বা দখল করিবেন না। (২) চেয়ারম্যান, সদস্য, নির্বাহী পরিচালক বা কোনো কর্মচারী উপধারা (১) এর বিধান লঙ্ঘন করিলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ২ (দুই) বৎসর কারাদন্ড বা অনধিক ১০ (দশ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।

ক্ষতিপূরণ প্রদান না করা

৫৭।   এই আইনের কোনো বিধান লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ কর্তৃক গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের বিপরীতে ক্ষতিপূরণের দাবি উত্থাপন করা যাইবে না।

অপরাধ বিচারার্থ গ্রহণ

৫৮।  এই আইনের অধীন অপরাধ সংঘটনের বিষয়ে কর্তৃপক্ষ, ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মচারী বা অন্যকোনো ব্যক্তি আদালতে লিখিত অভিযোগ দায়ের করিতে পারিবে এবং আদালত উক্ত অভিযোগ আমলে গ্রহণ করিবে।

বিচার, ইত্যাদি

৫৯। (১) এই আইনের অধীন সংঘটিত অপরাধের বিচারের ক্ষেত্রে Code of Criminal Procedure, 1898 (Act No. V of 1898) এর বিধানাবলি প্রযোজ্য হইবে। (২) উক্ত Code এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন- ক) এই আইনের অধীন সংঘটিত অপরাধসমূহ প্রথম শ্রেণির জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা, ক্ষেত্রমত, মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক বিচার্য হইবে; এবং খ) প্রথম শ্রেণির জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে সংশ্লিষ্ট অপরাধের জন্য এই আইনে বর্ণিত যেকোনো অর্থ দণ্ড আরোপ করিতে পারিবে।

অপরাধের আমলযোগ্যতা ও জামিনযোগ্যতা

৬০।  এই আইনের অধীন অপরাধসমূহ আমলযোগ্য এবং জামিনযোগ্য হইবে।

মোবাইল কোর্টের এখতিয়ার

৬১।  এই আইনের অন্যকোনো বিধানে ভিন্নরূপ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের অধীন অপরাধসমূহ মোবাইল কোর্ট আইন, ২০০৯ (২০০৯ সনের ৫৯ নং আইন) এর তপশিল ভুক্ত করিয়া বিচার করা যাইবে।

কোম্পানি কর্তৃক অপরাধ সংঘটন

৬২। (১) কোনো কোম্পানি কর্তৃক এই আইনের অধীন কোনো অপরাধ সংঘটিত হইলে, উক্ত অপরাধের সহিত প্রত্যক্ষ সংশ্লিষ্টতা রহিয়াছে উক্ত কোম্পানির এইরূপ মালিক, পরিচালক, নির্বাহী কর্মকর্তা, ব্যবস্থাপক, নির্বাহী পরিচালক, অন্য কোনো কর্মচারী উক্ত অপরাধ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন, যদি না তিনি প্রমাণ করিতে পারেন যে, উক্ত অপরাধ তাহার অজ্ঞাতসারে সংঘটিত হইয়াছে এবং উহা রোধ করিবার জন্য তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা করিয়াছেন। (২) উপধারা (১) এ উল্লিখিত কোম্পানি আইনগত স্বত্ত্বা হইলে, উক্ত উপধারায় উল্লিখিত ব্যক্তিকে অভিযুক্ত ও দোষী সাব্যস্ত করা ছাড়া ও উক্ত কোম্পানিকে পৃথকভাবে একই কার্যধারায় অভিযুক্ত ও দোষীসাব্যস্ত করা যাইবে, তবে উহার উপর সংশ্লিষ্ট বিধান অনুসারে শুধু অর্থদণ্ড আরোপ করা যাইবে।

বিরোধ নিষ্পত্তি

৬৩।  (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, কর্তৃপক্ষের অধীন এলাকায় মহাপরিকল্পনা, উন্নয়ন প্রকল্প, অন্তর্বর্তীকালীন প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন অথবা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক গৃহীত কোনো সিদ্ধান্ত অথবা কোনো কার্যক্রমের বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সহিত অন্য কোনো স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বা সংস্থার মধ্যে বিরোধ দেখা দিলে কর্তৃপক্ষ পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে উহা নিষ্পত্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে। (২) উপধারা (১) এর অধীন গৃহীত পদক্ষেপের মাধ্যমে আপোষ মিমাংসা না হইলে, কর্তৃপক্ষ উক্ত বিরোধের বিষয়টি সরকারের নিকট প্রেরণ করিবে এবং সরকার উক্ত স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বা সংস্থার নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ, বা ক্ষেত্রমত, প্রশাসনিক মন্ত্রণালয় এর সহিত পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে উহা নিষ্পত্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে।

প্রবেশাধিকার

৬৪। (১) চেয়ারম্যান বা তাহার নিকট হইতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো কর্মচারী, এই আইন, বিধি বা প্রবিধানের বিধান সাপেক্ষে, কর্তৃপক্ষের এখতিয়ারাধীন এলাকার কোনো ভূমিতে নিম্নবর্ণিত যে কোনো উদ্দেশ্যে প্রবেশ করিতে পারিবেন, যথা:- (ক) কোনো অনুসন্ধান, জরিপ, পরীক্ষা, মূল্যায়ন বা তদন্ত; (খ) ভূমির স্তর গ্রহণ; (গ) নিম্ন স্তরের মাটি খনন বা ছিদ্রকরণ; (ঘ) পূর্ত কাজের চৌহদ্দি ও সীমারেখা নির্ধারণ; (ঙ) চিহ্ন বা নালা কাটিয়া উক্তরূপ স্তর চৌহদ্দি ও সীমারেখা চিহ্নিতকরণ; বা (চ) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে যে কোনো কাজ। (২) সংশ্লিষ্ট ভূমির মালিক বা দখলদারকে উক্ত ভূমিতে প্রবেশের উদ্দেশ্য সম্পর্কে অন্যূন ২৪ (চব্বিশ) ঘণ্টা পূর্বে নোটিশ প্রদান করিয়া সূর্যোদয়ের পর ও সূর্যাস্তের পূর্বে যেকোনো সময় উপধারা (১) এর অধীন প্রবেশ করিতে পারিবে। (৩) উপধারা (১) এর অধীন কোনো কার্যের ফলে যদি ভূমির কোনো ক্ষতি হয়, তাহা হইলে কর্তৃপক্ষ ক্ষতিপূরণ প্রদান করিবে।

ক্ষমতা অর্পণ

৬৫।  কর্তৃপক্ষ, উহার কোনো ক্ষমতা, প্রয়োজনে, তৎকর্তৃক নির্ধারিত শর্তসাপেক্ষে, চেয়ারম্যান, সদস্য, নির্বাহী পরিচালক বা উহার কোনো কর্মচারীকে অর্পণ করিতে পারিবে।

ক্ষতিপূরণ প্রদানে কর্তৃপক্ষের সাধারণ ক্ষমতা

৬৬।  কর্তৃপক্ষ এই আইনে সুস্পষ্টভাবে বর্ণিত হয় নাই এইরূপ ক্ষেত্র ব্যতীত অন্যকোনো ক্ষেত্রে এই আইন, বিধি বা প্রবিধানের কোনো বিধানের অধীন কর্তৃপক্ষ, চেয়ারম্যান, সদস্য, নির্বাহী পরিচালক বা উহার কোনো কর্মচারীর উপর ন্যস্তকৃত দায়িত্ব পালনকালে কোনো ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হইলে কর্তৃপক্ষ উক্ত ব্যক্তিকে যুক্তিসংগত ক্ষতিপূরণ প্রদান করিতে পারিবে।

দেওয়ানী আদালতের এখতিয়ার বহির্ভূত

৬৭।   এই আইনের অধীন কৃত বা কৃত বলিয়া বিবেচিত কোনো কার্য, গৃহীত কোনো ব্যবস্থা, প্রদত্ত কোনো আদেশ বা নির্দেশের বিরুদ্ধে কোনো দেওয়ানি আদালতে কোনো প্রশ্ন বা আপত্তি উত্থাপন করা যাইবে না।

নির্দেশ প্রদানের ক্ষমতা

৬৮। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার, সময় সময়, কর্তৃপক্ষকে যেকোনো নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবে এবং কর্তৃপক্ষ উহা পালন করিতে বাধ্য থাকিবে।

বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা

৬৯। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে।

প্রবিধান প্রণয়নের ক্ষমতা

৭০। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, কর্তৃপক্ষ, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা প্রবিধান প্রণয়ন করিতে পারিবে।

ইংরেজিতে অনূদিত পাঠ প্রকাশ

৭১। (১) এই আইন কার্যকর হইবার পর সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের মূল বাংলা পাঠের ইংরেজিতে অনূদিত একটি নির্ভরযোগ্য পাঠ (Authentic English Text) প্রকাশ করিবে। (২) বাংলা ও ইংরেজি পাঠের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে বাংলা পাঠ প্রাধান্য পাইবে।

Footnotes

Click here to see the original act on the Bangladesh Legal Database.